সারাদেশ

এমভি আবদুল্লাহ, তীর থেকে খাবার আনছে জলদস্যুরা

ডেস্ক রিপোর্ট: এমভি আবদুল্লাহ, তীর থেকে খাবার আনছে জলদস্যুরা

ছবি : সংগৃহীত

সোমালিয়ার উপকূলে জলদস্যুদের হাতে জিম্মি বাংলাদেশি জাহাজে খাবার কমে আসছে। এ কারণে জিম্মিদশার দুই সপ্তাহ পর তীর থেকে এমভি আবদুল্লাহ নামের জাহাজটিতে খাবার আনতে শুরু করেছে দস্যুরা। বুধবার (২৭ মার্চ) এ খবর নিশ্চিত করেছে জাহাজটির মালিকপক্ষ ও নাবিকদের সংগঠন বাংলাদেশ মার্চেন্ট মেরিন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন সূত্র।

১২ মার্চ জলদস্যুরা জাহাজটি জিম্মি করার সময় নাবিকদের জন্য ২৫ দিনের খাবার ছিল। এরই মধ্যে জিম্মিদশার ১৬ দিন পার হয়েছে। এ সময় নাবিকদের পাশাপাশি দস্যুরাও জাহাজের খাবারে ভাগ বসিয়েছিল।

জাহাজের নাবিকদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে আসছে নাবিকদের সংগঠন বাংলাদেশ মার্চেন্ট মেরিন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন। সংগঠনের সভাপতি ক্যাপ্টেন আনাম চৌধুরী বলেন, দস্যুরা নিজেদের স্বার্থেই খাবার নিয়ে আসে। এমভি আবদুল্লাহ জাহাজেও তেহারি জাতীয় খাবার নিয়ে আসার খবর পেয়েছেন তারা।

এর আগে ২০১০ সালে জিম্মি করা এমভি জাহান মণি জাহাজেও খাবার ফুরিয়ে আসার পর দস্যুরা সরবরাহ করেছিল। প্রায় ১০০ দিনের মাথায় নাবিকসহ জাহাজটি মুক্ত হয়। সেই জাহাজে থাকা নাবিক মোহাম্মদ ইদ্রিস জানান, জিম্মি করার পর একপর্যায়ে জাহাজের ফ্রিজ বন্ধ থাকায় হিমায়িত খাবার নষ্ট হয়ে যায়। জিম্মিদশার শেষ দিকে খাবার ফুরিয়ে যাওয়ার পর তীর থেকেই খাবার সরবরাহ করত দস্যুরা।

সাধারণত গন্তব্যে পৌঁছাতে যত দিন সময় লাগবে, তার চেয়ে একটু বেশি দিনের খাবার জাহাজে রাখা হয়। জিম্মি বাংলাদেশি জাহাজটি মোজাম্বিক থেকে আরব আমিরাতে যাওয়ার পথে ভারত মহাসাগরে জলদস্যুদের কবলে পড়ে। এই যাত্রাপথে সময় লাগত ১৫ দিন। এ হিসাবে জাহাজে খুব বেশি দিনের খাবার মজুত ছিল না।

জাহাজের মালিকপক্ষ কবির গ্রুপের মিডিয়া উপদেষ্টা মিজানুল ইসলাম বলেন, জিম্মি নাবিকেরা সুস্থ আছেন। জাহাজে নাবিকদের খাবার কমলেও দুশ্চিন্তার কিছু নেই। কারণ তীর থেকে দস্যুরা জাহাজে খাবার নিয়ে আসছে।

জিম্মি বাংলাদেশি জাহাজ ও নাবিকদের ফিরিয়ে আনতে দস্যুদের সঙ্গে আলোচনা অব্যাহত রয়েছে বলে মালিকপক্ষ জানিয়েছে। দস্যুদের সঙ্গে দ্রুত সমঝোতায় পৌঁছানোর আশা করছে মালিকপক্ষ।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মিজানুল ইসলাম বলেন, ‘দস্যুদের সঙ্গে দ্রুত সমঝোতা করে নাবিকদের নিরাপদে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে আমাদের তৎপরতা চলছে।’

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, জাহাজটি এখন গদভজিরান জেলার জেফল উপকূল থেকে দেড় নটিক্যাল মাইল দূরে নোঙর করে রেখেছে দস্যুরা। জাহাজটির অদূরে ২১ মার্চ একটি যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন করেছিল ইউরোপীয় ইউনিয়নের নৌবাহিনী।

আবার জিম্মি জাহাজ থেকে স্থলভাগে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করতে সোমালিয়ার পান্টল্যান্ড পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে বলে খবর জানিয়েছিল বিবিসি সোমালি।

জলে ও স্থলে দুই দিক থেকে চাপ বাড়তে থাকায় শুরুতে জলদস্যুরা নাবিকদের একটি কক্ষে নিয়ে রাখত। তবে জাহাজটির বাংলাদেশি মালিকপক্ষ কোনো সামরিক অভিযানের পক্ষে নয়, অর্থাৎ ইউরোপীয় ইউনিয়নের যুদ্ধজাহাজ কোনো অভিযান চালাবে না, এমন বিষয় নিশ্চিত হওয়ার পর এখন নাবিকদের কেবিনে থাকার সুযোগ দিচ্ছে দস্যুরা।

নাবিকদের সংগঠনের একজন নেতা জানান, সমঝোতা কখন হবে তা দস্যুদের ওপর নির্ভর করে। কারণ তারা তাদের দাবিতে অনড় থাকলে সমঝোতায় পৌঁছাতে দেরি হবে। তবে বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় দ্রুত সমঝোতা হতেও পারে।

টেকনাফে প্রায় ২ লাখ টাকা মুক্তিপণে ১০ অপহৃতের মুক্তি

ছবি: বার্তা২৪.কম

কক্সবাজারের টেকনাফের হোয়াইক্যং রৈক্ষ্যং পাহাড়ে সকালে কাজে গিয়ে অপহৃত হওয়া ১০ জন কিশোর ও যুবককে ১ লাখ ৯০ হাজার টাকা মুক্তিপণের বিনিময়ে বুধবার (২৭ মার্চ) রাতে মুক্তি দিয়েছে অপহরণকারীরা। তারা বাড়িতে ফিরে এসেছেন বলে জানিয়েছেন স্বজনরা। 

ফেরত অপহৃতরা হলেন, টেকনাফের হোয়াইক্যং ইউনিয়নের করাচি পাড়া এলাকার বেলাল এর দুই ছেলে জুনাইদ (১২) ও মোহাম্মদ নুর (১০), একই এলাকার লেদুর ছেলে শাকিল (১৫), শহর আলীর ছেলে ফরিদ আলম (৩৫), নুরুল ইসলামের ছেলে আকতার (২৫), নাজির হোসেনের ছেলে ইসমাইল প্রকাশ সোনায়া (২৪) ও হোয়াইক্যং রৈক্ষ্যং এলাকার আলী আকবর এর ছেলে ছৈয়দ হোছাইন বাবুল (২৬), কালা মিয়ার ছেলে ফজল কাদের (৪০)। বাকি ২ জনের নাম পরিচয় পাওয়া যায়নি। 

বুধবার রাত ১১টার সময় টেকনাফের হোয়াইক্যং রৈক্ষ্যং ২২ নং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের পশ্চিমে পাহাড়ে তাদেরকে ছেড়ে দেওয়া হয়। সেখান থেকে পরিবারের লোকজন গিয়ে তাদের উদ্ধার করে নিয়ে আসেন। বর্তমানে ওই ১০ জনকে হোয়াইক্যং পুলিশ ফাঁড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

ফেরত আসা শাকিলের পিতা লেদু মিয়া বলেন, রাত ১১টার সময় ২০ হাজার টাকা মুক্তিপণ নিয়ে ছেলে ফেরত দিয়েছে অপহরণকারীরা। কষ্টের সময় মানুষের কাছ থেকে ধার করে টাকা এনে অপহরণকারীর হাত থেকে ছেলে ছেড়ে আনছি। ছেলের সাথে থাকা ১০ জন সবাই মুক্তিপণ দিয়ে ফেরত এসেছেন।

হোয়াইক্যং কানজর পাড়া এলাকার গ্রাম পুলিশ শেখ কবির জানান, সকালে ১০ জন কিশোর ও যুবক পাহাড়ে কাজ করতে যান। অপহরণকারীরা তাদেরকে অপহরণ করে পাহাড়ে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে ১ লাখ ৯০ হাজার টাকা মুক্তিপণ নিয়ে ১০ জনকে রৈক্ষ্যং ২২ নং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের পশ্চিমে ছেড়ে দিয়ে চলে যায় অপহরণকারীরা।  পরিবারের লোকজন গিয়ে পরে তাদের উদ্ধার করা নিয়ে আসেন।

২৬ এবং ২৭ মার্চ টেকনাফের হোয়াইক্যং রৈক্ষ্যং বাদিবন্যা পাহাড়ে এ ১০ জন কিশোর ও যুবক জঙ্গলে গরু চরাতে ও কাজ করতে গিয়ে অপহরণের শিকার হন।

;

হাসপাতালে নয়, বাড়িতেই থাকবেন খালেদা জিয়া: ডা. জাহিদ

ছবি: সংগৃহীত

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া কিছুটা সুস্থতা বোধ করায় তাকে বাসায় রেখে মেডিকেল বোর্ডের অধীনে চিকিৎসা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে চিকিৎসার জন্য গঠিত মেডিকেল বোর্ড। বোর্ডের সদস্য এবং ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. জাহিদ হোসেন গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

বুধবার (২৭ মার্চ) রাতে খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর রাতে গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের বাসায় আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে জাহিদ হোসেন বলেন, বুধবার দুপুর থেকে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বেশ অসুস্থতা বোধ করেন। এ অবস্থায় সন্ধ্যায় ইফতারের পর মেডিকেল বোর্ডের চিকিৎসকেরা তার কিছু পরীক্ষা নিরীক্ষা করেন। তারা খালেদা জিয়াকে সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণে রাখার সিদ্ধান্ত নেন। 

ডা. জাহিদ হোসেন বলেন, এখন কিছুটা সুস্থতা বোধ করার তাকে হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছে না। তবে প্রয়োজন হলে যে কোনও সময় হাসপাতালে স্থানান্তর করা হবে।

উল্লেখ্য, মেডিকেল বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, খালেদা জিয়াকে ১৩ মার্চ এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। শারীরিক কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে ১৪ মার্চ গুলশানের বাসভবন ফিরোজায় ফেরেন তিনি।

২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়া কারাগারে যাওয়ার পর থেকে তাঁর অসুস্থতা বাড়া-কমার মধ্যে রয়েছে। করোনা মহামারির সময় ২০২০ সালের ২৫ মার্চ সরকারের নির্বাহী আদেশে শর্ত সাপেক্ষে মুক্তি পেয়ে বাসায় ফেরেন তিনি। এরপর বেশ কয়েকবার হাসপাতালে যান। সবশেষ গত বছরের মাঝামাঝি সময়ে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটে।

;

পটুয়াখালী সদর থানার পতিত জমিতে সবুজের সমারোহ

ছবি: বার্তা২৪.কম

‘এক ইঞ্চি জমিও অনাবাদি রাখা যাবে না’- খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ থাকার জন্য খাদ্য উৎপাদনে জমির সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করতে এভাবেই দেশবাসীকে আহ্বান জানিয়েছিলেন  প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রীর আহ্বানে সাড়া দিয়ে পটুয়াখালী সদর থানার মালিকানায় থাকা পতিত জমিতে চাষ করা হয়েছে বিভিন্ন ধরনের শাকসবজি। চলতি মৌসুমে পটুয়াখালী সদর থানার সকল পতিত জমিই চাষাবাদের আওতায় আনা হয়েছে।

থানা চত্বর ঘুরে দেখা যায় লাউ, মিষ্টিকুমড়া, বেগুন, টমেটো, করলা, শিম, কাচা মরিচ, শসা, লালশাক, ক্যাপসিকাম থেকে শুরু করে রেড বিটের মতো ফসলও আবাদ করা হয়েছে। এছাড়াও থানার পরিত্যক্ত পুকুরটিকে পরিষ্কার করে করা হচ্ছে মাছ ও হাঁস চাষ।

থানায় নিয়জিত পুলিশ সদস্যরা বলছেন, সরকারি দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি নিজেরাই এসব সবজি ক্ষেতে কাজ করছেন, মিলছে মানসিক প্রশান্তিও। নিয়মিত পরিচর্যা ও তদারকি করায় ফলন হয়েছে ভালো। এখানে উৎপাদিত শাকসবজি থেকে পুলিশ সদস্যদের দৈনন্দিন চাহিদাও পূরণ হচ্ছে। কীটনাশকমুক্ত শাকসবজি খেতে পারায়ও খুশি তারা।

প্রধানমন্ত্রীর যে নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে গিয়ে নিজেরাই উপকৃত হচ্ছে বলে মনে করছেন পুলিশ সদস্যরা। এদিকে থানায় বিভিন্ন সেবা নিতে আসা লোকজনও এই কৃষিকাজ দেখে প্রশংসায় ভাসাচ্ছেন থানা পুলিশ সদস্যদের।

পটুয়াখালী সদর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. জসিম বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর একটা নির্দেশনা ছিল যে চাষযোগ্য কোনো জমিই যাতে অনাবাদি না থাকে। তারই ধারাবাহিকতায় আমাদের আইজিপি স্যার, ডিআইজি স্যার ও এসপি স্যার আমাদের সব সময়ই আমাদের নির্দেশনা দিয়ে থাকেন অনাবাদি ও চাষ যোগ্য জমিতে যাতে শাকসবজি ও ফলমূলের আবাদ করা হয়। আমরা এবছর অনেক শীতকালীন শাকসবজি চাষ করেছি। লাউ, মিষ্টিকুমড়া, বেগুন, টমেটো, করলা, শিম ও কাঁচা মরিচসহ বিভিন্ন ধরনের শাকসবজির আবাদ করেছি। এবছর আলহামদুলিল্লাহ অনেক ভালো ফলন পেয়েছি। এখানে উৎপাদিত শাকসবজি থেকে পুলিশ সদস্যদের দৈনন্দিন চাহিদাও পূরণ হচ্ছে।

পটুয়াখালীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আহমদ মাইনুল হাসান বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতেই এমন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি আমাদের বরিশাল রেঞ্জের ডিআইজি স্যার ও পুলিশ সুপার স্যারের দিকনির্দেশনায় পটুয়াখালী জেলা পুলিশের সকল জমিই চাষাবাদের আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে। আমরা সকালে সম্মিলিত ভাবে কাজ করেছি, চেষ্টা করেছি চাষাবাদের উপযোগী এমন প্রতিটি ইঞ্চি জমি আবাদের আওতায় আনতে। আবাদ করা এসব ফসল থেকে পুলিশ সদস্যদের পুষ্টির চাহিদা পূরণ হচ্ছে। এবং দেশের নিরাপত্তা রক্ষার পাশাপাশি পুলিশ সদস্যরা দেশের খাদ্য উৎপাদনেও ভুমিকা রাখছে।

পটুয়াখালী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের জেলা প্রশিক্ষণ অফিসার খায়রুল ইসলাম মল্লিক বলেন, পুলিশের এমন উদ্যোগ সত্যিই প্রশংসনীয়। এ ধরনের চাষাবাদে কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে কারিগরি প্রশিক্ষণ, পরামর্শ দেওয়া হয়। প্রয়োজনে আমরা কৃষি উপকরণও সরবরাহ করে থাকি। সব সরকারি দপ্তরগুলোরই উচিত তাদের পরিত্যক্ত জমিতে চাষাবাদ করা। তাহলে আমাদের দেশে খাদ্য চাহিদার বড় একটি অংশ এখান থেকেই সংগ্রহ করা সম্ভব হবে।

;

সোনাগাজীতে যুবক হত্যা, দোকান কর্মচারী আটক

ছবি: বার্তা২৪.কম

ফেনীর সোনাগাজীতে বাকী টাকা পরিশোধ না করে নতুন করে বাকী চাওয়ায় দ্বন্দ্বের জেরে হত্যার শিকার উপজেলার মতিগঞ্জ ইউনিয়নের আবির হোসেন ছোটন (২৩) হত্যাকাণ্ডে দোকান কর্মচারী আবদুল্লাহ আল মামুন (২০) কে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে আদালত মামুনের জবানবন্দি শুনে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এর আগে দোকান কর্মচারী আবদুল্লাহ আল মামুনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছিল পুলিশ।

গ্রেফতারকৃত মামুন মতিগঞ্জ ইউনিয়নের সাতবাড়িয়া এলাকার মফিজ উদ্দিন সবুজের ছেলে। গত কয়েকমাস ধরে আসামি নিলয়ের দোকানে কর্মচারী কাজ শুরু করেন মামুন।

মঙ্গলবার (২৬ মার্চ) ফেনীর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন কর্মচারী মামুন। এসময় তার জবানবন্দিতে ছোটন-হৃদয়দের অপরাধ কার্যক্রমের পৃষ্ঠপোষকদের নাম উঠে আসে বলে জানায় পুলিশ। পরে তাকে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন বিচারক সাইয়েদ মো. শাফায়েত। বুধবার (২৭ মার্চ) এসব তথ্য জানান মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সোনাগাজী মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ফরহাদ কালাম সুজন।

এ ঘটনায় নিহতের ভাই মো.আরমান হোসেন বাদী হয়ে আরিফুল ইসলাম হৃদয়কে প্রধান আসামী ও দোকান মালিক মো.নিলয় ও দোকান কর্মচারী মামুনকে আসামী করে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন৷

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সোনাগাজী মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ফরহাদ কালাম সুজন বার্তা২৪ কে বলেন, গ্রেফতার মামুনকে আদালতে নেওয়া হলে জবানবন্দিতে ছোটন হত্যার বিস্তারিত উঠে এসেছে।

জবানবন্দিতে মামুন বলেন, নিলয়ের দোকানে ক্রেতা হিসেবে ছোটন চিপস কিনতে আসে তখন দোকানী নিলয় ইফতারের উপকরণ কিনতে দোকানের বাহিরে ছিলেন। দোকানে থাকা মামুন পূর্বের বকেয়া থাকা অবস্থায়  দোকানের মালিক নিলয়ের অনুমতি ছাড়া নতুন করে বাকি দেওয়া যাবে না বলে জানিয়ে দেয়৷

এসময় মামুনের সাথে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়ে ছোটন। এরমধ্যে ইফতার কিনে দোকানে আসেন নিলয়। সেও বাকী দিবে না জানিয়ে দিলে বাকবিতণ্ডা ঝগড়ায় রুপ নেয়। এসময় ছোটন নিলয়ের মুখে ঘুষি দিলে নাক ফেটে রক্ত ঝরতে থাকে। ওই মুহুর্তে নিলয়ের বড় ভাই ছোটনের বন্ধু আরিফুর রহমান হৃদয় ছোট ভাইয়ের রক্তাক্ত অবস্থা দেখে ছোটনের সাথে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে যায়। দুইজনের ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে দোকানের ভেতরে ইফতারি সালাদ কাটার ছুরি এনে ছোটনের বুকে আঘাত করে হৃদয়। পরবর্তীতে হাসপাতালে নেয়া হলে মৃত্যু হয় তার।

তদন্ত কর্মকর্তা আরও বলেন, আদালতে মামুনের দেওয়া বর্ণনায় উঠে এসেছে হৃদয়-ছোটন গ্রুপের পৃষ্ঠপোষকদের নাম। তবে মামলার তদন্তে স্বার্থে এখন নাম প্রকাশ করা সম্ভব হচ্ছে না।

এদিকে স্থানীয় সূত্রে ছোটন-হৃদয়দের নিয়ন্ত্রণকারী এবং পৃষ্ঠপোষক হিসেবে স্থানীয় এক ইউপি চেয়ারম্যান ও এক যুবলীগ নেতার নাম উঠে এসেছে। শুধু এরাই নয় উপজেলার বিভিন্ন রাজনৈতিক ব্যক্তিরা ছোটন গ্রুপ কে তাদের নিজেদের স্বার্থ হাসিলে ব্যবহার করতো বলে জানা গেছে৷ বিনিময়ে তাদের দেওয়া হতো আর্থিক সুবিধা। আবার এসব কাজ করতে গিয়ে মামলা হলে সেই মামলার খরচ এবং জামিনের টাকা বহন করতেন পৃষ্ঠপোষকরা। তাদের নির্দেশে হৃদয়-ছোটন গ্রুপ মারামারি, ভাঙচুর সহ নানা অপরাধ করতো বলে জানা গেছে।

সোনাগাজী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুদ্বীপ রায় বলেন, প্রথমে দোকান কর্মচারী মামুনকে প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়েছিল। পরে তার বক্তব্য শুনে ঘটনার সাথে তার সম্পৃক্ততা পাওয়ায় তাকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে প্রেরণ করা হয়। আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেয় মামুন। সেখানে সে স্বীকার করে ছোটনের সাথে প্রথম তার ঝগড়া হয় এবং তার সূত্র ধরে নিলয় ও হৃদয় এ ঘটনায় জড়িত হয়ে সর্বশেষ হৃদয়ের ছুরিকাঘাতে ছোটনের মৃত্যু হয়।

উল্লেখ্য, গত ২৪ মার্চ রোববার দোকানে বাকী দেওয়া-নেওয়ার দ্বন্দ্বে সোনাগাজী উপজেলার মতিগঞ্জ ইউনিয়নের সিএনজি স্টেশনে ছুরিঘাকাতে খুন হন আবির হোসেন ছোটন।

;

সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় বার্তা ২৪-এ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *