স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের দায়ে একজনের আমৃত্যু কারাদণ্ড
ডেস্ক রিপোর্ট: স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের দায়ে একজনের আমৃত্যু কারাদণ্ড
ছবি: বার্তা২৪.কম
রাঙামাটিতে ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ুয়া এক স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় আসামি মোজাম্মেল হককে আমৃত্যু কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাকে এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৮ মে) দুপুরে রাঙামাটির নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক এ.ই.এম ইসমাইল হোসেন আসামির উপস্থিতিতে এ রায় ঘোষণা করেন।
এই রায়ে রাষ্ট্রপক্ষ সন্তুষ্ট প্রকাশ করলেও আসামিপক্ষ সংক্ষুব্ধ হয়েছেন এবং ন্যায়বিচার প্রাপ্তিতে রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করবেন বলে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় জানিয়েছেন।
জানাযায়, ২০১৮ সালের ২১ মার্চ রাঙামাটি শহরের পুরানবস্তি এলাকায় আব্দুল হকের মালিকানাধীন ভাড়া বাসায় আসামি মোজাম্মেল হক ৬ষ্ঠ শ্রেণির ওই কিশোরীকে ডেকে নিয়ে ধর্ষণ করেন। এসময় স্থানীয়দের সহায়তায় ভিকটিমের মা হাতেনাতে মোজাম্মেলকে আটক করলে কোতোয়ালি থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে গ্রেফতার করে। পরবর্তীতে আসামির বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন-২০০০ এর ৯(১) ধারায় মামলা দায়ের করা হয়।
৬ বছর পর এই মামলায় রায় প্রদানের সময় আদালত তার পর্যবেক্ষণে জানান, ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে পড়াকালীন সময়ে ভিকটিম ৪০ বছর বয়সী আসামি কর্তৃক পাশবিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন।
এই ঘটনার পর ভিকটিম ও তার পরিবার এলাকাবাসীর কটাক্ষের শিকার হয়ে অন্যত্র গিয়ে ভিকটিমকে বিয়ে দেন। সে ঘরে একটি সন্তানও হয়েছে। কিন্তু সে স্বামী ভিকটিমের ধর্ষণের ঘটনা শুনে তাকে তালাক দিয়ে দেয়।
এই ঘটনায় এটা স্পষ্ট যে, ভিকটিম বাল্যবিবাহের শিকার হয়েছে এবং তার শিক্ষা জীবন ধ্বংস হয়ে তার জীবন ওলটপালট হয়ে গেছে। এমতাবস্থায় ভিকটিমের মতো অন্যান্য শিশুদের ভবিষ্যতে আসামির হাত থেকে রক্ষা করার জন্য তাকে আমৃত্যু কারাগারে অন্তরীণ রাখা প্রয়োজন বলে মনে করেছেন আদালত।
তাই আসামি মোজাম্মেল হককে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন-২০০০ এর ৯(১) ধারার অপরাধে দোষী সাব্যস্ত করে আমৃত্যু সশ্রম কারাদণ্ড এবং এর অতিরিক্ত এক লাখ টাকা জরিমানার আদেশ দিয়েছে আদালত। জরিমানার টাকা আগামী ৯০ দিনের মধ্যে আদালতে জমা দেওয়ার পর সেই অর্থ ভিকটিম ক্ষতিপূরণ হিসেবে প্রাপ্ত হবেন বলেও আদালতের রায়ে উল্লেখ করা হয়।
এদিকে এই মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের বিশেষ পাবলিক প্রসিকিউটর আইনজীবী অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম অভি রায়ে সন্তুষ্ট প্রকাশ করে বলেন, এই রায়ের মাধ্যমে সমাজে একটি মেসেজ দেওয়া হয়েছে এবং এতে করে সমাজে এই ধরনের অপরাধ কমে আসবে বলেও আমি মনে করছি।
অপরদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট রহমত উল্লাহ তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় সাংবাদিকদের বলেন, এই রায়ে সংক্ষুব্ধ হয়েছি, আমরা ন্যায় বিচার পাইনি। এই রায়ের বিরুদ্ধে আমরা উচ্চ আদালতে আপিল করবো। আশা করছি সেখানে আমরা ন্যায় বিচার পাবো।
ডেসটিনির রফিকুলের জামিন শুনানি ছয় মাসের জন্য মুলতবি
ছবি: সংগৃহীত
ডেসটিনি ট্রি প্ল্যান্টেশন লিমিটেডের নামে বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগে আনা মামলায় ডেসটিনি গ্রুপের এমডি রফিকুল আমীনের জামিন আবেদনের শুনানি ছয় মাসের জন্য মুলতবি (স্ট্যান্ড ওভার) করেছে আপিল বিভাগ।
সোমবার (২৭ মে) সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিমের নেতৃত্বে চার সদস্যের আপিল বিভাগ বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
বেঞ্চের অন্য বিচারপতিগণ হলেন বিচারপতি মো. আবু জাফর সিদ্দিকী, বিচারপতি মুহাম্মদ আবদুল হাফিজ ও বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলাম।
আদালতে রফিকুল আমীনের পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র এডভোকেট শাহ মঞ্জরুল হক। দুদকের পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র এডভোকেট খুরশীদ আলম খান।
এডভোকেট খুরশীদ আলম খান সাংবাদিকদের বলেন, ডেসটিনি ট্রি প্ল্যান্টেশন লিমিটেডের নামে অর্থ পাচারের মামলায় রফিকুল আমীনের জামিন আবেদন খারিজ করে দেন হাইকোর্ট। হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল করেন রফিকুল আমীন। বিষয়টির শুনানি আজ ছয় মাসের জন্য মুলতবি (স্ট্যান্ড ওভার) করে আদেশ দিয়েছে সর্বোচ্চ আদালত। ছয় মাস পর আবার জামিন আবেদনটি শুনানির জন্য কার্যতালিকায় আসবে বলে জানান আইনজীবী।
এডভোকেট খুরশীদ আলম খান বলেন, এই মামলায় এরই মধ্যে ১০৯ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ হয়েছে। আশা করছি ছয় মাসের মধ্যে বিচার শেষ হবে। আমরা একথা আদালতে জানিয়েছি। এ কারণে জামিন শুনানি ছয় মাসের জন্য স্ট্যান্ড ওভার রেখে আদেশ দিয়েছে সর্বোচ্চ আদালত।
ডেসটিনি মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি এবং ডেসটিনি ট্রি প্ল্যান্টেশন লিমিটেডের নামে বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে তা আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগে ২০১২ সালের ৩১ জুলাই রফিকুল আমীনসহ ডেসটিনির কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে পৃথক দুটি মামলা হয় রাজধানীর কলাবাগান থানায়। দুই মামলায় মোট ৪ হাজার ১১৯ কোটি ২৪ লাখ টাকা আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগ আনা হয়।
দুই বছর তদন্তের পর ২০১৪ সালের ৪ মে একটি (ট্রি প্ল্যান্টেশন) মামলায় রফিকুল আমীনসহ ১৯ জন এবং অপর মামলায় ৪৬ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয় দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। রফিকুল আমীনসহ ১২ জনের নাম দুটি মামলাতেই রয়েছে। দুই মামলায় মোট আসামির সংখ্যা ৫৩। আসামিদের মধ্যে কারাগারে আছেন ডেসটিনির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হোসেন, এমডি রফিকুল আমীন ও পরিচালক কর্নেল (অব.) দিদারুল আলম। জামিনে আছেন তিনজন। বাকিরা পলাতক।
মামলার অভিযোগপত্রে বলা হয়, ২০০৮ সাল থেকে ডেসটিনি ট্রি প্ল্যান্টেশনের মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে ২ হাজার ৪৪৫ কোটি টাকা সংগ্রহ করা হয়। এর মধ্যে ২ হাজার ২৫৭ কোটি ৭৮ লাখ ৭৭ হাজার টাকা আত্মসাৎ করা হয়। এর ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হন সাড়ে ১৭ লাখ বিনিয়োগকারী। এ মামলায় অভিযোগ করা হয়, ওই টাকার মধ্যে এলসি (ঋণপত্র) হিসেবে ৫৬ কোটি ১৯ লাখ ১৯ হাজার ৪০ টাকা এবং সরাসরি পাচার করেছে আরও ২ লাখ ৬ হাজার মার্কিন ডলার।
অন্যদিকে মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভের নামে ডেসটিনি বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে সংগ্রহ করেছিল ১ হাজার ৯০১ কোটি টাকা। সেখান থেকে ১ হাজার ৮৬১ কোটি ৪৫ লাখ টাকা আত্মসাৎ করা হয় বলে দুদকের অনুসন্ধানে ধরা পড়ে। ওই অর্থ আত্মসাতের ফলে সাড়ে ৮ লাখ বিনিয়োগকারী ক্ষতির মুখে পড়েন।
মামলা দায়েরের চার বছরের মাথায় ২০১৬ সালের ২৪ আগস্ট রফিকুল আমীনসহ অন্যদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে বিচার শুরু হয়। এখন বিচারিক আদালতে মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ অবাহত রয়েছে।
;
সাপ্তাহিক অপরাধ বিচিত্রার সম্পাদকসহ দু’জনের অর্থদণ্ড
ছবি: সংগৃহীত
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় সাপ্তাহিক অপরাধ বিচিত্রার সম্পাদক এসএম মোরশেদ ও সিনিয়র রিপোর্টার এজাজ রহমানকে অর্থদণ্ড দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল।
রোববার (২৬ মে) ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক এএম জুলফিকার হায়াতের ট্রাইব্যুনাল এ রায় ঘোষণা করেন।
রায়ে এসএম মোরশেদকে দুই লাখ টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে ৬ মাসের কারাদণ্ড ও এজাজ রহমানকে এক লাখ টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে ৩ মাসের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
রায় ঘোষণার আগে তারা জামিনে থেকে আদালতে হাজির হন। অর্থদণ্ড পরিশোধ করবেন জানিয়ে তারা এক মাস সময় আবেদন করেন। আদালত তাদের আবেদন মঞ্জুর করেন।
২০২০ সালের অক্টোবর, নভেম্বর ও ডিসেম্বরে ইসলামী ব্যাংকের কর্মকর্তা মনিরুজ্জামানকে নিয়ে সাপ্তাহিক অপরাধ বিচিত্রায় নারী লোভী, অর্থ আত্মসাৎকারী, নারী ও মাদকাসক্ত, নারী পাচারকারী, দুর্নীতিবাজ, ক্ষমতার অপব্যবহারী মর্মে কয়েকটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এসএম মোরশেদ ২০২০ সালের ১২ ডিসেম্বর তার ফেসবুক আইডি থেকে সংবাদের স্ক্রিনশট আকারে বিভিন্ন মানুষের ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডিতে শেয়ার করেন।
এমন অভিযোগ এনে ২০২১ সালের ১৮ জানুয়ারি সাইবার ট্রাইব্যুনালে মামলাটি দায়ের করেন মনিরুজ্জামান। আদালত ঘটনার বিষয়ে সিআইডিকে তদন্তের নির্দেশ দেন।
২০২২ সালের ৩০ মার্চ তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন অ্যান্ড অপারেশন এর উপপরিদর্শক মো. শাহজালাল আদালতে দুজনের বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে মর্মে প্রতিবেদন দাখিল করেন। একই বছরের ১৩ নভেম্বর আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরুর আদেশ দেন।
মামলার বিচার চলাকালে আদালত ৫ জন সাক্ষীর মধ্যে ৩ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেন।
;
বেনজীর ও তার পোষ্যদের আরও ১১৯টি সম্পত্তি ক্রোকের নির্দেশ
ছবি: সংগৃহীত
সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ, তার স্ত্রী ও তিন সন্তানের আরও ১১৯টি স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি ক্রোকের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
দুদকের আবেদনের প্রেক্ষিতে রোববার (২৬ মে) ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আসসামছ জগলুল হোসেন এ নির্দেশ দেন।
এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর। তিনি বলেন, সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ, তার স্ত্রী ও তিন সন্তানের নামে থাকা আরও ১১৩টি দলিলের সম্পদ ও গুলশানের চারটি ফ্ল্যাট ক্রোক এবং অনেকগুলো কোম্পানিতে তাদের নামে থাকা শেয়ার অবরুদ্ধ করার আদেশ দিয়েছেন আদালত।
এর আগে, গত বৃহস্পতিবার (২৩ মে) দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মেট্রোপলিটন সিনিয়র স্পেশাল জজ মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেনের আদালত বেনজীর আহমেদের ৮৩টি দলিলের সম্পদ জব্দের এ আদেশ দেন। একই সঙ্গে তার স্ত্রী ও মেয়ের নামে থাকা ব্যাংক হিসাবগুলোও অবরুদ্ধ করতে আদালত আদেশ দেন।
তার আগে, গত মাসের ২২ এপ্রিল বেনজীর আহমেদের দুর্নীতির অভিযোগের অনুসন্ধান চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সালা উদ্দিন রিগ্যান হাইকোর্টে রিট দায়ের করা করেন।
‘মিথ্যা ও কল্পনাপ্রসূত তথ্য দিয়ে সংবাদ প্রকাশ করা হয়েছে’ বেনজীর আহমেদের দুর্নীতির অনুসন্ধান চেয়ে হাইকোর্টে রিট বেনজীর আহমেদের দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান করবে দুদক বেনজীর আহমেদের সম্পত্তি জব্দের নির্দেশ প্রসঙ্গত, বেনজীর আহমেদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অনুসন্ধানে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) চিঠি দেন ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন। চিঠিতে বলা হয়, বাংলাদেশ পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদ ৩৪ বছর ৭ মাস চাকরি করে গত ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২২ সালে অবসরে যান। অবসর গ্রহণের পর দেখা যায়, বেনজীর আহমেদের স্ত্রী ও কন্যাদের নামে বিপুল পরিমাণ সম্পত্তি রয়েছে, যা তার আয়ের তুলনায় অসম।
সম্প্রতি প্রকাশিত এক জাতীয় দৈনিকের দাবি, পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ও র্যাবের সাবেক মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদের বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদের খোঁজ মিলেছে। এরপর থেকেই বেশ আলোচনায় পুলিশের সাবেক এই আইজিপি।
প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদে গত শনিবার (২০ এপ্রিল) ‘আমার কিছু কথা’ শিরোনামে এক ভিডিও বার্তায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে বেনজীর আহমেদ বলেন, মিথ্যা ও কল্পনাপ্রসূত তথ্য দিয়ে সংবাদ প্রকাশ করা হয়েছে।
বেনজীর আহমেদের দাবি, কিছু তথ্য ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে তিলকে তাল বানিয়ে উপস্থাপন করা হয়েছে।
;
তীব্র তাপদাহে এজলাসেই আইনজীবীর হিটস্ট্রোক
তীব্র তাপদাহে এজলাসেই আইনজীবীর হিটস্ট্রোক
এজলাস কক্ষে মামলা শুনানির সময় তাপদাহে হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে আলতাফ হোসেন নামে এক আইনজীবী অসুস্থ হয়েছেন। দ্রুত তাকে পার্শ্ববর্তী ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক।
রোববার (২৬ মে) ঢাকার অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা পরিচালনার সময় সকাল সোয়া ১১টার দিকে হঠাৎ করে এ আইনজীবী অসুস্থ হয়ে পড়েন।
সংশ্লিষ্ট আদালতের অতিরিক্ত পিপি আনোয়ারুল কবীর বাবুল এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, মামলা পরিচালনার সময় কোর্ট এজলাস কক্ষে আমাদের এক আইনজীবী হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে মারাত্মকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরবর্তীতে তাকে মুমূর্ষু অবস্থায় ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়, সর্বশেষ খবর পর্যন্ত তার অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানান তিনি।
তিনি আরও জানান, গত ১৯ মে নিম্ন আদালতে কোট-গাউন পরিধানের আদেশ বহালের পর থেকে এ পর্যন্ত অনেক আইনজীবী অসুস্থ হয়েছেন। তাই মাননীয় প্রধান বিচারপতির দৃষ্টি আকর্ষণ করছি যেন, প্রচণ্ড গরম থাকা পর্যন্ত আমাদের কোট-গাউন পরিধানের বিষয়টি তিনি শিথিল করেন।
গত বৃহস্পতিবার ৩ মাস সাদা শার্ট, সাদা শাড়ি/সালোয়ার কামিজ ও সাদা নেক ব্যান্ড/কালো টাই পরিধান করে মামলা পরিচালনার অনুমতি চেয়ে প্রধান বিচারপতির কাছে আবেদন করেন ঢাকা আইনজীবী সমিতি। ঢাকা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আনোয়ার শাহাদাত (শাওন) স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত চিঠি প্রধান বিচারপতির কাছে পাঠানো হয়।
ঢাকা আইনজীবী সমিতির তথ্য ও যোগাযোগ সম্পাদক সৈয়দা ফরিদা ইয়াসমিন জেসি এ বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, চিঠিটি সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের কাছে পৌঁছানো হয়েছে।
আবেদনে বলা হয়, ঐতিহ্যবাহী ঢাকা আইনজীবী সমিতি এশিয়া মহাদেশের বৃহত্তম আইনজীবী সমিতি। বর্তমানে ঢাকা আইনজীবী সমিতির সদস্য সংখ্যা ৩১ হাজার ১০৪ জন। বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তন ও অতিমাত্রায় উষ্ণতার কারণে বর্তমানে বাংলাদেশের তাপমাত্রা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিজ্ঞ আইনজীবীরা গরমে সীমাহীন কষ্ট ভোগ করছেন। বিশেষ করে মামলা শুনানিসহ মামলার অন্যান্য কার্যক্রম পরিচালনার সময় এবং চারটি এজলাস কক্ষ ব্যতীত অন্যান্য সব এজলাস কক্ষে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত না হওয়ায় প্রচুর পরিমাণে গরম অনুভূত হওয়ায় মামলার কার্যক্রম পরিচালনা করতে খুবই অসুবিধার সৃষ্টি হচ্ছে।
প্রচণ্ড গরমে গত বছর কোর্ট অঙ্গনে পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় হিটস্ট্রোক করে অ্যাডভোকেট শফিউল আলম (৪২) মারা গিয়েছিলেন। তাছাড়া তীব্র দাবদাহের কারণে প্রতিনিয়ত আইনজীবীরা অসুস্থ হয়ে পড়ছেন এবং আইনজীবীদের মধ্যে হিটস্ট্রোকের ভীতি অনুভূত হচ্ছে। এছাড়া আবহাওয়ার পূর্বাভাস বলছে তীব্র তাপপ্রবাহ আরও বৃদ্ধি পেতে পারে। পোশাক সংক্রান্ত গত ১৯ মের আদেশ প্রত্যাহারপূর্বক গত ৪ এপ্রিলের বিজ্ঞপ্তির কার্যকারিতা আরও ৩ মাস বৃদ্ধি করে আগামী ১৯ আগস্ট পর্যন্ত বর্ধিত করার জন্য বিনীতভাবে অনুরোধ জানানো হয়।
;
সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় বার্তা ২৪-এ।