সারাদেশ

বৈদেশিক মুদ্রা বিক্রির কথা বলে প্রতারণা, গ্রেফতার ৫

ডেস্ক রিপোর্ট: বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে চালু হচ্ছে অন অ্যারাইভাল ভিসা। দীর্ঘদিনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে চলতি বছরের জুনে অন অ্যারাইভাল ভিসার দুয়ার। তবে স্থলপথে নয়, নৌপথে চালু হচ্ছে এ ভিসা। দুদেশের নাগরিকরা এর সুফল পাবেন এমন প্রত্যাশা নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের। নৌসচিব পর্যায়ে আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে এ ইস্যুতে ঐকমত্যে পৌঁছায় দুই দেশ।

এছাড়া দুদেশের পর্যটন খাতের সুবিধা আদায় এবং পোর্ট অব কল অন্তর্ভুক্তি ইস্যুতেও চলছে দেনদরবার। এ দুটি বিষয়ে যৌক্তিক দাবিতে একমত হতে এরই মধ্যে ৮০ শতাংশ কাজের অগ্রগতি হয়েছে বলে জানা গেছে। গঠিত হয়েছে বেশির ভাগ কমিটি। শিগগিরই দুদেশের স্বার্থ সমুন্নত রেখে চুক্তি বা সমঝোতায় পৌঁছাতে শুরু হবে কমিটির ধারাবাহিক সভা।

নৌ মন্ত্রণালয়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বাংলাদেশ-ভারত নৌপথে যোগাযোগ, বাণিজ্য ও পর্যটক বৃদ্ধির জন্য অন অ্যারাইভাল ভিসা এবং প্রটোকল রুট বৃদ্ধিসহ একাধিক বিষয়ে সম্মত হয় সচিব পর্যায়ের সভা। এ ছাড়া সমুদ্রপথে পণ্য পরিবহন আরো সহজ করার জন্য দুই দেশের বিভিন্ন বন্দর ‘পোর্ট অব কল’ অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব ছিল। তবে নৌ বাণিজ্য সহজ করার নিমিত্তি অন অ্যারাইভাল ভিসা ইস্যুটি ছিল গুরুত্বপূর্ণ। এই ভিসায় সুবিধা পাবেন যাত্রীরা। কারণ বিদেশে পৌঁছানোর পর ভিসা হাতে পাবেন। এক্ষেত্রে যাত্রার আগে ভিসা করতে হয় না। এটি ভিসা আবেদন প্রক্রিয়াকে সহজ, ভ্রমণ হয় আরো দ্রুত এবং সুবিধাজনক করবে ।

সব দেশে বাংলাদেশি পাসপোর্টধারীদের অন অ্যারাইভাল ভিসা দেওয়া হয় না। এখন পর্যন্ত নেপাল, ভুটান, শ্রীলংকা, মালদ্বীপসহ বেশ কয়েকটি দেশে এ সুযোগ পেয়ে থাকেন বাংলাদেশের নাগরিকরা। পার্শ্ববর্তীদেশে পর্যটন কিংবা চিকিৎসার প্রয়োজনে বেশি ভ্রমণ করলেও অন অ্যারাইভাল ভিসা চালু করার বিষয়ে বরাবরই অনাগ্রহ ছিল ভারতের।

সবশেষ নৌপথে বাণিজ্যিকীকরণ সহজ করার স্বার্থে অন-অ্যারাইভাল ভিসা চালুর বিষয়ে ইতিবাচক সাড়া পাওয়া যায় বন্ধুপ্রতিম দেশ ভারতের পক্ষ থেকে। এ নিয়ে নৌ মন্ত্রণালয়ের এই সিদ্ধান্তটি বাস্তবায়নের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ জানানো হয়। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দেশের লাভক্ষতি যাচাই সম্পন্ন করে প্রস্তাবটি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠাবেন। বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সংশোধিত ভ্রমণ ব্যবস্থা (আরটিএ) সংশোধনের কাজ শেষ পর্যায়ে। এখন ভারতের সঙ্গে কনস্যুলার মিটিং করা এবং আরটিএ সংশোধন করার মাধ্যমে অন অ্যারাইভাল ভিসা প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করা হবে।

নৌ মন্ত্রণালয় আশা করছে, চলতি বছরের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে অন অ্যারাইভাল ভিসা প্রক্রিয়াটি চূড়ান্ত রূপ পাওয়া যাবে। নৌপথে যাত্রী চলাচল এ সুবিধার জন্য বাড়বে।

সূত্র জানায়, নৌপথে ভ্রমণকারী বাংলাদেশি পর্যটক, যাত্রী ও ক্রুদের জন্য ভিসা প্রক্রিয়া সহজ হবে। দুদেশের মধ্যে উপকূলীয় ও প্রটোকল রুটে যাত্রী ও ক্রুজ পরিষেবা সংক্রান্ত সমঝোতা স্মারকের আওতায় এ পর্যন্ত ৯টি সমুদ্রযাত্রা সম্পন্ন হয়েছে। এর মধ্যে সাতটি ভারতীয় জাহাজ এবং দুটি বাংলাদেশি জাহাজ। বাংলাদেশ-ভারতের পর্যটন খাতে সাম্প্রতিক উন্নয়নের কারণে অনেক বাংলাদেশি পর্যটক ভারত ভ্রমণ এবং নদী ভ্রমণের অভিজ্ঞতা নিতে আগ্রহী। বাংলাদেশের ট্যুর অপারেটররাও ঢাকা থেকে কলকাতা নিয়মিত ক্রুজ পরিচালনা করতে আগ্রহী। এতে দুদেশের মধ্যে নৌপথে যাত্রী এবং ক্রুজ পর্যটক বৃদ্ধি পাবে। তাই নৌপথে ভ্রমণকারীর জন্য ভিসা পদ্ধতি সহজ করে অন অ্যারাইভাল ভিসা চালুতে সম্মত হয় উভয় দেশ। দুই দেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে বিষয়টি নিষ্পত্তির পর্যায়ে রয়েছে।

এ বিষয়ে কমিটির অন্যতম সদস্য ও নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের যগ্ম সচিব এস এম মোস্তফা কামাল বলেন,  নৌপথে বাংলাদেশ হয়ে ভারত এবং ভারত থেকে এখানে আসা-যাওয়ার ক্ষেত্রে অন অ্যারাইভাল খুবই কার্যকর ভূমিকা রাখবে। এটির মূল স্টেকহোল্ডার দুই দেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয় দু’টি বিষয়টি খতিয়ে দেখছে। এ ক্ষেত্রে সন্তোষজনক অগ্রগতিও হয়েছে। সব প্রক্রিয়া শেষে চলতি বছরের মধ্যে নৌপথে চলাচল করা যাত্রীরা এর সুফল পেতে পারেন বলে তিনি আশা ব্যক্ত করেন।

সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় বার্তা ২৪-এ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *