জাতীয়

পাসপোর্টে থাকছে না পুলিশ ভেরিফিকেশন

পাসপোর্ট ইস্যু ও নবায়নের ক্ষেত্রে পুলিশ ভেরিফিকেশন (পরিচিতি ও তথ্য যাচাই প্রতিবেদন) থাকছে না। মঙ্গলবার (০৪ ফেব্রুয়ারি) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

এর আগে, পাসপোর্টের জটিলতা নিরসনের লক্ষ্যে আজ সকালে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব ড. নাসিমুল গণির সভাপতিত্বে একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়।

জাতীয় পরিচয়পত্র ও জন্মনিবন্ধন পাসপোর্ট ইস্যুর মূল ভিত্তি ধরা হয়। এ দুটি সঠিক থাকলে পাসপোর্ট দেওয়ার ক্ষেত্রে কোনো বাধা থাকার কথা নয়। সম্প্রতি উপদেষ্টা পরিষদের সভায় এমন মতামত উঠে আসে। এরপরই এ নিয়ে কাজ শুরু করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগ।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা সংবাদমাধ্যমকে জানান, এ বিষয়টি সভায় অনেকটা এগিয়েছে। পরবর্তীতে আরেকটি সভা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। সভায় বেশিরভাগ প্রতিনিধি পাসপোর্টে ভেরিফিকেশন উঠানোর বিষয়ে মত দিয়েছেন।

 

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, পুলিশ প্রতিবেদনের অপেক্ষায় এ মুহূর্তে সারা দেশে ১৬ হাজার পাসপোর্ট ইস্যু ঝুলে আছে। প্রতিবেদন পেতে অনেক ক্ষেত্রে দীর্ঘ সময় লেগে যায়। অথচ অনেকের অসুস্থতাজনিত চিকিৎসা ও অন্যান্য কারণে দ্রুত দেশের বাইরে যেতে জরুরি পাসপোর্ট করার প্রয়োজন হয়ে পড়ে।

জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধান ও সাবেক সচিব আবদুল মুয়ীদ চৌধুরী সংবাদিকদের বলেন, পাসপোর্ট পাওয়া নাগরিকের অধিকার। এর জন্য পুলিশ ভেরিফিকেশন কেন করতে হবে? ইংল্যান্ডে পাসপোর্টের আবেদন করলে পোস্ট অফিসে পাসপোর্ট চলে আসে। প্রত্যেক নাগরিকের পাসপোর্ট পাওয়ার অধিকার আছে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, পুলিশ প্রতিবেদনের বাধ্যবাধকতা থাকায় পাসপোর্টপ্রত্যাশী সাধারণ নাগরিক পাসপোর্ট জারি ও নবায়নে নানামুখী হয়রানির সম্মুখীন হয়ে আসছেন। দীর্ঘদিনের এ সমস্যা থেকে প্রতিকার পেতে ভুক্তভোগীরা সরকারের বিভিন্ন মহলে আবেদন-নিবেদন করেও প্রতিকার পাননি। এ অবস্থা থেকে উত্তরণে পুলিশ ভেরিফিকেশনের জটিলতা নিরসন করে পাসপোর্ট জারি ও নবায়নের নির্দেশনা দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয় সম্প্রতি অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের সভায়। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ওই সভায় সভাপতিত্ব করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে জরুরি ব্যবস্থা নিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগকে নির্দেশনা দেওয়া হয়।

জানা গেছে, সভায় পাসপোর্ট জটিলতা নিরসনের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় সুপারিশ প্রণয়ন করা হয়। উপদেষ্টা পরিষদের নির্দেশনার আলোকে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করে এ-সংক্রান্ত আদেশ জারি করা হবে। সভায় প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়, আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, পুলিশের বিশেষ শাখাসহ অন্যান্য বিভাগের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *