সারাদেশ

প্রবৃদ্ধিতে চীন, শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তানকে পেছনে ফেলবে বাংলাদেশ: ওবায়দুল কাদের

ডেস্ক রিপোর্ট: জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের বলেছেন, ব্যবহার করতে পারছেন না, তাহলে বিদ্যুৎ কেন্দ্র বানালেন কেন? প্রয়োজনের চেয়ে কিছু বেশি বানাতে পারেন, তারপরও তো লোডশেডিং থাকে কিভাবে।

তিনি আরও বলেন, এমন কিছু প্রতিষ্ঠান আছে যারা কোন দিনই বিদ্যুৎ উৎপাদন করে নাই। বিদ্যুতের চাহিদা ১৩ থেকে ১৬ হাজার মেগাওয়াট, গতবছর হঠাৎ করে ১৭ হাজার হয়ে গিয়েছিলো। তখন ক্যাপাসিটি চার্জ দেয়া ১০ হাজার মেগাওয়াটের বিদ্যুৎ প্লান্ট বসিয়ে রাখা হয়েছিলো ১ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ নেয়া হয়নি। অথচ ২৭ হাজার মেগাওয়াট উৎপাদনের জন্য ক্যাপাসিটি চার্জ দেয়া হয়েছে।

শনিবার (১১ মে) জাতীয় পার্টির বনানী কার্যালয়ে ঢাকা মহানগর উত্তর জাতীয় পার্টি আয়োজিত মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

জাপা চেয়রম্যান বলেন, ১ লাখ ৩৭ হাজার কোটি টাকা দেয়া হয়েছে তাদের ক্যাপাসিটি চার্জ। বসিয়ে বসিয়ে পয়সা দেয়া হচ্ছে, মানুষ কষ্ট পাচ্ছে, কলকারখানা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। আরো উৎপাদন কেন্দ্র বানানো হচ্ছে, সেগুলোতেও বসিয়ে বসিয়ে পয়সা দিতে হবে। ঋণের ২০ ভাগ নেয়া হয়েছে বিদ্যুৎ খাতে। অথচ বিদ্যুতের দাম বেড়েছে। লোকসান কমানোর নাম করে বছরে ৩ বার বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়েছে। ৩ টাকা থেকে বছরে ৮ টাকা হয়েছে ইউনিট। সামনে আরো তিনগুণ বেড়ে যেতে পারে। এই টাকা দেয়া হচ্ছে বসিয়ে রাখা বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোকে ক্যাপাসিটি চার্জ হিসেবে।

জিএম কাদের বলেন, আমরা জানি, ক্যাপাসিটি চার্জ ছাড়া চুক্তি হয়। ব্যবসায়ীরা ঠিক করবে কেমনে তারা ব্যবসা করবে। এই সেক্টরে ব্যবসায়ী আনা হয়নি, কিছু সুবিধাভোগী লোক আনা হয়েছে। কোন ব্যবসা ছাড়াই তাদের হাজার হাজার কোটি টাকা দেয়া হচ্ছে। সামনে বিদ্যুতের দাম বাড়বে, মালামালের দাম বাড়বে, জনগণের কষ্ট আরো বাড়বে।

তিনি বলেন, প্রতিদিন ৪ হাজার মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের চাহিদা আছে। এখন আমরা ১ হাজার কম ব্যবহার করছি, কারণ আমরা কিনতে পারছি না। বিদ্যুৎ খাতে আমাদের দরকার ২ হাজার ১৩৪ মিলিয়ন ঘনফুট, সেখানে আমরা দিচ্ছি ১ হাজার ৬৮১ দিচ্ছি মিলিয়ন ঘনফুট, শিল্পখাতে ৯৩১ মিলিয়ন ঘনফুট দরকার সেখানে দেয়া হচ্ছে ৭৩৩ মিলিয়ন ঘনফুট। ৩ হাজার ৮ শো মিলিয়ন ঘনফুট যেখানে দরকার সেখানে ৮শ মিলিয়ন ঘনফুটের বেশি দিতে পারছি না।

তিনি আরও বলেন, যেটুকু গ্যাস দিতে পারছি তার ৩ ভাগের ২ ভাগ দেশ থেকে দেয়া হচ্ছে। আর ১ ভাগ বিদেশ থেকে এলএনজি আমদানি করে সরবরাহ দেয়া হচ্ছে। আমাদের গ্যাস ১ থেকে ৩ ডলারে পাওয়া যায় কিন্তু বিদেশ থেকে কিনতে ৩০ থেকে ৪০ ডলার খরচ করতে হয়। আমাদের দেশে এখনো যথেষ্ট পরিমানে গ্যাস মজুদ আছে।

রিপোর্ট অনুযায়ী এখনো দেশে ৩৮ ট্রিলিয়ন কিউবিক ফুট গ্যাস মজুদ আছে। আমরা গ্যাস উত্তোলন না করে কেনার দিকে গিয়েছি। আমরা যে গ্যাস দিচ্ছি তার একটি বড় অংশ পাচ্ছি বিবিয়ানা গ্যাস ফিল্ড থেকে। গেলো নভেম্বরে বিবিয়ানা গ্যাস ফিল্ডের উৎপাদন বন্ধ হয়ে যাবার কথা ছিলো, আল্লাহর রহমতে আমরা বোনাস পাচ্ছি। এটি যেকোন সময়ে বন্ধ হয়ে যেতে পারে। তাহলে, যে পরিমান গ্যাস আমরা আমদানী করছি, আরো সেই পরিমান গ্যাস আমদানি করতে হতে পারে। এই জ্বালানি না দিলে বিদ্যুৎসহ সব কিছু বন্ধ হয়ে যাবে। আমরা একটা বড় ঝুকির মধ্যে পড়েছি।

কারণ, সরকার সময় মতো এক্সপ্লোরেশন করে নাই। আমাদের দেশি কোম্পানীগুলো বলেছে আমরা যতটা অনুসন্ধান করেছি তার অর্ধেকেই গ্যাস পেয়েছি। বিদেশীরা আমাদের তুলনায় কম গ্যাস পেয়েছে। ৮ থেকে ১০ বছর আগে যদি আমাদের প্রাকৃতিক গ্যাস উত্তোলনের উদ্যোগ নেয়া হতো তাহলে আমাদের এমন বিপদজনক পরিস্থিতিতে পড়তে হতো না। দেশ বিপদজনক পরিস্থিতিতে আছে। যদি হঠাৎ করে বিবিয়ানা গ্যাস ফিল্ড বন্ধ হয়ে যায় তাহলে ঐ পরিমান গ্যাস ইমপোর্ট করতে ২ বিলিয়ন ডলার লাগবে বর্তমান বাজার অনুযায়ী। শুধু টাকা নয় আনলোড, ট্রান্সমিশন এর সুবিধাও নেই। দূরদর্শীতার অভাবে এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। শুধু পারসেজের দিকে নজর দেয়ার কারনে কিছু লোকের বিপুল পরিমান মুনাফা হয়েছে। অন্যায্য ভাবে জনগণের সম্পদ চলে যাচ্ছে। দেশ বাঁচাতে হলে এগুলো দেখতে হবে।

সভায় সভাপতিত্ব করেন ঢাকা মহানগর উত্তরের যুগ্ম আহ্বায়ক সামছুল হক সামছু। মহানগর উত্তরের সদস্য সচিব সুলতান আহমেদ সেলিমের পরিচালনায় উপস্থিত ছিলেন জাতীয় প্রেসিডিয়াম সদস্য শেরীফা কাদের, কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ, মহানগর উত্তর ও মহানগর উত্তর ২৬ থানার নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় বার্তা ২৪-এ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *