সারাদেশ

লালমোহনে নির্বাচনী মিছিলে ডিএসবি’র এসআইয়ের উপর হামলা

ডেস্ক রিপোর্ট: বিগত কয়েকটি সংসদ নির্বাচনের মতই স্থানীয় সরকার নির্বাচনেও ভোটারদের ভোট প্রদানে আগ্রহ কমছে। চলমান ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের দুই ধাপের ফলাফল বিশ্লেষণ করে সেই চিত্র ওঠে এসেছে। চলমান স্থানীয় সরকারের উপজেলা নির্বাচনে প্রথম ধাপে ভোট পড়েছে ৩৬ দশমিক ১ শতাংশ। আর দ্বিতীয় ধাপে ভোট পড়েছে ৩৭ দশমিক ৫৭ শতাংশ।

ভোটের হার নিয়ে নির্বাচনের কমিশনের (ইসি) সন্তুষ্টি না থাকলেও তারা বলছে, কেন্দ্রে ভোটার আনার দায়িত্ব তাদের নয়। তাদের কাজ নির্বাচন পরিচালনা করা। একাধিক ইসি কমিশনার বলছেন, জাতীয় কিংবা স্থানীয় সরকার নির্বাচনে কোনো বিধিনিষেধ বা নিয়ম নাই, কত শতাংশ ভোট পড়লে নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে। এগুলো নিয়ে ইসি ভাবেও না। যেকোনো শতাংশ ভোট পড়লেই খুশি তারা।

নির্বাচন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জাতীয় সংসদের মত স্থানীয় সরকার নির্বাচনে ভোটের হার কমে যাওয়া উদ্বেগজনক। দিন দিন যেভাবে ভোটের হার কমছে, তাতে বুঝা যাচ্ছে নির্বাচন ও নির্বাচন ব্যবস্থার ওপর আস্থা হারাচ্ছে মানুষ। একপক্ষীয় ব্যবস্থায় দেশের নির্বাচন ব্যবস্থা চলে যাওয়ায় ভোটে আস্থা হারাচ্ছে সাধারণ জনগণ।

এদিকে নির্বাচনে ভোটের হার যেমন কমছে, তেমনি প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ স্থানীয় সরকার নির্বাচনেও বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় প্রার্থী বিজয়ীর সংখ্যাও বাড়ছে। এবারের উপজেলা নির্বাচনে প্রথম ধাপে ২৬ জন প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী হয়েছেন। দ্বিতীয় ধাপে ২২ জন প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয় লাভ করেছেন।

ইসি সূত্রে জানা যায়, নির্বাচনের আগে বিভিন্ন জেলায় মতবিনিময় সভা করেছে নির্বাচন কমিশন। এসময় একাধিক উপজেলা প্রার্থী কমিশনারদের কাছে ভোটারদের কেন্দ্রে নিয়ে আসতে উদ্যোগ নেওয়ার কথা বলেছেন। সেই সাথে প্রয়োজনে মাইকিং করে হলেও সাধারণ ভোটাররা যাতে কেন্দ্রে যায় সেই বিষয়ে উদ্যোগ নিতে বলা হয়েছে।

দ্বিতীয় ধাপের ভোট শেষে গতকাল প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল গণমাধ্যমকে বলেছেন, আমি ৩০ শতাংশ ভোটকে কখনো উৎসাহব্যঞ্জক মনে করি না। ভোটের হার কম হওয়ার একটা বড় কারণ হতে পারে- দেশের প্রধান বড় রাজনৈতিক দল নির্বাচনে প্রকাশ্য ও ঘোষণা দিয়ে ভোট বর্জন করেছে। জনগণকে ভোট প্রদানে নিরুৎসাহিত করেছে। গণতান্ত্রিক দেশে পক্ষে-বিপক্ষ থাকতে পারে, সংকট হচ্ছে রাজনীতিতে। রাজনীতি যে সংকট রয়েছে সেটা কাটিয়ে সুস্থ ধারায় রাজনীতি প্রবাহিত হলে ভোটাররা উৎসাহিত হবে ভোট কেন্দ্রে আসতে।

২০১৯ সালের পঞ্চম উপজেলা নির্বাচনে রাজনৈতিক মাঠের প্রধান বিরোধীদল বিএনপিসহ কয়েকটি দল নির্বাচন বর্জন করে। সেবার ভোট পড়ে ৪০ দশমিক ২২ শতাংশ। তার ধারাবাহিকতায় এবারও বিএনপি, জামায়াত, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) ইসলামী আন্দোলনসহ গুরুত্বপূর্ণ দলগুলো ভোট বর্জন করেছে। সাধারণ মানুষ যাতে ভোট কেন্দ্রে না যায় সেই বিষয়ে প্রচারণা ও লিফলেটও বিতরণ করেছে। এর আগে ২০১৪ সালের চতুর্থ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোট পড়েছিল ৬১ শতাংশ। সেইসময় প্রধান বিরোধীদল বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছিল।

নির্বাচন পর্যবেক্ষক সংস্থা ব্রতীর নির্বাহী পরিচালক শারমিন মুরশিদ বার্তা২৪.কম-কে বলেন, স্বাধীনতার ৫৩ বছরে গণতান্ত্রিক নির্বাচন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হয়নি। সেই সাথে যারা নির্বাচন পরিচালনা করে ও আইনশৃঙ্খলার দায়িত্বে যারা তাদের প্রতি আস্থা হারিয়েছে সাধারণ ভোটাররা। ফলে অনেকে হতাশ হয়েই ভোট প্রদানে আস্থা হারিয়েছে।

সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় বার্তা ২৪-এ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *