নিহতদের পরিবারের পাশে দাঁড়াবে সরকার: প্রধানমন্ত্রী
ডেস্ক রিপোর্ট: নিহতদের পরিবারের পাশে দাঁড়াবে সরকার: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
আন্দোলনে নিহতদের পরিবারের পাশে দাঁড়াবে সরকার বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বুধবার (১৭ জুলাই) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে প্রধানমন্ত্রী একথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, আপনজন হারানোর কষ্ট আমার চেয়ে আর কে জানে। অহেতুক কতগুলো মূল্যবান জীবন ঝড়ে গেল। আমি এই হত্যাকাণ্ডের নিন্দা জানাই। যা ঘটেছে তা কাম্য ছিল না।
তিনি বলেন, কোটা আন্দোলনের শুরু থেকেই সরকার ধৈর্যের সঙ্গে বিষয়টি মোকবিলা করছে। কিছু মহল আন্দোলনের সুযোগ নিয়ে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হয়। ফলে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের আন্দোলন ঘিরে যেসব ঘটনা ঘটেছে তা খুবই বেদনাদায়ক ও দুঃখজনক। অহেতুক কতগুলো মূল্যবান জীবন ঝরে গেল। আপনজন হারানোর বেদনা যে কত কষ্টের তা আমার থেকে আর কে বেশি জানে।
সরকারপ্রধান বলেন, আদালতে শিক্ষার্থীরা ন্যায় বিচার পাবে। এছাড়া কোটা নিয়ে সংঘর্ষের ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্ত হবে।
জাবিতে আহতদের ঘুষি পুলিশের, ছবি তোলায় সাংবাদিককেও মারধর
ছবি: বার্তা২৪
সংবাদমাধ্যম প্রথম আলোর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি আব্দুল্লাহ আল মামুনকে মারধর করেছে পুলিশ। তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাকেন্দ্রে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
বুধবার (১৭ জুলাই) সন্ধ্যা ৭টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন কলাভবনের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বুধবার বিকেল সোয়া ৫টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনে অংশ নেওয়ায় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় পুলিশের সদস্যরা আন্দোলনকারীদের লক্ষ্য করে কাঁদানে গ্যাস, সাউন্ড গ্রেনেড ও রাবার বুলেট ছোড়েন। এতে শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হন। নতুন কলাভবনের সামনে থেকে সন্ধ্যা ৭টার দিকে আহত সাতজনকে বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গাড়িতে করে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাকেন্দ্রে নেওয়া হচ্ছিল। এ সময় গাড়িটি থামান পুলিশের সাত-আটজন সদস্য। এরপর তারা গাড়ির জানালা দিয়ে ভেতরে থাকা শিক্ষার্থীদের এলোপাতাড়ি ঘুষি ও শটগান দিয়ে আঘাত করেন।
কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, ওই সময় ঘটনাস্থল কলাভবনের কাছে দাঁড়িয়ে কোটা সংস্কারের আন্দোলন নিয়ে প্রতিবেদন করার জন্য তথ্য সংগ্রহ করছিলেন মামুন। শিক্ষার্থীদের মারধরের ঘটনা দেখতে পেয়ে সেখানে তিনি ছুটে যান। তিনি শিক্ষার্থীদের মারধর করার ভিডিও ধারণ করতে গেলে পুলিশ সদস্যরা তাকে বাধা দেন। মামুনসহ বেশ কয়েকজন সাংবাদিক নিজেদের পরিচয় দেওয়ার পরও পুলিশের এক সদস্য বুট দিয়ে মামুনের পা চেপে ধরেন। পরে তিনিসহ পুলিশের আরও সাত-আটজন সদস্য এলোপাতাড়ি ঘুষি ও শটগান দিয়ে মামুনকে আঘাত করেন। পরে অন্য সাংবাদিকেরা তাকে উদ্ধার করে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাকেন্দ্রে নিয়ে যান। সেখানে তাকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাকেন্দ্রে চিকিৎসাধীন আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘আমি দায়িত্ব পালন করছিলাম। হঠাৎ একটি গাড়ি থামিয়ে গাড়ির ভেতরে থাকা ব্যক্তিদের মারধর করতে দেখি কয়েকজন পুলিশ সদস্যকে। ওই গাড়িতে করে আগেও বেশ কয়েকবার আহত শিক্ষার্থীদের হাসপাতালে নিতে দেখেছি। মারধরের বিষয়টি দেখতে পেয়ে সেখানে গিয়ে ভিডিও করতে গেলে পুলিশ সদস্যরা বাধা দেন। পরিচয় দেওয়ার পরও মুঠোফোন ছিনিয়ে নিয়ে তারা ছুড়ে ফেলে দেন। একজন আমার পা বুট দিয়ে চেপে ধরেন। এ সময় আরও ছয়-সাতজন এলোপাতাড়ি কিল-ঘুষি ও শটগান দিয়ে মারধর করেন। এ ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাকেন্দ্রের প্রধান চিকিৎসা কর্মকর্তা মো. শামছুর রহমান বলেন, মামুনের মাথার একটি অংশ সামান্য কেটে গেছে। এ ছাড়া তিনি ঘাড়ে, পিঠে ও পায়ে আঘাত পেয়েছেন।
ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস ও ট্রাফিক, উত্তর বিভাগ) ও পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতি প্রাপ্ত মো. আব্দুল্লাহিল কাফী বলেন, ‘ঘটনাটি দুঃখজনক। এ বিষয়ে তদন্ত করে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
;
শাবিপ্রবির হল থেকে দেশীয় অস্ত্র ও মাদকদ্রব্য উদ্ধার সাধারণ শিক্ষার্থীদের
ছবি: বার্তা২৪
কোটা সংস্কারের দাবিতে সারাদেশের মতো সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে চলছে কোটা বিরোধী আন্দোলন। এরমধ্যে বুধবার (১৭জুলাই) বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের আবাসিক হলের কয়েকটি কক্ষ থেকে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা উদ্ধার করেছে আগ্নেয়াস্ত্র, দেশীয় অস্ত্র ও মদের বোতল।
বুধবার (১৭ জুলাই) ক্যাম্পাসে গায়েবানা জানাজার নামাজ আদায় শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহপরাণ হলের বিভিন্ন কক্ষে তল্লাশি চালায় কোটা আন্দোলনকারীরা। পরে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় উদ্ধারকৃত অস্ত্র নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে কোটা আন্দোলনের শাবিপ্রবির সমন্বয়ক আসাদুল্লাহ আল গালিব বলেন, দেড় শতাধিক মদের বোতল, ১টি শর্টগান, ১টি রিভলবার, ৩টি চেইন, ১০০ স্টিলের পাইপ, ১০টি রামদা, ১২টি চাকু, ৩টি হাতুড়ি ও কিছু গাঁজা পেয়েছি। শুধু শাহপরাণ হলের বিভিন্ন কক্ষ থেকে এসব আমরা জব্দ করেছি। সন্ধ্যা হয়ে যাওয়ার কারণে আর তল্লাশি চালাতে পারিনি। বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) আমরা বাকি হলগুলোতে তল্লাশি করব।
তিনি আরও বলেন, আজ থেকে শাবিকে ছাত্র রাজনীতিমুক্ত ঘোষণা করলাম। আর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রতি জোর দাবি জানাচ্ছি, আগামীতে যাতে রাজনৈতিক পরিচয়ে বা শক্তির জোরে হলের সিট বরাদ্দ না দিয়ে মেধা যাচাইয়ের ভিত্তিতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের আসন দেওয়া হয়।
গালিব বলেন, যাদের কক্ষে এসব জিনিস পেয়েছি তাদের আমরা শনাক্ত করতে পারিনি। তবে প্রশাসনের প্রতি দাবি, তারা এদের চিহ্নিত করে তাদের ছাত্রত্ব আজীবনের জন্য বাতিল করতে হবে।
সংবাদ সম্মেলন শেষে মাদকদ্রব্য ও অস্ত্রগুলো বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে হস্তান্তর করেন আন্দোলনকারীরা।
;
কক্সবাজার জেলা আ.লীগ কার্যালয়ের নিচে বোমা সদৃশ বস্তু
ছবি: বার্তা২৪
কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের নিচে পড়ে আছে দুটি বোমা সদৃশ বস্তু। পরিচ্ছন্নতা কর্মী আবর্জনা পরিষ্কার করতে গিয়ে বোমা সদৃশ বস্তু দেখতে পান। পুলিশকে খবর দিলে ঘটনাস্থল পুলিশের একটি টিম হাজির হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৭ জুলাই) সন্ধ্যায় শহরের লালদিঘির পাড়ে অবস্থিত কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের পাশে লালদিঘি পুকুরের মাটিতে পড়ে আছে এ বোমা সদৃশ বস্তু।
প্রত্যক্ষদর্শী সেই পরিচ্ছন্নতা কর্মী শামশুল আলম বলেন, ‘মাগরিবের আগে যখন ময়লা আবর্জনা পরিষ্কার করতে যাই তখন কালো বোমার মতো বস্তু দেখে আমি আওয়ামী লীগ অফিসে খবর দিই।’
কক্সবাজার জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মারুফ আদনান বলেন, ‘গতকাল আমাদের পার্টি অফিসে হামলা হয়েছে। লাঠিসোটা নিয়ে ভাঙচুর করা হয়েছে। কালকে হয়তো এই বোমা সদৃশ বস্তুগুলো ফেলে গেছে। আমরা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে খবর দিয়েছি।’
বিষয়টি নিশ্চিত করে কক্সবাজার সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রকিবুজ্জামান বলেন, ‘খবর পেয়ে কক্সবাজার সদর মডেল থানার একটি টিম ঘটনাস্থলে গেছে।’
;
শাবিপ্রবির দুই ছাত্রলীগ নেতাসহ গুরুতর আহত ৩
ছবি: সংগৃহীত
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) হল ত্যাগের সময় ছাত্রলীগের দুই নেতাসহ আন্দোলনকারী ১ শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হয়েছেন।
বুধবার (১৭ জুলাই) বিকালে বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন নয়াবাজার এলাকা ও দুপুরে বর্ডার গার্ড স্কুলের সামনে পৃথকভাবে হামলার শিকার হয়েছেন তারা।
আহতরা হলেন- শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সাজেদুল ইসলাম সাজিদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক উজ্জ্বল দাস চিনু ও বাংলা বিভাগের সাধারণ শিক্ষার্থী মাহমুদুর রহমান মামুন।
জানা যায়, বুধবার (১৭ জুলাই) সকালে কোটা সংস্কার আন্দোলনের বর্তমান পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার বিষয়টি বিবেচনায় শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ ও বিকাল ৩টার মধ্যে হল ত্যাগ করার নির্দেশনা দেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এতে বিকেলে হল ত্যাগের সময় বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন নয়াবাজার এলাকায় দুর্বৃত্তদের হামলার শিকার হন ছাত্রলীগ নেতা সাজিদ এবং উজ্জ্বল। এরআগে আখালিয়া এলাকায় দুর্বৃত্তদের হামলার শিকার হন সাধারণ শিক্ষার্থী মামুন। তবে কে বা কারা হামলা করেছেন সে ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
হামলার বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সজিবুর রহমান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে বিকাল ৩টার ভিতর হল ছাড়তে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল। সে অনুযায়ী তারা হল ত্যাগ করে যাওয়ার পথে দুই হলের মাঝখানে সাজেদুল ইসলাম সাজিদ ও উজ্জ্বল দাস চিনুকে সাধারণ শিক্ষার্থী নামধারী শিবির কর্মীরা হামলা করে। পরে তাদের গুরুতর আহত অবস্থায় মেডিকেলে নেওয়া হয়। এতে সাজিদ নিবিড় পর্যবেক্ষণে রয়েছে।
;
সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় বার্তা ২৪-এ।