সারাদেশ

মালিবাগ শাহজালাল হোটেলে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ, তিন কর্মচারী দগ্ধ

ডেস্ক রিপোর্ট: বাংলাদেশ থেকে ফ্লাইট পরিচালনাকারী বিদেশি অনেকগুলো এয়ারলাইন্স দেশীয় এজেন্টদের কাছে টিকিট বিক্রি করছে না। তারা টিকিট বিক্রি করছে বিদেশি অনলাইন ট্রাভেল এজেন্সির (ওটিএ) কাছে। এর ফলে প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকার এয়ার টিকিট ব্যবসা বিদেশি অনলাইন ট্রাভেল এজেন্টদের হাতে চলে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

টিকিট বিদেশে বিক্রি হওয়ায় একদিকে সরকার যেমন রাজস্ব হারাচ্ছে অন্যদিকে দেশীয় প্রায় তিন হাজার ৬০০ স্থানীয় ট্রাভেল এজেন্টরা ব্যবসা নিয়ে চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছে।

বিদেশি এয়ারলাইন্সগুলো বলছে, বাংলাদেশে ডলার সংকটের কারণে তারা তাদের আয় নিজ দেশে নিয়ে যেতে পারছে না। বাংলাদেশে টাকার অবমূল্যায়নের কারণে তাদের আয় ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ কমে গিয়েছে। এ কারণে তাদের টিকিট বাংলাদেশি এজেন্সিগুলোর কাছে বিক্রি না করে অনলাইন ট্রাভেল এজেন্সির কাছে বিক্রি করছে। আর দেশীয় এজেন্টদের কাছ থেকে টিকিট কিনলে যে দাম পাওয়া যেতো বিদেশি অনলাইন ট্রাভেল এজেন্টদের কাছ থেকে তার চেয়ে ৫০ থেকে ১০০ ডলার বেশি দামে টিকিট কিনতে হচ্ছে। বিশেষ করে কম দামের টিকিট দেশীয় এয়ারলাইন্স বিক্রি করতে পারছে না। এই শ্রেণির টিকিট বেশি দামে দেশীয় যাত্রীরা কিনছে বিদেশি অনলাইন ট্রাভেল এজেন্টদের কাছ থেকে। এতে যাত্রীদের বাড়তি অর্থ গুণতে হচ্ছে, বিশেষ করে অভিবাসী শ্রমিকরা এতে বেশি দুর্ভোগে পড়েছেন।

অ্যাসোসিয়েশন অব ট্রাভেল এজেন্টস অব বাংলাদেশের (আটাব) মহাসচিব আবদুস সালাম আরেফ বলেন, এখন যে অবস্থা চলছে এর সমাধান জরুরি। নয়তো প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকার এয়ার টিকিটের বাজার বিদেশি অনলাইন এজেন্টদের হাতে চলে যাবে। সেই সঙ্গে এখাত থেকে সরকার বড় অংকের রাজস্ব হারাচ্ছে।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, দেশে ডলার সংকটের কারণে টিকিট বিক্রির মুনাফা নিজ দেশে নিতে না পারায় বাংলাদেশের ট্রাভেল এজেন্সিগুলোর কাছে টিকিট বিক্রি বন্ধ করেছে কয়েকটি বিদেশি এয়ারলাইনস। এখন তারা অনলাইন ট্রাভেল এজেন্সির (ওটিএ) কাছে টিকিট বিক্রি করছে। মূলত এখান থেকে এই সংকটের শুরু।

সংশ্লিষ্টদের মতে, এতে অনেকগুলো সংকট তৈরি হয়েছে। এর অন্যতম হলো স্থানীয় এজেন্টদের কাছে টিকিটের দাম বেড়ে যাওয়া। দেশে বৈদেশিক রিজার্ভ কমার কারণে বিদেশি এয়ারলাইন্সগুলোকে অর্থ ছাড়ে কিছুটা শ্লথ গতি রয়েছে। বিদেশি এয়ারলাইন্সগুলো বাংলাদেশের কাছে কয়েকশ মিলিয়ন ডলার পাওনা রয়েছে। গত প্রায় এক বছর ধরে এই সমস্যা চলছে।

আন্তর্জাতিক এয়ার ট্রাান্সপোর্ট অ্যাসোসিয়েশনের (আইএটিএ) এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, টিকিট বিক্রি থেকে আয়ের অর্থ দিতে না পারায় গত বছরের জুনে সংস্থাটি নাইজেরিয়াকে সর্বোচ্চ খারাপ হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছিল। আর বাংলাদেশকে বিশ্বের দ্বিতীয় ‘সর্বোচ্চ খারাপ’ হিসেবে তালিকাভুক্ত করে।

এক বিদেশি এয়ারলাইন্সের কর্মকর্তা নাম না প্রকাশের শর্তে জানান, অর্থ ছাড় পরিস্থিতির উন্নতি হলেও এর গতি অনেক কম। যে কারণে এয়ারলাইন্সগুলো তাদের আয় সহসা নিজ দেশে পাঠাতে পারছে না। এ কারণেই অনেক এয়ারলাইন্স অনলাইন ট্রাভেল এজেন্সির মাধ্যমে টিকেট বিক্রি করছে, যাতে করে তারা মুনাফা সহজেই দেশে পাঠাতে পারে।

অ্যাসোসিয়েশন অব ট্রাভেল এজেন্টস অব বাংলাদেশের (আটাব) সেক্রেটারি জেনারেল আফসিয়া জান্নাত সালেহ বলেন, বিষয়টির সুরাহার জন্য আমরা বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়কেও বিষয়টি জানিয়েছি। সমস্যাটি যদি দীর্ঘায়িত হয়, তাহলে এই খাতের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা যেমন ঝুঁকির মুখে পড়বেন, তেমনি দেশও রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হবে।

সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় বার্তা ২৪-এ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *