সারাদেশ

চরফ্যাশনে সড়কের পাশে ময়লার ভাগাড়, দুর্ভোগে জনসাধারণ

ডেস্ক রিপোর্ট: চলতি বোরো মৌসুমে কৃষকদের মধ্যে হাইব্রিডে বিপ্লব এনেছে বাংলাদেশের সবচেয়ে মোটা জাতের হীরা-৬ ধান। অন্যান্য জাতের ধানের তুলনায় চাষিরা রোগ ও পোকার আক্রমণবিহীন হীরা-৬ জাতের হাইব্রিড ধান চাষ করে বাম্পার ফলন পেয়েছেন।

সোমবার (২২ এপ্রিল) সকালে বরিশালের গৌরনদী উপজেলার পিঙ্গলাকাঠী মিশন পাড়ায় অনুষ্ঠিত হীরা ধানের ‘মেগা মাঠ দিবস’-এর আলোচনা সভায় স্থানীয় কৃষক শওকত আকন জানিয়েছেন, তিনি তার ৬০ শতক জমিতে হীরা-৬ জাতের বোরো ধান চাষ করে এবার বাম্পার ফলন পেয়েছেন। আগামীতেও তিনি এ জাতের ধান চাষ করবেন।

তিনি আরো জানান, বাংলাদেশে যেসব হাইব্রিড ধান চাষ হয়, হীরা-৬ ধান তার মধ্যে অন্যতম। উচ্চ ফলনশীল হওয়ার কারণে এই ধান তাদের মধ্যে ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করেছে।

সুপ্রিম সিড কোম্পানির আয়োজনে হীরা ধানের মেগা মাঠ দিবসে স্থানীয় কৃষক আব্দুল আজিজ মৃধার সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন কোম্পানির জোনাল ম্যানেজার কৃষিবিদ মশিউর রহমান। বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা অনিতা মজুমদার। কোম্পানির রিজিওনাল ম্যানেজার কৃষিবিদ আসাদুল আলমের সঞ্চালনায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, স্থানীয় পরিবেশক দুলাল রায়, কৃষক শওকত আকন প্রমুখ।

মাঠ দিবসের আলোচনার শুরুতে অতিথিরা কৃষকদের সঙ্গে নিয়ে হীরা-৬ ধানসহ অন্যান্য জাতের চাষ করা কয়েকটি বোরো ক্ষেত পরিদর্শন করে ধানের ছড়া সংগ্রহ করেন। পরবর্তীতে গণনা করে হীরা-৬ ধানের প্রতিটি শীষে গড়ে ৩শ ৬টি থেকে ৩শ ১০টি ধান পাওয়া গেছে। অন্যান্য জাতের ধানে সর্বোচ্চ ২শটি ধান পাওয়া যায়।

এরপর সভার প্রধান অতিথির বক্তব্যে কৃষিবিদ মশিউর রহমান বলেন, হীরা-৬ বাংলাদেশের সবচেয়ে মোটা হাইব্রিড ধান। এই জাতের ধানে অন্য যেকোনো হাইব্রিড ধানের তুলনায় বেশি ফলন হয়। রোগ ও পোকার আক্রমণবিহীন ১শ ৪৫ দিনের জীবনকাল হীরা-৬ ধানের জাতে প্রতি শতকে এক মণের বেশি ধান পাচ্ছেন কৃষক।

পাশাপাশি এ ধানের খোসা অত্যন্ত পাতলা হওয়ায় প্রতি ১শ মণ ধানে ৭৩ মণের বেশি চাল পাওয়া যায়। এছাড়াও এ ধানের চালের ভাত অন্যান্য জাতের মতো আঠালো হয় না।

সভায় উপস্থিত প্রায় দুই শতাধিক কৃষকদের উদ্দেশে কৃষিবিদ মশিউর রহমান বলেন, বোরো চাষের শুরুতে আগে ভাবতে হবে, কোন ধানের বীজ বপন করে ভালো ফলন পাওয়া যাবে। কারণ, এটা শুধু বীজ নয়; একটি পরিবারের স্বপ্ন।

এদিকে, কৃষকেরা জানিয়েছেন, হীরা-৬ ধান চাষ করে তারা অন্যান্য জাতের ধানের চেয়ে বাম্পার ফলন পেয়েছেন। তাই, আগামীতেও তারা হীরা-৬ ধান চাষ করবেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশে যে কয়েকটি কোম্পানি হাইব্রিড ধানের আমদানির অনুমতি পেয়েছে, তাদের মধ্যে সুপ্রিম সিড একটি। কোম্পানিটি বাংলাদেশে প্রথম চীন থেকে বাংলাদেশে হীরা ধানের বীজ এনে বাজারজাত করে। এরপর তারা নিজস্ব উৎপাদনে যায়। বর্তমানে ৯০ শতাংশ বীজ নিজেরাই উৎপাদন করে বাজারজাত করছে।

আরো জানা গেছে, হাইব্রিড ধান সাধারণত ৭০-৭৫ শতাংশ পেকে গেলেই কাটতে হয়। কারণ, ধান বেশি পাকার ফলে ক্ষেতেই ঝরে যায়। তখন হাইব্রিড ধানের বিষয়ে নেতিবাচক প্রচারণা হয়। সে কারণে কৃষকদের সচেতনতার জন্যই মূলত হীরা-৬ ধানের মেগা মাঠ দিবসের আয়োজন করা হয়েছে।

সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় বার্তা ২৪-এ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *