সারাদেশ

মিয়ানমারের যুদ্ধজাহাজ থেকে গুলি, বাংলাদেশি দুই জেলে গুলিবিদ্ধ

ডেস্ক রিপোর্ট: রাজধানীর পুরান ঢাকার চকবাজার থানার পূর্ব ইসলামবাগের একটি ফাঁকা বাসায় চুরির ঘটনায় মামলা তদন্তে নেমে দুর্ধর্ষ একটি চোর চক্রকে গ্রেফতার করেছে থানা পুলিশ। চক্রটির সদস্যরা ঈদের আগে জামিনে বের হয়ে চুরির পরিকল্পনা সাজায়। এরপর রাজধানীসহ আশপাশের এলাকায় ঘুরে ঘুরে ফাঁকা বাসায় চুরি করেন তারা। চুরি শেষে আত্মগোপনে চলে যায় চক্রের সদস্যরা।

পুলিশ বলছে, চোর চক্রের চার জনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় ৪৭ টি মামলা রয়েছে। তাদের মধ্যে শুধুমাত্র মামুনের বিরুদ্ধেই ২২ টি মামলা রয়েছে।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন- চক্রের অন্যতম হোতা মো.মামুন (৩৪), মো.মিরাজ হোসেন (৩৫), মো. সায়মুন (৩০), অমিত হাসান ইয়াসিন (২১), হাসিনা বেগম (৫২), জামিলা খাতুন হ্যাপি (১৮) ও তাঁতিবাজারের স্বর্ণ ব্যবসায়ী বরুণ (৫০)।

এ সময় তাদের কাছ থেকে একটি স্বর্ণের ছোট আংটি, তিনটি রূপার পায়েল, একটি রিয়েলমি স্মার্ট ফোন, একটি স্বর্ণের নাক ফুল, গলানো স্বর্ণ (যার ওজন ৩ ভরি) উদ্ধার করা হয়েছে।

রোববার (২১ এপ্রিল) দুপুরে রাজধানীর মিন্টু রোড অবস্থিত ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান লালবাগ বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মাহাবুব উজ জামান।

তিনি বলেন, গত ৯ এপ্রিল রাজধানীর পূর্ব ইসলামবাগের বাসিন্দা মো.হাফিজুল ইসলাম পরিবার নিয়ে ঈদুল ফিতর উদযাপন করতে গ্রামের বাড়ি যান। ঈদ উদযাপন শেষ করে গত ১২ এপ্রিল বাসায় প্রবেশ করতে গেলে দেখেন বাসার মূল গেইটের হেজবল্টের লক ভাঙা। পরে হাফিজুল বাড়ির মালিককে নিয়ে বাসার মধ্যে প্রবেশ করে দেখেন সব কক্ষের আসবাবপত্র এলোমেলো অবস্থায় পড়ে রয়েছে। পরে তিনি নিজের বেডরুমে প্রবেশ করে দেখেন স্টিলের আলমারি ভেঙে ১ লাখ ১০ হাজার টাকা, স্বর্ণালংকার, ৪০০ ইউএস ডলার, একটি স্মার্ট ফোন চুরি করে নিয়ে গেছে চোররা।

এই ঘটনায় হাফিজুর রহমান বাদী হয়ে ডিএমপির চকবাজার থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। তার মামলার পরিপ্রেক্ষিতে বাসার সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে চোরদের শনাক্ত করা হয়।

শনিবার (২০ এপ্রিল) রাজধানীর ইসলামবাগ এলাকায় অভিযান চালিয়ে এই চোর চক্রের সাত জনকে গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতারকৃতরা জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, তারা ইসলামবাগের বাসাটিতে চুরি করার আগেও কেরানীগঞ্জের দুইটি বাসায় চুরি করেছে। চুরি করার পর চক্রটি তাঁতিবাজারে গিয়ে স্বর্ণ ব্যবসায়ী বরুণের কাছে চোরাই স্বর্ণ বিক্রি করে দেয়। পরে বরুণ এই চোরাই স্বর্ণ গলিয়ে ফেলে। আমরা তাকেও গ্রেফতার করেছি এবং গলিয়ে ফেলা স্বর্ণ উদ্ধার করেছি।

মাহাবুব উজ জামান বলেন, ঈদের ছুটিতে গ্রামের বাড়িতে অনেকেই চলে যান। আর এই ফাঁকা ঢাকায় বাসা-বাড়িতে চুরি করার জন্য চক্রটি তৎপর হয়ে ওঠে। প্রথমে তারা রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় দলবদ্ধ হয়ে বিভিন্ন বাসা-বাড়ি রেকি করে। রেকি করা শেষ হলে তারা তাদের পছন্দ মতো একটি বাসা ঠিক করে সেখানে চুরি করে। তারা টার্গেট করে স্বর্ণালংকার ও ইলেকট্রনিক ডিভাইস চুরি করেন।

তিনি আরও বলেন, এই চক্রটির চুরি করাই নেশা ও পেশা। গ্রেফতার জামিলা খাতুন হ্যাপির বাসাটি হচ্ছে এই চক্রের গোপন আস্তানা। সেখানে বসে চক্রটি চুরি করার পরিকল্পনা করে। তারা প্রথমে বিভিন্ন বাসা রেকি করে। রেকির পর একটা বাসা নির্ধারণ করে সেই বাসায় চুরি করে। চোর চক্রটির সদস্যরা হ্যাপির বাসায় কিছুদিন আত্মগোপনে থাকেন। তারা ঈদের এক থেকে দেড় মাস আগে জামিনে বের হয়েছে। জামিনে বের হয়ে ঈদের মধ্যে ফাঁকা ঢাকায় চুরি করার জন্য তারা পরিকল্পনা করে ইসলামবাগের বাসাটিতে চুরি করে।

সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় বার্তা ২৪-এ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *