সারাদেশ

সারাদেশে রেলের ২৩ হাজার জমি বেদখল, উদ্ধারের কাজ চলছে: রেলমন্ত্রী

ডেস্ক রিপোর্ট: বিভিন্ন অ্যাপ খুলে, জুয়ার সাইট চালিয়ে এবং অনলাইনে মাল্টিলেভেল মার্কেটিং এর লোভে ফেলে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করছে বাংলাদেশে বসবাস করা কয়েকজন চাইনিজ নাগরিক। এরই মধ্যে দেশ জুড়ে ছড়িয়ে পরেছে তাদের এই প্রতারণার ফাঁদ। তাদের প্রতারণার ফাঁদে পরে বাংলাদেশী শিক্ষার্থীরা চায়নাতে পড়তে গিয়ে হয়ে যাচ্ছে এই প্রতারক চক্রের সদস্য।

শনিবার (১৬ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ তথ্য জানান ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।

গ্রেফতারকৃত আসামীরা হলো: মো. রাকিবুল ইসলাম রাতুল (২৪), মো. আসাদুজ্জামান রাজু (২৯), মো. মামুন হাওলাদার (২৭)।
এ সময় আসামীদের কাছ থেকে তাদের ব্যবহৃত স্মার্ট মোবাইল ফোন, বাংলাদেশী সিম, ভারতীয় সিম, পাসপোর্ট, ব্যাংক একাউন্টের কাগজ পত্রাদি জব্দ করা হয় বলে জানানো হয় ।

অতিরিক্ত কমিশনার হারুনুর রশীদ বলেন, রাজধানীর বিমানবন্দর থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে অন-লাইনে মাল্টি লেভেল মার্কেটিং এর লোভে ফেলে অ্যাপ খুলে জুয়ার সাইট চালিয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়া বাংলাদেশী ও চীনা নাগরিকের সংঘবদ্ধ চক্রের ৩ জন বাংলাদেশী প্রতারক সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

এছাড়াও ইত্যেপূর্বে অ্যামাজন, দারাজ, ফ্লিপকার্ট এবং পিকাবো (Amazon.com, Daraz.com.bd, Flipkart.com, Pickaboo.com) এর মতো মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানির নামে ভূয়া সাইট খুলে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়া চক্রের ২ চাইনিজ নাগরিক সহ এখন পর্যন্ত সর্বমোট ১২ জনকে গ্রেফতার করেছে ডিবি সাইবার এন্ড স্পেশাল ক্রাইম (দক্ষিণ) বিভাগ ৷

ডিবি বলেন, বাংলাদেশ থেকে অনেক শিক্ষার্থী পড়াশোনার জন্য বিশ্বের বিভিন্ন দেশে যায়। তার মধ্যে অন্যতম বৃহৎ অংশ চায়নাতে মেডিকেল এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার জন্য যায়। সেখানে গিয়ে তারা চাইনিজ ভাষায় পারদর্শী হয়ে উঠে এবং চাইনিজ বিভিন্ন প্রতারক চক্রের সাথে সখ্যতা গড়ে তোলে। বাংলাদেশের সাধারণ মানুষকে প্রতারিত করার জন্য নিজেরাই চাইনিজ দের সাথে সংঘবদ্ধ ভাবে জড়িয়ে পড়ে। এ চক্রের মূল হোতায় হচ্ছে বাংলাদেশী চাইনিজ শিক্ষার্থীরা।

প্রতারক হয়ে উঠার গল্প তুলে ধরে তিনি আরও বলেন, গ্রেফতারকৃত আসামী রাতুল, রাজু, মামুন বাংলাদেশ হতে পড়ালেখার উদ্দেশ্যে চীনে গিয়ে চাইনিজ ভাষা শিখে চীনদের সাথে সখ্যতা গড়ে তোলে এবং সবাই তথ্য প্রযুক্তি সম্পর্কে যথেষ্ট পারদর্শি হয়ে ওঠে। তাদের সম্পর্কের এক পর্যায়ে চাইনিজরা তাদেরকে বলে যে তারা কিছু এ্যাপস তৈরি করেছে এই এ্যাপস ব্যবহার করে অবৈধভাবে বিপুল পরিমান অর্থ উপার্জন করা সম্ভব।

তাদের সেই কার্যক্রমে কিছু বাংলাদেশী সিম, বিকাশ/নগদ একাউন্ট, ব্যাংক একাউন্ট এর প্রয়োজন। সবাই মূলত স্বল্প সময়ে অবৈধভাবে অধিক উপার্জনের আশায় এই প্রতারণার কাজে যুক্ত হয়ে চাইনিজদের কে বাংলাদেশী সিম বিকাশ/নগদ একাউন্ট, ব্যাংক একাউন্ট সরবরাহ করে। মূল পরিকল্পনাকারী Gaga, Chig Chog চায়নায় সার্ভার স্থাপনের মাধ্যমে তাদের সরবরাহকৃত বাংলাদেশী সিম, বিকাশ/নগদ একাউন্ট, ব্যাংক একাউন্ট প্রতারনার কাজে ব্যবহার করে কার্যক্রম সম্পাদন করে।

প্রাথমিক ভাবে বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে কিছু মানুষকে প্রতারিত করতে সক্ষম হবার পরে, তারা এই কাজ অব্যাহত রাখে এবং স্বল্প সময়ে লাখ লাখ টাকা আয় করে।

আসামী রাতুল, রাজু, মামুন অনলাইনে মাল্টি লেভেল মার্কেটিং, অনলাইন ফ্রিলাঞ্চি ও বেটিং সাইট, সি-ফাইন্যান্স, লোন অ্যাপস, হান্ট্রিাপস এর সাথে সরাসরি জড়িত। গ্রেফতারকৃত আসামীরা বর্ণিত ঘটনার চক্রের বাংলাদেশী এজেন্ট হিসাবে কাজ করে করে বলে জানান তিনি।
তিনি বলেন, এই চক্রের সাথে দেশী বিদেশী আরো নানান লোকজন জড়িত বলে জানায় এবং চক্র টি মানুষকে অনলাইনে টাকা উপার্জনের কিংবা পার্টটাইম চাকরীর প্রলোভন দেখিয়ে তাহাদের নিকট হতে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়ে আত্মসাৎ করে থাকে। তারা সিম রেজিষ্ট্রেশন কালে কৌশলে একাধিক ফিঙ্গার প্রিন্ট সংগ্রহ করে (MochiclonerApps) এ্যাপসের মাধ্যমে একটি মোবাইল ফোনে ১০০ টি বিকাশ একাউন্ট অ্যাপস তৈরি করে।

লালমিনরহাট, জামালপুর, সাভার সহ বিভিন্ন স্থানের প্রতিনিধিদের ব্যাংকে একাউন্ট সংগ্রহ করে সাভার ইপিজেডে চাইনিজ প্রতারকের মাধ্যমে মূল পরিকল্পনাকারী গাগা চং চং (Gaga Chog Chong) সহ ২ জন চাইনিজ এর সাথে বাংলাদেশী চাইনিজ ছাত্ররা মূল লিংক হিসেবে কাজ করে। প্রতারনার কাজে তারা ভারতীয় সিমও ব্যবহার করে বলে জানান তিনি।

সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় বার্তা ২৪-এ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *