বিনোদন

এমন সুযোগ সবার ভাগ্যে জোটে না

ডেস্ক রিপোর্টঃ দীর্ঘদিনের অভিনয় ক্যারিয়ার সায়েম সামাদের। কাজ করেছেন মঞ্চ, টেলিভিশন ও চলচ্চিত্রে। ‘মুজিব : একটি জাতির রূপকার’ চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন সৈয়দ নজরুল ইসলামের মতো ঐতিহাসিক চরিত্রে। তবে একটি ধারাবাহিক করে তার ব্যস্ততা বেড়েছে আগের চেয়ে অনেক বেশি। সমসাময়িক নানা বিষয়ে বার্তা২৪.কমের সঙ্গে কথা বলেছেন তিনি

কেমন যাচ্ছে সময়?

আলহামদুলিল্লাহ, খুব ভালো। শ্যুটিংয়ে ব্যস্ত সময় পার করছি। যেটা আজীবন চেয়েছিলাম। কিন্তু আগে নানা কারণে অভিনয়ে পুরোদমে সময় দিতে পারিনি বা আমার কাছে কাজের প্রস্তাবও কম এসেছে। তবে এখন আগের চেয়ে ব্যস্ততা অনেক বেড়েছে।

জবা ধারাবাহিকে শানু ও পুতুলের সঙ্গে সায়েম সামাদ

দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন মাধ্যমে অভিনয় করছেন। হঠাৎ করে ইদানিং কাজের ব্যস্ততা বাড়ার কারণ কী?

ব্যস্ততা বাড়ার কারণ ‘জবা’। এটি দীপ্ত টিভিতে প্রচার চলতি একটি ডেইলি সোপ। এরইমধ্যে আড়াইশ’র বেশি পর্ব প্রচারিত হয়েছে। বুঝতেই পারছেন, একটি ধারাবাহিক কতোটা জনপ্রিয়তা পেলে এতোগুলো পর্ব পর্যন্ত নির্মিত হয়। যেভাবে ‘জবা’র সাড়া পাচ্ছি, তাতে মনে হয় এই ধারাবাহিকটি আরও অনেক দূর যাবে। এটি নির্দেশনা দিয়েছেন আশীষ রায়। স্ক্রিপ্ট লিখেছেন আহমেদ হিরক। ‘জবা’য় আমার চরিত্রটি একেবারে প্রথম পর্ব থেকেই রয়েছে। অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র এটি। আমাকে নেতিবাচক চরিত্রে দেখা যাচ্ছে। স্ত্রী (আইনুন পুতুল) থাকা স্বত্তেও আমি পরকীয়ায় লিপ্ত হই (শানারেই দেবী শাণুর সঙ্গে)। একে তো নেতিবাচক চরিত্রে অভিনয় দেখানোর সুযোগ বেশি। তার ওপর আমার চরিত্রটি ঘরের বাইরে শুদ্ধ ভাষায় আর ঘরে পুরান ঢাকার ভাষায় কথা বলে। সব মিলিয়ে চরিত্রটি দর্শকও পছন্দ করছেন। প্রতিটি চরিত্রের আলাদা আলাদা গল্প রয়েছে। অনেক তারকাশিল্পী কাজ করছেন। আমার মায়ের চরিত্রে রয়েছেন গুণী চলচ্চিত্র অভিনেত্রী অরুণা বিশ্বাস।

সদ্য মুক্তি পাওয়া জাতির জনকের বায়োপিকে একটি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করলেন। সবমিলিয়ে অনুভূতি কেমন?

এক কথায় অনবদ্য। এটি আমার জীবনের অন্যতম একটি প্রাপ্তি। একটি দেশের জনকের বায়োপিকে কাজ করা, তাও সৈয়দ নজরুল ইসলাম স্যারের মতো ঐতিহাসিক চরিত্র। এমন সুযোগ সবার ভাগ্যে জোটে না। ছবিটি আবার পরিচালনা করেছেন বলিউডের মাস্টারমেকার শ্যাম বেনেগাল। কাজটি করতে গিয়েই এক অন্যরকম অনুভূতি হচ্ছিল। ছবিটি মুক্তির পর আরও ভালো লেগেছে। ছবির শ্যুটিংয়ের আগে ও পরে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আমাদের সাক্ষাতের সুযোগ হয়। শিল্পী কলাকুশলীদের জন্য তিনি ডিনারের আয়োজন করেছিলেন। সেদিন প্রধানমন্ত্রী নিজেই খাওয়ার বিষয়টি তদারকি করেন। আমি উনাকে বলেছিলাম, আমি সৈয়দ নজরুল ইসলামের চরিত্রে অভিনয় করেছি। আমার বাড়ি ভাঙা ফরিদপুর। সেদিন তার সঙ্গে ছবিও তুলেছিলাম। সেই ছবি কদিন পরে তার অটোগ্রাফসহ বাঁধাই করে প্রত্যেক শিল্পীর বাড়িতে পাঠানো হয়েছে। এটি একটি বিশেষ সম্মানের মুহূর্ত আমার জন্য। তবে একটি আক্ষেপ থেকে যাবে আজীবন। প্রধানমন্ত্রীর কর্মজীবন নিয়ে নাসরিন মুস্তাফার লেখা ‘মুজিবের মেয়ে’ নাটকটি মঞ্চে এনেছিলাম আমরা। সেই নাটকের পান্ডুলিপিটি সেদিন উপহার দেওয়ার সুযোগ থাকা স্বত্তেও আমি ভুলবশত সঙ্গে নিয়ে যাই নি। আশা করছি আগামীতে এই উপহারটি উনার হাতে তুলে দিতে পারব।

মুজিব চলচ্চিত্রে সৈয়দ নজরুল ইসলােমের চরিত্রে সায়েম সামাদ

দীর্ঘদিন পর বিটিভির ধারাবাহিকেও কাজ করছেন…

হ্যা। বিটিভির ধারাবাহিকটির নাম ‘কুসুম’। এখানেও আমি বাড়ির বড় ছেলে। আমার মায়ের চরিত্রে আছেন ডলি জহুর। কুসুম চরিত্রে অভিনয় করছেন শারমিন জোহা শশী। মঞ্চের অভিনেত্রী শাহানা সুমিও আছেন। প্রত্যেকের সঙ্গে অনেকদিন পর কাজ করছি। আমার বাড়িতে আশ্রিতা এক মেয়েকে ঘিরেই নাটকের গল্প।

এখন কী শুধু ধারাবাহিকই করছেন?

না। ‘জবা’র পাশাপাশি সম্প্রতি দুটি খন্ড নাটকের শ্যুটিং শেষ করলাম। এখন একটি চলচ্চিত্রের কাজ করছি। ছোটপর্দার জনপ্রিয় নির্মাতা রায়হান খান তার প্রথম চলচ্চিত্র নির্মান করছেন। ছবিটির নাম বদলে নতুন নাম হয়েছে ‘পায়েল’।

‘পায়েল’ চলচ্চিত্রে কি ধরনের চরিত্রে অভিনয় করছেন?

এই ছবির নাম ভূমিকায় অভিনয় করছেন আশনা হাবিব ভাবনা। আমি তার বাবার চরিত্রে অভিনয় করছি। আমার স্ত্রীর চরিত্রে রয়েছেন সুষমা সরকার। আমার চরিত্রটি ছবিটির জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। গল্পে বাবার সঙ্গে মেয়ের ছোটবেলা থেকেই যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। অনেক বছর পর অসুস্থ বাবার সঙ্গে মেয়ের সাক্ষাতের মুহূর্তটা ভীষণ আবেগপ্রবণ। আমার আর ভাবনার দারুণ কিছু দৃশ্য রয়েছে, যা দেখে দর্শকও আবেগাপ্লুত হবেন। মোটকথা চরিত্রটিতে অভিনয়ের জায়গা ছিল। তাই কাজটি করে ভালো লাগছে।

মঞ্চ থেকে কি দূরে আছেন?

কিছুটা দূরে আছি বলতেই পারেন। আমাদের নাটকের দল কাচখেলা রেপার্টরি। করোনার কারনে নতুন নাটক আনা হয়নি মঞ্চে। তবে করোনাকালে একাধিক শ্রুতি নাটক করেছিলাম। আমার সঙ্গে বাচিক অভিনয় করেছিলেন নাজনিন হাসান চুমকি, গোলাম ফরিদা ছন্দা, দীপা খন্দকারসহ অনেকেই। কাচখেলা থেকে নতুন দুটি নাটক মঞ্চে আনার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। শ্যুটিংয়ের ব্যস্ততার জন্য রিহার্সেল শুরু করতে পারছি না।

সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় বার্তা ২৪ এ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *