সারাদেশ

বগুড়ার নিউ মার্কেটে স্বর্ণের দোকানে দুর্ধর্ষ চুরি

ডেস্ক রিপোর্ট: জনস্বাস্থ্য সুরক্ষা ও সরকারের রাজস্ব আয় বৃদ্ধিতে তামাক পণ্যে সুনির্দিষ্ট করারোপের মাধ্যমে দাম বৃদ্ধির প্রস্তাব নিয়ে ‘কেমন তামাক কর চাই’ শীর্ষক প্রাক-বাজেট সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শনিবার (২০ এপ্রিল) ২০২৩-২৪ অর্থবছরে সিগারেটের মূল্যস্তরভিত্তিক সুনির্দিষ্ট সম্পূরক শুল্ক করারোপের মাধ্যমে দাম বৃদ্ধির দাবি জানিয়ে জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া সভাকক্ষে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে গবেষণা ও অ্যাডভোকেসি প্রতিষ্ঠান ‘প্রজ্ঞা’ এবং এন্টি-টোব্যাকো মিডিয়া অ্যালায়েন্স ‘আত্মা’।

সম্মেলনে সুনির্দিষ্ট করারোপের মাধ্যমে তামাক পণ্যের দাম বাড়ানোর দাবি জানিয়ে প্রাক-বাজেট আলোচনায় তামাক পণ্যের দাম বৃদ্ধির প্রস্তাব করেন সংগঠন দু’টির বিশেষজ্ঞেরা।

‘আত্মা’র কো-কনভেনর নাদিরা কিরণ-এর সঞ্চালনায় সম্মেলনে বাজেট প্রস্তাব তুলে ধরেন ‘প্রজ্ঞা’র তামাক নিয়ন্ত্রণবিষয়ক প্রকল্প প্রধান হাসান শাহরিয়ার।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে তামাক পণ্যে কার্যকরভাবে করারোপ করা অত্যন্ত জরুরি। তামাকের ব্যবহারজনিত ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার ২০২২ সালের তথ্যমতে, পৃথিবীর যে সব দেশে সবচেয়ে সস্তায় সিগারেট পাওয়া যায়, সে সব দেশের মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম (১৬২টি দেশের মধ্যে ১২১তম)।

অন্যান্য স্তরের তুলনায় নিম্নস্তরে সিগারেটের মূল্যবৃদ্ধি তুলনামূলকভাবে স্বল্প আয়ের তামাক ব্যবহারকারীকে ধূমপান ছাড়তে উৎসাহিত করে। একইসঙ্গে উচ্চ স্তরগুলিতে সিগারেটের দাম বাড়লে ভোক্তাদের মধ্যে সস্তা ব্র্যান্ড বেছে নেওয়ার আগ্রহ কমে।

বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার সুপারিশ অনুযায়ী, সুনির্দিষ্ট করপদ্ধতি প্রবর্তন করলে তামাক কর কাঠামোর কার্যকারিতা আরো শক্তিশালী হবে। তামাকপণ্য থেকে রাজস্ব আহরণ সহজ হবে। রাজস্ব আয় বাড়বে এবং আহরণ ব্যয় কমবে।

সম্মেলনে আরো জানানো হয়, তামাক ব্যবহারজনিত রোগে প্রতিবছর ১ লাখ ৬১ হাজারের বেশি মানুষ মৃত্যুবরণ করেন। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে তামাক ব্যবহারের অর্থনৈতিক ক্ষতির পরিমাণ ৩০ হাজার ৫শ ৬০ কোটি টাকা, যা একই সময়ে তামাকখাত থেকে অর্জিত রাজস্ব আয়ের (২২ হাজার ৮শ ১০ কোটি টাকা) চেয়ে অনেক বেশি।

তামাকবিরোধীদের কর ও মূল্য প্রস্তাব বাস্তবায়ন করা হলে ৯ হাজার ৬শ কোটি টাকা অতিরিক্ত রাজস্ব আয় অর্জিত হবে এবং ৪ লাখ ৮৮ হাজার প্রাপ্তবয়স্ক এবং ৪ লাখ ৯২ হাজার তরুণ জনগোষ্ঠীর অকালমৃত্যু রোধ করা সম্ভব হবে। করারোপের মাধ্যমে মূল্যবৃদ্ধি করলে প্রায় ১৫ লাখ মানুষ ধূমপান ছেড়ে দেবেন।

সম্মেলনে অর্থনীতিবিদ ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ বলেন, ‘শিক্ষা, প্রশিক্ষণ, স্বাস্থ্যের উন্নয়ন না হলে সার্বিক উন্নয়ন সম্ভব নয়। প্রধানমন্ত্রী বারবার বলার পরেও তামাকের ব্যবহার কমানোর ব্যাপারে উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে না।

আইএমএফের ঋণের বিপরীতে বাংলাদেশকে আগামী অর্থবছর থেকে মোট জিডিপি’র অন্তত দশমিক ৫ শতাংশ হারে অতিরিক্ত কর রাজস্ব আদায় করতে হবে। অর্থাৎ ২০২৩-২৪ অর্থবছরেই কর আদায় বাড়াতে হবে, কমপক্ষে ৬৫ হাজার কোটি টাকা।

তামাকবিরোধীদের প্রস্তাব অনুযায়ী, তামাকপণ্যের দাম বাড়িয়ে এই লক্ষ্যমাত্রার উল্লেখযোগ্য অংশ পূরণ করা সম্ভব। বর্ধিত রাজস্ব একইসঙ্গে অর্থনীতিতে কোভিড-১৯ মহামারি এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের বিরূপ প্রভাব মোকাবিলায় ভূমিকা রাখবে। দাম বাড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে সচেতনতাও বাড়াতে হবে। আইনের সঠিক প্রয়োগ করতে হবে। গরিব মানুষ, পিছিয়েপড়া মানুষকে তামাক মুক্ত করতে আমরা কাজ করছি’।

সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তব্য রাখেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগ (সিপিডি)-এর রিসার্চ ফেলো সৈয়দ ইউসুফ সাদাত, বি আই আই এস এস-এর ডিরেক্টর ড. মাহফুজ কবির, ক্যাম্পেইন ফর টোব্যাকো ফ্রি কিডস (সিটিএফকে)-এর বাংলাদেশ লিড পলিসি অ্যাডভাইজার মো. মোস্তফিজুর রহমান, আত্মা’র কনভেনর মতুর্জা হায়দার লিটন এবং প্রজ্ঞা’র নির্বাহী পরিচালক এবিএম জুবায়েরসহ বিভিন্ন তামাকবিরোধী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।

সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় বার্তা ২৪-এ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *