সারাদেশ

ডিএনসিসিতে হিটওয়েভ সতর্কতা পোর্টালের উদ্বোধন

ডেস্ক রিপোর্ট: ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) এলাকাভিত্তিক হিটওয়েভের পূর্বাভাস পেতে হিটওয়েভ পোর্টাল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। এ পোর্টালের মাধ্যমে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের ‘সবার ঢাকা’ অ্যাপে সরাসরি হিট ওয়েভের পূর্বাভাস চলে যাবে।

এতে করে ব্যবহারকারীরা যেকোনো মুহূর্তে চাইলেই তার এলাকার পূর্বাভাস জানতে পারবেন। এছাড়াও এই অ্যাপের মাধ্যমে যার যার এলাকায় পূর্বাভাসের সঙ্গে অনুভূত তাপমাত্রার পার্থক্য এবং সেই সম্পর্কে তথ্য প্রদান করতে পারবেন।

এই হিটওয়েভ পোর্টালের পূর্বাভাস পেতে চাইলে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের ওয়েবসাইট থেকে পেতে পারবেন এবং ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের ‘সবার ঢাকা অ্যাপ’ ব্যবহারকারীরা সরাসরি অ্যাপের মাধ্যমে ঢাকার পূর্বাভাস জানতে পারবেন।

মঙ্গলবার (৭ মে) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ডিএনসিসি এ তথ্য জানায়।

এর আগে সোমবার (৬ মে) বিকেল সাড়ে পাঁচটায় ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের নগর ভবনের ৬ষ্ঠ তলায় সম্মেলন কক্ষে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদফতর, Regional Integrated Multi hazard Early Warning System (RIMES) এবং Save the Children-এর সহযোগিতায় হিটওয়েভ সতর্কতা পোর্টালের উদ্বোধনী কর্মশালার আয়োজন করা হয়। বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদফতরের ওয়েবসাইটে ও ডিএনসিসির ‘সবার ঢাকা’ অ্যাপে হিটওয়েভ সতর্কতা পোর্টালের লিংক সংযুক্ত করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, Save the Children-এর সহযোগিতায় বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদফতর, Regional Integrated Multi hazard Early Warning System (RIMES) এই হিটওয়েভ সতর্কতা পোর্টাল ব্যবস্থাপনা করবে।

কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ডিএনসিসি মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম প্রধান অতিথির বক্তৃতায় বলেন, এই পোর্টালের মাধ্যমে একদিকে যেমন ব্যবহারকারীকে সহজে পরিকল্পপিত পদক্ষেপ ও সে অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করবে, তেমনি অন্যদিকে নির্দিষ্ট খাত যেমন কৃষি, প্রাণিসম্পদ, নগর পরিকল্পনা এবং প্রাসঙ্গিক খাতের ব্যবহারকারীদের চাহিদা সম্পর্কে অবগত করবে। বিশেষ করে নগর পরিকল্পনার ক্ষেত্রে তাপপ্রবাহের পূর্বাভাস ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর জন্য আগাম পদক্ষেপ নিতে খুবই সাহায্য করবে।

পাশাপাশি তিনি হিটওয়েভকে ‘জাতীয় দুর্যোগ’ হিসেবে ঘোষণা করা এবং দুর্যোগ সংক্রান্ত স্থায়ী আদেশে ‘তাপপ্রবাহ’কে সংযুক্ত করার জোরদার আহ্বান জানান।

এছাড়া প্রত্যেকটা দুর্যোগ মোকাবিলায় ব্যক্তি পর্যায়ে সবাইকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে সচেতন থাকার অনুরোধও করেন তিনি।

ডিএনসিসি মেয়র আরো বলেন, হিটওয়েভের সচেতনতা এবং প্রচারণার অংশ হিসেবে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের উদ্যোগে একটি বিশেষ ছাতা তৈরি করা হয়েছে রিকশাচালকদের জন্য, যা তারা চাইলেই রিকশার স্ট্যান্ডের সঙ্গে ‘অ্যাডজাস্ট’ (সমন্বয়) করে ব্যবহার করেত পারবেন। এই কার্যক্রমের অংশ হিসাবে ৩৫ হাজার রিকশা ও ভ্যানচালকের মধ্যে বিনামূল্যে ছাতা বিতরণ করা শুরু হয়েছে। এছাড়াও হাফ লিটার পানির বোতল বিতরণ করা হয়েছে, যাতে তারা চাইলেই সহজে সঙ্গে বহন করতে পারেন।

আর্শট রক ফেলার ফাউন্ডেশনের নিয়োগকৃত চিফ হিট অফিসার বুশরা আফরিন বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় বলেন, এই কালার কোটেড হিটওয়েভ অ্যালার্ট সিস্টেমের মাধ্যমে নগরের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা চিহ্নিত করে ও সেই সব জনগোষ্ঠীর জন্য আগাম প্রস্তুতি নিতে সহায়তা করবে। বিশেষ করে পরবর্তীতে ‘সবার ঢাকা’ অ্যাপে এই হিটওয়েভ অ্যালার্ট সিস্টেমের সংযোজন খুব যুগোপযোগী সিদ্ধান্ত।

এছাড়াও তিনি উল্লেখ করেন, এই পোর্টালের বিশেষ সুবিধা যেটা, তা হলো, ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার মানুষের কাছে সরাসরি ‘সবার ঢাকা’ অ্যাপের মাধ্যমে অ্যালার্ট চলে যাবে এবং করণীয় সম্পর্কে জানানো হবে।

এছাড়াও তিনি উল্লেখ করেন, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের সহযোগিতায়, সিটি কর্পোরেশনের চিহ্নিত ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোতে বেশ কয়েকটি হিটওয়েভ প্রচারণা চালানো হয়েছে। এ সব কার্যক্রমের প্রেক্ষিতে এবং হিটওয়েভজনিত ক্ষতি প্রতিরোধ করতে এই পূর্বাভাস পোর্টালের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।

কর্মশালায় অংশ নেন বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদফতরের পরিচালক আজিজুর রহমান, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতরের পরিচালক নিতাই চন্দ্র দে সরকার, প্রাণিসম্পদ অধিদফতর, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর, স্বাস্থ্য অধিদফতর এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতরের কর্মকর্তারা।

রাইমসের কান্ট্রি প্রোগ্রাম লিড, রায়হানুল হক খানসহ বিভিন্ন এনজিও ও আইএনজিও থেকে বিভিন্ন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

কর্মশালায় বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদফতরের পরিচালক মো. আজিজুর রহমান তার স্বাগত বক্তব্যে বর্তমান সময়ে চলমান হিটওয়েভের বৈরী প্রভাব ও সেক্ষেত্রে এই নতুন পোর্টালের প্রযুক্তিগত উপযোগিতা, উন্নতি এবং নির্ভরযোগ্যতার বিষয় তুলে ধরেন। তিনি অংশগ্রহণকারী সবাইকে সঠিক পূর্বাভাস গ্রহণের আহ্বান জানান এবং হিটওয়েভের ঝুঁকি মোকাবিলায় এই পোর্টালের তাৎপর্য তুলে ধরেন।

সবশেষে অংশগ্রহণকারীরা একটি উন্মুক্ত আলোচনা পর্বে অংশগ্রহণ করেন এবং পোর্টালের সঙ্গে জড়িত সংস্থাগুলোর কার্যক্রমের বিস্তর আলোচনা ও মতামত প্রদান করেন। এর সঙ্গে ভবিষ্যতে এ ধরনের কার্যক্রমের মান আরো বৃদ্ধি করার অনুরোধ জানান যেন দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার সতর্কীকরণ বার্তাগুলো আরো সূক্ষ্ম, স্থানভিত্তিক ও বেশি লিড টাইম বা আগাম সময়ভিত্তিক করা হয়।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যের সঙ্গে আরো উপস্থিত ছিলেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (অতিরিক্ত সচিব) মীর খায়রুল আলম, প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগে. জেনারেল মো মঈন উদ্দিন, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগে. ইমরুল কায়েস চৌধুরী।

সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় বার্তা ২৪-এ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *