বিনোদন

আমার গায়কীতে হাবিব ওয়াহিদ খুব খুশি

ডেস্ক রিপোর্টঃ তরুণ প্রজন্মের জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী তাসনিম আনিকা। মাত্র অর্ধযুগের সংগীত ক্যারিয়ারে পেয়েছেন চ্যানেল আই মিউজিক অ্যাওয়ার্ডসহ বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ পুরস্কার। গতকাল একটি ডুয়েট গান করেছেন হাবিব ওয়াহিদের সঙ্গে। সমসাময়িক নানা বিষয়ে বার্তা২৪.কমের সঙ্গে কথা বলেছেন তিনি

মাসিদ রণ : হাবিব ওয়াহিদের সঙ্গে প্রথমবার গান করলেন। অভিজ্ঞতা কেমন?

তাসনিম আনিকা : যে কোন শিল্পীর জীবনে কিছু স্বপ্ন থাকে। আমারও তেমন কিছু স্বপ্ন রয়েছে। তারমধ্যে একটি স্বপ্ন হলো- আমার দেশের যে সব শিল্পীর গান শুনে বড় হয়েছি, কিংবা ব্যক্তিগতভাবে আমি যাদের ভক্ত, যারা দেশের মিউজিক ইন্ডাস্ট্রিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন তাদের সবার সঙ্গে কাজ করা। তেমনি একটি স্বপ্ন ছিল হাবিব ওয়াহিদের সঙ্গে গান করার। কারণ তিনি আমাদের মিউজিকে একটি নতুন ধারার সৃষ্টি করেন। আমার এই স্বপ্নটি এতো দ্রুত পূরণ হবে ভাবিনি। তার সঙ্গে ‘জ্বালা’ শিরোনামে একটি ডুয়েট গান করেছি। গতকালই রেকর্ডিং হয়েছে। গানটি লিখেছেন সুহৃদ সুফিয়ান। সুর আর সংগীতও করেছেন হাবিব ভাই। অসাধারন অভিজ্ঞতা হয়েছে। তিনি কতোটা পারফেকশনিস্ট সেটি কাজ না করলে বুঝতাম না। টানা তিন ঘন্টা ধরে আমরা রেকর্ডিং করেছি। তিনি প্রতিটি শব্দ ধরে ধরে কাজ করেছেন। ফাইনালি আমার গায়কী নিয়ে তিনি অনেক খুশি। গানটি একটু ফাংকি ধাচের। আশা করছি দর্শক শ্রোতার খুব ভালো লাগবে। হাবিব ভাই বলেছেন, খুব দ্রুতই গানটি তার ইউটিউব চ্যানেল ও সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশ হবে।

হাবিব ওয়াহিদ ও তাসনিম আনিকা

মাসিদ রণ : গানটি আপনার কাছে এলো কিভাবে?

তাসনিম আনিকা : হাবিব ভাইয়ের সঙ্গে তো কয়েক বছর ধরেই পরিচয়। নানা সময়ে তার সঙ্গে দেখা হয়েছে। শুরু থেকেই তাকে বলেছি আমি তার গানের কতো বড় ভক্ত। এবং তার সঙ্গে কাজ করার ইচ্ছে পোষন করেছি। কিন্তু তার সঙ্গে অনেক বিষয়ে কথা হলেও কখনো সাহস হয়নি সরাসরি আমাকে একটি গান দেওয়ার কথা বলতে। কদিন আগে আমরা কয়েকজন শিল্পী মিলে আড্ডা দিচ্ছিলাম। হঠাৎ করেই হাবিব ভাই বললেন, আনিকা একটা গান আছে একটু ট্রাই করিস তো। আমি ভাবলাম, মনে হয় এমনি তুলতে বলছে। কিন্তু উনি যখন সুর আর সংগীতায়োজন ঠিকঠাক করে আমাকে স্টুডিওতে ডাকলেন আমি অবাক হই! আরও বেশি শকড হই যখন দেখি উনি আমার সঙ্গে ডুয়েট গাইছেন!

মাসিদ রণ : আমাদের দেশের আর কার কার সঙ্গে কাজ করার স্বপ্ন দেখেন?

তাসনিম আনিকা : সত্যি বলতে আমি ভীষণ লাকি। ২০১৬ তে পাওয়ার ভয়েজ প্রতিযোগীতার মাধ্যমে আমি শোবিজে আসি। এতো কম সময়ে আমি যে সব মানুষের সঙ্গে কাজের সুযোগ পেয়েছি সেটি ভাবলে মাঝে মাঝে অবাক হই। গান বাংলার কর্ণধার তাপস ভাইয়ার সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতা আমাকে সংগীতের নতুন দিগন্ত খুলে দিয়েছে। এছাড়া হৃদয় খানের সঙ্গে আমার দারুণ একটি রসায়ন তৈরী হয়। কাজ করেছি ফুয়াদ আল মুক্তাদিরের মতো মেধাবী কম্পোজারের সঙ্গে। আরও অনেকের সঙ্গে কাজ করার ইচ্ছে পোষন করি।

মাসিদ রণ : আপনি একাধিক গুরুত্বপূর্ণ পুরস্কার পেয়েছেন। কিন্তু জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পাননি। রাষ্ট্রীয় এই স্বীকৃতি নিয়ে কি মনোভাব পোষন করেন?

তাসনিম আনিকা : আমার ক্যারিয়ার তো মাত্র শুরু। সিনেমাতে গানের সংখ্যাও কম। তাই হতাশ হওয়ার কোন কারণ নেই। নিশ্চয়ই সামনে সুযোগ রয়েছে। সবচেয়ে ভালোলাগছে আমাদের সমসাময়িক শিল্পীরাও জাতীয় পুরস্কার পাচ্ছেন। এ থেকে আমরা আশান্বিত হয়েছি যে, আমাদের প্রজন্মকেও সমান মর্যাদার সঙ্গেই বিচার করা হচ্ছে। ঐশী যখন পুরস্কার পায় মনে হচ্ছিল আমরাই পুরস্কারটি পেয়েছি। তার হাতে পুরস্কার দেখে মনে হয়েছে ভালো গান করলে আমিও একদিন এই পুরস্কার পাব।

স্টেজ শোতে তাসনিম আনিকা

মাসিদ রণ : আজকাল স্টেজ পারফরমেন্সে নতুনত্ব এনেছেন। এটা কতোটা গুরুত্বপূর্ণ?

তাসনিম আনিকা : দেখুন এখন কিন্তু গানের শিল্পীরা শুধু গান গেয়েই কাজ শেষ হয়ে যায় না। আমরা নিত্যদিন গায়কী নিয়ে এক্সপেরিমেন্ট করি। কিন্তু স্টেজ শো করতে গেলে কিন্তু শিল্পীকে একজন পারফর্মার হতে হয়। তাই সেই পারফরমেন্সটাকে কতোটা ভিন্নতা দেওয়া যায় আমি সেই চেষ্টাই করি। আমার উদ্দেশ্য থাকে, এমন কিছু করব যাতে দর্শকের মনের মধ্যে সেটির রেশ কিছু দিন থেকে যায়। এই বিষয়ে আমাকে অনুপ্রানীত করেছিলেন ফুয়াদ আল মুক্তাদির। তিনি বলেছিলেন, আমার পারফরমেন্সের রেশ থেকে যায় দর্শকের মনে। সেই রেশটাকে আরও দীর্ঘস্থায়ী করার জন্য আমি সাজ পোশাকে ভিন্নতা এনেছি। কদিন আগে পাখনা লাগিয়ে একটি পারফরমেন্স করি। সেটির রেশ শেষ হতেই ‘চলো বাংলাদেশ’ কনসার্টে বিশাল মুকুট পরে পারফর্ম করি। সর্বশেষ করেছি লম্বা টেলওয়ালা কেপ পরে।

মাসিদ রণ : গান ও স্টেজ পারফরমেন্সে কোন শিল্পীকে অনুসরন করেন?

তাসনিম আনিকা : অনেক শিল্পীকে অনুসরন করি। বিশেষ করে তিনটি নাম বলতে চাই। কিংবদন্তি জেনিফার লোপেজ তো আছেনই, এছাড়া বলিউডের সুনিধি চৌহান ও হলিউডের ডুয়া লিপা আমার সবচেয়ে পছন্দ। এতো প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পরও কিন্তু সুনিধি চৌহান সম্প্রতি নিজের ফ্যাশন স্টেটমেন্টে পরিবর্তন এনেছেন। এসব আমাকে অনুপ্রানীত করে।

স্টেজ শোতে তাসনিম আনিকা

মাসিদ রণ : আমার নতুন নতুন সাজ পোশাকে কে সাহায্য করে?

তাসনিম আনিকা : কেউ না। আমার পোশাক কি হবে, কি ধরনের মেকাপ হবে, সঙ্গে কি জুতা বা গয়না করব, স্টেজ পারফরমেন্স কিভাবে করব সবটার কম্পোজিশন আমি নিজেই করি। এমনকি আমি সাজিও নিজের হাতে।

 

 

 

সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় বার্তা ২৪ এ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *