বগুড়ায় গুঁড়িয়ে দেওয়া জাসদ অফিসে ‘আবু সাঈদ জামে মসজিদ’ নির্মাণের ঘোষণা গুঁড়িয়ে দেওয়া আওয়ামী লীগ অফিসে ‘আওয়ামী আবু জেহেল টয়লেট’

বগুড়া শহরের সাতমাথায় গুঁড়িয়ে দেওয়া জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ-ইনু) গুঁড়িয়ে কার্যালয়ের জায়গায় “আবু সাঈদ জামে মসজিদ” ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। পাশেই গুঁড়িয়ে দেওয়া জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের জায়গায় “আওয়ামী আবু জেহেল টয়লেট” নির্মাণের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে সেখানে মসজিদ ও পাবলিক টয়লেট নির্মাণ সংক্রান্ত ব্যানার টানিয়ে দিয়েছি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতা।
এ সময় ছাত্র-জনতার পক্ষে ডা. আবদুল্লাহ সানি বলেন, “এখানে জুলাই বিপ্লবে শহিদ আবু সাঈদের নামে এখানে ‘শহিদ আবু সাঈদ জামে মসজিদ’ স্থাপন করা হবে। এছাড়া পাশেই ‘আওয়ামী আবু জেহেল টয়লেট’ বানানো হবে।”
তিনি বলেন, “জুলাই বিপ্লবের সর্বাধিনায়ক শহিদ আবু সাঈদের বাবা তার সন্তানের কোন মূর্তি না বানাতে অনুরোধ করেছিলেন। পারলে তার ছেলের নামে মসজিদ করতে বলেন। এর প্রেক্ষিতে শহরের সাতমাথার এ জায়গায় আবু সাঈদ জামে মসজিদ নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।”
মসজিদ ও টয়লেট নির্মাণের বিষয়ে প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা চলছে বলেও জানান তিনি।
এর আগে ওই জায়গার মালিকানা দাবি করে এক ব্যক্তির লাগানো সাইনবোর্ড খুলে ফেলা হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ফেসবুকে ঘোষণা দিয়ে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে “ছাত্র-জনতার” ব্যানের বিপুল সংখ্যক মানুষ শহরের আদালতপাড়ায় চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে প্রবেশ করে। তারা ১২তলা ভবনের নিচতলায় শেখ হাসিনার নামফলক হাতুড়ি দিয়ে ভেঙে ফেলে। পরে রাত ৮টার দিকে স্টেশন রোড, নবাববাড়ি সড়ক দিয়ে দুই শতাধিক ছাত্র-জনতা মিছিল নিয়ে শহরের সাতমাথা রোডসংলগ্ন টেম্পল সড়কে বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগ অফিসের সামনে আসে। এরপর তারা অফিসটিহাতুড়ি-শাবল দিয়ে ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দেয়। পরে এক্সাভেটর মেশিন দিয়ে কার্যালয় দুটি গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। এরপর পাশেই ১৩২ বছরের প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী টাউন ক্লাবও ভাঙচুর করা হয়। একইদিন শহরের আরও বেশ কয়েকটি স্থানে ভাঙচুর করা হয়।
এদিকে গুঁড়িয়ে দেওয়া জাসদ কার্যালয়ের জায়গা নিজেদের দাবি করে কয়েকজন ব্যক্তি শনিবার দুপুরে সেখানে ব্যানার ঝুঁলিয়ে দেন। তাদের পক্ষে মিজানুর রহমান ও মোখলেসুর রহমান দাবি করেন, এ সম্পত্তি ১৯৫২ সালে তাদের দাদার কেনা।
তাদের দাবি, স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় জায়গাটি বেহাত হয়। পরবর্তীতে জাসদ দলীয় কার্যালয় হিসেবে ব্যবহার করে। তাদের অভিযোগ, ওই জায়গায় রাজনৈতিক কার্যালয় থাকায় তারা এতদিন দখল নিতে পারেননি। এখন স্থাপনা ভেঙে ফেলায় দখল নিতে এসেছেন।
বগুড়া জেলা জাসদের (ইনু) সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম সাংবাদিকদের জানান, তারা ১৯৭২ সাল থেকে ওই জায়গায় আছেন ও প্রশাসনের কাছে লিজের জন্য আবেদন করেন। বগুড়া মোটর মালিক গ্রুপ মালিকানা দাবি করে মামলা করলেও সেটা খারিজ হয়ে যায়। ফলে তাদের লিজ প্রক্রিয়া বিলম্বিত হয়েছে।