এক সপ্তাহের মধ্যে অপরাধ ট্রাইবুনাল পুনর্গঠন: চিফ প্রসিকিউটর
ডেস্ক রিপোর্ট: শিল্পাঞ্চল আশুলিয়ায় সকাল থেকে বেশিরভাগ তৈরি পোশাক কারখানায় কাজে যোগ দিয়েছেন শ্রমিকরা। তবে আজও বন্ধ রয়েছে ২০টি শিল্প কারখানা। এরমধ্যে সাধারণ ছুটি দুইটিতে, আর শ্রম আইনের ১৩ (১) ধারামতে ছুটি রয়েছে ১৮টিতে।
রোববার (১৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে দিকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন শিল্প পুলিশ-১ এর পুলিশ সুপার সারোয়ার আলম।
এর আগে, সকাল থেকে বৃষ্টি উপেক্ষা করে চালু থাকা কারখানাগুলোতে শ্রমিকদের নির্ধারিত সময়ে কাজে যোগ দিতে দেখা যায়।
এদিকে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে অতিরিক্ত নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। বাড়ানো হয়েছে নজরদারি।
আশুলিয়ার বাইপাইল-আব্দুল্লাহপুর সড়কের নরসিংহপুর এলাকায় বিভিন্ন কারখানার সামনে সেনাবাহিনী, এপিবিএন ও পুলিশ সদস্যরা অবস্থান নিয়েছেন। সড়কে টহল দিচ্ছে সেনাবাহিনী, র্যাব, বিজিবি ও পুলিশ সদস্যরা।
আশুলিয়া শিল্পাঞ্চল পুলিশ-১ জানায়, বন্ধ কারখানাগুলোর অধিকাংশ তৈরি পোশাক কারখানা। বিভিন্ন দাবি-দাওয়া নিয়ে শ্রমিকদের কর্ম-বিরতিসহ বিভিন্ন কারণে এই কারখানাগুলো বন্ধ রয়েছে। শ্রম আইন-২০০৬ এর ১৩ (১) ধারা অনুযায়ী ১৮টি কারখানা বন্ধ রয়েছে। এর বাইরে দুইটি কারখানা সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে কারখানা কর্তৃপক্ষ।
বাংলাদেশ গার্মেন্টস ও সোয়েটার্স শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের আইন বিষয়ক সম্পাদক খায়রুল মামুন মিন্টু বলেন, পরিবেশ বলা যায় অনেকটাই শান্ত রয়েছে আজ। বেশিরভাগ কারখানায় কাজ চলছে। সবমিলিয়ে আজ পরিস্থিতি ভালো আছে।
শিল্প পুলিশ-১ এর পুলিশ সুপার (এসপি) সারোয়ার আলম বলেন, সকাল থেকে কারখানাগুলো চলছে। সামান্য কিছু কারখানা বিভিন্ন দাবি দাওয়া সমাধান না হওয়া বন্ধ রয়েছে ১৩ (১) ধারায়। আমরা আশা করছি এগুলোও খুলে যাবে। এই ধারায় ১৮টি কারখানা বন্ধ আছে। আর দুইটি কারখানায় সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। মোট ২০টি বন্ধ আছে। এখানে মোট কারখানা ১ হাজার ৮৬৩টি। অধিকাংশ কারখানায় কাজ চলছে। যেগুলোতে সমস্যা রয়েছে, আমরা চেষ্টা করছি উভয় পক্ষকে বসিয়ে আলাপ আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধান করার। আভ্যন্তরীণ বিষয় আভ্যন্তরীণভাবেই মীমাংসার চেষ্টা চলছে। কোনো ব্যারিকেড, বিক্ষোভ নেই কোথাও, সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। সবমিলিয়ে পরিস্থিতির কোনো অবনতির খবর নেই।
এদিকে চলমান শ্রমিক অসন্তোষ নিরসনের প্রেক্ষিতে শ্রম সংক্রান্ত অভিযোগ পর্যবেক্ষণ ও পর্যালোচনা কমিটির সদস্যরা সকাল ১১ টার দিকে আশুলিয়ার অনন্ত গ্রুপের কারখানা পরিদর্শন করেন। তারা ওই কারখানার কর্মকর্তাদের সঙ্গে সামগ্রিক বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন।
পরিদর্শনকালে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ও শ্রম সংক্রান্ত অভিযোগ পর্যবেক্ষণ ও পর্যালোচনা কমিটির আহ্বায়ক মো. সবুর হোসেন বলেন, গত বুধবার ১১ সদস্য বিশিষ্ট এ কমিটি গঠন করা হয়। পরদিন কমিটির কার্যপরিধি ও কার্য পরিচালনার বিষয় নিয়ে সভা হয়। ওই সভার সিদ্ধান্ত অনুসারে শিল্পাঞ্চলের উদ্ভূত পরিস্থিতি নিরসনের লক্ষ্যে আশুলিয়ায় এসেছি। কারখানার মালিক, শ্রমিকসহ সংশ্লিষ্টদের দাবি, আপত্তি, অভিযোগ আমরা জানতে চাই। এগুলো জানানোর জন্য আমাদের হটলাইন ১৬৩৫৭, হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ আছে, ই-মেইল আইডি আছে, ডাকযোগেও জানানো যাবে এ সকল বিষয়ে সকলকে জানানোর জন্য আশুলিয়ায় এসেছি।
তিনি বলেন, আমরা চাই তাদের ন্যায্য ও যৌক্তিক দাবিদাওয়া জেনে সরকারের কাছে তুলে ধরতে। যদি সেগুলো তাৎক্ষণিক পূরণ করার সুযোগ থাকে, তবে সেটিও আমরা সুপারিশ করবো। যদি সময় লাগে তবে সেটিও সরকারকে জানাবো। আমাদের প্রত্যাশা কারখানাগুলোতে কাজ চলবে, শ্রমিকেরা কাজ করবেন। আমরা আশাবাদী, আজ থেকেই সকল কারখানা খুলে যাবে। ধীরে ধীরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাবে।
এর আগে, শনিবার সাভার ও আশুলিয়া শিল্পাঞ্চলে অন্তত ৩৯ কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে মালিকপক্ষ এছাড়া আরও ১৩টি কারখানায় সাধারণ ছুটি ছিল।
সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় বার্তা ২৪-এ।