সারাদেশ

চট্টগ্রামে রাস্তা-ফুটপাত দখল করে ব্যবসা, ৬ জনকে জরিমানা

ডেস্ক রিপোর্ট: রোজা শুরুর আগে বিদ্যুৎ, গ্যাস ও ওয়াসাসহ সেবা সংস্থাগুলো কোনো সংকট হবে না বলে নগরবাসীকে আশ্বস্ত করেছিলেন মেয়র। তবে রোজা শেষের বাকি আরও প্রায় দশদিন। এর মধ্যেই চট্টগ্রামে ইফতার-সেহরিতেও নিস্তার নেই, তীব্র লোডশেডিং। নগরীতে দিনে ৬-৮ ঘণ্টা, গ্রামে ১০-১২ ঘণ্টার বেশি ভয়াবহ লোডশেডিংয়ে বিপর্যস্ত জনজীবন।

বিদ্যুৎ বিভাগ বলছ, জাতীয় গ্রিড থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ কমেছে। আর সেখানে চট্টগ্রামে দৈনিক ৩৮০-৪২০ মেগাওয়াট ঘাটতি থাকছে সবসময়।

রোজার শুরু থেকে শুরু হয়েছে ওয়াসার পানি সংকট ও লবনাক্তা। এখন ‘মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা’ হয়ে এসেছে বিদ্যুতের চরম লোডশেডিং। যা তীব্র গরমে জনজীবনকে চরম অতিষ্ঠ করে তুলেছে। এ অবস্থায় বিষয়টি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে চট্টগ্রামে জরুরিভাবে জাতীয় গ্রিড থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন দেশের ক্রেতা-ভোক্তাদের স্বার্থ সংরক্ষণকারী জাতীয় প্রতিষ্ঠান কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)।

সোমবার (১ এপ্রিল) গণমাধ্যমের পাঠানো এক বিবৃতিতে সংগঠনটি এ দাবি জানান। বিবৃতিতে সই করেন- ক্যাব কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন, ক্যাব চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাধারণ সম্পাদক কাজী ইকবাল বাহার ছাবেরী, ক্যাব মহানগরের সভাপতি জেসমিন সুলতানা পারু, সাধারণ সম্পাদক অজয় মিত্র শংকু, ক্যাব চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা সভাপতি আলহাজ আবদুল মান্নান প্রমুখ। এসময় তারা ভয়াবহ লোডশেডিং এ বিপর্যস্ত জনজীবনে স্বস্তি আনতে জাতীয় গ্রিড থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ বাড়ানোর জাবি জানিয়েছেন।

বিবৃতিতে বলা হয়, বিদ্যুৎ বিভাগ একসময় লোডশেডিং শব্দটি বাদ দিয়ে বিদ্যুৎ লাইনে ত্রুটি বা বিদ্যুৎ বিভ্রাট ব্যবহার করলেও গ্রীষ্মকাল শুরুর সময়ে ভয়াবহ আকারে লোডশেডিংয়ে ফিরে এসেছে। যার কারণে চট্টগ্রামের বাকলিয়া ও কল্পলোক আবাসিক এলাকা, পাথরঘাটা, স্টেডিয়াম, ষোলশহর, কালুরঘাট, বাকলিয়া, মাদারবাড়ি, আগ্রাবাদ, হালিশহর, পাহাড়তলী, খুলশী, রামপুর, নিউমুরিং বিদ্যুৎ বিতরণ কেন্দ্রগুলো ঘণ্টার পর ঘণ্টা লোডশেডিং করছে। নগরীর বাইরে ফৌজদারহাট, হাটহাজারী, মোহরা, বাড়বকুন্ড, সন্দ্বীপ, পটিয়া, সাতকানিয়া, দোহাজারী, বাঁশখালিতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লোডশেডিং করা হচ্ছে। একইভাবে রাঙ্গামাটি, বান্দরবান, খাগড়াছড়ি ও কক্সবাজার বিতরণ বিভাগ এবং পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের এলাকাগুলোতেও ঘণ্টার পর ঘণ্টা লোডশেডিংয়ের কারণে গ্রামাঞ্চলের মানুষের জনজীবন চরমভাবে বিপর্যস্ত। দিন-রাত মিলিয়ে কোথাও কোথাও ছয় থেকে আট ঘণ্টা, কোথাও ১২ থেকে ১৪ ঘণ্টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ থাকছে না।

নেতারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, একসময় বিদ্যুৎ বিভাগ থেকে বলা হয়েছিল- বিদ্যুৎ উৎপাদন উদ্বৃত্ত আছে। যার কারণে ভাড়া ভিত্তিক ও কুইকরেন্টাল পাওয়ার প্ল্যান্টগুলোকে বসিয়ে রেখে ক্যাপাসিটি চার্জ দিতে বাধ্য হয়েছিল। যার ফলে বিদ্যুৎ উৎপাদনে সরকারের ভর্তুকির বোঝা ও খরচের পাল্লা দিন দিন বেড়ে গেছে। যার পুরো দায়ভারই জনগণকে বহন করতে হচ্ছে। সরকার প্রতিনিয়তই ভর্তুকি সমন্বয়ের জন্য বিদ্যুতের দাম বাড়ালেও জনগণের নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ প্রাপ্তির বিষয়টি পরাহত হচ্ছে। চট্টগ্রামে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি)র তথ্য অনুযায়ী- চট্টগ্রামে বিদ্যুতের চাহিদা প্রায় এক হাজার ২৮০ মেগাওয়াট। এর বিপরীতে জাতীয় গ্রিড থেকে পাওয়া যাচ্ছে ৯০০ মেগাওয়াট। ফলে প্রতিনিয়তই চট্টগ্রামে লোডশেডিং হচ্ছে ৩৮০-৪২০ মেগাওয়াট পর্যন্ত।

ক্যাব নেতারা আরও বলেন, বিদ্যুতের লোডশেডিং ও বিদ্যুৎ বিভ্রাট নিয়ে সরকারি তথ্য গোঁজামিলে ভরপুর। প্রকৃত চিত্র আরও ভয়াবহ এবং অনেক বেশি লোডশেডিং হচ্ছে। যেখানে মানুষ নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎসেবা পাওয়া যাচ্ছে না, সেখানে বারবার বিদ্যুতের দাম বাড়িয়ে মানুষের জীবনজীবিকার খরচ বাড়িয়ে জনজীবনকে অতিষ্ঠ করে তুলেছে। বেসরকারি ভাড়াভিত্তিক ও কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের নামে ক্যাপাসিটি চার্জ দিয়ে উৎপাদন সক্ষমতার অধিক মূল্য দিতে বাধ্য হতে হচ্ছে। যা কোনোভাবেই কাম্য নয়।

সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় বার্তা ২৪-এ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *