সারাদেশ

দেশের উন্নয়ন-শান্তির জন্য ঐক্যবদ্ধ হতে হবে- সাংগ্রাই উৎসবে পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী

ডেস্ক রিপোর্ট: পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা, এমপি বলেছেন, দেশের শান্তি ও উন্নয়নের জন্য, মানুষের কল্যাণের জন্য আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।

তিনি বলেন, আমরা পুরনো বছরকে বিদায় জানিয়ে নতুন বছরের জন্য আমাদের শপথ হবে, বাংলাদেশের মানুষের কল্যাণে ও দেশের উন্নয়নে যেন আমরা প্রত্যেকে বিশেষ ভূমিকা রাখতে পারি।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তি ও উন্নয়নের জন্য আলাদা বিশেষ দৃষ্টিভঙ্গি থাকার কারণে পার্বত্য চট্টগ্রামে এরকম অভূতপূর্ব উন্নয়ন সাধিত হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) রাঙামাটি মারি স্টেডিয়াম মাঠে মারমা সংস্কৃতি সংস্থা (মাসস) আয়োজিত মারমা সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী সাংগ্রাই উৎসবের জলকেলি উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা, এমপি এসব কথা বলেন। পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক জনসংযোগ কর্মকর্তা, মো. রেজুয়ান খানের সংবাদমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিবৃতিতে জানানো হয়, জলকেলি উৎসব অনুষ্ঠানের উদ্বোধক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাঙামাটির সংসদ সদস্য এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ুবিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি দীপংকর তালুকদার, এমপি। এ অনুষ্ঠানে গেস্ট অব অনার হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সরকারের অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াশিকা আয়েশা খান, এমপি।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা, এমপি বলেন, বৈসাবি একটি সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠান। বৈসাবি উৎসব পার্বত্য চট্টগ্রামে নতুন নয়। যুগ যুগ ধরে চলে আসছে এ উৎসব। এটা শুধু সাংস্কৃতিক উৎসবই নয়, এটাতে ধর্মীয় অনুভুতিও জড়িত।

তিনি বলেন, এদিন বয়োঃজ্যেষ্ঠদের কাছ থেকে আশীর্বাদ চাওয়া হয়। তাই, এটি সামাজিক ও সাংস্কৃতিক উৎসবের পাশাপাশি ধর্মীয় উৎসবও।

বঙ্গবন্ধুর চিন্তাধারার কথা উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন ছিল, সব ভাষাভাষী ও সব ধর্মের লোক সম্প্রীতির ঐক্যের বন্ধনে একই ছাতার নিচে বসবাস করবেন। তাঁরই সুযোগ্য কন্যা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিরন্তর কাজ করে চলেছেন। লক্ষ্য একটাই- বাংলাদেশের জাতি, সব ভাষাভাষী গোষ্ঠী, ধর্ম ও সম্প্রদায়ের মধ্যে যেন ঐক্যের বন্ধন সৃষ্টি হয়। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সেই স্বপ্ন বাস্তবায়ন হচ্ছে।

প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা বলেন, রাঙামাটিতে আজকের এই জলকেলি উৎসব অনুষ্ঠান প্রমাণ করে আমরা শান্তি চাই! সম্প্রীতি চাই! ঐক্য চাই! তাই, দেশের কল্যাণে যা যা করা প্রয়োজন, সবাইকে স্ব স্ব অবস্থান থেকে সে কাজ করতে হবে।

পার্বত্য চট্টগ্রামকে বাংলাদেশের উন্নয়নের মূল স্রোতধারার সঙ্গে শামিল করার ক্ষেত্রে সবাইকে অনন্য ভূমিকা রাখার প্রতিও আহ্বান জানান পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল।

সাংগ্রাই উৎসবের শুরুতেই প্রধান অতিথি ও বিশেষ অতিথিরা মারমা তরুণ-তরুণীদের গায়ে পানি ছিটিয়ে জলকেলির সূচনা করেন। জলকেলির পর বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা মারমা শিল্পীদের পরিবেশনায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।

রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও মারমা সংস্কৃতি সংস্থা (মাসস) সভাপতি অংসুইপ্রু চৌধুরীর সভাপতিত্বে এসময় অন্যান্যের মধ্যে সংরক্ষিত নারী সংসদ সদস্য জ্বরতী তঞ্চঙ্গ্যা, পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী’র সহধর্মিনী প্রধান শিক্ষক মল্লিকা ত্রিপুরা, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যান হারুন অর রশিদ, রাঙামাটি রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার সোহেল আহমেদ, বিজিবি রাঙামাটি সদর সেক্টর কমান্ডার কর্নেল মো. আনোয়ার লতিফ খান, রাঙামাটির জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন খান, রাঙামাটির পুলিশ সুপার মীর আবু তৌহিদ, বিপিএম (বার), রাঙামাটি সদর পৌর মেয়র আকবর হোসেন চৌধুরী, দুদক রাঙামাটির উপপরিচালক জাহিদ কামাল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

গেস্ট অব অনার হিসেবে বক্তব্য দিতে গিয়ে অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াশিকা আয়েশা খান, এমপি বলেন, পার্বত্য অঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী উৎসব সাংগ্রাইয়ের সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্যবোধ ও স্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টির মাধ্যমে পাহাড়ে সবাই যেন ভালো থাকেন।

জলকেলি উৎসব উদ্বোধন করতে গিয়ে রাঙামাটির সংসদ সদস্য এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ুবিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি দীপংকর তালুকদার, এমপি বলেন, সাংগ্রাই উৎসব শুধু মারমা সম্প্রদায়ের নয়, এই উৎসব সবার। এ উৎসব এ এলাকায় বসবাসরত সব সম্প্রদায়ের উৎসবে পরিণত হয়েছে।

তিনি বলেন, মারমা সম্প্রদায়ের মানুষেরা পুরনো বছরকে বিদায় আর নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে সাংগ্রাইয়ের এই জলকেলি উৎসব উদযাপন করেন। মারমা তরুণ-তরুণীরা এই জলকেলি উৎসবের মাধ্যমে একে অপরকে পানি ছিটিয়ে পুরনো বছরের গ্লানি, দুঃখ, অপশক্তিকে দূর করে ধুয়ে-মুছে নতুন বছরকে স্বাগত জানান।

সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় বার্তা ২৪-এ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *