সারাদেশ

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর জয়

ডেস্ক রিপোর্ট: দক্ষিণ এশিয়ার অর্থনৈতিক সম্ভাবনা বিশাল। কিন্তু সে সম্ভাবনা কাজে লাগানো যাচ্ছে না। এ অঞ্চলে সার্কের (সাউথ এশিয়ান অ্যাসোসিয়েশন ফর রিজিওনাল কো-অপারেশন) মতো সংগঠন থাকলেও তা নিষ্ক্রিয়। বিভিন্ন বাণিজ্য সুবিধা রয়েছে, তা কার্যকর নয়। সার্ক ফুড ব্যাংক এবং বীজ ব্যাংকের মতো প্রতিষ্ঠানের কথা বলা হয়েছে। কিন্তু কার্যকর নয়। পারস্পরিক অবিশ্বাস এই অঞ্চলে অন্যতম সমস্যা। এসব সমস্যা দূর করে একটি সুষ্ঠু অর্থনৈতিক করিডোর গড়ে তুলতে হবে। এক্ষেত্রে কানেকটিভিটি বাড়ানোর বিকল্প নেই।

রবিবার (৫ নভেম্বর) রাজধানীর একটি হোটেলে দুই দিনব্যাপী ‘সাউথ এশিয়ান ইকোনমিক সামিটের’ সমাপনী দিনে বক্তারা এসব কথা বলেন।

বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগ (সিপিডি) আয়োজিত এ সম্মেলনে মহামারির প্রভাব, বৈশ্বিক সংঘাত, জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবিলা, খাদ্য নিরাপত্তা, মূল্যস্ফীতি, স্বাস্থ্য ও সামাজিক খাত, ভূরাজনীতি, নারীর ক্ষমতায়ন, গণতন্ত্র, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং শ্রমবাজারসহ বিভিন্ন ইস্যু উঠে আসে।

সমাপনী অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন সিপিডির চেয়ারম্যান ড. রেহমান সোবহান।

এছাড়াও বক্তব্য রাখেন ঢাকায় ইউএনডিপির আবাসিক প্রতিনিধি স্টেফান লিলার, সার্কের শিক্ষা নিরাপত্তা এবং সংস্কৃতিবিষয়ক পরিচালক ইরোশা কুরাই, ভারতের রিসার্স অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেম ফর ডেভেলপিং কান্ট্রিসের মহাপরিচালক প্রফেসর সচিন চাতুরভেদি, ইনস্টিটিউট অব পলিসি স্ট্যাডিস অব শ্রীলংকার নির্বাহী পরিচালক ড. দুশনি উইকারুন, নেপালের বেসরকারি গবেষণা সংগঠন সাউথ এশিয়া ওয়াচ অন ট্রেড, ইকোনমিক অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টের নির্বাহী পরিচালক ড. পারাস খারেল এবং সিডিপির গবেষণা পরিচালক ড. খোন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম।

অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন।

ড. রেহমান সোবহান বলেন, এই অঞ্চলে বিভিন্ন সময় অনেক উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। কিন্তু তা কার্যকর হয়নি। ভারতের কোনও উদ্যোগে পাকিস্তানের কাছ থেকে কাঙ্ক্ষিত সহযোগিতা মিলছে না। ভারতও একই আচরণ করছে পাকিস্তানের সঙ্গে। বাংলাদেশ থেকে নেপালে পণ্য নিতে ভারত প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে।

তিনি বলেন, এক দেশের বাজারে অন্য দেশের পণ্যের শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকারসহ বেশ কিছু উদ্যোগ রয়েছে। কিন্তু তা কার্যকর নেই। এক্ষেত্রে আমলাতান্ত্রিক জটিলতা অন্যতম সমস্যা।

তিনি আরও বলেন, শ্রীলংকায় অনেক বড় অর্থনৈতিক সংকট হয়েছে। ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে এই অঞ্চল সংকটে পড়েছে। এছাড়াও জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বিভিন্ন সময় সমস্যা তৈরি হয়েছে। এসব সমস্যা মোকাবিলায় সম্মিলিত কোনো উদ্যোগ নেই।

ড. রেহমান সোবহান বলেন, এসব সমস্যা মোকাবিলায় দীর্ঘমেয়াদি উদ্যোগ দরকার। এক্ষেত্রে সার্ককে কার্যকর করতে হবে। অর্থনীতিবিদ, সুশীল সমাজ এবং গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলোর এখানে কিছু করার আছে। অর্থনৈতিক সমস্যা ও সম্ভাবনা চিহ্নিত করে সরকারগুলোর কাছে পৌঁছাতে হবে।

এ সময়ে বক্তারা দক্ষিণ এশিয়ার অর্থনৈতিক পাশাপাশি ভিসা ও নীতি-অবকাঠামো উন্নয়ন, প্রযুক্তি হস্তান্তর, বাণিজ্যনীতির উন্নয়ন এবং ঔপনিবেশিক সিভিল সার্ভিস থেকে বেরিয়ে আসার পরামর্শ দিয়েছেন।

বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে সড়ক যোগাযোগ এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামো তৈরির ওপর জোর দেন কেউ কেউ। ভারত ও বাংলাদেশ হাইওয়ে এবং রেল যোগাযোগ উন্নত করা এবং কাস্টমস সম্পর্কিত অবকাঠামোতে দৃশ্যমানের উন্নয়নের সুপারিশ আসে।

তাদের মতে, ভূরাজনৈতিক বাস্তবতায় প্রতিবেশীদের সম্পর্ক খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে পারস্পরিক বাণিজ্য, আঞ্চলিক সম্পর্ক এবং স্থিতিশীলতা রক্ষায় পরস্পর মিলে কাজ করতে হবে। ফলে সরকারগুলোকে তাদের নীতিতে পরিবর্তন আনতে হচ্ছে। দুর্নীতি এবং ভৌগোলিক বাস্তবতা দক্ষিণ এশিয়ার কমন চ্যালেঞ্জ। এ সময়ে ডলারের আধিপত্য কমাতে মত দিয়েছেন কেউ কেউ।

অন্যান্য সেশনে বক্তারা বলেন, করোনার মতো এতবড় একটি মহামারি মোকাবিলা করছে বিশ্ব। কিন্তু এরপর স্বাস্থ্য খাতে যতটা জোর দেওয়ার কথা ছিল, এই অঞ্চলের কোনো দেশের কাছ থেকেই তেমন উদ্যোগ চোখে পড়েনি। নারীর ক্ষমতায়নের ক্ষেত্রে পরিবার থেকেই বড় ধরনের প্রতিবন্ধকতা তৈরি করা হয়। এছাড়াও উদ্যোক্তা হিসাবে নারীকে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার ক্ষেত্রে অর্থায়ন অন্যতম বাধা।

সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় বার্তা ২৪-এ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *