বাড়িতে ডাকাতির নাটক সাজিয়ে স্ত্রীকে হত্যা, স্বামীর যাবজ্জীবন
জয়পুরহাটের কালাই উপজেলায় বাড়িতে ডাকাতির নাটক সাজিয়ে স্ত্রীকে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় স্বামীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাঁকে এক লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও তিন বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আজ সোমবার দুপুর ১২টায় জয়পুরহাটের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. নুরুল ইসলাম এ রায় দেন।
সাজাপ্রাপ্ত ওই আসামির নাম নাজিম উদ্দিন ওরফে করিম (৩২)। তিনি কালাই উপজেলার ধাপ কাথাইল গ্রামের আবুল কালাম মণ্ডলের ছেলে। হাজতবাস বাদ দিয়ে আজ থেকে তাঁর সাজা কার্যকর হবে বলে রায়ে উল্লেখ করা হয়।
আদালতের পরিদর্শক আবদুল লতিফ খান রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, আসামি নাজিম উদ্দিনের উপস্থিতিতে রায় ঘোষণা করেন বিচারক। রায় ঘোষণার পর তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
মামলার সংক্ষিপ্ত এজাহার ও আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০১৩ সালে কালাই উপজেলার নাজিম উদ্দিনের সঙ্গে ক্ষেতলাল উপজেলার শিশি নাজিরপাড়ার এলাকার মৃত আবদুর রহমানের মেয়ে রওশন আরার (২১) বিয়ে হয়। বিয়ের পর তাঁদের মধ্যে দাম্পত্য কলহ শুরু হয়। স্ত্রীকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন শুরু করেন নাজিম। কলহ নিরসনে পারিবারিকভাবে নাজিমের বাবাকে ঘটনাটি জানায় রওশান আরার পরিবার। এতে নাজিম ক্ষেপে গিয়ে স্ত্রীকে নির্যাতনের মাত্রা বাড়িয়ে দেন।
২০১৫ সালের ৫ মে রাতে নাজিম স্ত্রীকে পিটিয়ে ও গলাটিপে হত্যা করেন। এরপর বাড়িতে ডাকাত ঢুকে স্ত্রীকে হত্যা করেছে বলে প্রচার করেন এবং শ্বশুরবাড়ির লোকজনকে জানান। পরের দিন শ্বশুরবাড়ির লোকজন এসে দেখেন, বাড়ির উঠানে রওশন আরার লাশ পড়ে আছে এবং লাশের নাক-মুখ দিয়ে রক্ত বের হচ্ছে। এতে স্বজনদের সন্দেহ হলে তাঁরা নাজিমের প্রতিবেশীদের সঙ্গে কথা বলে রাতে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মারামারির কথা জানতে পারেন।
এ ঘটনায় রওশন আরার দাদা ইসমাইল হোসেন বাদী হয়ে ২০১৫ সালের ৬ মে কালাই থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। পুলিশ ওই দিন মামলার আসামি নাজিম উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করে। এরপর থেকে তিনি কারাগারে। দীর্ঘ শুনানির পর আজ তাঁকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হলো।