সারাদেশ

নির্বাচনী আচরণ বিধি লঙ্ঘন করে ভিজিএফের চাল বিতরণ

ডেস্ক রিপোর্ট: চট্টগ্রাম বন অঞ্চলের আওতাধীন কক্সবাজার দক্ষিণ বন বিভাগের ফরেস্টার সাজ্জাদুজ্জামান সজল হত্যাকাণ্ডে ক্ষুদ্ধ ও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে পুরো চট্টগ্রাম বন অঞ্চল। এই ঘটনায় চট্টগ্রামের বিভিন্ন বন বিভাগে পালিত হচ্ছে বিক্ষোভ, মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ। 

বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) চট্টগ্রাম নগরীর নন্দন কাননস্থ চট্টগ্রাম বন অঞ্চলের বন সংরক্ষকের কার্যালয়ের সামনে ফরেস্টার সজল হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে দীর্ঘ মানবন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

চট্টগ্রাম অঞ্চলের বন সংরক্ষক বিপুল কৃষ্ণ দাশের সভাপতিত্বে মানবন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশে বনের সম্পদ রক্ষা করতে গিয়ে হত্যাকাণ্ডের শিকার ফরেস্টার সজলের হত্যাকারীদের অবিলম্বে গ্রেফতার ও সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করার পাশাপাশি সজলের পরিবারকে এক কোটি টাকা ক্ষতিপূরণের দাবি জানানো হয়। এছাড়া মাঠ পর্যায়ে দায়িত্বরত সকল ফরেস্টারদের নিরাপত্তার জন্য সার্বক্ষণিক আগ্নেয়াস্ত্র বহনের অনুমতি প্রদানেরও দাবি জানানো হয়।

মানবন্ধন কর্মসূচীতে অংশ নিয়ে চট্টগ্রাম অঞ্চলের বন সংরক্ষক বিপুল কৃষ্ণ দাশ বলেন, ফরেস্টার সজল বন বিভাগের একজন সৎ, দক্ষ, সুশিক্ষিত ও চৌকস কর্মকর্তা ছিলেন। বনের সম্পদ রক্ষা করতে গিয়ে বন দস্যূদের নির্মমতার শিকার হয়ে তিনি নিহত হয়েছেন। ডাম্পার চাপা দিয়ে তাকে হত্যা করা হয়েছে। এই ঘটনায় প্রতিবাদ জানানোর ভাষা আমরা হারিয়ে ফেলেছি। এই ঘটনার মাধ্যমে প্রতিয়মান হয় কতোটা নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দুর্গম পাহাড়ে বন ও বনজসম্পদ রক্ষায় দায়িত্ব পালন করছেন বন কর্মকর্তারা। বন সংরক্ষক বিপুল কৃষ্ণ দাশ অবিলম্বে ফরেস্টার সাজ্জাদুজ্জামান সজল হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের গ্রেফতার করে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানাই। 

বাংলাদেশ ফরেস্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএফএ) সদস্য সচিব খান জুলফিকার আলী বলেন, কক্সবাজার দক্ষিণ বন বিভাগের উখিয়া রেঞ্জের দোছড়ি বিটে কর্মরত বিট কর্মকর্তা সাজ্জাদুজ্জামান সজল, বন ও বনের সম্পদ রক্ষা করতে গিয়ে দুষ্কৃতকারীদের দ্বারা নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন। বনাঞ্চলে প্রায়শই দুস্কৃতকারীদের হামলার ঘটনা ঘটে। এতে প্রাণ যাচ্ছে বন কর্মীদের, এছাড়াও আহত হচ্ছেন অনেক বনকর্মী। ২৪ ঘণ্টা যাদের দায়িত্ব পালন করতে হয় বনের ভিতর, তারা একেক বিটে রয়েছেন মাত্র এক বা দুইজন, তাদের নেই কোন লজিস্টিক সাপোর্ট, নেই প্রয়োজনীয় অস্ত্র, নেই আইনি সুরক্ষা। অথচ, বনের ভিতর প্রতিপক্ষ হিসেবে রয়েছে ভয়ঙ্কর সন্ত্রাসি বাহিনী, বনদস্যু, ভূমিদস্যুসহ দেশের প্রভাবশালী অনেকেই। বন বিভাগের কর্মীগণ ঐ সকল সন্ত্রাসী বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই করতে গিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বন রক্ষার দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে প্রাণ দিচ্ছেন। যার সর্বশেষ শিকার বন কর্মকর্তা ফরেস্টার সাজ্জাদুজ্জামান সজল। 

এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সজল এর হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবিসহ ১১ দফা দাবি উপস্থাপন করেছে ফরেস্টার এসোসিয়েশন। এই দাবিসমূহের মধ্যে রয়েছে সজল এর পরিবারকে এককালীন ১ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ প্রদান, সজলের স্ত্রীকে শিক্ষাগত যোগ্যতা অনুযায়ী বন অধিদপ্তরে চাকুরীর ব্যবস্থা করা, মাঠ পর্যায়ে দায়িত্বরত সকল ফরেস্টারদের নিরাপত্তার জন্য সার্বক্ষণিক রিভলবার/আগ্নেয়াস্ত্র বহনের অনুমতি প্রদানসহ বিবিধ দাবি জানান বন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

মানবন্ধন কর্মসূচিতে অন্যান্যের মধ্যে অংশ নেন, চট্টগ্রাম উত্তর বন বিভাগীয় কর্মকর্তা এস এম কায়চার, উপকূলীয় বন বিভাগীয় কর্মকর্তা বেলায়েত হোসেন, চট্টগ্রাম দক্ষিণ বন বিভাগীয় কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল মামুন, পরিকল্পনা ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তা কাজল তালুকদার, ফরেস্ট গার্ড কল্যাণ সমিতি চট্টগ্রামের সাবেক সভাপতি মোস্তফা জামাল, বর্তমান সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা কামাল। এছাড়াও মানবন্ধনে চট্টগ্রাম বন অঞ্চলের সকল বন বিভাগের ফরেস্ট রেঞ্জার, ফরেস্টার, ডিপুটি ফরেস্টার, ফরেস্ট গার্ডসহ বিভিন্ন বন এলাকার দায়িত্বপ্রাপ্ত বন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অংশ নেন।

সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় বার্তা ২৪-এ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *