সরকারের উন্নয়ন নিয়ে যাত্রাপালা ‘জননীর স্বপ্নপূরণ’ মঞ্চস্থ
ডেস্ক রিপোর্ট: সরকারের উন্নয়ন নিয়ে যাত্রাপালা ‘জননীর স্বপ্নপূরণ’ মঞ্চস্থ
ছবি: বার্তা২৪.কম
‘শিল্প সংস্কৃতিঋদ্ধ সৃজনশীল মানবিক বাংলাদেশ’ এই শ্লোগান নিয়ে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমীর আয়োজনে গণজাগরনের যাত্রাপালা উৎসব শিরোনামে ‘জননীর স্বপ্নপূরণ’ নামে একটি নাটক মঞ্চস্থ হয়।
পলাশ উপজেলা শিল্পকলা একাডেমীর ব্যবস্থাপনায় মঙ্গলবার (৭ নভেম্বর) বিকেলে পলাশ উপজেলা শহীদ মিনারে এই নাটক মঞ্চস্থ হয়। নরসিংদীর দিপা অপেরা নামে একটি যাত্রাপালা প্রতিষ্ঠানের পরিবেশনায় এতে অভিনয় করেন প্রায় আট থেকে দশ জন কলা-কুশলী।
এই যাত্রাপালায় সারমর্ম হিসেবে বাংলাদেশের পদ্ধাসেতু উদ্বোধনে প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি, পদ্ধাসেতু বিরোধী দুস্কৃতিকারীর ভূমিকা এবং সেতু মন্ত্রীর ভূমিকায় সকল জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে নিজেদের টাকায় পদ্মাসেতু নির্মানের ফলে দেশের মানুষের ভাগ্যোন্নয়নের যে বৈপ্লবিক পরিবর্তন সাধিত হয়েছে তা জনসম্মুখে তুলে ধরা হয়েছে।
যাত্রাপালাটি নাট্যকার শাহ আলম এর উপস্থাপনায় শেখ হাসিনার চরিত্রে জননী পরিচয়ে অভিনয় করেছেন সুমি আক্তার, সেতু মন্ত্রীরত ভূমিকায় গোলজার হোসেন, দেশ প্রেমিক যুবকের ভূমিকায় মোঃ হাসান ও ইকবাল হোসেন, গ্রামের দুস্কৃতিকারীর ভূমিকায় মকবুল হোসেন ও কালাম হোসেন, পদ্ধবুড়ির ভূমিকায় দিপ্তী এবং পাগলের ভূমিকায় মামুন।
যাত্রাপালা প্রসঙ্গে পলাশ উপজেলা শিল্পকলা একাডেমীর সংগীত প্রশিক্ষক মাজেদুল হক শরীফ জানান, দেশের একটি বৃহৎ প্রকল্প হচ্ছে পদ্মা সেতু। এই সেতু তৈরী করতে কার কী ভূমিকা ছিল তা জনগণের মধ্যে অনেকেই জানে না। আর এই বাস্তবিক বিষয়টা জনসম্মুখে তুলে ধরায় জনগণ প্রকৃত বিষয়টি জানতে পেরেছে। এটি খুবই ভালো লেগেছে বলে আমি মনে করি।
এ যাত্রাপালা প্রসঙ্গে পারুলিয়া তিতুমীর সংঘের সদস্য ও নাট্যাভিনেতা জাইদুল হক জিলু জানান, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের মানুষের জন্য উন্নয়নের অংশ হিসেবে পদ্মা সেতু করতে গিয়ে যে বাধা বিড়ম্ভনার শিকার হয়েছেন তা এই যাত্রাপালায় তুলে ধরা হয়েছে। এটি সময়োপযোগী একটি নাটক।
এসময় নরসিংদী জেলা যাত্রাশিল্পী সমিতির সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম স্বদেশ উপস্থিত ছিলেন।নাটকের তাল যন্ত্রের অংশ হিসেবে কিবোর্ডে ছিলেন রুবেল, প্যাডে জীবন ও তবলায় বাদশা। এসময় আশপাশের প্রায় সহস্রাধিক জনসাধারণ নাটকটি উপভোগ করেন।
রাস্তায় রাখা বাহন পরিবহনে আগুন
ছবি: সংগৃহীত
রাজধানীর খিলগাঁও থানার মালিবাগ এলাকায় রাস্তায় রাখা বাহন পরিবহনে আগুন দিয়েছে দূর্বৃত্তরা।
মঙ্গলবার (৭ নভেম্বর) রাত ১১টা ৩ মিনিটে বাসটিতে আগুন দেওয়া হয়। খবর পেয়ে খিলগাঁও ফায়ার স্টেশনে দুই ইউনিট গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে এনেছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ফায়ার সার্ভিসের মিডিয়া কর্মকর্তা তালহা বিন জসিম।
তিনি জানান, রাতে মালিবাগে বাসে আগুন লাগার খবর পায় ফায়ার সার্ভিস। এরপর খিলগাঁও ফায়ার স্টেশনের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
;
নতুন মজুরি মানতে নারাজ পোশাক শ্রমিকরা
ছবি: সংগৃহীত
বর্তমান দ্রব্যমূল্যের উর্দ্ধগতিতে তৈরি পোশাকশিল্পের শ্রমিকদের নিন্মতম মজুরি ১২ হাজার ৫০০ টাকা মানতে নারাজ আশুলিয়ায় বিভিন্ন কারখানার শ্রমিকেরা।
মঙ্গলবার (৭ নভেম্বর) সন্ধ্যায় মজুরি বোর্ডে হওয়া সিন্ধান্তের বিষয়ে পোশাক শ্রমিক এবং শ্রমিক নেতার সাথে কথা বলে এমন প্রতিক্রিয়া জানতে পেরেছে বার্তা২৪.কম।
দৈনিন্দিন জীবন ব্যবস্থায় ১২ হাজার ৫০০ টাকা নিম্নতম মজুরি বর্তমান সময়ের জন্য সঠিক নয় বলে মনে করছেন অনেক শ্রমিক ও শ্রমিক নেতারা।
এ বিষয়ে পোশাক শ্রমিক কাউছার মৃর্ধা বার্তা২৪.কমকে বলেন, যখন ৮ হাজার টাকা বেতন ছিল তখন চালের কেজি ছিল ২৮ টাকা। আর এখন চাউলের কেজি ৭০ টাকা সেই হিসাবে বেতন কমপক্ষে সাড়ে ১৭ হাজার টাকা আসা উচিৎ। সাড়ে ১২ হাজার টাকা কোন হিসাবে করছে মানি না আমরা।
পোশাক শ্রমিক জাহিদুল বার্তা ২৪.কমকে বলেন, জিনিসপত্রের যে উর্ধ্বগতি আমাদের এ বেতনে চলবে না। বেতন আরেকটু বাড়াতে হবে। না হলে আমাদের নিজেদের সংসারই চলে না, বাড়িতে মা বাবাকে কীভাবে টাকা পাঠাবো। আমরা তো প্রতি মাসে দেনায় থাকি। যে বেতন বাড়িয়েছে তা দিয়ে আমাদের কোনো ভাবেই চলা সম্ভব না। এতে আমরা খুশি না আমাদের বেতন বাড়াতে হবে। আমাদের দাবি সরকারের কাছে আমরা যেন ভালো কিছু পাই আমাদের বেতন আরেকটু বাড়াতে হবে।
যে মজুরি নির্ধারণ করা হয়েছে তা শ্রমিকদের প্রতিফলিত হয়নি বলে মনে করছেন গার্মেন্টস শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক খাইরুল মামুন মিন্টু।
তিনি বার্তা ২৪.কমকে বলেন, বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে জানতে পারলাম যে গার্মেন্টস শ্রমিকদের নতুন মজুরি ১২ হাজার ৫০০ টাকা নির্ধারিত করা হয়ছে। মালিকদের যে প্রস্তাবনা রয়েছে সেটাকেই মেনে নেওয়া হয়েছে। আসলে বাস্তবতা হচ্ছে শ্রমিকদের যে মজুরি নির্ধারণ করা হয়েছে তাতে শ্রমিকদের আশা-আকাঙ্ক্ষা প্রতিফলিত হয়নি। বর্তমান বাজার দর জিনিস পত্রের যেভাবে দাম বাড়ছে তাতে ১২ হাজার ৫০০ টাকা খুবই অপ্রতুল। যেহতু আগামী ১৫ দিনের ভেতরে গার্মেন্টস শ্রমিকদের মজুরি পূনঃবিবেচনার জন্য সুযোগ রয়েছে তাই আমি এই মজুরি পূনঃবিবেচনার জন্য অনুরোধ করবো।
বাংলাদেশ পোশাক শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন ফেডারেশনের আশুলিয়া থানা কমিটির সাধারাণ সম্পাদক মো.কবির হোসেন বার্তা২৪.কমকে বলেন, আমরা বিভিন্নভাবে হিসাব নিকাশ করে দেখলাম শ্রমিকদের যে মজুরি দরকার সেই মজুরি যদি আমরা চাইতে যাই তাহলে প্রতিষ্ঠানগুলো চলে যেতে পারে। তাই আমরা সমন্বয় করে যাতে প্রতিষ্ঠানগুলো ও বাঁচে শ্রমিকরা ও বাঁচে এরকমই একটা মজুরি দাবি করে ছিলাম ২৩ হাজার টাকা। কয়েকদিন আন্দোলনের পরে আজকে যে মজুরিটা ঘোষনা করছে আমার মনে হয় ঠিক আছে। এই মজুরিতে শ্রমিকরা চলতে পারবে যদি দ্রব্যমূল্য ঊর্ধ্বগতি না হয়। বর্তমানে দ্রব্যমূল্য যা আছে আরো কমানো দরকার। বাসা ভাড়া যেন না বাড়ে। দ্রব্যমুল্য কমলে শ্রমিকরা চলতে পারবে।
প্রসঙ্গত, পোশাকশ্রমিকদের মজুরি নির্ধারণের জন্য গত এপ্রিলে সরকার মজুরি বোর্ড গঠন করে। গত ২২ অক্টোবর বোর্ডের সভায় শ্রমিকপক্ষের প্রতিনিধি ২০ হাজার ৩৯৩ টাকা ন্যূনতম মজুরি দাবি করে প্রস্তাব দেন। তার বিপরীতে মালিকপক্ষ প্রায় অর্ধেক বা ১০ হাজার ৪০০ টাকার মজুরি প্রস্তাব দেয়। মালিকপক্ষের এই মজুরি প্রস্তাবে ক্ষুব্ধ হয়ে শ্রমিকেরা পরদিন আন্দোলনে নামে। প্রথমে গাজীপুরে মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে আন্দোলন শুরু হলেও পরে তা আশুলিয়া–সাভারেও ছড়ায়
আজ দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় পোশাক খাতের জন্য গঠিত মজুরি বোর্ডের সভায় মালিকপক্ষ ১২ হাজার ৫০০ টাকার ন্যূনতম মজুরির প্রস্তাব করে। পরে মজুরি বোর্ড সেটিকেই চূড়ান্ত করে।
;
ভেঙ্গে পড়ল নির্মিত সেতুর গার্ডার, গড়মিল বক্তব্য সংশ্লিষ্টদের!
ছবি: বার্তা২৪.কম
জয়পুরহাটের একটি ব্রিজ ভেঙ্গে পড়ার পর গড়মিল বক্তব্য দিচ্ছেন ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান ও সড়ক বিভাগের প্রকৌশলী। ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের সাইড ইনচার্জ বলছেন, ‘গার্ডারটি মেশিন দিয়ে সরিয়ে সঠিক স্থানে বসানোর সময় স্লিপ করে একপাশ পড়ে ভেঙ্গে যায়।’ আবার, একই প্রতিষ্ঠানের এমডি বলছেন, ‘ঢালাইয়ের সময় মাঝখানে সমস্যা থাকায় আমরা সরিয়ে ফেলেছি।’
এদিকে, দায়সারা বক্তব্য দিয়ে সড়ক ও জনপথ বিভাগের প্রকৌশলী বলছেন, ‘সঠিক কাজ না হওয়ায় তা সরিয়ে ফেলার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।’
সূত্র জানায়, জরাজীর্ণ, অপ্রশস্ত ও গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট বিদ্যমান বেইলী অন্যান্য ঝুঁকিপূর্ণ সেতু প্রতিস্থাপন প্রকল্পের আওতায় জয়পুরহাট সড়ক বিভাগের অধীনে হিলি-শালাইপুর-কালাই সড়কের (জেড-৫৫০৯) পাঁচবিবি উপজেলার তুলশীগঙ্গা নদীর উপরে কলন্দপুর সেতুর অবস্থান। এই প্রকল্পের আওতায় প্রায় ৩৮ কোটি টাকায় জেলার পাঁচটি সেতু নির্মাণে কাজ পান মেসার্স জামান এন্টারপ্রাইজ ও মেসার্স এমএ ইঞ্জিনিয়ারিং নামে ঢাকার দুটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ওই টাকার মধ্যে কলন্দপুর সেতু নির্মাণের ব্যয় ধরা হয়েছে ৭ কোটি ৭৯ লাখ টাকা। চলতি বছরের ০৮ জানুয়ারি থেকে ওেই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করেন। প্রায় এক মাস আগেই দীর্ঘ ৪২ মিটার এই সেতুর একপাশে ঢালাইয়ের কাজ শেষ করা হয়।
সরেজমিনে জানা গেছে, জয়পুরহাট সড়ক বিভাগের আওতায় চলতি বছরের ৮ জানুয়ারিতে পাঁচবিবি উপজেলার কলন্দপুর সেতু নির্মাণকাজের উদ্বোধন করেন স্থানীয় সংসদ সদস্য এ্যাড. সামছুল আলম দুদু। এরপর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ শুরু করেন। দু’পাশে পিলার নির্মাণের পর সেতু সংযোগের ঢালাই কাজ চলছিল। সেতুটির একপাশে একটি গার্ডারের ঢালাইয়ের কাজ শেষ হয়েছিল। অন্যটির কাজ কম বেশি করছিল। ইতিমধ্যে গত ৪ নভেম্বর ঢালাই কাজ শেষ করা অংশ ভেঙ্গে নদীতে পড়ে যায়। ভেঙ্গে পড়া অংশের উপর চড়লে সেগুলো গুঁড়ো হয়ে যায়। ভেঙ্গে পড়া অংশ যেন কেউ না দেখতে পারে সেজন্য ওই স্থান থেকে দ্রুত সরিয়ে নেওয়া হয়।
ভ্যানচালক আবু তাহের বলেন, ‘সরকার দিবে জনগণ চলাচল করবে। এই যে কাজটা দুই নম্বর করেছে এতে কি তারা টাকা মেরে খাওয়া ধান্দা করেনি? অর্ধেক টাকার কাজ করবে আর অর্ধেক পকেটে ভরবে। ইঞ্জিনিয়ারেরা প্রথমের দিকে দেখতে এমন হতো না। তাদের সব দোষ।’
ব্যাটারি চালতি অটোচালক মামুনুর রশিদ বলেন, ‘এই কাজ খুব ভালো হয়নি। খারাপ কাজ করেছে। এখন ভেঙ্গে পড়ে তাও ভালো হয়েছে, কেননা মানুষ চলাচলে সময় ভেঙ্গে পড়লে অনেক সমস্যা হতো। ভেঙ্গে পড়ার পর অনেকেই বলতেছে কাজ পছন্দ হয়নি তাই ফেলে দিয়েছে।’
কলন্দপুরের বাসিন্দা গোলজার আলী বলেন, ‘চিকন চিকন রড দিয়ে তৈরি করেছে। হয়তো মেডিসিন যেসব দেওয়ার কথা সেগুলো দেওয়া হয়নি। এ কারণে হয়তো ভেঙ্গে পড়েছে। তাছাড়া মজবুত ও শক্ত হলে ভেঙ্গে পড়ার কথা নয়। আমাদের চাওয়া সেতুটির কাজ ভালোভাবে করা হোক।’
মেসার্স এমএ ইঞ্জিনিয়ারিং এর সাইড ইনচার্জ হাসান পাটোয়ারী বলেন, পাঁচটি গার্ডারে মধ্যে একটির কাজ করা হয়েছে। সেটি মেশিন দিয়ে সরিয়ে সঠিক স্থানে বসানোর সময় স্লিপ করে একপাশ পড়ে ভেঙ্গে যায়। তবে ওই প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) নজরুল ইসলাম কাজল বলেন, ঢালাইয়ের সময় মাঝখানে পাম্প নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। কারণে সেখানে ফাঁকা রয়ে গিয়েছিল। আমরা পুরোটা সরিয়ে ফেলেছি। তবে কাজ নিম্নমানের করা হয়নি বলে দাবি করেন তিনি।
জয়পুরহাটের সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী শাহিনুর রহমান বলেন, ‘ওই কাজ করার ১৪দিন পর আমরা পরীক্ষা করে দেখেছি সেটি সঠিক করা হয়নি। তাই সেটি সরিয়ে ফেলার জন্য মৌখিকভাবে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। আর ওই কাজটি করতে গিয়েই তা ভেঙ্গে পড়ে যায়। এতে ২৫ লাখ টাকা ব্যয় হয়েছিল। ওই টাকা সরকারের লোকসান হবে না। সেটি সম্পূর্ণ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে দিতে হবে।’
;
নতুন মজুরি মানতে নারাজ পোশাক শ্রমিকরা
ছবি: বার্তা২৪.কম
বর্তমান দ্রব্যমূল্যের উর্দ্ধগতিতে তৈরি পোশাকশিল্পের শ্রমিকদের নিম্নতম মজুরি ১২ হাজার ৫০০ টাকা মানতে নারাজ আশুলিয়ায় বিভিন্ন কারখানার শ্রমিকেরা।
মঙ্গলবার (০৭ নভেম্বর) সন্ধ্যায় মজুরি বোর্ডে হওয়া সিন্ধান্তের বিষয়ে পোশাক শ্রমিক এবং শ্রমিক নেতার সাথে কথা বলে এমন প্রতিক্রিয়া জানতে পেরেছে বার্তা২৪.কম।
দৈনন্দিন জীবন ব্যবস্থায় ১২ হাজার ৫০০ টাকা নিম্নতম মজুরি বর্তমান সময়ের জন্য সঠিক নয় বলে মনে করছেন অনেক শ্রমিক ও শ্রমিক নেতারা।
এ বিষয়ে পোশাক শ্রমিক কাউছার মৃর্ধা বার্তা ২৪.কমকে বলেন, ‘যখন ৮ হাজার টাকা বেতন ছিল তখন চালের কেজি ছিল ২৮ টাকা। আর এখন চাউলের কেজি ৭০ টাকা সেই হিসাবে বেতন কমপক্ষে সাড়ে ১৭ হাজার টাকা আসা উচিত। সাড়ে ১২ হাজার টাকা কোনো হিসাবে করছে মানিনা আমরা।’
পোশাক শ্রমিক জাহিদুল বার্তা ২৪.কমকে বলেন, ‘জিনিসপত্রের যে উর্দ্দগতি আমাদের এ বেতনে চলবে না। বেতন আরেকটু বাড়াতে হবে। না হলে আমাদের নিজেদের সংসারই চলে না, বাড়িতে মা বাবাকে কীভাবে টাকা পাঠাবো। আমরা তো প্রতি মাসে দেনায় থাকি। যে বেতন বাড়িয়েছে তা দিয়ে আমাদের কোনো ভাবেই চলা সম্ভব না। এতে আমরা খুশি না আমাদের বেতন বাড়াতে হবে। আমাদের দাবি সরকারের কাছে আমরা যেন ভালো কিছু পাই আমাদের বেতন আরেকটু বাড়াতে হবে।’
যে মজুরি নির্ধারণ করা হয়েছে তা শ্রমিকদের প্রতিফলিত হয়নি বলে মনে করছেন গার্মেন্টস শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক খাইরুল মামুন মিন্টু।
তিনি বার্তা ২৪.কমকে বলেন, বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে জানতে পারলাম যে গার্মেন্টস শ্রমিকদের নতুন মজুরি ১২ হাজার ৫০০ টাকা নির্ধারিত করা হয়েছে। মালিকদের যে প্রস্তাবনা রয়েছে সেটাকেই মেনে নেওয়া হয়েছে। আসলে বাস্তবতা হচ্ছে শ্রমিকদের যে মজুরি নির্ধারণ করা হয়েছে তাতে শ্রমিকদের আশা-আকাঙ্ক্ষা প্রতিফলিত হয়নি। বর্তমান বাজার দর জিনিস পত্রের যেভাবে দাম বাড়ছে তাতে ১২ হাজার ৫০০ টাকা খুবই অপ্রতুল। যেহেতু আগামী ১৫ দিনের ভেতরে গার্মেন্টস শ্রমিকদের মজুরি পুনঃবিবেচনার জন্য সুযোগ রয়েছে তাই আমি এই মজুরি পুনঃবিবেচনার জন্য অনুরোধ করবো।
বাংলাদেশ পোশাক শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন ফেডারেশনের আশুলিয়া থানা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো.কবির হোসেন বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘আমরা বিভিন্নভাবে হিসাব নিকাশ করে দেখলাম শ্রমিকদের যে মজুরি দরকার সেই মজুরি যদি আমরা চাইতে যাই তাহলে প্রতিষ্ঠানগুলো চলে যেতে পারে। তাই আমরা সমন্বয় করে যাতে প্রতিষ্ঠানগুলো ও বাঁচে শ্রমিকরা ও বাঁচে এরকমই একটা মজুরি দাবি করে ছিলাম ২৩ হাজার টাকা। কয়েকদিন আন্দোলনের পরে আজকে যে মজুরিটা ঘোষণা করছে আমার মনে হয় ঠিক আছে। এই মজুরিতে শ্রমিকরা চলতে পারবে যদি দ্রব্যমূল্য ঊর্ধ্বগতি না হয়। বর্তমানে দ্রব্যমূল্য যা আছে আরো কমানো দরকার। বাসা ভাড়া যেন না বাড়ে। দ্রব্যমূল্য কমলে শ্রমিকরা চলতে পারবে।’
প্রসঙ্গত, পোশাকশ্রমিকদের মজুরি নির্ধারণের জন্য গত এপ্রিলে সরকার মজুরি বোর্ড গঠন করে। গত ২২ অক্টোবর বোর্ডের সভায় শ্রমিকপক্ষের প্রতিনিধি ২০ হাজার ৩৯৩ টাকা ন্যূনতম মজুরি দাবি করে প্রস্তাব দেন। তার বিপরীতে মালিকপক্ষ প্রায় অর্ধেক বা ১০ হাজার ৪০০ টাকার মজুরি প্রস্তাব দেয়। মালিকপক্ষের এই মজুরি প্রস্তাবে ক্ষুব্ধ হয়ে শ্রমিকেরা পরদিন আন্দোলনে নামে। প্রথমে গাজীপুরে মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে আন্দোলন শুরু হলেও পরে তা আশুলিয়া–সাভারেও ছড়ায়।’
আজ দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় পোশাক খাতের জন্য গঠিত মজুরি বোর্ডের সভায় মালিকপক্ষ ১২ হাজার ৫০০ টাকার ন্যূনতম মজুরির প্রস্তাব করে। পরে মজুরি বোর্ড সেটিকেই চূড়ান্ত করে।
;
সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় বার্তা ২৪-এ।