সারাদেশ

‘সবাইকে সর্বজনীন পেনশনের আওতায় আনা হবে’

ডেস্ক রিপোর্ট: নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এমপি বলেছেন, বাংলাদেশে একটি মাত্র মেরিন একাডেমি ছিল। শেখ হাসিনার সরকারের সময়ে চারটি নতুন মেরিন একাডেমি প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। আরও তিনটি মেরিন একাডেমি প্রতিষ্ঠা করা হবে।

রোববার (০৫ মে) চট্টগ্রামে ন্যাশনাল মেরিটাইম ইন্সটিটিউটের স্পেশাল ব্যাচ-২০২৩ এর শিক্ষা সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী, গত ১৫ বছরে প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অভূতপূর্ব সাফল্য অর্জিত হয়েছে। এই অর্জনকে ধরে রাখতে হবে। মাতারবাড়িতে গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মিত হচ্ছে, চট্টগ্রাম বন্দরের বে-টার্মিনালের নির্মাণ কাজ শীঘ্রই শুরু হবে। বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক নৌ-সংস্থায় (আইএমও) -তে ‘সি’ ক্যাটাগরির সদস্য নির্বাচিত হয়েছে। পায়রা বন্দর নির্মিত হচ্ছে, মংলা বন্দর, চট্টগ্রাম বন্দরের আপগ্রেডেশন হচ্ছে। বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশন ছয়টি জাহাজ সংগ্রহ করেছে, আরও জাহাজ সংগ্রহের কাজ চলমান রয়েছে।

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে একটি মাত্র মেরিন একাডেমি ছিল। শেখ হাসিনার সরকারের সময়ে চারটি নতুন মেরিন একাডেমি প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। আরও তিনটি মেরিন একাডেমি প্রতিষ্ঠা করা হবে। বিশ্বের অন্যতম মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয় ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয়’ শেখ হাসিনার সরকারের সময় প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ন্যাশনাল মেরিটাইম ইন্সটিটিউটের (এনএমআই) প্রশিক্ষণের গুণগতমান, আন্তর্জাতিক নৌ-সংস্থা এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের মেরিটাইম সেফটি এজেন্সি কর্তৃক স্বীকৃতিপ্রাপ্ত। এ গুণগতমান অব্যাহত রাখতে হবে। চট্টগ্রামের ন্যাশনাল মেরিটাইম ইনস্টিটিউট এর পর মাদারীপুরে ন্যাশনাল মেরিটাইম ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় ন্যাশনাল মেরিটাইম ইন্সটিটিউট, দিনাজপুর, কুড়িগ্রাম, রাজশাহী এবং মেহেরপুর স্থাপনের কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ডিজিটালাইজেশনের কারণে বিশ্ব নৌবহর দ্রুতগতিতে উন্নত থেকে উন্নত হচ্ছে। সে সাথে তাল মিলিয়ে জাহাজি অফিসার ও নাবিকদেরকে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হচ্ছে। আমাদের ন্যাশনাল মেরিটাইম ইন্সটিটিউট আন্তর্জাতিক নৌ-সংস্থার এসটিসিডব্লিউ কনভেনশন যথাযথভাবে অনুসরণ করে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে আসছে। দিনবদলের পালায় বর্তমান সরকারের ভিশন-২০৪১ বাস্তবায়নের লক্ষে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার নিমিত্তে দেশের সকল সেক্টর একযোগে কাজ করে যাচ্ছে। সে প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ নিম্নমধ্য আয়ের দেশ (এলডিসি) থেকে উন্নয়নশীল (ডেভেলপিং) দেশে এবং উন্নয়নশীল দেশ থেকে উন্নত দেশে পরিণত হওয়ার পথে এগিয়ে চলছে। আগামী ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ উন্নত সমৃদ্ধ স্মার্ট দেশে পরিণত হবে। এরই অংশীদার হিসাবে শিপিং সেক্টরও জাতির পিতার সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের নেতৃত্বে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে সক্ষম হয়েছে। শিপিং সেক্টরে দক্ষ মানব সম্পদ সৃষ্টির লক্ষে ট্রেনিং ইন্সটিটিউটসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।

প্রশিক্ষণার্থীদের উদ্দেশে প্রতিমন্ত্রী বলেন, তোমরা দেশপ্রেমকে বুকে ধারণ করে সততা, নিষ্ঠা ও আন্তরিকতার সাথে তোমাদের উপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করবে যাতে করে আমাদের দেশের ভাবমূর্তি সমুজ্জ্বল থাকে। তোমরা দেশের অ্যাম্বাসেডর হিসেবে কাজ করবে। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু আমাদের স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ দিয়ে গেছেন। ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করা হয়। আমরা বঙ্গবন্ধুর রক্তের ঋণ পরিশোধ করতে পারবো না। কিন্তু তার প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে পারবো। দেশপ্রেমিক নাগরিক হিসেবে ভূমিকা রাখতে পারলেই বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হবে।

এবারের স্পেশাল ব্যাচে ১৭৭ জন প্রশিক্ষণার্থী প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। এর মধ্যে ডেক- ৮৮, ইঞ্জিন- ৭৯ এবং স্টুয়ার্ড- ১০। তাদের মধ্যে কেউ কেউ এস.এস.সি পাশ। আবার কেউ বহি:নোঙ্গরে মার্চেন্ট জাহাজে ক্যাজুয়াল বেসিসে কাজ করছেন। কেউ শোর রিপেয়ার টিমের সাথে, কেউ শিপ রিপেয়ার ওয়ার্কশপ/শিপইয়ার্ড/ড্রাইডকে ক্যাজুয়াল অথবা স্থায়ীভাবে কাজ করছেন। কেউ পানামা সিডিসিধারী, কেউ দেশে/বিদেশে নন কনভেনশনাল জাহাজে টাগ বোট/সাপ্লাই বোট/বার্জ ইত্যাদিতে চাকরি করছেন। কারো কারো অভ্যন্তরীণ জাহাজে নাবিক হিসেবে কাজের অভিজ্ঞতা আছে।

অনুষ্ঠানে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মোস্তফা কামাল, নৌপরিবহন অধিদফতরের চিফ নটিক্যাল সার্ভিয়ার মো. গিয়াস উদ্দিন আহমেদ, ন্যাশনাল মেরিটাইম ইন্সটিটিউট চট্টগ্রামের অধ্যক্ষ ক্যাপ্টেন আতাউর রহমান বক্তব্য রাখেন। চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ সোহায়েল এসময় উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে প্রতিমন্ত্রী প্রশিক্ষণার্থীদের মার্চপাস্ট পরিদর্শন করেন এবং শ্রেষ্ঠ প্রশিক্ষণার্থীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন।

সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় বার্তা ২৪-এ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *