সারাদেশ

কাঙ্ক্ষিত সাড়া নেই অনলাইনেও, অগ্রিম টিকিট বিক্রিতে ভাটা

ডেস্ক রিপোর্ট: আসন্ন ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে শুরু হয়েছে ঘরমুখী মানুষের ঈদযাত্রার অগ্রিম টিকিট বিক্রি। তবে যাত্রীর চাপ না থাকায় ভাটা পড়েছে এই কার্যক্রমে। কাউন্টার থেকে অগ্রিম টিকিট বিক্রির পাশাপাশি অনলাইন টিকিট বিক্রিতেও মিলছে না কাঙ্ক্ষিত সাড়া। এতে পরিবহন শ্রমিকদের কপালে দুশ্চিন্তার ভাঁজ পড়েছে।

রোববার (২৪ মার্চ) সকালে রাজধানীর প্রবেশমুখ গাবতলী বাস টার্মিনাল ঘুরে পরিবহন শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, অতীতে অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হলে কাউন্টারগুলোতে যাত্রীদের দীর্ঘ লাইন হলেও বর্তমানে সেই চিত্রটা ভিন্ন। কাউন্টারে কোন যাত্রী নাই, নেই দীর্ঘ লাইন। কাউন্টারে বসে যাত্রীর খোঁজে অবসর সময় কাটাচ্ছেন পরিবহন শ্রমিকেরা।

অগ্রিম টিকিট কাটতে আসা যাত্রীর পাশাপাশি অনলাইনেও যাত্রী পাচ্ছেন না বলে জানান পরিবহন শ্রমিকেরা।

এস বি সুপার ডিলাক্সের কাউন্টার মাস্টার জিল্লুর রহমান বলেন, একটা সময় ঈদের অনেক আগে থেকেই গাবতলীতে মানুষ রাত জেগে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতো টিকিট কাটার জন্য। কিন্তু এখন টিকিট বিক্রির কোন চাপই নেই। আজ পর্যন্ত টিকিট বিক্রি হয়েছে কোন গাড়িতে ৭ থেকে ৮ জনের বেশি যাত্রী নেই। তবে ৮ এবং ৯ এপ্রিলের কিছু যাত্রী পেয়েছি।

গাবতলী বাস টার্মিনাল তিনি বলেন, বর্তমানে অধিকাংশ মানুষ ট্রেনে যাতায়াত করে। কারণ ট্রেন যাত্রায় যানজট থাকে না। নির্দিষ্ট টাইমে বাড়িতে পৌঁছাতে পারে। বাসের থেকে ভাড়াও কম।

অনলাইনে টিকিট বিক্রির কথা জানিয়ে তিনি বলেন, অনলাইনেও টিকিট খুব একটা বিক্রি নেই। কিছু টিকিট বিক্রি হয়েছে তাও ঈদের দুই একদিন আগের কিছু টিকিট। অধিকাংশ আসনই ফাঁকা রয়েছে।

শ্যামলী এন আর ট্রাভেলসের কউন্টার মাস্টার ওমারুল ইসলাম বলেন, ঈদের যাত্রীর চাপ নেই এখন পর্যন্ত। যদিও আমাদের গাড়ির অগ্রিম টিকিট সব কল্যাণপুর থেকে দিচ্ছে। তবে অনলাইনে দেখলাম এখন পর্যন্ত যাত্রীর কোন চাপ নেই। গাবতলীতে অনেকেই টিকিট বিক্রির ওপর কমিশন হিসেবে টাকা পাই। টিকিট বিক্রি না হলে এসব শ্রমিকদের ঈদ করা কষ্ট হয়ে যাবে।

যাত্রী চাপ না থাকার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, আজ থেকে ট্রেনের টিকিট ছেড়েছে। অনেকে ট্রেনে যাওয়ার চেষ্টা করবেন। তাই ট্রেনের টিকিট কাটবে। যদি ট্রেনে টিকিট না পায় তখন বাসে যাবে। তাই কয়েকদিন না গেলে কিছুই বলা যাচ্ছে না।

এদিকে পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ঘরমুখী মানুষের দুর্ভোগ লাঘবে আগে আগে শুরু হয়েছে বাসের অগ্রিম টিকিট বিক্রি কার্যক্রম। গত শুক্রবার (২২ মার্চ) সকাল থেকে বাসের কাউন্টারগুলোতে অগ্রিম টিকিট বিক্রির কার্যক্রম শুরু করতে দেখা গেছে।

বাংলাদেশ বাস-ট্রাক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, গত শুক্রবার থেকেই আন্তঃজেলা সব বাস কাউন্টারে অগ্রিম টিকিট পাওয়া যাচ্ছে। একই সঙ্গে যাত্রীরা অনলাইনের মাধ্যমে অগ্রিম টিকিট সংগ্রহ করতে পারবেন বলেও জানানো হয়েছে।

এর আগে, বাংলাদেশ বাস-ট্রাক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান রমেশ চন্দ্র ঘোষ জানান, বিআরটিএর নির্ধারিত ভাড়া অনুযায়ী বাসের ভাড়া নেওয়া হবে। ভাড়ার তালিকার বাইরে বাড়তি ভাড়া নেওয়া যাবে না। সব বাস মালিকদের সেই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

বাস কোম্পানিগুলো অনলাইনে টিকিট বিক্রির সহযোগী প্রতিষ্ঠান ‘বাসবিডি ডটকম ডট বিডি’ এক বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, ঈদুল ফিতর উপলক্ষে বাসের অগ্রিম টিকিট শুক্রবার থেকে অনলাইন মাধ্যমে দেওয়া হবে। ই-টিকিট কেনা যাত্রীদের জানানো হয়েছে, রাস্তায় সৃষ্ট জ্যামের কারণে ও গাড়ির যান্ত্রিক ত্রুটি এবং অন্যান্য প্রাকৃতিক কারণে যাত্রার সময় পরিবর্তন হতে পারে। বিষয়টি জেনে টিকিট ক্রয় করতে বলা হচ্ছে।

সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় বার্তা ২৪-এ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *