তীব্র শীতে বিপাকে নিম্ন আয়ের মানুষ
ডেস্ক রিপোর্ট: তীব্র শীতে বিপাকে নিম্ন আয়ের মানুষ
ছবি: বার্তা ২৪.কম
উত্তরের জেলা নীলফামারী হিমালয়ের পাদদেশে হওয়ায় এ জেলায় শীতের তীব্রতা বেশি থাকে। ঘন কুয়াশা আর শীতের তীব্রতার কারণে বিপাকে পড়েছে এ অঞ্চলের নিম্ন আয়ের মানুষ। ঝিরিঝিরি কুয়াশায় ভিজে গেছে শহরের বুক। এসব নিম্ন আয়ের মানুষেরা শীতের সময় জেলা প্রশাসনসহ বিভিন্ন সংগঠনের দেওয়া শীতবস্ত্রে শীত নিবারণের চেষ্টা করে থাকেন। তবে এখন পর্যন্ত তাদের কেউই কোনো শীতবস্ত্র পায়নি বলে জানান তারা। এদিকে প্রতিদিন দুপুরের আগে দেখা মিলেনা সূর্যের। কিছু সময়ের জন্য দেখা দিলেও রোদের তেমন প্রভাব নেই৷
শুক্রবার (১৫ ডিসেম্বর) তীব্র শীতের কারণে শহরে মানুষের উপস্থিতি কম দেখা যায়। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে বের হয়না কেউ। তীব্র ঠাণ্ডার প্রকোপে শিশু ও বয়স্করা ঠাণ্ডাজনিত রোগসহ ডায়ারিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে। জেলা ও উপজেলার হাসপাতালে বাড়ছে রোগীর সংখ্যা।
সৈয়দপুর আবহাওয়া অফিসের তথ্যমতে, তাপমাত্রার পারদ নেমেছে ১৩ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসে।
রিকশা চালক রফিকুল ইসলাম বলেন, ঠাণ্ডার কারণে এখনো কোন ভাড়া ধরতে পারিনাই বাবা। আমার দুই মেয়ে আর তোমার চাচিক খাওয়ার লাগে, কামাই না হইলে কি খাওয়াবো। ঠাণ্ডার কারণে মানুষ নাই রিকশায় উঠতেছে না, জমা টাকা দিব কিভাবে বাসায় চাল নিব কিভাবে।
ফুটপাতের ব্যবসায়ী জিয়ারুল বলেন, সকালে মানুষ শীতের কারণে বের হতে পারেনি। সকালে দোকান দিয়ে বসে আছি মানুষজন নাই কাপড় কে কিনবে।
ভ্যান চালক আফতাব বলেন, আজকে খুব শীত। বাসায় তেমন শীতের কাপড় নাই। খুব ঠাণ্ডা লাগতেছে কষ্টে আছি। কুয়াশা আর শীতের কারণে শরীরটা একটু জ্বর জ্বর লাগতেছে। সকাল থেকে মানুষ নাই এখনো ভাড়াও ধরতে পাইনাই।
সৈয়দপুর আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা লোকমান হাকিম বলেন, আজকে তাপমাত্রার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৩ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আগামীতে তাপমাত্রা কমে শীতের তীব্রতা আরও বাড়বে তবে বেলা বাড়ার সাথে সাথে কুয়াশা কেটে যাবে৷
নীলফামারীর সিভিল সার্জন ডা. হাসিবুর রহমান জানান, জেলা ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে শীতজনিত নিউমোনিয়ায় বেশি শিশু ভর্তি হচ্ছেন পাশাপাশি বয়স্করা শীত জনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে ।
জেলা প্রশাসক পঙ্কজ ঘোস জানায়, শীত মোকাবিলায় পর্যাপ্তে সরকারি সহায়তা প্রস্তুত রয়েছে। শীতবস্ত্র হিসেবে জেলার ৬ উপজেলা ও চার পৌরসভায় ২৫ হাজার কম্বল পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। এখনও প্রায় ৫ হাজার মজুদ আছে। প্রয়োজনে আরও চাহিদা দেওয়া হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের শ্রমমন্ত্রীর সঙ্গে রাষ্ট্রদূতের বৈঠক
ছবি: সংগৃহীত
ওয়াশিংটন ডিসিতে যুক্তরাষ্ট্রের ভারপ্রাপ্ত শ্রমমন্ত্রী জুলি সু -এর সাথে বৈঠক করেছেন যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ ইমরান। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (১৪ ডিসেম্বর) বিকেলে ইউএস ডিপার্টমেন্ট অব লেবার আয়োজিত এক অনুষ্ঠানের সাইডলাইনে এ একান্ত বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে বিভিন্ন দ্বিপাক্ষিক বিষয়ে আলোচনা করেন।
বৈঠকে রাষ্ট্রদূত এবং ভারপ্রাপ্ত মার্কিন শ্রমমন্ত্রী বাংলাদেশের বর্তমান শ্রম পরিস্থিতি এবং শ্রমিকদের অধিকার রক্ষায় সরকারের গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা করেন। তারা বাংলাদেশের শ্রম মান নিয়ে দুই সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে সম্পৃক্ত থাকা এবং সংশ্লিষ্ট অংশীদারদের উদ্বেগ নিরসনের ব্যাপারে একমত হন।
একই সময়ে রাষ্ট্রদূত ইমরান ইউএস ডিপার্টমেন্ট অব লেবার-এর ডেপুটি আন্ডার সেক্রেটারি মিজ থিয়া লি’র সাথেও সাক্ষাত করেছেন। বৈঠক দুটিতে ওয়াশিংটন ডিসিস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের মিনিস্টার (কমার্স) সেলিম রেজাও উপস্থিত ছিলেন।
;
বুদ্ধিজীবী দিবসে অসহায় মানুষের মাঝে কম্বল বিতরণ
অসহায় মানুষের মাঝে কম্বল বিতরণ
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে নরসিংদীতে ৫ শতাধিক অসহায় মানুষের মাঝে কম্বল বিতরণ করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৪ ডিসেম্বর) রাতে নরসিংদী শহরের রেলওয়ে স্টেশন ও পৌরসভা মোড়ে এসব কম্বল বিতরণ করেন জেলা প্রশাসক ড. বদিউল আলম। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সহায়তায় এসব কম্বল বিতরণ করা হয়।
এসময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোস্তফা মনোয়ার, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আসমা সুলতানা নাসরিন, সহকারী কমিশনার (ভূমি) মেহেদী হাসান কাউছারসহ অন্যরা।
জেলা প্রশাসক বলেন, বর্তমান সরকার সবসময় অসহায় মানুষের জন্য মানবিক দৃষ্টিভঙ্গিতে তাকিয়েছেন। এছাড়া সরকারের স্থানীয় সরকারের অংশ হিসেবে জেলা প্রশাসক সবসময় অসহায় মানুষের পাশে ছিলেন ভবিষ্যতেও থাকবেন। এরই অংশ হিসেবে আজ অসহায় মানুষের জন্য এই কম্বল বিতরণ করা হচ্ছে।
;
টনিক দেয়া ড্রাগনে সয়লাব বরিশালের ফলের বাজার
ড্রাগন
অধিক লাভের আশায় স্বাদ ও পুষ্টিগুনে ভরপুর ফল ড্রাগন এখন পরিণত হয়েছে বিষে। দেশের প্রায় সব স্থানে এই ফলটির চাষ হলেও বরিশালের ফলের আড়তে বেশিরভাগ ড্রাগন ফল আসে রাজধানী থেকে এবং এগুলো উৎপাদন হয় দেশের বিভিন্ন সীমান্তবর্তী এলাকায়। তবে প্রাকৃতিক উপায়ে উৎপাদিত কোন ড্রাগন ফল খুঁজে পওয়া যায়নি বরিশালের ফলের আড়তে।
দামে কম হলেও সব স্থানে বিক্রি হচ্ছে বিষাক্ত টনিক ব্যবহার করে উৎপাদন করা ১ থেকে দেড় কেজি ওজনের এক একটি ড্রাগন ফল। ক্রেতারা না চেনায় আর দামে সস্তা হওয়ায় পকেটের টাকা দিয়ে এখন বিষ কিনে খাচ্ছে বরিশালের ক্রেতারা। বিক্রেতাদের দাবি চাইলেও বিক্রি করতে পারছেন না প্রাকৃতিক উপায়ে উৎপাদিত ড্রাগন ফল। কারণ লাভ বেশি হওয়ায় ও না বোঝা ক্রেতাদের প্রাকৃতিকের থেকে টনিক দেওয়া ড্রাগনের প্রতি আকর্ষণ বেশি থাকায় এখন তারাও বিক্রি করছেন।
চিকিৎসকদের মতে স্বাভাবিক প্রক্রিয়ার বাইরে কৃত্রিমভাবে উৎপাদিত যেকোনো পণ্যেরই স্বাস্থ্য ঝুঁকি থাকে। আর টনিক ব্যবহৃত ড্রাগন মারাত্মক ক্ষতিকর।
কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট জানায়, সম্প্রতি ড্রাগন চাষে টনিক ব্যবহারের বিষয়টি জানতে পেরেছেন তারা। সীমান্ত এলাকার কিছু কৃষক এই টনিক ব্যবহার করছে। এরইমধ্যে ড্রাগন ফলে যে টনিক ব্যবহার করা হচ্ছে সেগুলোর নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। এগুলোর রাসায়নিক পরীক্ষা করে দেখা হবে।
টনিক হচ্ছে এক ধরণের হরমোন। এটা গাছে ব্যবহার করলে তার বৃদ্ধি দ্রুত হয়। এই পদ্ধতির ব্যবহার বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট উৎসাহিত করে না। ড্রাগন ফল উৎপাদনের জন্য যে টনিক ব্যবহার করা হচ্ছে তার নাম হচ্ছে জিএ৩ বা জিবারেলিক এসিড থ্রি। এটি মূলত এক ধরণের হরমোন। তবে এটি টনিক নামেই ভারত থেকে বাংলাদেশে আসছে। ‘এটি মূলত গ্রোথ হরমোন। তবে টনিক হিসেবে যেটি ব্যবহার করা হয় সেটিতে হরমোন ছাড়াও এর সঙ্গে আরও কিছু উপাদানও মিশ্রিত করা হয়। এগুলো খুব র্যাপিড এক্সপ্যানশন করে ফ্রুটসের। অনেকগুলো বাগানেই এগুলো ব্যবহার করা হচ্ছে।
সাধারণ ও প্রাকৃতিকভাবে উৎপাদিত ড্রাগন ফলের ওজন আড়াই শ’ থেকে সর্বোচ্চ তিন শ’ গ্রাম পর্যন্ত হয়ে থাকে। আর টনিক ব্যবহার করে উৎপাদিত ড্রাগন ফলের ওজন তিন শ’ গ্রাম থেকে শুরু করে নয় শ’ গ্রাম পর্যন্ত হয়ে থাকে। টনিক ব্যবহার করে উৎপাদিত ফলের বাহ্যিক আকার উদ্ভট হয়ে যায়। এই ড্রাগন ফলের রঙ পার্পেল বা লাল রঙ থাকে না। সহজ করে বলতে গেলে, পুরো ফলটি আর এক রঙা থাকে না। পার্পেল বা লাল রঙের সঙ্গে সবুজ রঙের মিশ্রণ থাকে। এক পাশে বা কমপক্ষে এক তৃতীয়াংশ সবুজ থাকে। কারণ পুরো এক রঙের হওয়া পর্যন্ত গাছে রাখা হলে সেটি পঁচে যায়। আর এক সাথে চার-পাঁচদিনের মধ্যে বিক্রি না হলে পুরোটাই হলুদ রঙের হয়ে যাবে। টনিক ব্যবহার করে উৎপাদিত ড্রাগন ফল হবে পানসে। মিষ্টি একেবারেই হবে না। এছাড়া স্বাদেও বেশ ভিন্ন হবে।
বরিশাল নগরীর ফল বিক্রেতা আলম মাজির সঙ্গে বার্তা২৪.কমের কথা হলে জানায়, বরিশালের কোথাও এখন টনিক ছাড়া ড্রাগন পাওয়া যায় না। টনিক দেওয়া ড্রাগনের একটির ওজনই প্রায় কেজির কাছাকাছি বা তার থেকে বেশিও হয়ে থাকে। ২০০ থেকে ২৫০ টাকা কেজি দরে এগুলো বিক্রি হয়। আর প্রকৃতিক উপায়ে উৎপদিত ড্রাগনের একটির ওজন হবে সর্বোচ্চ ৩০০ গ্রাম এবং দামও হবে কমপক্ষে ৪০০ টাকা কেজি। বেশিরভাগ ক্রেতারাই আসল ও নকলের পার্থক্য বোঝে না। দাম কম হলেই কিনে নেয়। অনেক ক্ষেত্রে প্রাকৃতিক না নিয়ে বেছে নেয় কম দামের টনিক ব্যবহৃত ড্রাগন ফল।
টনিক ব্যবহৃত ড্রাগনের স্বাস্থ্য ঝুঁকির বিষয়ে শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. সাইফুল ইসলাম বার্তা২৪.কম-কে বলেন, স্বাভাবিক প্রক্রিয়ার বাইরে কৃত্রিমভাবে উৎপাদিত যেকোনো পণ্যেরই স্বাস্থ্যঝুঁকি থাকে। যদিও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বিভিন্ন রাসায়নিক নিরাপদ উপায়ে ব্যবহারের মাত্রা ঠিক করে দেয়। কিন্তু বাংলাদেশে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এটা মানা হয় না। বেশি পরিমাণে হরমোন বা রাসায়নিক ব্যবহার করা হলে তা স্বাস্থ্যের জন্য হুমকিস্বরূপ। অতি দ্রুত এমন ফলের উৎপাদন বিক্রয় ও বাজারজাত করণ বন্ধে পদক্ষেপ গ্রহণ প্রযোজন বলে জানান তিনি।
;
শীত উপেক্ষা করে ট্রাকে ঘরে ফিরছে মানুষ
ছবি: বার্তা২৪.কম
দুই দিনের ছুটি পেয়ে রাজধানী ঢাকা ছাড়ছে পোশাক শ্রমিকরা। ফলে মহাসড়কে যানবাহন ও যাত্রীদের চাপ বাড়ছে। শীতকে উপেক্ষা করে অনেকে বাস না পেয়ে ঝুঁকি নিয়ে ট্রাক-পিকআপে গন্তব্যে যাচ্ছেন।
বৃহস্পতিবার (১৪ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ১১টার দিকে বাইপাইল এলাকায় দেখা যায়, ট্রাকে যাত্রী উঠাচ্ছেন চালকরা। ট্রাক-পিকআপে দাঁড়িয়ে শত শত কিলোমিটার রাস্তা পারি দিবেন তারা। প্রিয়জনদের কাছে যাওয়ার আনন্দ যেন হার মানিয়েছে এই কষ্টকে।
জলিল নামে এক পোশাক শ্রমিক বার্তা২৪.কমকে বলেন, দুই দিনের ছুটি পেয়ে সিরাজগঞ্জ যাচ্ছি। অনেকক্ষণ যাবৎ দাঁড়িয়ে থেকেও গাড়ি পাইনি। যে গাড়িগুলো আসছে তাতে ভাড়া অতিরিক্ত হলেও সিট খালি নাই, তাই ট্রাকে উঠেছি।
মহাসড়কের বাইপাইল নবীনগর এলাকায় সকাল থেকেই যাত্রীর চাপ থাকলেও বড় ধরনের যানজটের খবর পাওয়া যায়নি। তবে সন্ধ্যার পর থেকে অনেকটাই বেড়েছে যাত্রীদের চাপ।
সাভার হাইওয়ে থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ আবুল হাসান বার্তা২৪.কমকে বলেন, গার্মেন্টস শ্রমিকদের ছুটির কারণে সন্ধ্যার পর থেকে সড়কে যাত্রীর চাপ বেশি, তবে বড় ধরনের কোনো জ্যাম নেই সড়কে। যানবাহন ও ঘরে ফেরা মানুষের ভোগান্তি কমাতে আমরা সর্বোচ্চ সচেষ্ট রয়েছি। আমাদের পাশাপাশি জেলা পুলিশও কাজ করছে।
;
সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় বার্তা ২৪-এ।