বিনোদন

ঋত্বিক পদক পেলেন ভারত-বাংলার ৪ চলচ্চিত্রকার

ডেস্ক রিপোর্টঃ একাদশ ঋত্বিক চলচ্চিত্র উৎসব ও সম্মাননা পদক পেলেন ভারত ও বাংলাদেশের চার চলচ্চিত্রকার।

শনিবার (৪ নভেম্বর) বাঙালি চলচ্চিত্রকার ঋত্বিক কুমার ঘটকের ৯৮তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে তাদের এ সম্মাননা দেয়া হয়।

ঋত্বিক ঘটক ফিল্ম সোসাইটি রাজশাহী প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও তিন দিনব্যাপী (৪-৬ নভেম্বর) এ উৎসবের আয়োজন করে। এ উৎসবের মধ্য দিয়ে একাদশ ঋত্বিক সম্মাননা পদক ও চলচ্চিত্র উৎসব ২০২৩’র পর্দা উঠল।

এদিন বিকেল সাড়ে চারটায় রাজশাহী নগরীর মিয়াপাড়াস্থ ঋত্বিকের পিতৃ-ভিটা (রাজশাহী হোমিওপ্যাথি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল) প্রাঙ্গনে ঋত্বিক সম্মাননা পদক প্রদান ও ঋত্বিক আলোচনার মধ্যে দিয়ে তিন দিনব্যাপী উৎসব শুরু হয়।

জানা গেছে, ২০১১ সাল থেকে চলচ্চিত্র ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনে বিশেষ অবদানের জন্য চলচ্চিত্র ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বদের ঋত্বিক সম্মাননা পদক প্রদান করে ঋত্বিক ঘটক ফিল্ম সোসাইটি-রাজশাহী। চলচ্চিত্র নির্মাতা তারেক মাসুদ (মরণোত্তর), চলচ্চিত্রকার জহির রায়হান (মরণোত্তর), উপমহাদেশের প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক হাসান আজিজুল হক, চলচ্চিত্রকার বুদ্ধদেব দাশগুপ্তসহ (ভারত) দেশ-বিদেশের ৩২ জন সম্মানিত ব্যক্তিত্বকে ‘ঋত্বিক সম্মাননা পদক’ প্রদান করা হয়।

উৎসবে এ বছর ঋত্বিক সম্মাননা পদক-২০২৩ পেলেন, বাংলাদেশি চলচ্চিত্র পরিচালক, সিনেমেট্রোগ্রাফার, শিক্ষক ও সংগঠক রাকিবুল হাসান, চলচ্চিত্র পরিচালক ও শিক্ষক শামীম আখতার, ভারতীয় চলচ্চিত্র এ্যকটিভিটিস্ট অমিতাভ ঘোষ ও চলচ্চিত্র নির্মাতা, ক্রিটিক, এ্যকটিভিটিস্ট, ডকুমেন্টারি ফিল্মমেকার মধু জানার্দান।

ঋত্বিক ঘটক ফিল্ম সোসাইটি রাজশাহীর সভাপতি ডা. এফএমএ জাহিদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, কবি ও শিক্ষাবিদ অধ্যাপক রুহুল আমিন প্রামানিক।

বক্তারা বলেন, বাংলা চলচ্চিত্র অঙ্গনে এক বিরল প্রতিভার নাম ‘ঋত্বিক কুমার ঘটক’। তিনি এক উজ্জ্বল নক্ষত্র। তিনি কবিতা, প্রবন্ধ, গল্প, গান ও নাটক রচনা করেছেন। নাটকে অভিনয় করেছেন এবং নির্দেশনাও দিয়েছেন। ১৯৫০ সালের দিকে এ প্রতিভাধর চলচ্চিত্র অঙ্গনে পর্দাপন করেন। তার প্রথম সিনেমা ‘নাগরিক’।

তারা বলেন, ১৯২৫ সালের ৪ নভেম্বর ঢাকায় জন্ম নেন এই আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন বাঙালি চলচ্চিত্রকার। রাজশাহীর কলেজিয়েট স্কুল ও রাজশাহী কলেজে পড়াশোনা করেন। রাজশাহীতে স্থায়ীভাবে বসবাস করতেন তার পরিবারসহ। রাজশাহীর আলুপট্টি, কুমারপাড়া, ঘোড়ামারা, পদ্মার পাড় ছিল তার দুরান্তপনার স্থান।

মিয়াপাড়াস্থ ঋত্বিকের পিতৃভিটা সম্পর্কে বলতে গিয়ে বক্তারা বলেন, পঞ্চকবির কারোর বসত ভিটারই অস্তিত্ব সেইভাবে নেই। তার মানে এই নয় যে নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। মানুষের গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। মাত্র বাকি ছিল ঋত্বিক কুমার ঘটকের পিতৃ ভিটা বা বসত ভিটাটুকু। যা বাঁচানোর অর্থ এই উপমহাদেশের প্রখ্যাত চলচ্চিত্রকার ঋত্বিক কুমারের শৈশব-কৈশর কাটানোর স্মৃতিটুকু বাঁচানো।

সংস্কৃতি মন্ত্রনালয় থেকে ঋত্বিক ঘটকের বসতভিটা সংরক্ষণের জন্য তৎকালীন জেলা প্রশাসককে অবগত করেছে। স্বয়ং সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী ও শিল্পকলা একাডেমির পরিচালক ঋত্বিকের বসত ভিটা পরিদর্শন করেছেন। তবুও এখন পর্যন্ত ঋত্বিক ঘটকের পিতৃক বসতভিটাটুকু সংরক্ষণে কোনো কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি বলে উল্লেখ করে অবিলম্বে ঋত্বিক কুমার ঘটকের পিতৃক বসতভিটাটুকু হেরিটেজ হিসেবে ঘোষণা করে সংরক্ষণের জন্য কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করার দাবি জানান বক্তারা।

এর আগে একাদশ ঋত্বিক সম্মাননা পদক ও চলচ্চিত্র উৎসব ২০২৩ স্মরণিকার মোড়ক উন্মোচন করা হয়।

আগামীকাল (৫ নভেম্বর) সন্ধ্য ৬টা থেকে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত নগরীর পদ্মার তীরবর্তী পাঠানপাড়া এলাকায় লালনশাহ মুক্তমঞ্চে ‘একাদশ ঋত্বিক সম্মাননা পদক ও চলচ্চিত্র উৎসব ২০২৩’ এ মনোনীত চলচ্চিত্র সূমহের মধ্যে অপারজিতা সংগীতার ‘ছাড়পত্র’, কামরুজামানের ‘সবুজ ক্রীতদাস’, এএইচ রাজীবের ‘পাওয়ার অফ উইমেন’, সুপিন বর্মনের ‘মূল্যহীন মানুষ’, ফাহিম ইসলামের ‘প্রমদ’, কামরুল আহসান লেলিনের ‘ঘ্রাণ’ চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হবে।

পরদিন উৎসবের (৬ নভেম্বর) সন্ধ্য ৬টা থেকে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত নগরীর পদ্মার তীরবর্তী পাঠানপাড়াস্থ লালনশাহ মুক্তমঞ্চে ‘একাদশ ঋত্বিক সম্মাননা পদক ও চলচ্চিত্র উৎসব ২০২৩’ এ মনোনীত চলচ্চিত্র সূমহের মধ্যে লায়েক আহমেদ পবন’র ‘২ এক্স২’, ফুয়াদুজামান ফুয়াদের ‘তবে কি পলায়নই মঙ্গল?’, ইফাত ওয়াসিমার ‘ক্লাস ফ্রেন্ড’, জীবন শাহাদৎ’র ‘নেমপ্লেট’, নান্নু মাহমুদের ‘বাঁধ’, সীমান্ত সজলের ‘শিকল ভাঙ্গার গান’, গোলাম রাব্বানির ‘মিরাক্যাল ইন হ্যাভেন’ ও লাবনী আশরাফির ‘পরবাসী’ চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হবে।

সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় বার্তা ২৪ এ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *