সারাদেশ

বাজেটে সিগারেটে কার্যকর করারোপে গুরুত্ব দেয়ার আহ্বান সংসদ সদস্যদের

ডেস্ক রিপোর্ট: তামাকের ব্যবহার নির্মূল করে তামাক মুক্ত দেশ গড়তে আসন্ন ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে বাজেটে সিগারেটে কার্যকর করারোপে গুরুত্ব দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন সংসদ সদস্যরা।

তামাক পণ্যের কর থেকে যে রাজস্ব আসে তার থেকে অনেক বেশি তামাক ব্যবহারজনিত অসুস্থতায় স্বাস্থ্য খাতে সরকারের খরচ হয় উল্লেখ করে সংসদ সদস্যরা বলেন, প্রধানমন্ত্রী ২০৪০ সালের মধ্যে ‘তামাকমুক্ত বাংলাদেশ’ গড়ার যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তা বাস্তবায়ন করতে দেশে সিগারেটের সহজলভ্যতা কমাতে হবে। যে কারণে সিগারেটে কার্যকর করারোপ এখন খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।

সম্প্রতি মূল্যস্ফীতি এবং আয়ের প্রবৃদ্ধির কথা মাথায় রেখে আসন্ন ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে নিম্ন, মধ্যম, উচ্চ, ও প্রিমিয়াম স্তরের সিগারেটের খুচরা মূল্য যথাক্রমে ৩৩ শতাংশ, ১৯ শতাংশ, ১৫ শতাংশ, এবং ১৩ শতাংশ বাড়ানোর আহ্বান জানান তারা।

বৃহস্পতিবার (২ মে) রাজধানীর বাংলামোটরস্থ বিয়াম মিলনায়তনে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা উন্নয়ন সমন্বয়ে আয়োজিত জাতীয় সংলাপে তারা এ আহ্বান জানান।

প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে সাবেক পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, সিগারেটের ওপর কার্যকর করারোপের বিষয়ে যে ঐক্যমত আমাদের সংসদ সদস্যদের মধ্যে রয়েছে তা এবারের বাজেট আলোচনায় ইতিবাচক ভূমিকা পালন করবে।

রাজশাহী ৩ আসনের সংসদ সদস্য মোহা. আসাদুজ্জামান আসাদ এবং নীলফামারী ১ আসনের সংসদ সদস্য মো. আফতাব উদ্দিন সরকার মনে করেন, নিম্ন আয়ের মানুষ এবং কিশোর-তরুণদের সিগারেট ব্যবহারে নিরুৎসাহিত করতে হলে এই বাজেটে বেশি বেশি করারোপের মাধ্যমে সিগারেটের খুচরা মূল্য বাড়ানো প্রয়োজন এবং উপজেলা পর্যায়ে এর চাষ নিরুৎসাহিত করতে সরকারের ইনসেনটিভ মেকানিজম তৈরি করা জরুরি। জাতীয় উন্নয়ন লক্ষ্যগুলো অর্জনের জন্য নাগরিকদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করা একান্ত জরুরি।

মহিলা সংরক্ষিত ৭ আসনের সংসদ সদস্য জারা জাবীন মাহবুব বলেন, সিগারেটের ব্যবহার কমিয়ে স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করতে বাজেটে যথাযথ উদ্যোগ থাকা বাঞ্ছনীয়।

ঢাকা-১০ আসনের এমপি ফেরদৌস আহমেদ বলেন, সিগারেটের দাম ২০০ থেকে ৩০০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ানোর পাশাপাশি তামাকের উপর কার্যকর করারোপে গুরুত্ব দিতে হবে।

এ সময় সিগারেটে কার্যকর করারোপের বিষয়ে প্রস্তাবনাগুলো তুলে ধরেন তামাক-বিরোধী সংগঠনের পক্ষে উন্নয়ন সমন্বয়ের গবেষণা পরিচালক আব্দুল্লাহ নাদভী।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন অর্থনীতিবিদ এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর অধ্যাপক ড. আতিউর রহমান।

তিনি বলেন, সিগারেটে কার্যকর করারোপই এই ক্ষতিকারক পণ্যের ব্যবহার কমিয়ে আনার সবচেয়ে কার্যকর উপায়। এ কারণেই দেশের তামাক-বিরোধী নাগরিক সংগঠনগুলো সিগারেটে কার্যকর করারোপের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। তবে সিগারেটের ব্যবহার কমলেও যেন সরকারের রাজস্ব আয়ে বড় চাপ না পড়ে- সে বিষয়টি মাথায় রেখেই কার্যকর করারোপের প্রস্তাবনা তৈরি করা হয়েছে।

এই প্রস্তাবনাগুলো বাস্তবায়ন করা গেলে একদিকে সিগারেট ব্যবহারের হার ৯ শতাংশ কমবে, অন্যদিকে সিগারেট বিক্রি থেকে আসা করের পরিমাণ ২৮ শতাংশ বাড়বে বলে জানান তিনি।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন, জামালপুর ৪ আসনের সংসদ সদস্য মো. আব্দুর রশিদ, এবং সিরাজগঞ্জ ৪ আসনের সংসদ সদস্য মো. শফিকুল ইসলাম।

এছাড়াও বিশেষজ্ঞ আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অর্থনীতিবিদ ও রিসার্চ ডিরেক্টর ড. এসএম জুলফিকার আলী এবং বিইইটিসি ফোরামের সদস্য ও বিশ্ববিদ্যালয়ের দুজন অধ্যাপক ড. নাজমুল ইসলাম এবং অধ্যাপক গোলাম আহমেদ ফারুকী।

সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় বার্তা ২৪-এ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *