আন্তর্জাতিক

আকর্ষণজীবীদের কাছে পরাজিত কর্ষণজীবীরা

ডেস্ক রিপোর্ট: প্রতিবছরই মে দিবস আসে বিশ্বের শ্রমিক শ্রেণীর আন্তর্জাতিক সংহতি আর সংগ্রামী ঐতিহ্য উদযাপনের দিন হিসেবে। মে দিবস সারা বিশ্বের মেহনতি মানুষের সংগ্রামের অনুপ্রেরণা এবং ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন ও সংহতির প্রতীক। ১৮৮৬ সালের ১ মে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো নগরীর শ্রমিকরা দৈনিক ৮ ঘণ্টা কাজের সময় নির্ধারণ ও মজুরির দাবিতে সর্বাত্মক ধর্মঘটে যোগ দেয়। সেই ধর্মঘটের পিছনে ছিল শ্রমিক শ্রেণির মানবেতর জীবনের দুর্ভাগ্যজনক পটভূমি। আমেরিকা ও ইউরোপের সর্বত্র তখন হতভাগ্য শ্রমিকেদের দৈনিক ১৪ থেকে ১৮ ঘণ্টা পর্যন্ত কাজ করাটা ছিল বাধ্যতামূলক।

মালিক পক্ষ শ্রমিকদের যত বেশি সম্ভব কাজ করিয়ে নিত। কিন্তু মজুরি দেওয়ার বেলায় কোনো ন্যায়-নীতির অনুসরণ করত না। এ ধরনের জুলুম ও বঞ্চনার বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হয়ে রুখে দাড়ায় শ্রমিকরা। শ্রমিক শ্রেণির প্রবল আন্দোলনের মুখে ১৮৬৮ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্টে ৮ ঘণ্টা কাজের সময় নির্ধারণ করে আইন পাশ হয়। কিন্তু সে আইন কার্যকর না হওয়ায় শিকাগো শহরের হে মার্কেটের শ্রমিকরা ১৮৮৬ সালের ১ মে হতে শুরু করে এক ঐতিহাসিক ধর্মঘট। আন্দোলন চুড়ান্ত রূপধারণ করে ৩ ও ৪ মে। সেই আন্দোলনে আত্মোৎসর্গকারী শ্রমিকদের বুকের তাজা রক্তে শ্রমিক অধিকারের পাসকৃত আইনটি কার্যকরভাবে প্রতিষ্ঠা লাভ করে। সেই থেকে দৈনিক ৮ ঘণ্টা শ্রমঘণ্টার নিয়ম বিশ্বের সর্বত্রই স্বীকৃতি পায়।

এটা ঐতিহাসিকভাবে স্বীকৃত যে, শ্রমিকরাই হলো বিশ্ব সভ্যতার মূল কারিগর। কিন্তু প্রদীপের নিচে অন্ধকারের ন্যায় আলোকোজ্জ্বল মানবসভ্যতায় এই শ্রমিকশ্রেণি নানারকম শোষণ ও বঞ্চনার শিকার হয়েছে। ঐতিহাসিক মে দিবসের শ্রমিক আন্দোলনের শতাধিক বছর পার হয়েছে। বিশ্বে দেশে দেশে ইতিমধ্যে শ্রমিকদের স্বার্থ ও অধিকার রক্ষায় প্রণীত হয়েছে বহু আইন। বাংলাদেশেও শ্রমিকের স্বার্থের অনুকূলে অনেক আইন বলবৎ রয়েছে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক বাস্তবতা হলো, সেই আইনের বাস্তবিক প্রয়োগ অনেক ক্ষেত্রেই অনুপস্থিত।

প্রতি বছর মে দিবস আসলেই শ্রমিকদের অধিকার নিয়ে নানা রকম সভা-সমাবেশ, বক্তৃতা-বিবৃতি, সেমিনার-সিম্পোজিয়াম ও র‌্যালির আয়োজন করা হয়। সংবাদপত্রে বের করা হয় বিশেষ ক্রোড়পত্র। ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় সম্প্রচার করা হয় আলোচনা অনুষ্ঠান, প্রমাণ্য অনুষ্ঠান ও টকশো। মে দিবস আসে আবার চলেও যায়। কিন্তু দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ শ্রমিকশ্রেণি তথা কৃষি শ্রমিকদের কথা থাকে উপেক্ষিত। অথচ কৃষিভিত্তিক আমাদের এই দেশ বাংলাদেশ। মোট জনশক্তির প্রায় ৫০ ভাগ এখনো প্রত্যক্ষ পরোক্ষভাবে কৃষিকাজে নিয়োজিত। কিন্তু শ্রমিকশ্রেণির সর্বাধিক এ খাতটি নিয়ে তেমন কোন আলোচনা দেখা যায় না। উপরন্তু কৃষি শ্রমিকদের নেই কোন সংগঠন, সমিতি বা কারখানার শ্রমিকদের মতো ট্রেড ইউনিয়ন। আর তাই তাদের মৌলিক মানবিক ও সামাজিক অধিকার, সুযোগ-সুবিধা এবং নানাবিদও সমস্যা থেকে যায় অতল অন্ধকারে।

বলা হয়ে থাকে কৃষিই কৃষ্টির মূল আর সেই কৃষ্টি বিনির্মাণের মূল কারিগর হলো কৃষক। প্রত্যেক কৃষকই এক একজন কৃষি শ্রমিক। সে অর্থে দেশের সংখ্যগরিষ্ঠ শ্রমিকশ্রেণি হলো কৃষি শ্রমিক। এই কৃষি শ্রমিকদের অর্ধেকই হলো আবার নারী কৃষি শ্রমিক। যেখানে কৃষি শ্রমিকদেরকে শ্রমিকশ্রেণির অংশই মনে করা হয় না সেখানে নারী কৃষি শ্রমিক যারা ফসল রোপণ-বপণ, পরিচর্যা এবং ফসল সংগ্রহোত্তর কার্যক্রমের সাথে নিবিড়ভাবে সম্পৃক্ত তাদের অবস্থান কোথায় তা সহজেই বোধগম্য। বিগত জাতীয় কৃষি শুমারিগুলোর রিপোর্টে দেখা যায়, দেশে কৃষিখামারের সংখ্যা ও আয়তন উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে। বেড়েছে ভূমিহীন ও বর্গাচাষির সংখ্যা।

গ্রামে বর্গাচাষির সংখ্যা বেড়ে যাওয়া ও কৃষিখামারের আয়তন কমে যাওয়া কৃষি-অর্থনীতির জন্য ইতিবাচক কিছু নয়। দ্রুত নগরায়ণ ও গ্রামে ভূমিহীনের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় শহরেও ভূমিহীন মানুষের সংখ্যা বাড়ছে। উচ্চ মূল্যের কৃষি উপকরণ, কৃষি পণ্যের ন্যায্যমূল্য না পাওয়া, কৃষিতে মধ্যস্বত্ত্বভোগী ও মহাজনের দৌরাত্ম্য, কৃষিতে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব, নতুন প্রযুক্তির সাথে কৃষকরা খাপ খাওয়াতে না পারা প্রভৃতি কারণে স্বাধীনতা উত্তর সময়ে ক্রমান্বয়ে প্রান্তিক কৃষকরা ভূমিহীন জনগোষ্ঠীতে পরিণত হচ্ছে। বর্তমানে এদের অবস্থা হয় বর্গাচাষি বা কৃষি দিনমজুর কিংবা নগর শ্রমিক।

খুলনা বিভাগে জমিতে লবাণাক্ততা ও ও রাজশাহী বিভাগে খরা ও পানি স্বল্পতার কারণে অনেক জমি কৃষিকাজের অনুপযোগী হয়ে উঠছে। ফলে বেকার হয়ে পড়ছে কৃষি শ্রমিক। এছাড়াও দেশে কৃষি শ্রমিকদের সারাবছর নিরবিচ্ছিন্ন কাজ থাকে না। তাই তারা অন্য পেশায় চলে যাচ্ছেন। এজন্য আমরা লক্ষ্য করি ধান কাটার মৌসুমে পর্যাপ্ত কৃষি শ্রমিক পাওয়া যায় না।

কৃষিতে শ্রম দিয়ে যারা জীবিকা অর্জন করে তাদেরকে কৃষি শ্রমিক বলা হয়। নানাবিধ কারণে কৃষিতে শ্রমশক্তি ক্রমহ্রাসমান। ২০০০ সালে দেশের মোট শ্রমশক্তির মধ্যে ৬০ শতাংশ ছিলো কৃষি শ্রমিক। সেটি কমে বর্তমানে ৩৭ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। ২০৫০ সাল নাগাদ তা ২০ শতাংশে ঠেকতে পারে। মূলত কৃষি শ্রম খাতে অবহেলার কারণে দেশে কৃষিশ্রমিকের হার দিনে দিনে কমে যাচ্ছে। কৃষি খাতে ভর্তুকি, প্রাকৃতিক দুর্যোগে প্রণোদনা, কৃষিঋণ, বিনামূল্যে এবং ভর্তুকিমূল্যে উচ্চফলনশীল বীজ সরবরাহ, সারসহ কৃষি উপকরণে উন্নয়ন সহায়তা প্রদান ইত্যাদির প্রচলন থাকলেও কৃষক যখন মাঠে কাজ করবেন তখন তার স্বাস্থ্য ও সামাজিক সুরক্ষা তথা মানসিক প্রশান্তির জন্য কোনো অবকাঠামোগত সুবিধা নেই। প্রখর রোধে তারা কাজ করলেও বিশ্রাম নেয়ার কোন জায়গা নেই। কৃষককে মাঠে-ঘাটের নোংরা কাদামাটির ওপর বসেই খাবার খেতে হয়।

কাছাকাছি কোনো নিরাপদ পানির উৎস না থাকায় অনিরাপদ পানি খেতে হয়। কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা না থাকায় উন্মুক্ত স্থানে প্রাকৃতিক কাজ সম্পন্ন করতে হয়, ফলে ফসল ও পরিবেশ দূষিত হয়। এতে কৃষি শ্রমিকদের স্বাস্থ্যহানিসহ কর্মক্ষমতা কমে যায়, যা আমাদের জাতীয় প্রবৃদ্ধির প্রধান অন্তরায় হিসেবে কাজ করে। সাম্প্রতিক সময়ে বর্ষাকালে প্রায়শই দেশের বিভিন্ন জায়গায় মাঠে কাজ করার সময় বর্জ্রপাতে কৃষি শ্রমিক মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে। মাঠে বালাইনাশক স্প্রে করার পর তাদের পরিষ্কার পানি দিয়ে হাত মুখ ধোয়ার সুযোগও অনেক সময় থাকে না। এসব কারণে কৃষি শ্রমিকদের স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ছে। কৃষি শ্রমিকদের এ দুরবস্থা থেকে মুক্ত করার জন্য সরকারকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি। কৃষি শ্রমিকদের জীবন, স্বাস্থ্য ও সামাজিক সুরক্ষায় বিশ্রামাগার নির্মাণ করা প্রয়োজন।

কৃষি শ্রমিক ও কৃষকদের স্বাস্থ্য নিয়ে দেশে তেমন কোন চিন্তা ভাবনা হয়নি। কখনো কখনো মন্ত্রীরা কৃষকদের জন্য হাসপাতাল করার ঘোষণা দিলেও বাস্তবে এসব পরিকল্পনা অধরাই থেকে যায়। এখনো শতকরা ৯৫ ভাগ কৃষিশ্রমিক নিজের রক্তের গ্রুপই জানেন না। কৃষিকাজ করতে গিয়ে পচা শামুক বা অন্য কিছুতে হাত-পা কাটলে কোনো সুরক্ষা নেন না। সেই কাটা হাত-পা নিয়েই তারা কাজ করেন। ফলে প্রায়ই সেই কাটা অংশে ইনফেকশন দেখা দেয়। পরবর্তীতে অনেক সময় তাদের হাত পা কেটে ফেলতে হয়। অথচ বহু অনুন্নত দেশের কৃষক ও কৃষি শ্রমিক গামবুট, গ্লাভস, হ্যাট, মাস্ক ব্যবহার করেন। সেখানে প্রত্যেক কৃষি শ্রমিকের ব্যক্তিগত সুরক্ষা উপকরণ রয়েছে। অথচ আমাদের দেশের কৃষিতে এর কোন বালাই নেই। এ নিয়ে সরকারের কৃষি বিভাগ তেমন ভাবে না। চিন্তা নেই কৃষি উপকরণ বিক্রেতা প্রতিষ্ঠানগুলোর। আবার কৃষি শ্রমিকরা রোদে কিংবা বৃষ্টিতে কাজ করার কারণে তাদের নানাবিধ রোগব্যাধি লেগেই থাকে। বালাইনাশক এর সংস্পর্শে থাকায় কৃষি শ্রমিকদের অনেকেই চর্মরোগসহ দুরারোগ্য ক্যান্সারে আক্রান্ত হচ্ছেন।

কারোরই দ্বিমত নেই, বাংলাদেশের অর্থনীতির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ খাত হলো কৃষি। পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্যমতে, দেশে প্রায় আড়াই কোটি কৃষিশ্রমিক রয়েছেন। কিন্তু এই গুরুত্বপূর্ণ খাতে নিয়োজিত শ্রমিকদের যথাযথ স্বীকৃতি নেই। শ্রম আইনে শ্রমিকের সংজ্ঞায় কৃষিশ্রম অন্তর্ভুক্ত হলেও ব্যবস্থা নেই কৃষিখাতে নূন্যতম মজুরি নির্ধারণের। ফলে এ খাতে নিয়োজিত শ্রমিকরা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ন্যায্য মজুরি থেকে বঞ্চিত হন। তেমনই তারা বঞ্চিত প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যসেবা থেকেও। যারা চিরকালই বঞ্চিত হয়ে আসছে। এদের নিয়ে ভাবা প্রয়োজন, কৃষি ও দেশের স্বার্থে। দেশের ভবিষ্যৎ খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কৃষি-কৃষক-কৃষি শ্রমিক সবার কথা ভাবতে হবে।

প্রত্যেক কৃষকই এক একজন কৃষি শ্রমিক। নানাবিধ কারণে দেশের এই কৃষি শ্রমিকের সংখ্যা ক্রমহ্রাসমান। দেশের খাদ্য নিরাপত্তার প্রশ্নে যা বেশ উদ্বেগজনক। এই প্রেক্ষিতে কৃষকদের নানাবিধ অধিকারসমূহের ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট সবাইকে সচেতন হওয়া জরুরি। যেমন- মানুষের মৌলিক অধিকারসমূহ নিশ্চিতকরণে কৃষকদের অগ্রাধিকার প্রদান করা। কৃষি শ্রমিকদের স্বাস্থ্য ও সামাজিক সুরক্ষায় বিশ্রামাগার নির্মাণ করা। কৃষকের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতকরণে বিনামূল্যে ইউনিয়নভিত্তিক স্যাটেলাইট ক্লিনিক গড়ে তোলা। প্রতিটি গ্রামে কৃষক ক্লাব প্রতিষ্ঠা করে সেখানে তাদের বিনোদনের ব্যবস্থা করা। ন্যায্যমূল্যে কৃষকদের নিকট মানসম্মত বীজ, সার, কীটনাশক ও সেচের ব্যাবস্থা করা। ফসল মৌসুমে স্বল্প সুদে ঋণ প্রদানের ব্যবস্থা করা। সুদখোর মহাজনের হাত থেকে কৃষকদের রক্ষা করা। ফড়িয়া ও দালালদের হাত থেকে কৃষকদের সুরক্ষা প্রদান করা। কৃষকদের উৎপাদিত ফসলের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করা। অমৌসুমে কৃষকদের জন্য বিকল্প কাজের ব্যবস্থা করা। খাসজমিসমূহ ভূমিহীন কৃষকদের মাঝে বণ্টন করে তাদেরকে পুনরায় কৃষিকাজে ফিরিয়ে নেয়া। কৃষকদের ক্ষমতায়নের জন্য কৃষক সংগঠন প্রতিষ্ঠা করা। জলবায়ু পরিবর্তন সহ যেকোন প্রাকৃতিক দুর্যোগে কৃষকদের সুরক্ষা প্রদান করা। কৃষক ও কৃষি শ্রমিকদের এসব সুযোগ সুবিধা ও অধিকার নিয়ে সরকার ও সংশ্লিষ্ট সবাইকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরি। তা না হলে দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা কঠিন হয়ে পড়তে পারে।

দুনিয়াজুড়ে শিল্প বিকাশের সাথে সাথে মন্দ হাওয়া বইছে কৃষিভূমিতে। প্রান্তিক পর্যায়ের কর্ষণজীবীরা পরাজিত হচ্ছে আকর্ষণজীবীদের কাছে। নগরের আলো ঢেকে দিচ্ছে গ্রামীণ কৃষি জীবনের প্রাণবন্ত প্রবাহ। জগতের কৃষি উন্নতির সঙ্গে প্রতিযোগিতায় প্রতিনিয়ত পিছিয়ে পড়ছি আমরা। যোগাযোগ, শিক্ষা এবং নগরব্যবস্থার পরিবর্তনের সাথে সাথে সরাসরি কৃষিকাজে নিয়োজিত থাকার মতো লোকবল কমে আসছে, বাড়ছে নগরমুখিতা, আলস্য আর বিদেশযাত্রার বিপুল প্রবণতা। একইসাথে বাড়ছে কৃষির সাথে ব্যক্তিগত সম্পৃক্তির অনাগ্রহ। মানুষের জীবন যেখানে অনেকাংশে এবং অনিবার্যভাবে কৃষির উপর নির্ভরশীল, সেই কৃষক ও কৃষিকে উপেক্ষা করে, তার সাথে সংশিলষ্ট ব্যক্তিবর্গকে অসম্মান করে জাতীয় অগ্রগতি আশা করাটা বোকামি। এক লক্ষ সাতচল্লিশ হাজার বর্গকিলোমিটার আয়তনের ক্ষুদ্র একটি দেশ আমাদের প্রিয় বাংলাদেশ। প্রতিদিন প্রায় সতের কোটি মানুষের খাদ্যের যোগান নিশ্চিত করছে এদেশের কৃষক সমাজ। কিন্তু তাদের নেই কোন নির্ধারিত কর্মঘণ্টা বা নেই কোন নূন্যতম মজুরি। তারপরও ফসল মৌসুমে উদয়-অস্ত পরিশ্রম করে এরাই সচল রাখছে দেশের অর্থনীতির চাকা। তাই কৃষকদের অধিকার নিয়ে ভাবতে হবে আমাদের সবাইকে। খাদ্যে নিরবিচ্ছিন্ন স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন ও দীর্ঘমেয়াদী খাদ্য নিরাপত্তার জন্য কৃষিশ্রমিক তথা কৃষকদের ক্ষমতায়নের কোন বিকল্প নেই।

লেখক: অধ্যাপক, উদ্ভিদ রোগতত্ত্ব বিভাগ; শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়

সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় বার্তা ২৪-এ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *