জয়পুরহাট

জয়পুরহাটে আইনজীবীর বিরুদ্ধে অন্তঃসত্ত্বা নারীকে নির্যাতনের অভিযোগ

ডেস্ক রিপোর্ট:

জয়পুরহাট নারী ও শিশু আদালতের আইনজীবী অ্যাডভোকেট গোলাম রব্বানী মাছুমের বিরুদ্ধে ওই আদালত চত্বরে ৩ মাসের অন্তঃসত্ত্বা একজন নারীকে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ওই অন্তঃসত্তা নারীর পিতা আজিজুল ইসলাম বৃহস্পতিবার দুপুরে জয়পুরহাটের জেলা প্রেসক্লাবের সংবাদ সম্মেলন করেন। এ সময় আজিজুল ইসলামের স্ত্রী রোখসানা বেগম, ছেলে রানা, দুই ভাই ফারুক হোসেন ও আনিছুর রহমান উপস্থিত ছিলেন। 

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে অভিযোগ করা হয়, আজিজুল ইসলামের জামাতা জয়পুরহাট সদর উপজেলার পূর্ব পুরানাপৈল গ্রামের ফজলুর রহমানের ছেলে নূর আলম বিদ্যুৎ তাঁর তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রী মনিরা খাতুনের কাছে থাকা নিজ ঔরসজাত সন্তানকে আইনগত ভাবে নেওয়ার জন্য কোর্টে মামলা দায়ের করেন। এ বিষয়ে গত ১৮ এপ্রিল,  ২০২৪; বিকেল ৩ টার দিকে মামলাটির শুনানী শেষ হয়। এর পরপরই আজিজুলের জামাতা নূর আলম জয়পুরহাট নারী ও শিশু জজ কোর্টের ৩য় তলার বারান্দায় তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রী মনিরা খাতুনের  কাছে নিজ সন্তানকে একনজর দেখতে চান। সে সময় স্ত্রী মনিরা খাতুনের পক্ষের আইনজীবী অভিযুক্ত  গোলাম রব্বানী মাছুম বাধা প্রদান করেন নূর আলমকে। নূর আলম তখন তাঁকে বাধা দেওয়ার  কারণ জানতে চান। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে  অভিযুক্ত আইনজীবী এবং তাঁর সাথে থাকা অজ্ঞাতনামা আরও  ২-৩ জন মিলে নূর আলমকে এলোপাতারি মারধর করতে থাকেন। সে সময় নূর আলমের সাথে থাকা তাঁর ৩ মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী রিনা খাতুনসহ তাঁর পিতা ফজলুর রহমান তাঁদের বাধা দেন। ফলে সে সময় তাঁদেরকেও বেধরক মারপিট করা হয়। শুধু তাই নয়, সে সময় অভিযুক্তরা অন্তঃসত্ত্বা রিনা খাতুনের পরনের কাপড় টানা হেচরাসহ তাঁর শ্লীলতাহানি করে।  এছাড়াও  এক পর্যায়ে নূর আলম এবং তাঁর স্ত্রী রিনা খাতুনকে উকিল বারের ৪র্থ তলার একটি কক্ষের মধ্যে আটক করে রাখা হয়। এ ঘটনায় তখন রিনা খাতুনের গোপানাঙ্গ দিয়ে রক্ত ক্ষরণ হতে থাকে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে অভিযুক্তরা ভুক্তভোগীদের মামলা-মোকর্দ্দমা না করার জন্য বিভিন্ন প্রকার ভয়ভীতি ও হুমকি প্রদান করেন। এরপর ওই দিন সন্ধ্যায় তাঁদেরকে ছেড়ে দেওয়া হয়।  পরে রিনা খাতুন ও নূর আলমকে ২৫০ শয্যার জয়পুরহাট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে দেওয়া হয়। এখন পর্যন্ত রিনা খাতুন ওই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। উল্লেখ্য, এ ঘটনায় অভিযোগকারী আজিজুল ইসলাম বাদী হয়ে জয়পুরহাট সদর থানায় গত ২৪ এপ্রিল, বুধবার একটি মামলা দায়ের করেছেন। যার মামলা নং- ৫০/২০২৪।

 আনীত অভিযোগ মিথ্যা ও বানোয়াট উল্লেখ করেছেন অভিযুক্ত আইনজীবী গোলাম রব্বানী মাছুম। তিনি বলেন, প্রকৃত ঘটনা হলো- ঘটনার দিন আদালত চত্বরে  আজিজুলের জামাতা নূর আলম তাঁর তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রী মনিরা খাতুনের কাছ থেকে সন্তানটিকে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। তখন তাঁকে বাধা দেওয়া হয়। ফলে তিনি রেগে যান। আর এ ঘটনায় তিনি বরং  আমাদেরকে মারধর করেন। এ ঘটনার আমি নিজে বাদী হয়ে গত ২৪ এপ্রিল, বুধবার জয়পুরহাট সদর থানায় মামলা দায়ের করেছি। যার মামলা নং- ৫১/২০২৪।

এ বিষয়ে জয়পুরহাট সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হুমায়ুন কবির জনান, ওই ঘটনায় জয়পুরহাট সদর থানায় পৃথক দুটি মামলা হয়েছে। তবে বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত কেউ গ্রেপ্তার হননি।  

মো. আতাউর রহমান।

 

সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় ডেইলি জয়পুরহাট-এ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *