বিনোদন

শেষ মুহুর্তের ঈদ কেনাকাটায় জমজমাট মিরপুর-১

ডেস্ক রিপোর্টঃ আর মাত্র কয়েকদিন পর ঈদ। আনন্দকে আরও বাড়িয়ে নিতে প্রিয়জনদের নিয়ে শেষ মুহূর্তে ঈদের কেনাকাটা করছেন সাধারণ মানুষ৷ রাজধানীর অন্যতম ব্যস্ত জনবহুল অঞ্চল মিরপুর। মিরপুর-১ এর গোল চত্বর থেকে শুরু করে চিড়িয়াখানা রোডে যেতে রাস্তার দুইপাশ জুড়ে ব্র্যান্ডের শোরুমের পসরা। সেখানে জমে উঠেছে ঈদের কেনাকাটা। 

শুক্রবার (৫ এপ্রিল) ২৫ তম রোজায় মিরপুর-১ এর বিভিন্ন শোরুম গুলোর ভিতরে প্রবেশ করতেই দেখা গেল শেষ মুহূর্তে ঈদ কেনাকাটা করতে আসা ক্রেতা দর্শনার্থীদের উপচে পড়া ভিড়। ছোট থেকে বড় সবার জমে উঠেছে ঈদ কেনাকাটা। 

মিরপুর-১ গোল চত্বর সংলগ্ন ব্র্যান্ডের শোরুমগুলো খুব অল্প সময়ে ক্রেতাদের কাছে কেনাকাটার প্রিয় জায়গা হয়ে উঠেছে। সনি সিনেমা হল ও তার আশেপাশের ভবনগুলোতে এখন ব্র্যান্ডের শোরুমের ছড়াছড়ি। আড়ং, ইজি, লারিভ, জেন্টাল পার্ক, ইনফিনিটি, ইয়োলো, দেশাল, ফ্রিল্যান্ড, সেইলর, ভোগ বাই প্রিন্স, বাটা, এপেক্স সবই এখন মিরপুরবাসীর হাতে নাগালে। এছাড়া আছে বুটিক্সের অনেক দোকান।

ছোট থেকে বড় সবার জমে উঠেছে ঈদ কেনাকাটা।

সরেজমিনে মিরপুরে ব্র্যান্ডের বিভিন্ন শোরুম ঘুরে দেখা যায় শেষ মুহুর্তে ঈদের কেনাকাটা করতে ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড়। ভিড় থাকলেও দাম নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করছেন অনেকে। দেশীয় ব্র্যান্ড আড়ংয়ের মিরপুর ১ এর শাখা ঘুরে দেখা যায়, অন্যান্য ব্র্যান্ডের তুলনায় তাদের শোরুমে সবচেয়ে বেশি ভিড়। শাড়ি, জুতা, পাঞ্জাবি, মানিব্যাগ, বাচ্চাদের বাহারি জামা, জুয়েলারি, ঘর সাজানোর নানা দেশীয় বৈচিত্র্যময় জিনিস সবই রয়েছে এক ছাদের নিচে। নানা সময়ে বিতর্কিত হলেও দেশের শীর্ষস্থানীয় পোশাকের ব্র্যান্ডগুলোর অন্যতম আড়ংএ ক্রেতার খুব একটা কমতি দেখা যায় না।

কাজীপাড়া থেকে আড়ং এ কেনাকাটা করতে আসা গৃহিণী মঞ্জুরি বেগম বলেন, ‘আমাদের মিরপুরে শোরুমটি হয়ে খুব ভালো হয়েছে। আগে বসুন্ধরায় যেতাম। এই আউটলেটটা বেশ বড়। সবই পাওয়া যায়। আরামদায়ক পোশাকের জন্য আড়ং থেকে প্রায়ই কেনাকাটা করি। তবে সাম্প্রতিক সময়ে আড়ং নিয়ে যে বিতর্ক উঠেছে সেটা খুবই চিন্তার বিষয়। আমরা সুন্দর আর স্বাভাবিক সমাজে বাস করতে চাই কেউ যদি উসকানিমূলক কিছু করে অবশ্যই সেটা বাদ দিতে হবে।’

শাড়ি, জুতা, পাঞ্জাবি, মানিব্যাগ, জুয়েলারি সবই এক ছাদের নিচে

৬০ ফিট থেকে আড়ংএ কেনাকাটা করতে আসা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী মিম জানান, ‘বান্ধবীদের নিয়ে এসেছি। বাজেট ১৫ হাজার টাকার মতো ছিল। জামা জুতা কিনেছি এখন জুয়েলারি কিনবো কিছু।’ 

ছেলেদের পাঞ্জাবির সেকশনেও দেখা যায় ভিড়। নানা রঙের পাঞ্জাবি পছন্দ করে গায়ে পরে দেখে কিনছেন ক্রেতারা। ব্যাংক কর্মকর্তা খাইরুল আলম বলেন, ‘আড়ং এর পাঞ্জাবি পরে আরাম দেখতে ও সুন্দর ছেলেদের জন্য কিনেছি আমার টা দেখছি।’

আড়ং এর কর্মী শান্তা  জানান, সব ধরনের ড্রেস ভালো বিক্রি হচ্ছে তবে হাতের কাজের পাঞ্জাবি, থ্রিপিস, কুর্তি, এছাড়া বাচ্চাদের পোশাক, শাড়ি ও ভালো বিক্রি হচ্ছে। 

মিরপুর ১ এর ইজি শোরুমে দেখা যায়,  শার্ট, প্যান্ট,  ফতুয়া, টিশার্টসহ  ছেলেদের নানা ধরনের পোশাক বিক্রি হচ্ছে। 

লারিভ এর শোরুমে দেখা যায়, শেষ মুহূর্তে কেনাকাটা করতে এসেছেন অনেকে। মেয়েদের শাড়ি, থ্রিপিস, টুপিস, বিভিন্ন ডিজাইনার ড্রেস কিনছেন ক্রেতারা। 

লারিভ এর মিরপুর-১ শোরুম এর কর্মী দেবাশীষ বিশ্বাস বলেন, ‘গরম সামনে রেখে হালকা পোশাক কিনছেন অনেকে মেয়েদের টপস, ছেলেদের টি শার্ট, পাঞ্জাবি সব ভালো বিক্রি হচ্ছে। রোজার শুরু থেকেই আমাদের বিক্রি ভালো যাচ্ছে।’

তবে কিছু শোরুম এর বিক্রেতারা জানান ভিড়ের তুলনায় বেচাকেনা কম। দ্রব্যমূল্য বাড়ার প্রভাব এখানেও পড়েছে বলে মন্তব্য করেন তারা। 

ফুটপাতের দোকানগুলোতেও দেখা গেছে ক্রেতাদের ভিড়

অন্যদিকে নামিদামি ব্র্যান্ডের পাশাপাশি ঈদ উপলক্ষে মিরপুর-১ এলাকার বিভিন্ন সড়কে ফুটপাতের দোকানগুলোতেও দেখা গেছে ক্রেতাদের ভিড়। ফুটপাতের দোকানগুলোয় নারী-শিশুদের পোশাক, কসমেটিকস, জুতা, জুয়েলারি, ভ্যানিটি ব্যাগের পাশাপাশি গৃহস্থালির নানা জিনিস বিক্রি হচ্ছে। সীমিত সাধ্যের ক্রেতাদের জন্য নানারকম তৈরি পোশাকের পসরা সাজিয়ে বসেছেন ফুটপাতের ব্যবসায়ীরা। পথের ধারে বসা এসব খোলা বাজারে পোশাকের দাম সাধ্যের মধ্যে থাকায় প্রিয়জনের মুখে হাসি ফোটাতে পছন্দের পোশাকটি সেখান থেকে কিনছেন সাধারণ মানুষ। 

ফুটপাত থেকে মেয়ের জন্য জামা কিনছেন রিকশা চালক শফিক আলী।  তিনি বলেন, ওসব বড় দোকান (শোরুম) থেকে কেনার সাধ্য নেই তাই যাইও না। ছেলিটার জন্যি গেঞ্জির সেট কিনেছি একটা আড়াইশো টাকা দিয়ে। এখন মেয়েডার একটা জামা কিনবো তিনশোর মধ্যে। ওর মার জন্য দেখবো কিছু।”

এভাবে ঈদের শেষ মুহূর্তে কেনাকাটায় ব্যস্ত মিরপুরের উচ্চবিত্ত থেকে নিম্নবিত্ত মানুষ। শোরুম ও ফুটপাতে সবাই  তাদের সাধ্য অনুযায়ী কিনছেন নিজের এবং প্রিয়জনের জন্য ঈদের নতুন পোশাক ও প্রসাধনী।

সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় বার্তা ২৪ এ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *