সারাদেশ

ঘূর্ণিঝড় রিমাল মোকাবিলায় চসিক প্রস্তুত: মেয়র রেজাউল

ডেস্ক রিপোর্ট: ঘূর্ণিঝড় রিমাল মোকাবিলায় চসিক প্রস্তুত: মেয়র রেজাউল

ছবি: সংগৃহীত

ঘূর্ণিঝড় রিমাল মোকাবিলা করতে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন প্রস্তুত আছে বলে মন্তব্য করেছেন চট্টগ্রাম সিটি মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. রেজাউল করিম চৌধুরী।

সোমবার (২৭ মে) বিকেলে নগরীর আমিন জুট মিল খেলার মাঠ সংলগ্ন আলহেরা দাখিল মাদরাসায় অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নেয়া নাগরিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এ মন্তব্য করেন মেয়র।

মেয়র বলেন, ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানলে নাগরিকদের আশ্রয় দিতে চসিকের ৮১ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্রে আসা দুর্গতদের জন্য খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। যতদিন রিমালের প্রভাব থাকবে ততদিন আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রিতদের খাবার ও জরুরি চিকিৎসা দিবে চসিক।

এছাড়া, খোলা হয়েছে কন্ট্রোল রুম। জরুরি চিকিৎসা সেবার জন্য গঠন করা হয়েছে স্পেশাল টিম। এলাকায় এলাকায় মাইকিং করে ঝুঁকিতে থাকা নাগরিকদের সরে যেতে বলা হচ্ছে। কাউন্সিলররাও মাঠ পর্যায়ে দুর্যোগ মোকাবিলার বিষয়টি তদারকি করছেন।

ঘূর্ণিঝড় রিমাল মোকাবিলা করতে আমরা সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিয়েছি। দুর্যোগ আসলেও ক্ষয়ক্ষতি সর্বনিম্ন পর্যায়ে রাখা যাবে বলেও আশার কথা জানান মেয়র।

এসময় উপস্থিত ছিলেন চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম,কাউন্সিলর মোবারক আলী, প্রধান পরিছন্ন কর্মকর্তা লতিফুল হক কাজমী, প্রধান প্রকৌশলী শাহিন-উল-ইসলাম, মঈনুল হোসেন জয়, নুরুল আলমসহ স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবকরা।

ঘূর্ণিঝড় রিমাল: চট্টগ্রাম বন্দরের জেটিতে ভেড়েনি জাহাজ   ঘূর্ণিঝড় রিমাল

ছবি: সংগৃহীত

ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে সোমবার (২৭ মে) দিনভর একটি জাহাজও চট্টগ্রাম বন্দরে ভেড়ানো যায়নি। জেটিতে কোনো জাহাজ না থাকায় পণ্য ওঠানো-নামানোর কাজ বন্ধ রয়েছে। তবে বন্দর চত্বর থেকে পণ্য খালাস কার্যক্রম স্বাভাবিক ছিল। মূলত বঙ্গোপসাগর ও কর্ণফুলী নদীতে প্রচণ্ড ঢেউয়ের কারণে জাহাজ ভেড়ানো যায়নি।

ঘূর্ণিঝড় রিমালের সম্ভাব্য ক্ষতি এড়াতে রোববার (২৬ মে) সকালের জোয়ারে বন্দরের জেটি থেকে ১৯টি জাহাজকে গভীর সাগরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। এই কারণে বন্দর জেটি ফাঁকা হয়ে যায়। বাংলাদেশের উপকূলে আঘাত হানার পর রিমাল দুর্বল হয়ে পড়লেও এখনো উত্তাল রয়েছে সাগর ও কর্ণফুলী নদী। ফলে সেই জাহাজগুলোকে এখনো বন্দরের জেটিতে ভেড়ানো যায়নি।

এদিকে আবহাওয়া অধিদফতর ৯ নম্বর মহাবিপদ সংকেতও প্রত্যাহার করে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলার পর সোমবার বেলা ১১টায় চট্টগ্রাম বন্দরের সর্বোচ্চ সতর্কতা প্রত্যাহার করা হয়। এর আগে সাড়ে ১০টা থেকে বেলা ৩টার জোয়ারে সাগর থেকে ১৯টি জাহাজ জেটিতে আনার প্রক্রিয়া শুরু হয়। কিন্তু প্রচণ্ড ঢেউ থাকায় বন্দরের পাইলটরা সাগরে নোঙর করে রাখা জাহাজে যাওয়ার সুযোগ পাননি। ফলে একটি জাহাজও জেটিতে আনা যায়নি। এই কারণে বন্দরের কার্যক্রম পুরোদমে সচল হয়নি।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব মো. ওমর ফারুক। তিনি বলেন, ‘বৈরী আবহাওয়ার কারণে সাগর থেকে কোনো জাহাজ জেটিতে আনা যায়নি। তবে পচনশীল নয়, এমন পণ্য বন্দর চত্বর থেকে খালাস হচ্ছে।’

;

ঘূর্ণিঝড় রিমালে কক্সবাজারে ক্ষতিগ্রস্ত ১৫৩ ঘর   ঘূর্ণিঝড় রিমাল

ছবি: বার্তা২৪.কম

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ‘রিমাল’র আতঙ্ক কেটেছে। এতে ঘূর্ণিঝড়ে সৃষ্ট ক্ষয়ক্ষতি ও গৃহীত কার্যক্রমের তথ্য জানিয়েছে কক্সবাজার জেলা প্রশাসন। জেলা প্রশাসনের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী জেলায় ঘূর্ণিঝড়ে কোনো প্রাণহানি হয়নি। তবে একজন ব্যক্তি গাছ পড়ে আহত হয়েছেন। এছাড়া কিছু ঘরবাড়ির ক্ষয়ক্ষতি ছাড়া বড় কোন ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। তবে কৃষিখাতে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এখনো জানা যায়নি।

সোমবার (২৭ মে) জেলা প্রশাসন এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, জেলায় ১৫৩টি কাঁচা ঘর আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ইতোমধ্যে সতর্ক সংকেত তুলে নেয়ায় পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে এবং আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয়গ্রহণকারীগণ নিজেদের ঘরে ফিরেছেন।

কক্সবাজার পৌরসভার ১নং ওয়ার্ড এবং মহেশখালী পৌরসভার চরপাড়া এলাকায় মাটির বাঁধ ভেঙ্গে সমুদ্রের জোয়ারের পানি লোকালয়ে প্রবেশ করেছে এবং ভাটা হওয়ার সাথে সাথে লোকালয়ের পানি নেমে গেছে। সম্ভাব্য ক্ষতিগ্রস্তদের তাৎক্ষণিকভাবে মানবিক সহায়তা প্রদানের জন্য ৬৩ মে.টন চাল সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে উপ-বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে যা বিতরণ চলমান আছে বলে জানা গেছে।

এছাড়াও কক্সবাজার জেলায় বিদ্যমান ৬৩৮টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত করা হয়েছিল। তন্মধ্যে ৩১টি আশ্রয়কেন্দ্রে ৯৭৮৭ জন আশ্রয় গ্রহণ করেছেন। আশ্রিতদের মাঝে রান্না করা খাবারসহ শুকনা খাবার ও বিশুদ্ধ পানি পরিবেশন করা হয়েছে। ৯১টি মেডিক্যাল টিমের মাধ্যমে আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রিতদের চিকিৎসাসেবা প্রদান করা হয়েছে।

মহেশখালী উপজেলায় গাছের ডাল পড়ে মহেশখালী কুতুবজুম ইউনিয়নে ঘটিভাঙ্গা ডেম্বনিপাড়া এলাকায় আবুল ফয়েজের ছেলে আবুল কালাম (৭৫) নামক এক ব্যক্তি আহত হয়েছেন। তিনি বর্তমানে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।

জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরান জানিয়েছেন, ইতিমধ্যে আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত কাঁচা ঘরগুলোর পরিবারকে পূনর্বাসনের কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। জেলা, উপজেলা, স্বেচ্ছাসেবী কর্মী ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দসহ সংশ্লিষ্ট সকলের সহায়তায় ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে পেরে তিনি সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।

;

বৈদ্যুতিক দুর্ঘটনা এড়াতে মন্ত্রণালয়ের পরামর্শ

ছবি: সংগৃহীত

ঘূর্ণিঝড় ‘রিমাল’ আঘাত হানার পর সারাদেশে বিদ্যুৎ বিভ্রাট শুরু হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ে অনেক এলাকায় গাছ উপড়ে বিদ্যুতের তারের ওপর পড়ে ছিঁড়ে গেছে। এ কারণে যে কোনো সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।

তেমন কোনো সম্ভাবনা দেখলে বিদ্যুৎ বিলের কাগজের পেছনে দেওয়া অভিযোগ কেন্দ্রগুলোর মোবাইল ফোন নম্বরে যোগাযোগ করার আহ্বান জানিয়েছে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়।

বিদ্যুস্পৃষ্ট হয়ে দুর্ঘটনা এড়াতে কিছু পরামর্শ দিয়ে সবাইকে অনুসরণ করতে বলেছে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়। সেগুলো হচ্ছে-

ছেঁড়া তার এড়িয়ে চলুন

কোনো ছেঁড়া তার কারো চোখে পড়লে তা স্পর্শ করবেন না বা সরানোর চেষ্টা করবেন না। তাৎক্ষণিক নিকটবর্তী বিদ্যুৎ অফিসকে জানাবেন।

বিদ্যুৎ লাইনের ওপর গাছ দেখলে ধরবেন না
বিদ্যুৎ লাইনের ওপর গাছ বা গাছের ডালপালা বা অন্য কোনো বস্তু পড়ে থাকতে দেখলে বিদ্যুৎ অফিসে জানান। নিজেরা তা ধরবেন না বা সরাতেও যাবেন না।

ঝড়-বৃষ্টিকালে বৈদ্যুতিক খুঁটি বা তার ধরবেন না
ঝড়, বৃষ্টি, বজ্রপাত বা যে কোনো ভেজা বৈদ্যুতিক খুঁটি বা টানা তার স্পর্শ করা থেকে বিরত থাকুন।

মিটারের কভার তার পরীক্ষা
মিটারের কভার তার পরীক্ষা করে দেখবেন কোনো ক্ষতি হয়েছে কি না! তার ছিঁড়ে বা কেটে গেলে নিজে ঠিক করার চেষ্টা না করে বিদ্যুৎ অফিসে যোগাযোগ করুন। কোনো কভার তারে কাপড় শুকাতে দেবেন না।

বিদ্যুৎ কর্মীদের সহযোগিতা করুন
প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় সবাইকে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে এগিয়ে আসতে হবে। যেকোনো কাজে বিদ্যুৎকর্মীরা সহযোগিতা চাইলে সহযোগিতা করতে চেষ্টা করুন।
বিদ্যুৎ সংক্রান্ত যেকোনো প্রয়োজনে ১৬৯৯৯ নম্বরে যোগাযোগ করুন।

পল্লী এলাকায় বিদ্যুতের সমস্যায় যোগাযোগের জন্য সার্বক্ষণিক খোলা থাকবে যে ফোন নম্বর, সেগুলো হচ্ছে-

• পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের সেন্ট্রাল কন্ট্রোল রুমের নম্বর ০১৭৯২-৬২৩৪৬৭, ০২-৮৯০০৫৭৫

ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি
• বরিশাল অঞ্চল- ০১৭১৩-৮৫০২১৮
• খুলনা অঞ্চল- ০১৭১৩-৮৫০২১১
• পটুয়াখালী অঞ্চল- ০১৭১৩-৮৫০২১৯

;

ঘূর্ণিঝড় রিমালে ৬ জেলায় ১০ জনের মৃত্যু   ঘূর্ণিঝড় রিমাল

ছবি: সংগৃহীত

প্রবল শক্তি নিয়ে উপকূল অতিক্রম করছে ঘূর্ণিঝড় রিমাল। উপকূলে চালিয়েছে ব্যাপক তাণ্ডব। ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে জলোচ্ছ্বাসকে নজিরবিহীন বলে মন্তব্য করেছেন অনেকেই। কেউ কেউ বলছেন গত ৫০ বছরে এমন জলোচ্ছ্বাস দেখেননি। উপকূলীয় জেলার অনেকে লিখেছেন তাদের ঘরে পানি প্রবেশ করেছে, যা তাদের জীবদ্দশায় কখনও ঘটেনি।

সারাদেশ থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী ঘূর্ণিঝড় রিমালে এখন পর্যন্ত ১০ জন প্রাণ হারিয়েছেন। খুলনা, সাতক্ষীরা, বরিশাল, পটুয়াখালী, ভোলা ও চট্টগ্রামে এসম মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। এছাড়াও খুলনা, সাতক্ষীরা ও পটুয়াখালী জেলাসহ উপকূলীয় ১৯ জেলার ১০৭ উপজেলার ৯১৪ ইউনিয়ন ও পৌরসভা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

এদিকে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মহিবুর রহমান জানিয়েছেন। প্রবল ঘূর্ণিঝড় রিমালে ৩৭ লাখ ৫৮ হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া প্রায় ৩৫ হাজার ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত ও আংশিক ক্ষতি হয়েছে ১ লাখ ১৪ হাজার ৯ শত ঘরবাড়ি। তবে সরকারের প্রস্তুতির কারণে বড় ক্ষয়ক্ষতি হয়নি বলে জানান তিনি।

তিনি বলেন, ইতোমধ্যে ক্ষতিগ্রস্তদের ৬ কোটি ৮৫ লাখ টাকা সহযোগিতার জন্য দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ১৫টি জেলায় ৩ কোটি ৮৫ লাখ নগদ টাকা। পাঁচ হাজার পাঁচশত মেট্রিক টন চাল ও পাঁচ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার। এছাড়া শিশু খাদ্য কেনার জন্য ১ কোটি ৫০ লাখ টাকা সহযোগিতা করা হয়েছে। এসব সহযোগিতা ক্ষতিগ্রস্তের মোবাইল অ্যাকাউন্টে যাবে। বরাদ্দ অব্যাহত থাকবে বলেও জানান প্রতিমন্ত্রী।

মহিবুর রহমান জানান, ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাসমূহে ৯ হাজার ৪২৪টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এসব আশ্রয় কেন্দ্রে বা স্থায়ী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ৮ লাখ মানুষ আশ্রয় নিয়েছে।

প্রসঙ্গত, রোববার (২৬ মে) রাত আটটার দিকে মোংলার দক্ষিণ-পশ্চিম দিক দিয়ে পশ্চিমবঙ্গ উপকূল ও বাংলাদেশের খেপুপাড়া উপকূল অতিক্রম শুরু করে ঘূর্ণিঝড় রিমাল। এই ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, পটুয়াখালী, বরগুনাসহ উপকূলের বিভিন্ন জেলায় ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যায়। বাতাসের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ৯০ থেকে ১২০ কিলোমিটার। এর প্রভাবে বিভিন্ন এলাকায় জলোচ্ছ্বাসের সৃষ্টি হয়।

;

সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় বার্তা ২৪-এ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *