জয়পুরহাট জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে নন এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীদের মানবববন্ধন
‘আমাদের মাদ্রাসাটি ১৯৬৯ সালে প্রতিষ্ঠিত। আমি ১৯৯৫ সালে এ মাদ্রাসার সুপার পদে চাকরিতে যোগদান করেছি। এখনো আমাদের মাদ্রাসাটি এমপিওভুক্ত হয়নি। আমি চলতি মাসের ২৮ তারিখে অবসরে যাচ্ছি। সারা জীবন চাকরি করে বেতন পেলাম না। এই আফসোস নিয়ে আমাকে জীবন কাটাতে হবে।’ মাদ্রাসাটির এমপিওভুক্তির দাবিতে আয়োজিত মানববন্ধন শেষে স্মারকলিপি দেওয়ার আগে এভাবেই অসহায়ত্ব প্রকাশ করেন মো. আবু তাহের। তিনি জয়পুরহাট সদর উপজেলার তেঘর বিশা ডি এস দাখিল মাদ্রাসার সুপারিনটেনডেন্ট পদে আছেন।
মানববন্ধনে অংশ নেওয়া শিক্ষক-কর্মচারীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তাঁদের সবার কষ্ট একই। দীর্ঘদিন ধরে তাঁদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত হয়নি। এ কারণে তাঁরা বছরের পর বছর বিনা বেতনে চাকরি করছেন। এতে পরিবার নিয়ে চরম কষ্টে দিনাতিপাত করছেন তাঁরা। পরিস্থিতি আরও কঠিন হয়ে পড়েছে। দ্রুত নন–এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।
আক্কেলপুর উপজেলার অনন্তপুর চৌধুরীপাড়া মহিলা দাখিল মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক শফিউল আলম বলেন, ‘আমি ২০০৩ সালে সহকারী শিক্ষক পদে চাকরিতে যোগদান করেছি। আমাদের মাদ্রাসাটি এমপিওভুক্ত হয়নি। ২২ বছর ধরে বিনা বেতনে চাকরি করছি। আমাদের তো অন্য চাকরিজীবীদের মতো ঘর-সংসার আছে। চাকরি করে বউ-বাচ্চাদের ভালো রাখতে পারছি না।’
সম্মিলিত নন–এমপিও ঐক্য পরিষদের জয়পুরহাট জেলা শাখার সভাপতি ও কালাই উপজেলার মোলামগাড়ী আদর্শ কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুস ছালাম বলেন, ‘আমাদের জেলায় ২৩টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এখনো এমপিওভুক্ত হয়নি। এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত তিন শতাধিক শিক্ষক-কর্মচারী মানবেতর জীবন যাপন করছেন। আমরা এমপিওভুক্তির দাবিতে মানববন্ধন করেছি। প্রধান উপদেষ্টা ও শিক্ষা উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছি।’
বিষয়টি নজরে আনা হলে জয়পুরহাট জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা রুহুল আমিন বলেন, এমপিওভুক্তির নীতিমালা রয়েছে। সর্বশেষ ২০২২ সালে জেলার ১৯টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত হয়েছে। কী কারণে এখনো দীর্ঘদিন ধরে ২৩টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত হয়নি, তা জানা নেই।