আন্তর্জাতিক

কুয়াকাটায় রাখাইনদের ৩ দিনের সাংগ্রাই উৎসব

ডেস্ক রিপোর্ট:  

পটুয়াখালীর কুয়াকাটায় অনুষ্ঠিত হয়েছে রাখাইনদের শত বছরের ঐতিহ্যবাহী (সাংগ্রাই) বা জলকেলি উৎসব। পুরাতনকে ভুলে নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) বিকাল ৩ ঘটিকায় কুয়াকাটার শ্রীমঙ্গল বৌদ্ধ বিহার সংলগ্ন কুয়াকাটা রাখাইন মহিলা মার্কেট মাঠে এ উৎসব অনুষ্ঠিত হয়।

এর আগে রোবার (১৪ এপ্রিল) চন্দন মিশ্রিত জল দিয়ে বুদ্ধ স্নানের মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে ৭ দিনের এই উৎসব। এলাকা ভিত্তিক রাখাইন সম্প্রদায়ের লোকজন বিহার ও ঘরে থাকা বৌদ্ধ মূর্তি স্নান করে এই উৎসবের শুরু করে।

দুঃখ কষ্ট ভুলে নতুন বছরকে বরণে রাখাইন তরুণ-তরুণীরা ধর্মীয় বিশেষ প্রার্থনা, বঙ্গবন্ধুর জীবনী আলোচনা, মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, নৃত্য, মৈত্রীয় জলবর্ষণসহ বিভিন্ন আয়োজনে উৎসব মুখর হয় এ আয়োজন।

স্থানীয় রাখাইনদের মাতুব্বর মো. উচাচী বলেন, ‘এ অনুষ্ঠানে মূলত তরুণীদের কাছ থেকে রাখাইন তরুণদের পানি কিনতে হয়। তরুণীদের পানি কিনতে হয় না। তারা এখানে সংরক্ষিত পানি ব্যবহার করতে পারেন। সেখানে তরুণ-তরুণীদের ভালোবাসায় সিক্ত জল একে অপরের গায়ে ছিটিয়ে পালন করা হয় রাখাইন সম্প্রদায়ের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় এ উৎসব। এটাকেই আমরা উপভোগ করি।

রাখাইন পঞ্জিকা অনুসারে, ১৩৮৫ রাখাইন বর্ষের শেষ দিন মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল)। বুধবার (১৭ এপ্রিল) থেকে শুরু হয়েছে ১৩৮৬ রাখাইন বর্ষ। এই বর্ষ বিদায় ও বরণে কুয়াকাটা রাখাইন সম্প্রদায়ের ৭ দিনের ‘সাংগ্রাই’ বা বর্ষ বিদায় ও বরণ উৎসব পালন করা হচ্ছে । তিন দিনের জলকেলি উৎসবের মধ্যে দিয়ে শনিবার (২০ এপ্রিল) এই উৎসবের শেষ হবে।

কুয়াকাটা সাংগ্রাইন উদযাপন কমিটির সভাপতি উচান চীন বার্তা২৪.কম-কে জানান, ১৩৮৬ (রাখাইন বর্ষ) সালকে বরণ করতেই সাংগ্রাইয়ের শেষ অধ্যায় হিসাবে জলকেলির আয়োজন করেছি। আমরা খুবই আনন্দিত। মূলত এ জলকেলি অনুষ্ঠান ছিল সবার আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু।

রাখাইনদের ধর্মীয় এই অনুষ্ঠানে উচান চীনের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রবিউল ইসলাম, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জনাব মো. আনোয়ার হাওলাদার, (মেয়র কুয়াকাটা পৌরসভা), আব্দুল বারেক মোল্লা (সাবেক মেয়রও সভাপতি কুয়াকাটা পৌর আওয়ামী লীগ) জনাব মোতালেব তালুকদার (সাধারণ সম্পাদক) কলাপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ, জনাব মিস্টার ফ্রান্সিস ব্যাপারী (আঞ্চলিক পরিচালক কারিতাস, বরিশাল) এবং স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মী।

সহযোগিতার বিষয়ে জানতে চাইলে কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রবিউল ইসলাম বলেন, সাংগ্রাই উদযাপন উপলক্ষে আমাদের জেলা প্রশাসন এবং উপজেলা প্রশাসন এর পক্ষ থেকে তাদেরকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করা হয়েছে। এখানে আমরা থানা পুলিশ এবং ট্যুরিস্ট পুলিশের সহায়তায় পর্যাপ্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছি। একই সাথে দেশ-বিদেশ থেকে আগত টুরিস্টরা যাতে এ প্রগ্রামটা দেখতে পারে সে ব্যবস্থা আমরা করেছি। এই ঐতিহ্যবাহী প্রোগ্রামটা আরও জাঁকজমক হোক এবং নিরাপদ হক সে কামনা প্রত্যাশা করছি।

সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় বার্তা ২৪-এ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *