সারাদেশ

ইন্টার্ন চিকিৎসকদের দাবি দ্রুত সমাধান করা হবে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

ডেস্ক রিপোর্ট: বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেছেন, বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ বাঙালির শৃঙ্খল মুক্তির পথ দেখিয়েছে। ওই ভাষণ জাতিকে স্বাধীনতার দিক নির্দেশনা দিয়েছে। দেখিয়েছে স্বাধীনতা ও অর্থনৈতিক মুক্তির পথ দেখিয়েছে।

শনিবার (২৩ মার্চ) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) মিলনায়তনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৪তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

বাংলাদেশ ছাত্রলীগের আয়োজনে এ অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান।

জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, ৭১’ এর মার্চ মাসে ৭ই মার্চে দশ লক্ষাধিক মানুষের সামনে বঙ্গবন্ধু ১৮ মিনিটে এক হাজার ১০৮ শব্দের যে বক্তব্য দিয়েছেন সেই বক্তৃতায় তিনি কোন কাগজ/পয়েন্ট লিখে বক্তৃতা দেননি। কিন্তু তার উপর চাপ ছিল সেখানে স্বাধীনতা ঘোষণা করলে ফাইটার প্লেন দিয়ে আক্রমণ হতে পারে। আওয়ামী লীগের তৎকালীন অনেক নেতা তখন তাঁকে এ ভাষণ না দেওয়ার জন্য পরামর্শ দিয়েছিলেন। সব পরামর্শ ফেলে দিয়ে বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব রেণু বঙ্গবন্ধুকে বলেছিলেন, তুমি সারাজীবন মানুষের জন্য রাজনীতি করেছ। তুমি চলে যাবা, তোমার মানুষের স্বার্থে যা বলার তুমি তাই বলবা। 

স্বাধীনতা ঘোষণার ব্যাপারে মন্ত্রী বলেন, ২৫ মার্চ এই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হল থেকে গণহত্যা পরিচালনা করা হয়েছিল। বঙ্গবন্ধু মুজিব টেলিগ্রাম-টেলিমিটারের মাধ্যমে যে স্বাধীনতা ঘোষণা করেছিলেন তাই সর্বশেষ। কিন্তু পাকিস্তান এবং তাদের মিত্র রাষ্ট্র চীন কেওই তাকে বিচ্ছিন্নতাবাদী বলতে পারেনি। কারণ তিনি ছিলেন সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণের নির্বাচিত নেতা। যে জিয়াউর রহমান ৫২ দেখে নাই, ৫৪ দেখে নাই, ৫৬ দেখে নাই, ৫৮ দেখে নাই ৬৬ দেখে নাই ৬৯ দেখে নাই, ৭০ এর নির্বাচন দেখে নাই তিনি হঠাৎ করে চট্টগ্রাম এর কালুরঘাট রেডিও থেকে ঘোষণা করে ঘোষক হয়ে গেলেন।

তিনি বলেন, বরিশালে আমি একমাত্র মানুষ যে বঙ্গবন্ধুর ঘোষণা মাইকিং করেছিলাম। তাহলে তো আমিও ঘোষক। যদি জিয়াউর রহমান ‘অন বিহাফ অব শেখ মুজিবুর রহমান’ বলে স্বাধীনতার কথা বলে ঘোষক হয় তাহলে কি জাহাঙ্গীর কবির নানক ও ঘোষক? কল রেডিও ঘোষক? এই হলো ইতিহাস বিকৃতি।

প্রধান আলোচকের বক্তব্যে অধ্যাপক মীজানুর রহমান বলেন, পৃথিবীর অল্প কয়েকটা দেশ আমাদের স্বাধীনতার পক্ষে ছিল—ভারত, তদানিন্তন সোভিয়েত রাশিয়া এবং তাদের সাথে ৭/৮ টা দেশ ছাড়া কেউই আমাদের পক্ষে ছিল না। ১৬ই ডিসেম্বর পাকিস্তান হানাদার বাহিনী আত্মসমর্পণের নয়দিন আগে ৬ ডিসেম্বর নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে ১১০টি দেশ বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিল। এর মধ্যে আমাদের বর্তমানে যত আন্তর্জাতিক মুরব্বি বন্ধু আছে—যুক্তরাষ্ট্র, চীন সবাই আমাদের বিপক্ষে ছিল। ইসলামি দেশ ও ইসলামি উন্মাহর দুই একটা দেশ ছাড়া বাকি সবদেশ আমাদের বিপক্ষে ছিল।

তিনি আরও বলেন, এই অভ্যন্তরীণ শত্রু এবং বৈদশিক শত্রু এরা সবাই মিলে রেসকোর্স ময়দানে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর আত্মসমর্পণ করে। তারা এ পরাজয় মেনে নেয়নি– তারা রাষ্ট্র ক্ষমতায় অধিষ্ঠ হয় ‘৭৫ সালের ১৫ আগষ্ট। ওই সময়ে সামরিক অভ্যুত্থান একটা নৈমত্তিক ব্যাপার ছিল। কোনো কোনো দেশে মাসে দু’বারও সামরিক অভ্যুত্থান হত। লাওস, কম্বোডিয়া থেকে থাইল্যান্ড থেকে আরম্ভ করে, লাতিন আমেরিকা, আফ্রিকার বিভিন্ন দেশে মাসে দুই বার সামরিক অভ্যুত্থান হত এরকম ঘটনাও আছে। ওই অভ্যত্থানগুলো ছিল একজন জেনারেল থেকে আরেকজন জেনারেল ক্ষমতাটা নিয়ে নেওয়া। কিন্তু ‘৭৫ এর ১৫ আগষ্ট কোনো ক্ষমতা বদলের অভ্যুত্থান ছিল না—এটা ছিল রাষ্ট্রটাকে বদল করার অভ্যুত্থান।

সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় বার্তা ২৪-এ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *