সারাদেশ

‘দ্রব্যমূল্য সহনশীল পর্যায়ে না থাকলে মানুষ আন্দোলন করতো’

ডেস্ক রিপোর্ট: বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বাজার সৃষ্টি করতে না পারা, উন্নত মানের নিরাপদ আম রপ্তানির জন্য রপ্তানিকারকদের অনীহা ও মানসিকতার অভাবে আম রপ্তানিতে বিপুল সম্ভাবনা থাকলেও বাংলাদেশ পিছিয়ে আছে বলছেন কৃষি বিশেষজ্ঞরা।

এছাড়া আমে উপস্থিত পেস্টিসাইডের রেসিডিও অ্যানালাইসিস ও ফলের গুণমান পরীক্ষার জন্য পূর্ণ সক্ষমতা সম্পন্ন অ্যাডিক্টেড লাইব্রেরির অভাব ও রপ্তানি ক্ষেত্রে বিরাজমান বিভিন্ন সমস্যার কারণে আম রপ্তানিতে পিছি পরছে বাংলাদেশ।

সোমবার (২৭ মে) জাতীয় প্রেসক্লাবে তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে বাংলাদেশে আম উৎপাদন : সমস্যা ও সম্ভাবনা শীর্ষক একটি জাতীয় সেমিনারে এসব কথা বলেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ জার্নালিস্ট ফোরাম, ঢাকা (সিজেএফডি) এর কৃষি বিশেষজ্ঞরা।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম। তিনি বলেন, বাংলাদেশে আমের মতো সুস্বাদু আমি বিশ্বের কোথাও নেই। রপ্তানি ক্ষেত্রে ব্যাপকভাবে প্রচার ও প্রসার সহ কৃষি মন্ত্রণালয়ের আরো করণীয় আছে। আমাদের কৃষি প্রধান দেশ হলে ও মাত্র একটি কোয়ারাইন্টাইন সেন্টার। গবেষণা প্রতিষ্ঠান বৃদ্ধিসহ ব্যাবসায়িক উদ্যোগ বাড়াতে সরকারের সচেষ্ট হতে হবে। ”

সেমিনারে আমের নতুন জাতের বাণিজ্যিক সম্ভাবনা বিষয়ক মুখ্য আলোচনা করেন, আঞ্চলিক উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মোখলেসুর রহমান।

তিনি বলেন, বিশ্বের মধ্যে আম উৎপাদনে অন্যতম হলেও রপ্তানির দিক দিয়ে পিছিয়ে আছে বাংলাদেশ। প্রতিবছর প্রায় ২৫ লক্ষ মেট্রিক টন আম উৎপাদন হয়। কিন্তু সেখান থেকে ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ সংগ্রহোত্তর ক্ষতি হয়। এছাড়া পিক মৌসুমে উৎপাদন প্রাচুর্যে মূল্য হ্রাস পায় ফলে কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বিগত কয়েক বছরের রপ্তানি কিছুটা বৃদ্ধি হলেও তা আশানুরূপ নয়।

তিনি আরও বলেন, রপ্তানি ক্ষেত্রে বাংলাদেশের ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। যার জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি অবকাঠামো ও উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার করা দরকার। এছাড়া গবেষণা প্রতিষ্ঠান বৃদ্ধি সহ আমের উন্নত সংগ্রহ তোর ব্যবস্থাপনা ও প্রযুক্তি বিষয়ে বিশেষ করে কোয়ারেন্টাইন পেস্ট। যেমন- ফ্রুট ফ্লাই, এনট্রাক নোজ ও বোঁটা পচা রোগ ইত্যাদি নিয়ন্ত্রণের জন্য ভ্যাপার হিট ট্রিটমেন্ট প্লান্টসহ অন্যান্য পরিচর্যা প্রয়োজন।

এছাড়া আম রপ্তানির জন্য তারা কিছু সুপারিশ তুলে ধরেন।

আম রপ্তানির সুপারিশ গুলো হচ্ছে:

রাসায়নিক উপাদানের ব্যবহার সীমিত রেখে যথাযথ পরিচর্যার মাধ্যমে আম উৎপাদন করা। আমের প্যাকিং ব্যবস্থার উন্নয়ন করা। আম পরিবহনের জন্য আধুনিক যানবাহনের ব্যবস্থা করা। বিমানের কার্গোতে আম পরিবহণ ব্যবস্থা উন্নত ও সহজতর করা। রপ্তানি উপযোগী আমের চাষ সম্প্রসারণ করা। আম চাষি বিশেষকরে রপ্তানির জন্য আম উৎপাদনকারীগণের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা। আম থেকে উৎপাদিত পণ্য যেমন জুস, জ্যাম, জেলি, আচার, ক্যান্ডি ইত্যাদির বিদেশে বাজার সম্প্রসারণ করা। আম ভিত্তিক শিল্প স্থাপনে সহজ শর্তে ঋণ প্রদান করা। জৈব প্রযুক্তি নির্ভর আম উৎপাদন উৎসাহিত করা। আম সংগ্রহ, সংরক্ষণ, প্যাকিং ও পরিবহণ বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেয়া। আম রপ্তানির জন্য সকল রপ্তানীকারকের জন্য একটি সুনির্দিষ্ট নীতিমালা এবং মানদণ্ড ঠিক করে দেয়া।

সেমিনাররের সভাপতিত্ব করেন সিজে এফডির সভাপতি আব্দুল্লাহ আল মামুন। এছাড়া আরো উপস্থিত ছিলেন কে এস এম মোস্তাফিজুর রহমান, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের নির্বাহী চেয়ারম্যান ড.শেখ মোহাম্মাদ বখতিয়ার প্রমুখ।

সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় বার্তা ২৪-এ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *