সারাদেশ

দেশবাসীকে ঈদের শুভেচ্ছা জানালেন প্রধানমন্ত্রী

ডেস্ক রিপোর্ট: সৌদি আরব ও মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে মিল রেখে বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলায় ঈদুল ফিতরের নামাজ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার (১০ এপ্রিল) সকালে নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, বাগেরহাট, লালমনিরহাট, বরিশালসহ এসব জায়গায় জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। বার্তা২৪.কমের প্রতিনিধিদের পাঠানো তথ্যে নিম্নে বিস্তারিত দেওয়া হলো-

নোয়াখালী: সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে এক দিন আগেই পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপন করছেন নোয়াখালীর ৪ গ্রামের মুসল্লিরা।

বুধবার (১০ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৯ টায় দুই উপজেলার ৮টি মসজিদে একযোগে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়।

 ঈদ উদযাপন করছেন নোয়াখালীর ৪ গ্রামের মুসল্লিরা  মসজিদগুলো হলো, বেগমগঞ্জ উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের বসন্ত বাগ গ্রামের সিনিয়র মাদ্রাসা জামে মসজিদ, বসন্তবাগ পোদ্দার বাড়ি জামে মসজিদ, বসন্তবাগ নগর বাড়ির দরজা জামে মসজিদ, বসন্তবাগ ভূঁইয়া বাড়ির দরজা জামে মসজিদ, পশ্চিম বসন্তবাগ গ্রামের মুন্সি বাড়ির দরজা জামে মসজিদ, ফাজিলপুর গ্রামের দায়রা বাড়ির জামে মসজিদ, জিরতলী ইউনিয়নের ফাজিলপুর গ্রামের জামে মসজিদ ও নোয়াখালী পৌরসভার হরিণারায়নপুর রশিদিয়া রহিমিয়া দরবার শরিফ মসজিদ।

স্থানীয় বাসিন্দা লুৎফুর রহমান বলেন, বড় পীর আবু মুহম্মদ মহিউদ্দীন সৈয়দ আবদুল কাদির জিলানী (রঃ) এর মতাদর্শে তৈরি হয় কাদেরিয়া তরিকা। কাদেরিয়া তরিকার অনুসারী লক্ষ্মীনারায়ণপুর, হরিনারায়ণপুর, বসন্তবাগ ও ফাজিলপুর গ্রামের বাসিন্দারা সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে প্রতি বছর একদিন আগে রোজা রাখেন। সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে তারা প্রায় ১০০ বছর ধরে ঈদ জামাতের আয়োজন করে থাকেন।

রশিদিয়া রহিমিয়া দরবার শরিফের ঈদের জামায়াতের ইমামতি করেন রহিমিয়া রশিদিয়া আল কাদেরিয়া দরবার শরীফ চট্রগ্রামের খাদেম আব্দুল কাদের। তিনি বলেন, চাঁদ উঠার ওপর নির্ভর করেই রোজা রাখা এবং ঈদ উদযাপন করা হয়। 

লক্ষ্মীপুর: সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে একদিন আগেই ঈদুল ফিতর উদযাপন করেছেন লক্ষ্মীপুরের ১১ গ্রামের সহস্রাধিক মানুষ। বুধবার (১০ এপ্রিল) সকাল ১০ টায় রামগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ পূর্ব নোয়াগাঁও তালিমুল কুরআন নূরানী মাদরাসা ঈদগাহ ময়দানে ঈদের নামাজ আদায় করেছেন শতাধিক মুসল্লি। এ উপজেলার ৪ টি ও রায়পুর উপজেলার একটি মসজিদে ঈদের নামাজ অনুষ্ঠিত হয়েছে। তবে সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে নয়, হানাফি মাজহাব অনুসারে ঈদ পালন করছেন বলে জানিয়েছেন ইমাম ও মুসল্লিরা।

স্থানীয়রা জানায়, জেলার রামগঞ্জ উপজেলার নোয়াগাঁও, জয়পুরা, বিঘা, বারোঘরিয়া, হোটাটিয়া, শরশৈই, কাঞ্চনপুর ও রায়পুর উপজেলার কলাকোপাসহ ১১টি গ্রামের সহস্রাধিক মানুষ ঈদ আনন্দে মেতে উঠেছে। তারা পৃথকভাবে স্ব স্ব এলাকার মসজিদে ঈদের নামাজের আয়োজন করেছেন। সকাল সাড়ে ৭ টায় রামগঞ্জ পৌরসভার জাহাঙ্গীর টাওয়ার, সাড়ে ৯ টায় পূর্ব বিঘা কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ, পশ্চিম নোয়াগাঁও জামে মসজিদে নামাজ আদায় করেছেন মুসল্লিরা। হানাফি মাজহাব অনুসারে ৫০ বছরেরও বেশি সময় ধরে তারা একদিন আগে ঈদ পালন করে আসছেন।

এ ব্যাপারে দক্ষিণ পূর্ব তালিমুল কুরআন মাদরাসার ঈদগাহের খতিব মাওলানা আমিনুল ইসলাম খান জানান, আমরা সৌদি আরবে সঙ্গে মিল রেখে ঈদ করি না। আমরা হানাফি মাজহাবের অনুসারী। প্রত্যেকটি মাজহাবে একসঙ্গে সারা বিশ্বে ঈদের জামাত আদায় করার ফতোয়া রয়েছে। আগে যোগাযোগের উন্নত মাধ্যম ছিল না। এজন্য মানুষ সৌদি আরবের একদিন পর ঈদ করতো। কিন্তু এখন যোগাযোগ ব্যবস্থা অনেক উন্নত। এতে আমদের পিছিয়ে থাকার সুযোগ নেই। এজন্য হয়তো সোদি আরবের সঙ্গে আমাদের মিল হয়ে যায়।

বাগেরহাট: সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে বাগেরহাটের মোংলায় ঈদুল ফিতর উদযাপিত হচ্ছে। উপজেলার সুন্দরবন ইউনিয়নের দুয়ারীজারা গ্রামের চটেরহাট জামে মসজিদে বুধবার সকাল সাড়ে ৮টায় শুরু হয় ঈদের জামাত। এতে ঈমামতি করেন খতিব বেল্লাল সরাদর।

এ সময় একসঙ্গে প্রায় ১০ গ্রামের মুসল্লি নারী-পুরুষেরা ঈদের নামাজ আদায় করেন। পরে মসজিদ কমিটির সভাপতি এম নুরুল আমিন সেমাই দিয়ে সকলকে আপ্পায়ন করেন। দীর্ঘ কয়েক বছর ধরেই সৌদিআরবের সাথে মিল রেখে মোংলার চটেরহাটসহ বেশ কয়েক গ্রামে ঈদ উদযাপিত হয়ে আসছে বলে জানান গ্রামবাসী।

লালমনিরহাট: জেলার কালীগঞ্জ উপজেলায় সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে একদিন আগেই ঈদ উদযাপন করছে কয়েকটি গ্রামের শতাধিক পরিবার।

বুধবার (১০ এপ্রিল) সকালে কালীগঞ্জ উপজেলার মুন্সিপাড়ায় পবিত্র ঈদুল ফিতরের নামাজের জামাত অনুষ্ঠিত হয়। নামাজে ইমামতি করেন মাওলানা আব্দুল মাজেদ।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কালীগঞ্জ উপজেলার তুষভান্ডার, সুন্দ্রহবী, কাকিনা, চাপারহাট, চন্দ্রপুর, আমিনগঞ্জ ও মুন্সীপাড়া গ্রামের প্রায় শতাধিক পরিবারের মুসল্লিরা বুধবার পবিত্র ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায় করেছেন। প্রতি বছর সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে একদিন আগে রোজা ও ঈদ করেন এসব গ্রামের মুসল্লিরা।

হাড়িশহরের মুন্সিপাড়ার ঈদগাহ মাঠের সভাপতি আব্দুল ছাত্তার বলেন, সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে বিগত কয়েক বছর ধরে এই এলাকার মানুষ ঈদুল ফিতর, ঈদুল আজহা, শবে-কদর, শবে মেরাজসহ বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালন করে আসছেন।

এ বিষয়ে কালীগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইমতিয়াজ কবির বার্তা ২৪ কমকে জানান, সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে অনেক আগে থেকে কাকিনা-তুষভান্ডার ইউনিয়নের সুন্দ্রাহবি, চন্দ্রপুর ইউনিয়নের বোতলা ও পানি খাওয়ার ঘাট এলাকায় ঈদের নামাজ আদায় করে আসছে কিছু মানুষ। নামাজ আদায়ের সময় মুসল্লিদের নিরাপত্তায় দুজন পুলিশ কর্মকর্তা সেখানে উপস্থিত ছিলেন।

বরিশাল: জেলার বিভিন্ন উপজেলায় প্রায় ৫ হাজার পরিবার সৌ‌দি আর‌বের সঙ্গে মিল রেখে অগ্রিম ঈদুল ফিতর উদযাপন করছেন। বরিশাল জেলার প্রায় অর্ধশত মসজি‌দে বুধবার (১০ এপ্রিল) সকাল ৯টায় প্রথম ঈদের নামাজের জামাত অনু‌ষ্ঠিত হয়।

বরিশাল জেলার মুলাদী,হিজলা, মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলায় এবং সদর উপজেলার চন্দ্রমাহন, পতাং, লাহারহাট গ্রামের জাহা‌গি‌রি সুফি দরবারের প্রায় ২ হাজার অনুসারী রয়েছেন।

সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় বার্তা ২৪-এ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *