ক্ষেতলাল

ক্ষেতলালে মোটরসাইকেল প্রতীকের অফিসে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগ

ডেস্ক রিপোর্ট:

জয়পুরহাট ক্ষেতলাল উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মোটরসাইকেল প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী মোস্তাকিম মন্ডলের নির্বাচনী ক্যাম্পে ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগ উঠেছে দোয়াত কলম প্রতীকের প্রতিদ্বন্দ্বী চেয়ারম্যান প্রার্থী দুলাল মিয়া সরদারের সমর্থকের বিরুদ্ধে। তবে দুলাল মিয়া সরদার এবং অভিযুক্ত সমর্থক স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মশিউর রহমান শামীম এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। 

রবিবার (২৮ এপ্রিল) রাত ৮টার দিকে উপজেলার মামুদপুর ইউনিয়নের মহব্বতপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। 

ঘটনার পর পর মোস্তাকিম মন্ডলের সমর্থকরা ঘটনাস্থলে গিয়ে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। মিছিলে দোয়াত কলম প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থক ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মশিউর রহমান শামীমের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে দেখা যায়। ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া বেশ কিছু ভিডিওতে দেখা যায়, মোস্তাকিম মন্ডলের সমর্থকরা দলবদ্ধ হয়ে বিক্ষোভ মিছিল করছেন। এমনকি “মশিউরের গালে গালে, জুতা মার তালে তালে” স্লোগানও দিচ্ছেন তারা।

এনিয়ে সোমবার (২৯ এপ্রিল) মোটরসাইকেল প্রতীকের প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান মোস্তাকিম মন্ডলের সমর্থক মেহেদী হাসান রিটার্নিং অফিসার ও থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেছে। 

অভিযোগসুত্রে জানা যায়, উপজেলার মামুদপুর ইউনিয়নের মহব্বতপুর গ্রামের পলাশের মোড়ে চেয়ারম্যান প্রার্থী মোস্তাকিম মন্ডলের মোটরসাইকেল প্রতীকের একটি নির্বাচনী প্রচারণা অফিস স্থাপন করা হয়। সেখানে ঘটনার দিন দোয়াত কলম প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী দুলাল মিয়া সরদারের সমর্থক ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মশিউর রহমান শামীম দলীয় রাজনৈতিক কোন্দলের জেরে ১০/১২ জনের দলবল নিয়ে সেই অফিসে চেয়ার টেবিল ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করে ৪৫ হাজার টাকার ক্ষতিসাধন করেছে। 

তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন দোয়াত কলম প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী ও পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি দুলাল মিয়া সরদার এবং মামুদপুর ইউপি চেয়ারম্যান মশিউর রহমান শামীম।

তাদের অভিযোগ মোটরসাইকেল প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী ও বর্তমান চেয়ারম্যান মোস্তাকিম মন্ডল ষড়যন্ত্র করে নিজেই নিজের অফিসে ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে।

অভিযুক্ত মামুদপুর ইউপি চেয়ারম্যান মশিউর রহমান শামীম বলেন, ঘটনাটি সম্পূর্ণ সাজানো। মোস্তাকিম মন্ডলের সমর্থকরা সেখানে টাঙানো আমাদের দোয়াত কলম প্রতীকের পোস্টার ছিড়ে ফেলে। পরে আমি খবর পেয়ে সেখানে গিয়ে দেখে উপজেলা নির্বাচন অফিসার ও ওসি স্যারকে জানিয়ে সেখান থেকে চলে আসি। পরে তারা ভয় পেয়ে নিজেরাই নিজেদের অফিসে ভাংচুর করে আমাদের উপর চাপানোর চেষ্টা করছে। যে অভিযোগ করেছে সেই মেহেদী অবসর চৌধুরির লোক। সে অবসরের ভোট করেছে। এখন গা বাঁচাতে মোস্তাকিম মন্ডলের পক্ষ নিয়ে ভোটের মাঠে নেমে বিশৃঙ্খলা করার চেষ্টা করছে। এমনকি তারা আমাকে বাড়ি থেকে তুলে চৌমুহনী বাজারে নিয়ে গিয়ে মারবে বলেও হুমকি দিয়েছে।

দোয়াত কলম প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী ও পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি দুলাল মিয়া সরদার বলেন, ওরাই আমাদের পোস্টার ছিড়েছে। তবে আমরা কোন অভিযোগ করিনি। পরে ওরা নিজেরাই নিজেদের অফিস ভাংচুর করেছে। এসব নোংরামু করে কি হবে। এসব ভাল কাজ নয়।

মোটরসাইকেল প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোস্তাকিম মন্ডল বলেন, দুলার মিয়া সরদারের সমর্থক মামুদপুর ইউপি চেয়ারম্যান মশিউর রহমান শামীম তাঁর দলবল নিয়ে আমার নির্বাচনী ক্যাম্পে হামলা করে ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে। এ নিয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা নির্বাচন অফিসার বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে। তারা নিজেদের পরাজয় নিশ্চিত জেনে এসব সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালানোর চেষ্টা করছে। তবে জনগণ তাদের এসবে ভয় পায়না।

ক্ষেতলাল থানার ওসি মোঃ আনোয়ার হোসেন বলেন, এবিষয়ে একটি অভিযোগ রিটানিং কর্মকর্তার মাধ্যমে পেয়েছি। অভিযোগে বর্নিত ঘটনার তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

রিটার্নিং অফিসার ও জেলা নির্বাচন অফিসার মোঃ ফজলুল করিম বলেন, একটি অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগটি আমলে নিয়ে ম্যাজিস্ট্রেটকে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলেছি। 

মোঃ আমানুল্লাহ আমান।

 

সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় ডেইলি জয়পুরহাট-এ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *