আবারও একদিনে বাংলাদেশে প্রবেশ করল ১৭৯ বিজিপি সদস্য
ডেস্ক রিপোর্ট: সিলেটের বিশ্বনাথে টিকা দেওয়ার পর জ্বর ও বমি করে দুই মাস বয়সী এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন স্বজনরা।
৮ মার্চ (শুক্রবার) দুপুরে শাহরিয়ার খান নামে ওই শিশুর মৃত্যু হয়।
শিশু শাহরিয়ার খান বিশ্বনাথ উপজেলার রামপাশা ইউনিয়নের ৯ ওয়ার্ড গড়গাও গ্রামের মোনায়েম খানের ছেলে।
তবে, বিশ্বনাথ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার দাবি টিকা দেওয়া থেকে এই ঘটনা ঘটেনি।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার (৭ মার্চ) সকালে মোনায়েম খানের ছোট ভাই কাওছার খান ইপিআই সেন্টারে নিয়ে গেলে প্রথম ইপিআই চারটি টিকা দেওয়া হয়। টিকা দেওয়ার পর বৃহস্পতিবার রাত আড়াইটার দিকে শাহরিয়ারের জ্বর উঠে এবং প্রচুর বমি করে। পরদিন শুক্রবার দুপুরে (জুম্মার নামাজের শেষ দিকে) আবারো তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। তাৎক্ষণিক উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে সেখানে দায়িত্বরতরা সিলেট নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। পরে তারা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার দেলোয়ার হোসেন সুমনের প্রাইভেট চেম্বারে নিয়ে গেলে তিনিও একই পরামর্শ দেন। তাদের পরামর্শ অনুযায়ী সিলেটের একটি প্রাইভেট হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে নিয়ে যাওয়ার পর দায়িত্বরত চিকিৎসকরা শিশুকে আইসিইউতে নিয়ে যায় এবং পরীক্ষা নিরীক্ষা করে তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
টিকা দেওয়ার কারণেই তার ছেলের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ করেন মোনায়েম খান।
তিনি বলেন, আমার বাচ্চা সুস্থ অবস্থায় টিকা দেয়। রাতে তার জ্বর ও বমি হয়। পরদিন শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে আমরা তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাই। পরে সেখান থেকে সিলেট নিয়ে যাওয়ার জন্য বলা হয়। সেখানে নিয়ে যাওয়ার পর পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে তাকে মৃত ঘোষণা করেন। বাচ্চা মারা যাওয়ার পরদিন শনিবার ইউএইচও পাঁচ-ছয়জন লোক বাড়িতে আসেন। পরিবারের পক্ষ থেকে সিভিল সার্জন বরাবরে অভিযোগ দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানান মোনায়েম খান।
তিনি আরও বলেন, আমরা এখন বাচ্চার মাকে নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছি। বাচ্চা মারা যাওয়ার পর থেকে তিনি মানসিকভাবে একেবারেই ভেঙে পড়েছেন।
এবিষয়ে সোমবার (১১ মার্চ) রামপাশা ইউনিয়নের গড়গাও গ্রামের শফিক মিয়ার বাড়িতে ইপিআই সেন্টারের স্বাস্থ্য সহকারী কায়েছ মিয়া বার্তা২৪.কম-কে জানান, শিশুটি সম্পূর্ণ সুস্থ ছিল এবং সকাল ১০টা ৫৫ মিনিটে তাকে চারটি টিকা দেয়া হয়। এদিন ওই শিশুসহ অন্তত ৫জন শিশুকে প্রথম ডোজের টিকা দেওয়া হয়েছে। সাধারণত টিকা দেওয়ার পর শিশুদের জ্বর আসে।
তিনি আরও বলেন, শিশুদের টিকা দেওয়ার পর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে আমাদেরকে জানানোর জন্য বলা হয়। কিন্তু ওই শিশুর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলেও তারা আমাদেরকে কিছু জানান নি। শিশুটি মারা যাওয়ার পর সন্ধ্যার দিকে মুঠোফোনে কল দিয়ে তারা বাবা জানান শিশুটি মারা গেছে।
বিশ্বনাথ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ইউএইচও) ডা. দেলোয়ার হোসেন সুমন বার্তা২৪.কম-কে বলেন, টিকাদানের পরদিন দুপুর ২টার দিকে শিশুটির শারীরিক অবস্থার অবনতি (খিঁচুনি) হয়। পরে পরিবারের লোকজন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে সেখানকার দায়িত্বরত স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) একটি অক্সিজেন লাগিয়ে দেয় এবং শিশুটিকে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করে। পরে তারা আমার প্রাইভেট চেম্বারে এলে তাদেরকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেই।
তিনি আরও বলেন, রাতে খবর পাই শিশুটি মারা গেছে। পরদিন আমরা কয়েকজন তাদের বাড়িতে গিয়ে খোঁজখবর নিয়েছি আসলে কি হয়েছিল। আমাদের ধারণা শিশুটির নিউমোনিয়া হয়েছিল। বমি হওয়ার ফলে ফুড প্রাকটিক্যালগুলো লাঞ্চে চলে যায় এবং সেখান থেকে কোনো সমস্যা হতে পারে। টিকা দেওয়ার পর যেসব সমস্যা হয় সেগুলো শিশুটির মধ্যে ছিল না। তাই টিকা থেকে এই ঘটনা ঘটেছে বলে আমাদের মনে হচ্ছে না।
সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় বার্তা ২৪-এ।