মধ্যরাতে ট্রাকের চাকায় পিষ্ঠ দুই বাইক আরোহী
ডেস্ক রিপোর্ট: বর্তমান দ্রব্যমূল্যের উর্দ্ধগতিতে তৈরি পোশাকশিল্পের শ্রমিকদের নিন্মতম মজুরি ১২ হাজার ৫০০ টাকা মানতে নারাজ আশুলিয়ায় বিভিন্ন কারখানার শ্রমিকেরা।
মঙ্গলবার (৭ নভেম্বর) সন্ধ্যায় মজুরি বোর্ডে হওয়া সিন্ধান্তের বিষয়ে পোশাক শ্রমিক এবং শ্রমিক নেতার সাথে কথা বলে এমন প্রতিক্রিয়া জানতে পেরেছে বার্তা২৪.কম।
দৈনিন্দিন জীবন ব্যবস্থায় ১২ হাজার ৫০০ টাকা নিম্নতম মজুরি বর্তমান সময়ের জন্য সঠিক নয় বলে মনে করছেন অনেক শ্রমিক ও শ্রমিক নেতারা।
এ বিষয়ে পোশাক শ্রমিক কাউছার মৃর্ধা বার্তা২৪.কমকে বলেন, যখন ৮ হাজার টাকা বেতন ছিল তখন চালের কেজি ছিল ২৮ টাকা। আর এখন চাউলের কেজি ৭০ টাকা সেই হিসাবে বেতন কমপক্ষে সাড়ে ১৭ হাজার টাকা আসা উচিৎ। সাড়ে ১২ হাজার টাকা কোন হিসাবে করছে মানি না আমরা।
পোশাক শ্রমিক জাহিদুল বার্তা ২৪.কমকে বলেন, জিনিসপত্রের যে উর্ধ্বগতি আমাদের এ বেতনে চলবে না। বেতন আরেকটু বাড়াতে হবে। না হলে আমাদের নিজেদের সংসারই চলে না, বাড়িতে মা বাবাকে কীভাবে টাকা পাঠাবো। আমরা তো প্রতি মাসে দেনায় থাকি। যে বেতন বাড়িয়েছে তা দিয়ে আমাদের কোনো ভাবেই চলা সম্ভব না। এতে আমরা খুশি না আমাদের বেতন বাড়াতে হবে। আমাদের দাবি সরকারের কাছে আমরা যেন ভালো কিছু পাই আমাদের বেতন আরেকটু বাড়াতে হবে।
যে মজুরি নির্ধারণ করা হয়েছে তা শ্রমিকদের প্রতিফলিত হয়নি বলে মনে করছেন গার্মেন্টস শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক খাইরুল মামুন মিন্টু।
তিনি বার্তা ২৪.কমকে বলেন, বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে জানতে পারলাম যে গার্মেন্টস শ্রমিকদের নতুন মজুরি ১২ হাজার ৫০০ টাকা নির্ধারিত করা হয়ছে। মালিকদের যে প্রস্তাবনা রয়েছে সেটাকেই মেনে নেওয়া হয়েছে। আসলে বাস্তবতা হচ্ছে শ্রমিকদের যে মজুরি নির্ধারণ করা হয়েছে তাতে শ্রমিকদের আশা-আকাঙ্ক্ষা প্রতিফলিত হয়নি। বর্তমান বাজার দর জিনিস পত্রের যেভাবে দাম বাড়ছে তাতে ১২ হাজার ৫০০ টাকা খুবই অপ্রতুল। যেহতু আগামী ১৫ দিনের ভেতরে গার্মেন্টস শ্রমিকদের মজুরি পূনঃবিবেচনার জন্য সুযোগ রয়েছে তাই আমি এই মজুরি পূনঃবিবেচনার জন্য অনুরোধ করবো।
বাংলাদেশ পোশাক শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন ফেডারেশনের আশুলিয়া থানা কমিটির সাধারাণ সম্পাদক মো.কবির হোসেন বার্তা২৪.কমকে বলেন, আমরা বিভিন্নভাবে হিসাব নিকাশ করে দেখলাম শ্রমিকদের যে মজুরি দরকার সেই মজুরি যদি আমরা চাইতে যাই তাহলে প্রতিষ্ঠানগুলো চলে যেতে পারে। তাই আমরা সমন্বয় করে যাতে প্রতিষ্ঠানগুলো ও বাঁচে শ্রমিকরা ও বাঁচে এরকমই একটা মজুরি দাবি করে ছিলাম ২৩ হাজার টাকা। কয়েকদিন আন্দোলনের পরে আজকে যে মজুরিটা ঘোষনা করছে আমার মনে হয় ঠিক আছে। এই মজুরিতে শ্রমিকরা চলতে পারবে যদি দ্রব্যমূল্য ঊর্ধ্বগতি না হয়। বর্তমানে দ্রব্যমূল্য যা আছে আরো কমানো দরকার। বাসা ভাড়া যেন না বাড়ে। দ্রব্যমুল্য কমলে শ্রমিকরা চলতে পারবে।
প্রসঙ্গত, পোশাকশ্রমিকদের মজুরি নির্ধারণের জন্য গত এপ্রিলে সরকার মজুরি বোর্ড গঠন করে। গত ২২ অক্টোবর বোর্ডের সভায় শ্রমিকপক্ষের প্রতিনিধি ২০ হাজার ৩৯৩ টাকা ন্যূনতম মজুরি দাবি করে প্রস্তাব দেন। তার বিপরীতে মালিকপক্ষ প্রায় অর্ধেক বা ১০ হাজার ৪০০ টাকার মজুরি প্রস্তাব দেয়। মালিকপক্ষের এই মজুরি প্রস্তাবে ক্ষুব্ধ হয়ে শ্রমিকেরা পরদিন আন্দোলনে নামে। প্রথমে গাজীপুরে মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে আন্দোলন শুরু হলেও পরে তা আশুলিয়া–সাভারেও ছড়ায়
আজ দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় পোশাক খাতের জন্য গঠিত মজুরি বোর্ডের সভায় মালিকপক্ষ ১২ হাজার ৫০০ টাকার ন্যূনতম মজুরির প্রস্তাব করে। পরে মজুরি বোর্ড সেটিকেই চূড়ান্ত করে।
সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় বার্তা ২৪-এ।