আন্তর্জাতিক

রাফাহতে হামলা নিয়ে বৈঠকে বসছে নিরাপত্তা পরিষদ

ডেস্ক রিপোর্ট: রাফাহতে বাস্তুচ্যুত মানুষের একটি আশ্রয় শিবিরে ইসরায়েলি হামলায় অনেক ফিলিস্তিনি নিহত হওয়ার ঘটনায় মঙ্গলবার (২৮ ) এক জরুরি বৈঠক ডেকেছে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ।

রয়টার্স জানিয়েছে, এই বৈঠকে তিনটি ইউরোপীয় দেশ আনুষ্ঠানিকভাবে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেবে বলে আশা করা হচ্ছে।

এদিকে, মঙ্গলবার ভোরে ঘটনাস্থল থেকে এএফপি সাংবাদিকরা দক্ষিণ গাজা সীমান্ত শহর রাফাহতে বৃহস্পতিবার রাতে নতুন করে ইসরায়েলি হামলার খবর জানিয়েছে। সেখানে গত রবিবার রাতে হামাসের দুই সিনিয়র সদস্যকে লক্ষ্য করে একটি ইসরায়েলি হামলা অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত করে যা বাস্তুচ্যুতদের একটি আশ্রয় কেন্দ্রের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। গাজার স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের মতে, এতে ৪৫ জন জ্যান্ত পুড়ে নিহত হন।

এই হামলা আন্তর্জাতিক নিন্দার ঝড় তুলেছে। ফিলিস্তিনিরা এবং অনেক আরব দেশ এই হামলাকে ‘গণহত্যা’ বলে অভিহিত করেছে। ইসরায়েল বলেছে, তারা এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা খতিয়ে দেখছে।

অন্যদিকে, জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেছেন, ‘গাজায় কোনো নিরাপদ স্থান নেই। এই ভয়াবহতা অবশ্যই থামাতে হবে।’

জাতিসংঘের মানবিক প্রধান মার্টিন গ্রিফিথস রাফাতে ইসরায়েলের অনুপ্রবেশের আগে প্রচারিত বেসামরিক মৃত্যুর ব্যাপক সতর্কতার দিকে ইঙ্গিত করে এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘বৃহস্পতিবার রাতের সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য আক্রমণের পরিণতি আমরা দেখেছি।’

কূটনীতিকরা জানিয়েছেন, হামলার বিষয়ে আলোচনার জন্য আলজেরিয়ার ডাকা জরুরি অধিবেশনের জন্য মঙ্গলবার জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ বৈঠকে বসবে।

ইইউয়ের পররাষ্ট্র নীতির প্রধান বলেছেন, তিনি এই হামলার সংবাদে আতঙ্কিত।

পাশাপাশি ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ বলেছেন, তিনি ক্ষুব্ধ। মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের এক মুখপাত্র বলেছেন, ইসরায়েলকে বেসামরিক নাগরিকদের রক্ষা করার জন্য সম্ভাব্য সব সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, তারা এ বিষয়ে তদন্ত শুরু করছে।

বাস্তুচ্যুত গাজান খলিল আল-বাহতিনি হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা ছেড়ে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। তিনি সোমবার এএফপিকে বলেন, ‘বৃহস্পতিবার রাতে আমাদের তাঁবুকে টার্গেট করা হয়েছিল। আমরা আমাদের সমস্ত জিনিসপত্র জড়ো করেছি, কিন্তু কোথায় যাবো তা আমরা জানি না।’

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু পার্লামেন্টে বলেছেন, ‘বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষার জন্য আমাদের সর্বাত্মক প্রচেষ্টা সত্ত্বেও মৃত্যু ঘটেছে।’

স্পেন, আয়ারল্যান্ড এবং নরওয়ে মঙ্গলবার একটি ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় এই হামলা আরো ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে।

ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রকে স্বীকৃতির ঘোষণাকে ইসরায়েল হামাসের জন্য পুরস্কার হিসাবে নিন্দা জানানোর পর এই হামলা চালানো হয়।

স্পেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসে ম্যানুয়েল আলবারেস সোমবার (২৭ মে) ব্রাসেলসে বলেছেন, ‘ফিলিস্তিনি জনগণের প্রতি ন্যায়বিচারের জন্য ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়া হচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘এটি ছিল ইসরায়েলের জন্য নিরাপত্তার সর্বোত্তম গ্যারান্টি এবং এই অঞ্চলে শান্তিতে পৌঁছানোর জন্য একেবারে অপরিহার্য পদক্ষেপ।’ এ সময় তার পাশে আইরিশ এবং নরওয়ের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় বার্তা ২৪-এ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *