সারাদেশ

বিএনপি নেতারা সরকারের সঙ্গে লাইন দিয়েছিলেন: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

ডেস্ক রিপোর্ট: সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, কতটা দেওলিয়া, উগ্র মানসিকতা সম্পন্ন, কতটা রাজনৈতিক, কূটনৈতিক শিষ্টাচার বহির্ভূত হলে প্রতিবেশী রাষ্ট্রকে বয়কটের কথা বলতে পারে একটা দল। বয়কটের নামে তারা (বিএনপি) আমাদের বাজার ব্যবস্থাকে অস্থিতিশীল করার গভীর ষড়যন্ত্র করছে।

শুক্রবার (২২ মার্চ) দুপুরে ধানমন্ডির আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে ডাকা এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা বলেন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যার পর একুশ বছর ভারতের সাথে বৈরি সম্পর্ক আমাদের ক্ষতি করেছে বেশি। ৬৮ বছরের সীমান্ত সমস্যা নিরসনে যুগান্তকারী পদক্ষেপ নিয়েছে। ছিটমহল এমন জটিল বিষয় এর সমস্যার সমাধান শান্তিপূর্ণ ভাবে এমন নজির খুব কম। কিন্তু এখানে শান্তিপূর্ণভাবে সমাধান হয়েছে। সম্পর্ক ভাল থাকলে আলাপ আলোচনার মাধ্যমে ছিটমহল সীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়নের কাজটা তো করছি।

সম্পর্ক ভাল থাকলে সব সমস্যার সমাধান সম্ভব জানিয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, তিস্তা, ফেনী নদীসহ যেগুলো এখনো সমাধান হয়নি। কিন্তু সম্পর্ক ভাল থাকায় ইতিবাচক অগ্রগতি আছে। সম্পর্ক ভাল থাকলে সমাধান সম্ভব এটা এর মধ্যে প্রমাণ হয়েছে।

বিএনপি নেতা রুহুল কবির রিজভীর দিকে ইঙ্গিত করে মন্ত্রী বলেন, একজন নেতা নিজের চাদর ছুড়ে ফেলে দিয়ে ভারতের পণ্য বয়কটের নিদর্শন তুলে ধরেছে। এটা কতটা অবাস্তব। এটা করে কি সম্ভব? আমাদের নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের একটা বড় অংশ ভারত থেকে আসে। এর সুবিধাও আছে। এতে পরিবহন খরচ অনেক কম হয়।

২৫ মার্চ গণহত্যা দিবসে আওয়ামী লীগের কর্মসূচি বিষয়ে তিনি বলেন, ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে সমাবেশ করব। মহানগর উত্তর দক্ষিণ আয়োজন করবে। আমাদের একাত্তরের যে জেনোসাইড এর আন্তর্জাতিক স্মীকৃতির জন্য দাবি আরও জোরদার করবো। সে জন্য প্রোগ্রামটি বাহিরে করব।  

বিএনপির ভারতীয় পণ্য বয়কটের ডাকে আওয়ামী লীগ বিচলিত কি না এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, এটা বিরোধী দলের একটা আচরণ। তাদের অনেক অশুভ খেলায় আমরা বিচলিত হইনি। তারা আন্দোলনের নামে তখন যেভাবে উগ্রমূর্তি ধারণ করেছে সেটা তো আমরা ঠান্ডা মাথায় জবাব দিয়েছি। আমরা তাদের সমাবেশের জবাবে আমরা শান্তিসমাবেশ করেছি। আমার শান্তি সমাবেশ তাদের আন্দোলনের বিপরীতে চরমাঘাত ছিল তখনকার বাস্তবতায়। আমরা তখনো তাদের আন্দোলনে বিচলিত হইনি। এখন তো তারা হাটু ভাঙ্গা, কোমড় ভাঙ্গা পার্টি। এ নিয়ে বিচলিত হবার কোন কারণ আমরা দেখছি না। 

তিনি বলেন, বাংলাদেশ যখন পাকিস্তানের অংশ ছিল তখনো আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে অপপ্রচারের একটা বিষয় ছিলো, সেটা হলো ভারত ভীতি। তখনো আওয়ামী লীগ মানেই হচ্ছে ভারতের এজেন্ট। সেটা পাকিস্তানের আইয়ুব, ইয়াহইয়ার যেমন অপ্রপচার ছিল তেমন বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ বিরোধীরা সবসময় ইন্ডিয়ার এজেন্ট বলে আমাদের চিহ্নিত করতে চেয়েছে। ভারত বিরোধীতা বলে জনমতকে সাম্প্রদায়িকভাবে প্রভাবিত করতে চেয়েছিল। পাকিস্তান আমল থেকে যে সাম্প্রদায়িক রাজনীতির এটা একটা অবিচ্ছেদ্য অংশ। যেটা মাঝে মধ্যে চলে। যখন কোন ইস্যু থাকে না আন্দোলনের তখন ভারত বিরোধীতায় ইস্যু।

ভুটান থেকে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ আনার ক্ষেত্রে ভারত বাংলাদেশ কে সহযোগিতা করবে কি না এমন প্রশ্নের উত্তরে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, দেবে না এটা তো বলেনি, ভুটানের রাজা আসছেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সাথে দেখা হবে। আমাদের প্রধানমন্ত্রীর সাথে পারিবারিক একটা সম্পর্ক আছে। উনি আসবেন। ভারত অসম্মত হবে আমরা এটা মনে করছি না। আমাদের প্রধানমন্ত্রী জনস্বার্থে একটা অনুরোধ জানালে সেটা ফিরিয়ে দিবেন এটা মনে হয় না।

অন্য আরেক প্রশ্নের উত্তরে সেতুমন্ত্রী বলেন, আমি ষড়যন্ত্র বুঝি না, আমি বুঝি আমার জাতীয় স্বার্থ। ভারতের সাথে আমি অতটুকু বন্ধুত্ব রাখবো যতক্ষনআমার জনগণের স্বার্থ, জাতীয় স্বার্থ নিশ্চয়তা পাবে। এরকম বিষয়গুলোতে ভারতের সাথে আমাদের বন্ধুত্ব থাকবেই। প্রতিবেশীর সাথে ঝগড়া করে কারো কোন লাভ নেই। ভারত বিশাল দেশ, অনেক কিছুতে তারা আমাদের চেয়ে উন্নত দেশ। আমরা বিশ্ব অর্থনীতিতে ৩৫তম দেশ, আর তারা ৫ম। এরপরে তারা নিজেদের ৪র্থ বলে দাবি করে। তারা উন্নত দেশ। কাজেই তাদের সাথে সম্পর্ক ভাল রেখেই আলাপ আলোচনা করে সুবিধা আদায় করা সম্ভব। যেটা আমরা এরই মধ্যে প্রমাণ করেছি।

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন, সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক, উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান, কার্যনির্বাহী সদস্য আনোয়ার হোসেন প্রমুখ।

সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় বার্তা ২৪-এ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *