সারাদেশ

বাংলাদেশিদের জন্য ১০ ক্যাটাগরিতে ভিসা নিষেধাজ্ঞা তুলে নিল ওমান

ডেস্ক রিপোর্ট: গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে কুরবানির পশুর হাট বসানোকে কেন্দ্র করে পুলিশ-জনতার সংঘর্ষ হয়েছে। এতে আহত হয়েছেন পুলিশসহ অন্তত ১২ জন। এ সময় পরিস্থিতি মোকাবেলায় তিন রাউণ্ড গুলিও বিনিময় করেছে পুলিশ। ঘটনায় নগদ টাকাসহ অন্তত ১৫ হতে ২০ টি গরু-ছাগল লুট হয়েছে বলে দাবি হাট ইজারাদার কর্তৃপক্ষের।

বুধবার (১২ জুন) বিকালে উপজেলার শান্তিরাম ইউনিয়নের মজুমদার বাজার সংলগ্ন পরিত্যক্ত জমিতে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ঘটনাস্থলে শতাধিক অতিরিক্ত দাঙ্গা পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। 

এছাড়া ইতোমধ্যে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন গাইবান্ধার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ( এ-সার্কেল) ধ্রুব জ্যোতির্ময়, সুন্দরগঞ্জ উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা (ইউএনও) তরিকুল ইসলাম, সুন্দরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহবুব আলম।

এ ঘটনায় একে অপরকে দোষারোপ করে ভিন্ন ভিন্ন মন্তব্য দিয়েছেন হাটে আসা ক্রেতা-বিক্রেতা, ইজারাদার ও পুলিশ। 

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী, পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, প্রতিদিনের হাট-বাজারের মতই কুরবানি উপলক্ষে বুধবারও সেখানে পশুর হাট বাসানো হয়। হাট চলাকালীনন সময়ে হঠাৎ পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে। পশুর হাট অবৈধভাবে বসানো হয়েছে জানিয়ে, বিভিন্ন মহলের অভিযোগের কথা তুলে

পন্ড করে দেয়ার চেষ্টা করে। পুলিশের এমন কাণ্ডে একপর্যায়ে হাটে থাকা উপস্থিত জনতা ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন। এর এক পর্যায়ে বিষয়টি নিয়েই উপস্থিত জনতার সাথে পুলিশের সংঘর্ষ বাঁধে। পরে পুলিশ পরিস্থিত নিয়ন্ত্রণে নিতে ৩ রাউণ্ড শটগানের গুলি বিনিময় করেন। সংঘর্ষে পুলিশসহ অন্তত ১২ জন আহত হয়। আহতদের উদ্ধার করে বিভিন্ন চিকিৎসা কেন্দ্রে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়।

প্রত্যক্ষদর্শী ও পশু ক্রেতা সুজন মিয়া বলেন, হাট চলাকালে বিকেলের দিকে হঠাৎ পুলিশ অন্যায়ভাবে হাটে প্রবেশ করে পশুরহাটটি পণ্ড করে দেয়। এতে করে বিক্রেতাদের বেশ কয়েকটি গরু হারিয়ে গিয়েছে এবং অনেকের টাকা পয়সা খোয়া গেছে। সুযোগ বুঝে অনেকেই এসব লুট করেছেন।

জানতে চাইলে হাট ইাজারাদার ওবাইদুল্লাহ বলেন, কোরবানি উপলক্ষে এখানে পশুরহাট বসানোর বিষয়ে কোনও বাধা-নিষেধ নাই, সে কারণে হাট বসানো হয়েছে। এরআগে “এখানে কেন পশুর হাট বসানো যাবে না, সেই মর্মে হাইকোর্টের একটি লিগ্যাল নোটিশ উপজেলা নিবার্হী অফিসারকে দেয়া হয়েছে। এরপরও পুলিশ বেআইনিভাবে হাটে এসে পশুরহাট পণ্ড করে দিয়েছে।

এসময় তিনি দাবি করেন, হাটে আসা অনেক ক্রেতা-বিক্রতার নগদ টাকা হারিয়ে গেছে। হাটে অন্তত ১৫ থেকে ২০ টি গরু লুট হয়েছে। সুযোগ বুঝে কে বা কাহারা এসব করেছেন।

সুন্দরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাহবুব আলম বলেন, ৯৯৯ জাতীয় জরুরি সেবা নম্বরে বিভিন্ন মহলের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ সেখানে কুরবানির পশুরহাট না বসানোর জন্য কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করেন। কিন্তু এ সময় উপস্থিত জনতা পুলিশের সরকারি কাজে বাধা প্রদান করেন। তাদের আক্রমণে আমাদের এসআই আবুল কালাম আজাদ, এএসআই মাসুদ রানা, কনস্টেবল মনির হোসেন ও সোলায়মান হোসেন আহত হয়েছেন। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ৩ রাউণ্ড শটগানের গুলি বিনিময় করেন। 

এ ব্যাপারে সুন্দরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তরিকুল ইসলাম মুঠোফোনে বার্তা২৪.কমকে বলেন, ওবাইদুল্লাহ নামের স্থানীয় এক ব্যক্তি বিধি মোতাবেক মজুমদার হাটটি ইজারা নেয়। কিন্তু সেটি গরুর হাট না, সাধারণ হাট। তিনি সেখানে গরুরহাট বসাতে চেয়ে আমার কাছে মৌখিক অনুমতি নিতে আসেন। হাটের পরিধি ছোট এবং সামগ্রিক বিষয় বিবেচনা করে তাকে হাট বসাতে বারণ করা হয়। 

পরে তিনি (ইজারাদার) কেন মজুমদার হাটের ইজারাদার কুরবানির পশুর হাট বসাতে পারবেন না, সে মর্মে হাইকোর্ট থেকে একটি লিগ্যাল নোটিশ ইউএনও বরাবর পাঠান। ইতোমধ্যে বিষয়টি নিয়ে গাইবান্ধা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পিপির মতামতের জন্য পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু মতামত না পাওয়ার আগেই সেখানে তিনি হাট বসান এবং পুলিশের সাথে জনতা এবং ইজারাদারদের এই অনাকাঙ্খিত ঘটনাটি ঘটে। 

এসময় এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় বার্তা ২৪-এ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *