সারাদেশ

আজরার প্যারিস ফ্যাশন উইকের স্বপ্ন পূরণ

ডেস্ক রিপোর্ট: আজরার প্যারিস ফ্যাশন উইকের স্বপ্ন পূরণ

আজরা মাহমুদ / ছবি : ফেসবুক

গত ২৩ বছর ধরে বাংলাদেশের ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রিতে দাপটের সঙ্গে কাজ করছেন আজরা মাহমুদ। দেশের সবচেয়ে বড় ফ্যাশন ইভেন্টগুলো তার পরিচালনাতেই হয়ে থাকে। এই মডেল ও কোরিওগ্রাফারের স্বপ্ন ছিল একদিন বিশ্বের ফ্যাশনের পিঠস্থান’খ্যাত প্যারিস ফ্যাশন উইকে যাবেন।

অবশেষে সেই স্বপ্ন পূরণ হলো এই তারকার। গত ৩ মার্চ প্যারিসের ঐতিহাসিক লিসে কার্নো স্কুলে অনুষ্ঠিত হয় বিশ্বনন্দিত ফ্যাশন ব্র্যান্ড মুগলারের ফল/উইন্টার ২০২৪-২৫ কালেকশন প্রদর্শনী। এতে আমন্ত্রণ পেয়েছিলেন বাংলাদেশের জনপ্রিয় মডেল ও কোরিওগ্রাফার আজরা মাহমুদ।

অনন্য সেই অভিজ্ঞতার কথা জানাতে গিয়ে আজরা বলেন, ‘আমার ফ্যাশন জগতে আসার মূল কারণটাই ছিল এফটিভি (ফ্যাশন টিভি)। ঐ চ্যানেলে সব সময় ফ্যাশন উইকই দেখাতো। আমার আজকে এতদূর আসা, সুন্দর করে কাজ করা, একটা আলাদা দর্শন তৈরি হওয়া, স্বপ্ন তৈরির বড় জায়গা জুড়ে আছে এই এফটিভি ও প্যারিস ফ্যাশন উইক। আমি ২০০৪ সালে কোরিওগ্রাফি শুরু করেছি। আর আজ ২০ বছর পর এসে সেই জায়গায় যাওয়া, দর্শক হয়ে ফ্যাশন উইক দেখার এই অনুভূতিটা একেবারেই অন্যরকম। আমরা আমাদের কাজের মানের কথা বললে বলতেই পারি যে, আন্তর্জাতিক দিক থেকে কোন অংশে আমরা কম নই বা পিছিয়ে নেই। ঐখানে বসে আমার মনে হচ্ছিল, আজ আমি কাজ ছেড়ে দিলে আমার খারাপ লাগবে না। কারণ আমি মনে করি আমরা এটা অবস্থানে পৌঁছাতে পেরেছি। আমাদের মডেলিংকেও একটা একটা মানে উন্নীত করতে পেরেছি। টেকনিক্যাল জায়গা থেকে আমরা অবশ্যই পিছিয়ে আছি, তবে সেটাও খুব একটা নয়।’

প্যারিস ফ্যাশন উইকের ব্যাকস্টেজে আজরা তিনি আরও বলেন, ‘শেষ হওয়ার পর অনেকক্ষণ চুপ করে বসেছিলাম। সেখানে আমার উপস্থিতিকেই আমি বিশ্বাস করতে পারছিলাম না। এখনো মনে হলে আমার চোখ ভিজে ওঠে। এই আসরে অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকতে পারাটা আমার জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও প্রেরণাদায়ক অভিজ্ঞতা হয়ে থাকবে। এরপর থেকে যখনই কোন কাজ করব চেষ্টা করব নতুনতর ভাবনাকে সম্পৃক্ত করতে। আর ঐ অভিজ্ঞতা থেকে নিরন্তর প্রাণিত হতে। মুগলারের শো উপভোগ করার পর থেকে এক অদ্ভূত প্রশান্তি আমাকে ঘিরে রেখেছে। কারণ এতটা বছর ধরে কাজ করে আমি আমার দেশকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করতে পেরেছি। কোন সন্দেহ নেই এটাই আমার পরিতৃপ্তি।’

ব্রুকলিন বেকহাম ও নিকোলা পেল্টজ যে স্থানে এই শোটি হয়েছে সেটি সম্পর্কে আজরা বলেন, ‘এই ফ্যাশন শোয়ের আয়োজন করা হয় প্যারিসের ঐতিহাসিক লিসে কার্নো স্কুলে। এই স্কুলটি প্রতিষ্ঠিত হয় ১৮৬৯ সালে। এখানে ফ্রান্সের অনেক গুণী ব্যক্তিত্ব পড়াশোনা করেছেন। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্যরা হলেন ফ্রান্সের সাবেক প্রেসিডেন্ট জ্যাক শিরাক, ওয়ার্ল্ড ট্রেড অর্গানাইজেশনের সাবেক প্রেসিডেন্ট প্যাসকাল লামি, যাজক ও ধর্মতত্ত্ববিদ আলেক্সজান্ডার শিম্যান, নব্বই দশকের বিখ্যাত ইলেক্ট্রনিক মিউজিক গ্রুপ ডাফট পাঙ্কের দুই সদস্য থমাস ব্যাংলাটার ও গাই ম্যানুয়েল ডি হমেম-ক্রিস্টো। এই স্কুলের স্থাপত্য নকশা কেবল পুরনো ও দৃষ্টিনন্দনই নয়, অতীত ইতিহাসেরও সাক্ষী। এই রকম একটি স্থাপনায় দাঁড়িয়ে প্যারিস ফ্যাশন উইকের মত বড় ইভেন্টে মুগলারের শো দেখার অভিজ্ঞতাটা একেবারেই অন্যরকম।’

মুগলারের ফ্যাশন শো ছিল দারুণ থিয়েট্রিক্যাল ও ড্রামাটিক ছিল এরপর তিনি ব্র্যান্ড মুগলার সম্পর্কে বলেন, ‘মুগলারের ফ্যাশন শো ছিল দারুণ থিয়েট্রিক্যাল ও ড্রামাটিক ছিল। সাধারণত আমরা যেমন রানওয়েতে মডেলদের আসা যাওয়া দেখি- সেরকম নয়। এতে মোট ৪১ জন মডেল রানওয়েতে হাঁটেন। মূল ফ্যাশন শো শুরু হলে প্রথমে ৪ জন মডেল হেঁটে যান। এরপর প্রথম পর্দা উন্মোচিত হয়। পর্দার পিছন থেকে আরও মডেল বেরিয়ে আসেন। আর তারা একের পর এক পর্দা ফেলতে থাকেন। এভাবে লিসে কার্নো মূল হলটাকে প্রকাশ করে। এই হলের তিন ভাগের দুই ভাগই ছিল মূল রানওয়ে সেট। একভাগ ছিল দর্শকদের বসার জায়গা। আর মডেলরা মুগলারের সিগনেচার বোল্ড ও ফেমিনিন স্টাইলটাকে খুব সুন্দরভাবে উপস্থাপন করেছেন। কালেকশনে কালোর সিংহভাগ ব্যবহার ছিল উল্লেখযোগ্য। সঙ্গে লাল ও কিছু প্রিন্টের ব্যবহার হয়েছে। সাধারণত মুগলারের সংগ্রহে প্রিন্ট খুব একটা দেখা যায় না।’

মুগলারের ফল কালেকশন তিনি আরও বলেন, ‘শোয়ের একদম শেষে ৪১ জন মডেল একসঙ্গে রানওয়েতে ফিরে আসেন। তখনই ব্যাকস্টেজকে উন্মোচিত করা। দর্শকদের দৃষ্টিগোচর হয় সম্পূর্ণ ব্যাকস্টেজ। দেখা যায় নেপথ্যের মানুষগুলোকে। যারা সবসময়ে থাকেন পেছনে। কখনোই দেখা যায় না তাদের। অথচ এখানে তাদের এবং তাদের কর্মপ্রক্রিয়াকে তুলে ধরা হয়। এটা কোন সন্দেহ নেই অভিনব। পুরো ফ্যাশন শোটি এত সুন্দর করে শুরু ও শেষ হয় যে, সামনের সারিতে থাকা ভিআইপি ও সেলিব্রেটিদের দিকে কারো সেভাবে চোখই পড়েনি। একে বলা যেতে পারে ‘দ্য শো টুকওভার’ মোমেন্ট।’

এই ফ্যাশন শোতে সেলিব্রিটি অতিথি হিসেবে ছিলেন মিয়া খলিফা এই ফ্যাশন শোতে অনেক সেলিব্রিটি ছিলেন। মিয়া খলিফা, ব্রুকলিন বেকহাম, নিকোলা পেল্টজ, জুলিয়া ফক্স, কোরিয়ান সুপারস্টার জুংহুয়া, বারবারা পেলভিন প্রমুখ।

আন্তর্জাতিক ইভেন্ট থেকে কি শিখলেন জানতে চাইলে আজরা বলেন, ‘এই আয়োজনে কেবল অংশগ্রহণের জন্য যাওয়া নয় বরং পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে দেখা ও বোঝার জন্যও। কারণ তারা কিভাবে কাজ করেন, কিভাবে এই শোগুলো হয়, আমাদের দেশের আয়োজন থেকে কতটা আলাদা এই শো-এটা জানাই ছিল বোধকরি আমার আমার মূল উদ্দেশ্য।’

প্যারিসে আজরার স্বামী দেওয়ান মুহাম্মাদ সাজিদ আফজাল এই শোতে অংশ নিয়েছিলেন আজরা ও তার স্বামী দেওয়ান মুহাম্মাদ সাজিদ আফজাল। তারা দুজনই কালো রঙের পোশাক পরেছিলেন। নিজের সাজ পোশাক সম্পর্কে আজরা বলেন, ‘এই শো দেখেছি থিয়েরি মুগলারের ভিআইপি অ্যান্ড মিডিয়া রিলেশনস লিড আইদা মেহনাজের অতিথি হিসেবে। এটা আমাদের জন্য এক বিরাট পাওয়া বলতেই হবে। আমরা সবাই জানি মুগলারের ক্রিয়েটিভ ডিরেক্টর ক্যাসি ক্যাডওয়ালেডার সলিড কালার নিয়ে বেশি নিরীক্ষা করেন। বিশেষ করে কালো রং নিয়ে বেশি কাজ করেন। সেই কারণে আমি ও আমার হাজব্যান্ড সাজিদ কালো পোশাক পরে গিয়েছিলাম। হাউজ অব আহমেদ আমাকে নতুন ডিজাইনের শাড়ি দেয় যার ব্লাউজ চামড়া দিয়ে তৈরি, হাতায় জারদৌজি করা। এছাড়া পুরো শাড়ির জমিনে পুঁতির কাজ করা। আমার হাজব্যান্ড পরেছিলেন কালো সিল্ক ও ভেলভেটের টাক্সিডো। এটা জুরহেমের ক্রিয়েটিভ ডিরেক্টর মেহরুজ মুনিরের ডিজাইন করা। টাক্সিডোর ভেলভেটের পুরোটা জুড়ে পুঁতির কাজ করা।’

আজরা মাহমুদ /  ছবি : ফেসবুক

টলিউডে পরীর শুরুটা নিয়ে নেটিজেনদের শঙ্কা

পরীমনি / ছবি : ফেসবুক

চিত্রনায়িকা পরীমনি বরাবরই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকেন। তাকে নিয়ে কেন এতো আলোচনা-সমালোচনা, সে কথা হয়তো তিনিও স্পষ্ট করে বলতে পারবেন না। সম্প্রতি সে কথা অনেকটাই স্বীকারও করেছেন এই নায়িকা। কলকাতার একটি জনপ্রিয় দৈনিককে দেওয়া ইন্টারভিউতে পরী বলেন, ‘আমার অনেক সিনেমা ফ্লপ। তারপরও কেন যেন আমার নাম হয়ে গেছে।’

শুধু তাই নয়, কলকাতার গণমাধ্যমে তার ছেলের বাবা শরীফুল রাজ সম্পর্কে অনেক কথাই বলেন, যা আগে কখনো বলেননি পরীমনি। তবে এসব নিয়ে রাজ একদম চুপচাপ।

অর্থাৎ, শুধুই পর্দার কাজ নিয়ে আজকের অবস্থানে তিনি আসেননি একথা নিজেও মানেন এই নায়িকা।

যাই হোক, পরী এখন বেশ ফুরফুরে মেজাজে আছেন। ছেলে পদ্মকে নিয়েই তার দিন যায়। মাঝেমধ্যে একটু আধটু কাজও করেন। মাঝে একাধিকবার কলকাতা গিয়েছেন। তখনই গুঞ্জন শোনা যাচ্ছিল, সেখানে কাজের কথা পাকা করতেই গিয়েছেন পরী।

পরীমনি /  ছবি : ফেসবুক অবশেষে সেই গুঞ্জনের সত্যতা মিলল। পরীমনি নিজেই জানালেন, কলকাতায় একটি ছবিতে অভিনয়ের খবর। ‘ফেলুবকশি’ নামে একটি ছবিতে অভিনয় করতে যাচ্ছেন তিনি।

পরীমনি এর আগে ঢাকা-কলকাতা যৌথ প্রযোজনার ছবিতে অভিনয় করেছেন। এবার পুরোপুরি কলকাতার প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের অর্থায়নে তৈরি ছবিতে অভিনয় করতে যাচ্ছেন তিনি। ‘ফেলুবকশি’ ছবিটি পরিচালনা করবেন দেবরাজ সিনহা। ২৬ মার্চ থেকে কলকাতার লোকেশনে ছবিটির শুটিং শুরুর কথা রয়েছে। এতে তার বিপরীতে দেখা যাবে কলকাতার নায়ক ও সাংসদ সোহমকে।

যদিও এ নিয়ে নেটিজেনদের মনে শঙ্কা জন্ম নিয়েছে। কারণ সোহমের ক্যারিয়ার পড়তির দিকে। সর্বশেষ কবে এককভাবে কোন সিনেমা তিনি হিট করিয়েছেন সে কথা হয়ত তিনি নিজেই ভুলে গেছেন। সেই নায়কের সঙ্গে ছবি করলে তার ব্যবসায়িক সফলতা কতোটা আসবে তা নিয়েই নেটিজেনদের সন্দেহ!

সোহম চক্রবর্তী /  ছবি : ফেসবুক তবে পরীমনি এ নিয়ে বোধ হয় তেমন মাথা ঘামাচ্ছেন না। তিনি বরং গণমাধ্যমকে বলেছেন, বলেন, ‘কলকাতার ছবিতে কাজের প্রতি আগে থেকেই আমার আগ্রহ ছিল। আমার মনে হয়েছে, তাদের কাজগুলো অনেক গোছানো হয়। শুটিংয়ের আগে-পরে কাজের দারুণ জার্নিও হয়। ফলে কাজটি সুন্দরভাবে শেষ হয়ে মুক্তি পায়। গত বছর ওখানে পুরস্কার গ্রহণকালে আমি বলেছিলাম, কলকাতায় আমি কাজ করতে চাই, এরপর থেকেই আমার হাতে চিত্রনাট্য আসা শুরু হয়। মনে হয়েছে, এটি দিয়ে শুরু করা যায়।’

‘ফেলুবকশি’ ছবির গল্প নিয়ে এখনই কিছু বলতে চাইছেন না পরীমনি। তবে এই অভিনেত্রী জানিয়েছেন, এটি থ্রিলার গল্পের ছবি। ছবিতে পরীমনির চরিত্রের নাম লাবণ্য, রহস্যময় এক চরিত্র।

পরীমনি জানান, ছবির কাজে আগামী সপ্তাহে কলকাতায় যাচ্ছেন তিনি। শুটিংয়ের আগে পাঁচ দিনের গ্রুমিং ক্লাসে অংশ নেবেন। এর ফাঁকে কলকাতায় একটি বিজ্ঞাপনচিত্রের শুটিংও করবেন তিনি।

পরীমনি /  ছবি : ফেসবুক কলকাতার ছবিতে কাজের সুযোগ কীভাবে হয়েছে, জানতে চাইলে পরীমনি জানান, গত বছর কলকাতার আনন্দবাজার পত্রিকা তাকে ‘বছরের বেস্ট’ হিসেবে পুরস্কার দেয়। সেই পুরস্কার সশরীর গ্রহণ করতে সেখানে গিয়েছিলেন তিনি। তখনই সিনেমায় কাজের ব্যাপারে আলোচনা হয়।

;

বিলি-ফিনিয়াস সহোদরের জোড়া অস্কারের রেকর্ড

অস্কারে সেরা মৌলিক গানের জন্য পুরস্কার পান বিলি আইলিশ এবং তার ভাই ফিনিয়াস ও’কনেল( বামে ২০২৪ সালে এবং ডানে ২০২২ সালে)

সম্প্রতি অনুষ্ঠিত হলো ৯৬ তম অস্কার সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠান। সেখানে সেরা মৌলিক গানে কণ্ঠ দেওয়ার জন্য পুরস্কার পেয়েছেন বিলি আইলিশ। এর সাথেই বিশ্বের সবচেয়ে কনিষ্ঠ জোড়া অস্কারজয়ীর খেতাব জুটেছে তার। মাত্র ২২ বছর বয়সে ‘বেস্ট অরিজিনাল সং’ ক্যাটাগরিতে অস্কার জিতে, এই রেকর্ড গড়েছেন তিনি।

বার্বি সিনেমার গান ‘হোয়াট ওয়াজ আই মেইড ফর’ -এবছর সেরা মৌলিক গানের পুরস্কারপায়। বিলি তার ভাই ফিনিয়াস ও’কনেলের সাথে এই গানটি তৈরি করেছিলেন। অস্কারের মঞ্চে বার্বি সিনেমার এটিই ছিল একমাত্র অর্জন। এর আগে ২০২২ সালে ২০ বছর বয়সে ‘নো টাইম টু ডাই’ এর জন্য প্রথম অস্কার পুরস্কারজিতেছিলেন আমেরিকার এই সঙ্গীত শিল্পী। সেই গানটিও ভাই ফিনিয়াসের সাথেই ‘জেমস বন্ড‘ সিনেমার থিমের জন্য গেয়েছিলেন বিলি।    

২০২৩ সালে হলিউড সিনেমা জগতের ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে থাকা এক ঝড় উঠেছিল। এক দিকে ছিল প্রায় শতাব্দী ধরে রাজত্ব করা খেলনা পুতুল ‘বার্বি’র লাইভ অ্যাকশন সিনেমা। অন্য দিকে ২য় বিশ্বযুদ্ধের ধ্বংসযজ্ঞের প্রেক্ষিতে তৈরি বায়োপিক সিনেমা ‘ওপেনহাইমার’। তুমুল আলোচিত এই দুই সিনেমা নিয়ে বিশ্বব্যাপী সিনেমা ভক্তদের মধ্যে উত্তেজনার শেষছিল না। তবে একই সপ্তাহে সিনেমা দু’টো প্রকাশ পাওয়ায়, পরোক্ষ এবং প্রত্যক্ষ দ্বন্দ শুরু হয়ে যায়। সময়ের সাথে সেই দ্বন্দ আরও প্রকট হয়েছে। অবশেষে বার্বি আয় করে ১৪৪ কোটি ইউএস ডলারের বেশি অন্য দিকে ওপেনহাইমারের আয় প্রায় ৯৬ কোটি ইউএস ডলারে এসে ঠেকে।

ওপেনহাইমার-বার্বি দ্বন্দ আয়ের ক্ষেত্রে বার্বি এগিয়ে থাকলেও অস্কার সম্মাননায় ওপেনহাইমারের জয় স্পষ্ট। ১৩ টি বিষয়ে নমিনেশন পেয়ে ৭ টি পুরস্কারজিতেছে ওপেনহাইমার। সেখানে সেরা সিনেমা ‘ওপেনহাইমার’, সেরা নায়ক কিলিয়ান মার্ফি(ওপেনহাইমার), সেরা পার্শ্ব নায়ক রবার্ট ডাউনি জুনিয়র(ওপেনহাইমার), এমনকি সেরা পরিচালক ক্রিস্টোফার নলেন (ওপেনহাইমার)।        

অন্য দিকে ৮ টি নমিনেশন পেয়েও; সেরা গানের জন্য বিলির জয়, বার্বি সিনেমার পাওয়া একমাত্র অস্কার। সেরা অভিনেত্রীর নমিনেশন অবধি পাননি বার্বি সিনেমার প্রধান অভিনেত্রী মার্গো রবি। অবশ্য এই নিয়ে তার বিশেষ কোনো দুঃখও নেই বলেই জানিয়েছেন তিনি।     

;

অস্কারে জাপানের বাজিমাত

সেরা ভিজ্যুয়াল ইফেক্টস বিভাগে জিতেছে অস্কার জয় করেছে ‘গডজিলা মাইনাস ওয়ান’ ছবিটি

যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় লস অ্যাঞ্জেলেসের হলিউড অ্যান্ড হাইল্যান্ড সেন্টারের ডলবি থিয়েটারে গত ১১ মার্চ ৯৬তম অস্কার বিজয়ীদের নাম ঘোষণা ও পুরস্কার বিতরণ করা হয়।

দুই দশকের বেশি সময় পর আবারও অস্কার জিতলেন জাপানের খ্যাতিমান অ্যানিমেটর হায়াও মিয়াজাকি। তার পরিচালিত ‘দ্য বয় অ্যান্ড দ্য হেরন’ সেরা অ্যানিমেটেড চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছে। এই ছবিটি গত জানুয়ারিতে হায়াও মিয়াজাকিকে গোল্ডেন গ্লোব এনে দিয়েছে। এরপর বাফটা অ্যাওয়ার্ডস জিতেছেন তিনি।

তবে কোন পুরস্কারই সশরীরে উপস্থিত থেকে নিতে পারেননি ‘দ্য বয় অ্যান্ড দ্য হেরন’-এর দুই প্রযোজক ৮৩ বছর বয়সী হায়াও মিয়াজাকি এবং ৭৫ বছর বয়সী তোশিও সুজুকি। 

অস্কারে ছবিটিরকে প্রতিযোগিতা করতে হয়েছে ডিজনির ‘এলেমেন্টাল’, সনি পিকচার্সের ‘স্পাইডার-ম্যান : অ্যাক্রস দ্য স্পাইডার-ভার্স’, নেটফ্লিক্সের ‘নিমোনা’ ও ৭৬তম কান উৎসবে প্রদর্শিত স্প্যানিশ-ফরাসি অ্যানিমেটেড ছবি ‘রোবট ড্রিমস’-এর সঙ্গে।

হায়াও মিয়াজাকিকে বলা হয়ে থাকে ‘অ্যানিমেশনের গডফাদার’ ছবিটির নির্মাণ শেষে দুই জনই অবসরের ঘোষণা দেন। কোনও উত্তরসূরি না পেয়ে গত বছর নিপ্পন টিভির কাছে স্টুডিও গিবলি বিক্রি করে দেন তারা।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পটভূমিতে আধা-আত্মজীবনীমূলক ছবিটির গল্প মাহিতো মাকি নামের ১২ বছরের এক বালককে ঘিরে। টোকিওর একটি হাসপাতালে আগুনে প্রাণ হারায় তার মা। মাহিতোর বাবা পেশায় যুদ্ধবিমান কারখানার মালিক। তিনি শ্যালিকাকে বিয়ে করে গ্রামে চলে যান। এরপর শুরু হয় মাহিতোর নতুন জীবন। একদিন তার সঙ্গে একটি অতিপ্রাকৃত ধূসর হেরনের দেখা হয়। তাকে একটি বদ্ধ টাওয়ারের দিকে নিয়ে যায় এই প্রাণী। সেখানে অনেক চমৎকার প্রাণী আবিষ্কার করে মাহিতো। তারা তাকে বিভিন্ন উপায়ে মাকে হারানোর শোক কাটাতে সহায়তা করে।

পর্দার মাহিতোর মতোই বাস্তবে যুদ্ধের কারণে হায়াও মিয়াজাকির পরিবার ঘরছাড়া হয়েছিলো। তার ছবিগুলোর বলিষ্ঠ নারী চরিত্র দেখলে বোঝা যায়, এই নির্মাতার কাজের ওপর মায়ের প্রভাব আছে।

‘দ্য বয় অ্যান্ড দ্য হেরন’ অ্যানিমেশন ছবির দৃশ্য বেশিরভাগ অ্যানিমেটেড ছবি তৈরিতে ব্যবহার হয়ে থাকে কম্পিউটার দিয়ে বানানো চিত্র। তবে ‘দ্য বয় অ্যান্ড দ্য হেরন’-এর অ্যানিমেশনগুলো হায়াও মিয়াজাকির হাতে আঁকা। যার  ফলে ছবিটি তৈরি করতে প্রায় এক দশক লেগেছে। ছবিটি ২০২৩ সালে মুক্তির পর উত্তর আমেরিকার বক্স অফিসে এক নম্বরে স্থান করে নেয়। প্রথম সপ্তাহে ছবিটি আয় করে ১ কোটি ৩০ লাখ ডলার (১৪৩ কোটি টাকা)।

হায়াও মিয়াজাকিকে বলা হয়ে থাকে ‘অ্যানিমেশনের গডফাদার’। ইসাও তাকাহাতা ও তোশিও সুজুকির সঙ্গে ১৯৮৫ সালে জাপানিজ অ্যানিমেশন প্রতিষ্ঠান স্টুডিও গিবলি প্রতিষ্ঠার পর অনেক ছবি প্রযোজনা করেছেন এই গুণী নির্মাতা।

হায়াও মিয়াজাকি ও তার সৃষ্ট বিখ্যাত চরিত্রের কোলাজ হায়াও মিয়াজাকি পরিচালিত ‘স্পিরিটেড অ্যাওয়ে’ ২০০৩ সালে প্রথম অ-ইংরেজি ছবি হিসেবে সেরা অ্যানিমেটেড চলচ্চিত্র বিভাগে অস্কার জিতে রেকর্ড গড়েছে। এর গল্প একটি মেয়েকে ঘিরে যে তার বাবা-মাকে বাঁচানোর চেষ্টা করে যারা শূকর হয়ে গেছে। ‘স্পিরিটেড অ্যাওয়ে’ জাপানের সর্বকালের সবচেয়ে ব্যবসাসফল চলচ্চিত্র হয়েছে। ১৯ বছর ছবিটির দখলে ছিল এই রেকর্ড।

এরপর আরও দুইবার অস্কারে মনোনয়ন পান হায়াও মিয়াজাকি। তার পরিচালিত ‘দ্য উইন্ড রোজেস’ ২০০৪ সালে ও “হাউল’স মুভিং ক্যাসেল” ২০০৬ সালে সেরা অ্যানিমেটেড চলচ্চিত্র বিভাগে মনোনয়ন পেয়েছে। ২০১৪ সালে সম্মানসূচক অস্কার পান তিনি।

হায়াও মিয়াজাকির আরেকটি দর্শকনন্দিত অ্যানিমেটেড চলচ্চিত্র ‘মাই নেইবার তোতোরো’ (১৯৮৮)। এর গল্প দুই বোন ও তাদের রহস্যময় প্রাণী বন্ধুকে ঘিরে।

কম বাজেটে নির্মিত ‘গডজিলা মাইনাস ওয়ান’ সেরা ভিজ্যুয়াল ইফেক্টস বিভাগে জিতেছে এবারের অস্কারে এশিয়ার দেশ জাপানের আরও চার জন পুরস্কার জিতেছেন। কম বাজেটে নির্মিত ‘গডজিলা মাইনাস ওয়ান’ সেরা ভিজ্যুয়াল ইফেক্টস বিভাগে জিতেছে। এর সুবাদে অস্কারের সোনালি ট্রফি পেয়েছেন ছবিটির পরিচালক তাকাশি ইয়ামাজাকি, ভিজ্যুয়াল ইফেক্টস নির্দেশক কিয়োকো শিবুয়া, থ্রিডি কম্পিউটার গ্রাফিক্স নির্দেশক মাসাকি তাকাহাশি এবং মহাসাগর ইফেক্টস উদ্ভাবক ও কম্পোজিটর তাতসুজি নোজিমা। অনুষ্ঠানে চার জনই খেলনা গডজিলা নিয়ে এসেছেন।

১৯৪৫ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শেষ প্রান্তের পটভূমিতে নির্মিত ‘গডজিলা মাইনাস ওয়ান’ ছবির গল্পে দেখা যায়, যুদ্ধবিধ্বস্ত জাপানে নতুন সংকট হয়ে আসে গডজিলার সঙ্গে লড়াই। সরকার সাহায্য করতে অস্বীকৃতি জানানোর পরও সাধারণ নাগরিকেরা ভয়ঙ্কর প্রাণীর সঙ্গে লড়াই করে যায়।

‘গডজিলা মাইনাস ওয়ান’ নির্মাতাদের অস্কার জয়ের উচ্ছ্বাস অস্কার মঞ্চের পেছনে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে ভিজ্যুয়াল ইফেক্টসে সেরা চার জাপানি বলেন, ‘আমরা অনেক গডজিলা দেখেছি। আমরা গডজিলার অন্তঃসার দেখতে চেয়েছিলাম। এর উৎসের দিকে ফিরে গেলে বোঝা যায়, গডজিলা যুদ্ধের প্রতীক। তাই আমরা নিশ্চিত করতে চেয়েছিলাম, দর্শকরা ছবিটি দেখলে যেন তাদের মনে ভয় জাগে।’

;

মিমি-নুসরাত দুজনই বাদ!

মিমি চক্রবর্তী ও নুসরাত জাহান / ছবি : ফেসবুক

লোকসভা ভোটের প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করেছে ভারতের পশ্চিবঙ্গের তৃণমূল কংগ্রেস। ৪২ কেন্দ্রের প্রার্থীর তালিকায় বেশ কিছু রদবদল হয়েছে। কিন্তু এ তালিকায় নাম নেই টালিউডের জনপ্রিয় দুই নায়িকা মিমি চক্রবর্তী ও নুসরাত জাহানের।

রাজ্যের যাদবপুরের সদস্য ছিলেন মিমি আর বসিরহাট কেন্দ্রের সংসদ সদস্য ছিলেন নুসরাত। কিন্তু আসন্ন লোকসভা ভোটের তৃণমূলের প্রার্থী হিসেবে মিমি-নুসরাতের কাউকেই টিকিট দেয়নি দল।

নুসরাতের লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যেই পড়ে সন্দেশখালী গ্রাম। গত দুই মাসে রাজনৈতিক দলগুলোর মাথাব্যথার কারণ হয়ে উঠেছে জায়গাটি। সন্দেশখালীতে নারী নির্যাতনের প্রতিবাদে সরব হয়েছে শহর থেকে শহরতলি ও গ্রাম।

নুসরাত জাহান /  ছবি : ফেসবুক লোকসভা ভোটের প্রার্থী তালিকা প্রকাশ হওয়ার পরের দিনই ইনস্টাগ্রামে একটি ইঙ্গিতপূর্ণ পোস্ট করলেন নুসরাত। পোস্ট করা ছবিতে দেখা গেল উদাস ভঙ্গিতে বসে রয়েছেন নায়িকা। সামনের টেবিলে রাখা নানা ধরনের খাবার, পানীয়, ফ্রেঞ্চফ্রাই। একটি প্লেটে ‘সাওয়ারডো’। পাউরুটি, লেটুস এবং অন্যান্য উপাদান দিয়ে তৈরি টক স্বাদের এক বিশেষ পদ। ছবির নিচে নুসরাত যা লিখেছেন, তার বাংলা তর্জমা করলে দাঁড়ায়— আমি ‘টক’ মানুষের চেয়ে ‘সাওয়ারডো’ বেশি পছন্দ করি।

ভোটের টিকিট না দেওয়ায় নুসরাত কি খোঁচা দিলেন দলকে? নাকি পাঁচ বছরের বিদায়ী সংসদের মনে একরাশ অভিমান জমা হয়েছে? উঠছে প্রশ্ন। তবে এ সবের উত্তর অবশ্য একমাত্র দিতে পারেন নুসরাতই।

মিমি চক্রবর্তী /  ছবি : ফেসবুক এদিকে, বেশ কিছুদিন ধরেই রাজনৈতিক ক্যারিয়ার নিয়ে খবরের শিরোনামে ওপার বাংলার অভিনেত্রী মিমি চক্রবর্তী। সাংসদ পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার ইচ্ছে প্রকাশ করেন অভিনেত্রী। এরপরেই তাকে নিয়ে শুরু হয় জল্পনা। রবিবার তৃণমূলের প্রার্থী তালিকা প্রকাশিত হলে সেখানে তার নাম দেখা যায়নি। এবার নির্বাচনে টিকিট পাননি অভিনেত্রী।

প্রার্থী তালিকায় নাম না থাকলেও ফের নতুন করে আলোচনায় মিমি। কারণ বাংলাদেশে তার নতুন সফর শুরু হতে যাচ্ছে। ঢাকাই সিনেমার সুপারস্টার শাকিব খানের নায়িকা হচ্ছেন তিনি।

মিমি চক্রবর্তী ও নুসরাত জাহান /  ছবি : ফেসবুক গত বছর ঘোষণা আসে ‘তুফান’ সিনেমার। সেসময় শুধু সিনেমার নায়ক ছাড়া আর কে অভিনয় করছেন তা জানা যায়নি। অবশেষে সিনেমাটির টিম নিশ্চিত করেছে এতে অভিনয় করছেন মিমি চক্রবর্তী। সঙ্গে থাকছেন ‘আয়নাবাজি’ সিনেমা খ্যাত মাসুমা রহমান নাবিলা।

মিমি চক্রবর্তী বলেন, ‘বাংলাদেশে আমার প্রায় যাওয়া হয়।কখনও কাজে কখনও বা ঘুরতে। সেখানে কাজ করাটা আমার জন্য সবসময় আনন্দের। সেই সাথে বাংলাদেশের সুপারস্টার শাকিব খানের সাথে এটাই আমার প্রথম সিনেমা হতে যাচ্ছে। দুই দেশের তিনটি প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান এক হয়েছে এই সিনেমার মধ্যে দিয়ে। সব মিলিয়ে আমি দারুণ এক্সসাইটেড। দর্শকও দুর্দান্ত কিছু পেতে যাচ্ছে।’

‘তুফান’ সিনেমায় শাকিব খানের বিপরীতে দেখা যাবে মিমিকে /  ছবি : ফেসবুক রায়হান রাফীর পরিচালনায় ‘তুফান’ প্রযোজনা করছে যৌথভাবে এসভিএফ, আলফা আই ও চরকি, দুই দেশের যৌথ প্রযোজনা। চলতি মাসেই শুরু হচ্ছে এর শুটিং, মুক্তি পাবে ঈদুল আজহায়।

;

সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় বার্তা ২৪-এ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *