অবরোধে ইবিতে চলবে ক্লাস, নিয়োগ স্থগিত
ডেস্ক রিপোর্ট: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) ‘স্লোগান৭১’ এর আয়োজনে ‘৩রা নভেম্বর কুখ্যাত জেলহত্যা দিবস ও জাতীয় চারনেতা’ স্মরণে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সোমবার (৬ নভেম্বর) ঢাবির স্বোপার্জিত স্বাধীনতা চত্বরে ‘স্লোগান৭১’ এর এ আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এ.এইচ. এম. খায়রুজ্জামান লিটন। সম্মানিত অতিথি হিসেবে ছিলেন সিমিন হোসেন রিমি, সৈয়দা জাকিয়া নুর লিপি,তানভীর শাকিল জয়। তাঁরা সকলেই জাতীয় চার নেতার উত্তরসূরি।
বিশেষ আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক ড.এ.এম আমজাদ, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্লোগান ৭১ এর উপদেষ্টা কাজল আব্দুল্লাহ, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন ও শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান এবং ঢাবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল কবির শয়ন এবং তানভীর হাসান সৈকত।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে চার নেতার একজন শহিদ এ.এইচ.এম কামরুজ্জামান, তাঁর পুত্র রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এ.এইচ.এম. খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে মহান মুক্তিযুদ্ধ, ১৯৭৫ সালে ১৫ আগস্ট জাতির পিতার হত্যাকাণ্ড এবং ৩রা নভেম্বর জাতীয় চার নেতার হত্যাকাণ্ডের ইতিহাস নিয়ে বড় করে আলাদা সাবজেস্ট হিসেবে প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকে অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে। যেখান থেকে আমাদের নতুন প্রজন্ম সঠিক ইতিহাস জানতে পারবে।
রাসিক মেয়র বলেন, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দেশে নানান ষড়যন্ত্র হচ্ছে। দেশবিরোধীরা নানা ষড়যন্ত্রের জাল বুনছে। এই সময় বাংলাদেশ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের অনেক কিছু করার আছে। সবাইকে সজাগ থাকতে হবে।
তিনি আরও বলেন, কারো প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী বাংলাদেশের নির্বাচন হবে না। ভারত, ইংল্যান্ডসহ উন্নত বিশ্বে যেভাবে নির্বাচন হয়, সেভাবেই নির্বাচন হবে।
তিনি বলেন, আমরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আদশে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এগিয়ে যাচ্ছি। প্রয়োজন হলে পিতার মতো আমরাও নিজেদের জীবন দিয়ে যাব।
জাতীয় চার নেতার একজন তাজউদ্দীন আহমদ। তাঁর কন্যা সিমিন হোসেন রিমি বলেন, সোহেলকে নিয়ে আমরা যখন গণভবনের সামনে যাই প্রথম দাবি ছিল, যেহেতু ১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রের মাধ্যমে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের প্রথম সরকার গঠিত হয়। সেদিন বাংলাদেশ স্বাধীন–সার্বভৌম রাষ্ট্র (প্রজাতন্ত্র) হিসেবে জন্ম লাভ করে। তাই এই দিনকে ‘প্রজাতন্ত্র দিবস’ ঘোষণা করতে হবে।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাদের আশ্বাস দিয়েছেন যে এটা বাস্তবায়ন করবেন। এটি আমাদের জন্যে সুখবর।
৩ নভেম্বরের স্মৃতি চারণ করে বলেন, ৭১ এর ২৫ মার্চ বঙ্গবন্ধুর গ্রেফতারের পরে তারা মুক্তিযুদ্ধকে নেতৃত্ব দেন। তারা কেমন নেতৃত্ব দেন? আজকে এগুলো বলতে হয় কারণ পাঠ্য বইয়ে এসব পরিপূর্ণ নয়। আমরা যদি এসব ইতিহাস ফাঁকা রাখি তাহলে এসব স্থান পূরণ করবেন মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীরা। এই ৪ নেতার যেই সরকার গঠন করা হয়েছিল তাঁদের সফল নেতৃত্ব ছিল বলেই মুক্তিযুদ্ধ সফল হয়েছিল তাই ৩রা নভেম্বরকে অবশ্যই রাষ্ট্রীয় দিবস হিসেবে পালন করতে হবে।
এম.মনসুর আহমেদ এর পৌত্র তানভীর শাকিল জয় বলেন, জননেত্রী শেখ হাসিনার কাছে আমরা জাতীয় ৪ নেতার পরিবার বিশেষভাবে কৃতজ্ঞ। কারণ আমরা যখন ছোট ছিলাম স্কুল-ইউনিভার্সিটিতে পড়তাম তখন আমরা বঙ্গবন্ধু হত্যার, চারনেতা হত্যার বিচার চাওয়া তো দূরের কথা নাম ই নিতে পারতাম না। কিন্তু যখন জননেত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসল তিনি বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার করেছেন এবং চারনেতা হত্যার বিচার শুরু করেছেন।
তিনি আরও বলেন, বর্তমানে অনেক সুশীল বলেন মিলেমিশে রাজনীতি করতে। আমি আমার বাবার কাছ থেকে শুনেছি আমার দাদা নাকি ব্রাশফায়ারের পরেও বেঁচে ছিলেন। তাঁকে নাকি বেয়নেটের খোঁচায় হত্যা করা হয়েছে। তবুও তাদের উত্তরসূরীদের সাথে আজ বাংলাদেশে রাজনীতি করতে হয়। কারণ জননেত্রী শেখ হাসিনা প্রতিহিংসার রাজনীতি করেন না।
শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম এর কন্যা ডা.সৈয়দা নূর লিপি তাঁর বাবার স্মৃতিচারণ করে বলেন, আমার বাবা আমাদেরকে বলেছিলেন তিনি দ্রুত ফিরে আসবেন,তিনি তাঁর কথা রেখেছিলেন কিন্তু তিনি ৩ নভেম্বরের পর ৪ নভেম্বরে ডেডবডি হয়ে আমাদের কাছে ফিরে এসেছিলেন।
আগামী নির্বাচন এর ব্যাপারে তিনি বলেন, অনেক রকম সরযন্ত্র হচ্ছে নির্বাচন নিয়ে। নির্বাচন হবে যথা সময়ে, যথা নিয়মে, সংবিধান মেনেই।
বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন তার বক্তব্যে বলেন, আজকে আমরা যারা ছাত্র রাজনীতি করি, আমরা জানি ১৫ আগষ্টে ঘাতক কারা ৩ নভেম্বরের ঘাতক কারা, তাদের উত্তরসূরী কারা এবং তারা আজও বিদেশি, ঘাতক, দালাল, খূনী চক্রকে আমরা বাংলার মাটি থেকে বিদায় করব।
বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান তার বক্তব্যে বলেন, জাতির পক্ষ থেকে আমরা বাংলাদেশ ছাত্রলীগ দাবি জানাই যারা জেলহত্যা যারা করেছিল তাদের বিচার যেন বাংলার মাটিতে হয়। এই প্রজন্ম যেন সেই বিচার দেখতে পারে।
সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় বার্তা ২৪-এ।