বিনোদন

মোদিকে ‘হিটলার’ বলল কংগ্রেসও

ডেস্ক রিপোর্টঃ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে মঙ্গলবার (২১ মে) ‘হিটলার’ বলে আক্রমণ করেছিল তৃণমূল। এনডিটিভি জানিয়েছে, বুধবার (২২ মে) সেই পথে হাঁটলো কংগ্রেসও।

দুই দিন আগে এক সাক্ষাৎকারে মোদি দাবি করেছিলেন, তার সরকারের কাজের প্রভাব হাজার বছর থাকবে। তারপরেই তার সঙ্গে হিটলারের তুলনা করে তাকে আক্রমণ করেন রাজ্যসভায় তৃণমূলের নেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন। মোদিকে তিনি ‘নরেন্দ্র হিটলার মোদি’ সম্বোধন করেন।

কংগ্রেস নেত্রী সুপ্রিয়া শ্রীনতে বুধবার সংবাদিক সম্মেলনে বলেছেন, ‘বিজেপি নেতারা সুপরিকল্পিতভাবে প্রচার করে মোদিকে ঈশ্বরের অবতার হিসাবে প্রতিষ্ঠার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। এবার মোদি নিজেও বলছেন তিনি পরমাত্মার প্রেরিত দূত। একইভাবে হিটলারের প্রচারকরা তাকে ঈশ্বরের দূত বলত। বিশ্বের সমস্ত স্বৈরতান্ত্রিক নেতাদের এটা সাধারণ লক্ষণ। নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকতে এভাবেই তারা দেবত্ব জাহির করেন।’

সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে মোদি বলেছিলেন, ‘যতো দিন মা বেঁচেছিলেন, ততো দিন আমার মনে হত আমি মাতৃগর্ভে জন্মেছি। কিন্তু, মা চলে যাওয়ার পরে আমি নিশ্চিত হয়েছি যে, আমাকে ঈশ্বর পাঠিয়েছেন। আমার মধ্যে এই যে এতো প্রাণশক্তি, তা ঈশ্বর আমাকে দিয়েছেন কোনও কাজ করিয়ে নেবেন বলে।’

এদিকে, মঙ্গলবার বিজেপি নেতা সম্বিত পাত্র, প্রভু জগন্নাথকে ‘মোদির ভক্ত’ বলার পর বিতর্ক তৈরি হয়। ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়েকসহ বিভিন্ন মহল থেকে ক্ষোভ প্রকাশের পর সম্বিত বিষয়টিকে ‘মুখ ফস্কে’ বেরিয়ে গেছে বলে নিজেকে বাঁচানোর চেষ্টা করেছেন।

শ্রীনতে বলেন, ‘এটা মুখ ফস্কে বেরিয়ে যাওয়া কথা নয়, বরং এটা পরিকল্পিত প্রচার। রামলালার প্রাণপ্রতিষ্ঠার সময় বিজেপি একটি ছবি প্রকাশ করে, যেখানে দেখানো হয় রামলালার হাত ধরে মোদি মন্দিরে নিয়ে যাচ্ছেন। তাকে বিষ্ণু অবতার বলা হয় রামমন্দির ট্রাস্টের পক্ষ থেকে। গিরিরাজ সিংও মোদিকে অবতার বলেন।’

বলিউড অভিনেত্রী কঙ্গনা রানাউত বলেছেন, ‘মোদী রামের অংশ।’ সাক্ষী মহারাজের ভাষ্যমতে, ‘রামই মোদি।’

শ্রীনতে বলেন, ‘এই একই জিনিস হিটলারের সময়েও হত। তাকেও ঈশ্বরের দূত বলা হতো। গোয়েবলস সেই প্রচার চালাতেন। উত্তর কোরিয়ার কিম জং উন বলেন, তার ভেতরে দৈবশক্তি রয়েছে। গত ১০ বছরে মোদি কী কাজ করেছেন তার হিসেব না দিয়ে আগামী এক হাজার বছরের স্বপ্ন দেখানো, আসলে মানুষের দৃষ্টি ঘোরানোর কৌশল।’

কংগ্রেসের বক্তব্য, গত দশ বছরে উল্লেখ করার মতো কোনও কাজই করেনি মোদি সরকার। তাই, নির্বাচনে মেরুকরণকেই একমাত্র অস্ত্র করতে হচ্ছে নরেন্দ্র মোদি তথা বিজেপি নেতৃত্বকে।

ডেরেক ও’ব্রায়েন বলেন, ‘‘আজ আমরা এর আগে সংসদে দাঁড়িয়ে মোদি-অমিত শাহকে হিটলার এবং গোয়েবলসের সঙ্গে তুলনা করেছি। মোদি শুধুই সংখ্যার চমক দেখিয়ে মানুষকে ভোলাতে চেয়েছেন। কখনও বলেছেন বছরে ২ কোটি চাকরি হবে। কখনও বলেছেন, বিদেশ থেকে কালো টাকা এনে সকলের অ্যাকাউন্টে ১৫ লক্ষ নগদ দেওয়া হবে। আবার নোট বাতিলের পরে সমস্যা মেটাতে ৫০ দিন সময় চেয়েছিলেন। এমনকি কৃষকদের সমস্যা না বুঝেই ২০২২ সালের মধ্যে চাষিদের আয় দ্বিগুণ করার কথা বলেছিলেন। তাতেও কাজ না হওয়ায় প্রথমে ‘অমৃতকাল’ এবং তারপরে ‘ভিশন-২০৪৭’-এর গল্পকথা শুনিয়েছেন।’’

ডেরেকের মতে, বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, ‘এসবের কোনওটাই কাজ করেছে না। তাই একেবারে হিটলারের মতো হাজার বছরের কথা শুনিয়েছেন! এ বার মানুষ মোদির মিথ্যে ধরে ফেলেছেন। তাই তার এই মিথ্যে স্বপ্নে তারা ভুলবেন না।’

সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় বার্তা ২৪ এ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *