সারাদেশ

মাগুরায় পেট্রোল বোমা হামলার নয় বছর, শেষ হয়নি বিচার কাজ

ডেস্ক রিপোর্ট: মাগুরার আলোচিত পেট্রোল বোমা হামলায় ৫ জন বালু শ্রমিক নিহতের ৯ বছর পূর্ণ হলো বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ)। দীর্ঘ সময়েও এ মামলার বিচার কাজ এখনো শেষ না হওয়ায় হতাশা ব্যক্ত করেছেন বোমা হামলায় হতাহত ৮ পরিবারের সদস্যরা। দীর্ঘ নয় বছর ধরে তারা বয়ে বেড়াচ্ছেন সেই নৃশংস হত্যাযজ্ঞের স্মৃতি।

২০১৫ সালের ২১ মার্চ সন্ধ্যায় দেশব্যাপী চলমান সহিংসতার এক পর্যায়ে মাগুরা-যশোর সড়কের মাগুরা সদরের মঘির ঢালে পেট্রোল বোমা হামলায় মাগুরা সদর উপজেলার মালিকগ্রামের ৮ জন বালু শ্রমিক দগ্ধ হয়। যার মধ্যে রওশন আলী, আব্দুল মতিন, ইয়াদুল, শাকিল ও ইমরান মারা যায়। পেট্রোল বোমায় দগ্ধ হয়ে আহত হন একই গ্রামের নাজমুল, ইলিয়াস ও আরব আলী।

এ ঘটনায় পর দিন ২২ মার্চ মাগুরা সদর থানার সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) আব্দুল সালাম বাদী হয়ে মাগুরা সদর থানায় তৎকালীন জেলা জামায়াতের আমীর আলমগীর হোসেন, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলী আহমেদসহ ২৬ জনকে আসামি করে ২০০৯ সালের সন্ত্রাস বিরোধী আইনে মামলা দায়ের করেন। মামলার দীর্ঘ তদন্ত শেষে মামলা তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ইমাউল হক ১৬ আগস্ট ২০১৫ তারিখে ২৩ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশীট দাখিল করেন। যেখানে ১১৪ জনকে সাক্ষী হিসেবে উপস্থাপন করেন। পরবর্তিতে ২০১৭ সালের ৩১ জুলাই মাগুরার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা আদালতে চার্জ গঠনের মাধ্যমে বিচার কার্যক্রম শুরু হয়। তবে ১ বছরের অধিক সময় অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ পদটি শূন্য থাকা ও পরে ২ বছর করোনার কারণে মামলার বিচার কাজ সম্পন্ন করা যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্র পক্ষ। অন্যদিকে গত নয় বছর ধরে বিভীষিকাময় সেই দিনের ভয়াবহ স্মৃতি বয়ে বেড়াচ্ছেন মালিক গ্রামের এসব পরিবারের সদস্যরা।

মাগুরার আলোচিত পেট্রোল বোমা হামলায় নিহত মতিন বিশ্বাসের বাবা টোকন বিশ্বাস কান্না জড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘আমার বয়স হয়েছে আমি যেন মৃত্যুর আগে দেখে যেতে পারি ওইসব খুনিদের বিচার হয়েছে। ফাঁসিতে ঝুলেছে তারা।’

বোমা হামলায় আহত ইলিয়াস বিশ্বাস বলেন, ‘বোমা হামলায় তাদের শরীরের অধিকাংশ অংশ পুড়ে গেছে। অনেকটাই পঙ্গুত্ব জীবনযাপন করছেন তিনি। বেশিক্ষণ কাজ করতে পারি না। দ্রুত বিচার কাজ শেষ করে খুনিদের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি চাই।’

মামলার রাষ্ট্র পক্ষের আইনজীবী মাগুরার পাবলিক প্রসিকিউটার এ্যাডভোকেট কাজী এস্কেন্দার আজম বাবলু জানান, দেশে করোনার কারণে আদালতের কার্যক্রম বন্ধ থাকায় বিচার কাজ একটু বিলম্বিত হয়েছে। তবে ইতিমধ্যে এ মামলার বাদী,তদন্তকারী কর্মকর্তা, বিস্ফোরক বিশেষজ্ঞ, জব্দ তালিকার সাক্ষীসহ ইতিমধ্যে ৫৭ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। আগামী ২৪ এপ্রিল বাকি সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য দিন রয়েছে। আশা করছি অন্যান্য সাক্ষীদের সাক্ষ্য গ্রহণ করে দ্রুতই এ মামলার বিচার কাজ শেষ হবে।

সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় বার্তা ২৪-এ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *