সারাদেশ

বাংলামোটরে চলন্ত প্রাইভেট কারের ওপর ভেঙে পড়লো গাছ

ডেস্ক রিপোর্ট: ঘূর্ণিঝড় রিমালের কারণে টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সিলেটের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়। ইতোমধ্যে জেলার গোয়াইনঘাট ও জৈন্তাপুর উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। পানি বৃদ্ধি পেয়েছে সিলেটের প্রধান দুই নদী সুরমা ও কুশিয়ারায়। তাই আগাম বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

এদিকে, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল তিন জেলায় আকস্মিক বন্যার ঝুঁকিতে রয়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (বাপাউবো)। সংস্থাটি বলছে, আগামী ২৪ ঘণ্টায় দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সিলেট, সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার জেলার নিম্নাঞ্চল স্বল্পমেয়াদি আকস্মিক বন্যার ঝুঁকিতে রয়েছে।

মঙ্গলবার (২৮ মে) বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের কর্তব্যরত কর্মকর্তা সজল কুমার রায় এক পূর্বাভাসে এসব তথ্য জানান।

জানা যায়, টানা বৃষ্টি ও হঠাৎ করে উজান থেকে নেমে আসা ঢলে গোয়াইনাঘাট উপজেলার প্রায় সবকটি ইউনিয়নে প্লাবিত হয়েছে। উপজেলার জাফলং জিরো পয়েন্ট ও মায়াবী ঝর্ণায় কয়েক লক্ষ টাকার মালামালসহ ভেসে গেছে অর্ধশতাধিক খুপরি দোকান। আর জৈন্তাপুন উপজেলার নিজপাট ইউনিয়নের বড়গাঙ, কদমখাল, নয়াগাঙ, ডিবিরহাওর, ফুলবাড়ী, ঘিলাতৈল, টিপরা খোলা ও জৈন্তাপুর ইউনিয়নের ডুলটিরপাড়, চাতলারপাড়, বামনহাওড়, শেওলারটুক, নলজুরী, লক্ষিপুর, খারুবিলের নীচু এলাকায় ঢলের পানি প্রবেশ করছে।

সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ডে তথ্যমতে, সন্ধ্যা ৬টায় সিলেটের কানাইঘাট পয়েন্টে সুরমা নদীতে ১১ দশমিক ৯৮ সেন্টিমিটার। এ পয়েন্টে বিপৎসীমা ১২ দশমিক ৭৫।

সিলেট পয়েন্টে সুরমার নদীতে ৮ দশমিক ৩০ সেন্টিমিটার উচ্চতায় পানি বইছে। এ পয়েন্টে বিপৎসীমা ১০ দশমিক ৮০। কানাইঘাটের আমলসিদ পয়েন্টে কুশিয়ারার পানির উচ্চতা ১১ দশমিক ৫৪ সেন্টিমিটার। এ পয়েন্টে বিপৎসীমা ১৫ দশমিক ৪০। শেওলা পয়েন্টে কুশিয়ারার সন্ধ্যা ৬টায় পানির উচ্চতা ছিল ৬ দশমিক ৭৮ সেন্টিমিটার। এ পয়েন্টে বিপৎসীমার ৬ দশমিক ২৭ সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে বইছিল ৬ দশমিক ০০ সেন্টিমিটার উচ্চতায়। এ পয়েন্টে বিপৎসীমা ৯ দশমিক ৪৫ সেন্টিমিটার। শেরপুর পয়েন্টে ৪ দশমিক ৬০ সেন্টিমিটার উচ্চতায় বইছে কুশিয়ারা। এছাড়া লোভাছড়া, সারি, এবং ধলাই নদীর পানিও বেড়েছে অন্তত ৬ থেকে ৭ সেন্টিমিটার করে।

গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. তৌহিদুল ইসলাম জানান, ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে গোয়াইনঘাট উপজেলার কোথাও তেমন কোনো ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি। তবে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের কারণে নদ-নদীর পানি দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে।

তিনি জানান, জরুরি ভিত্তিতে গোয়াইনঘাটে ৫০ মেট্রিক টন জি. আর খাদ্যশস্য (চাল) ৫০০ প্যাকেট শুকনো খাবার বরাদ্দের জন্য সিলেট জেলা প্রশাসক বরাবর প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেসবুকে এক স্ট্যাটাসে জৈন্তাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে সালিক রুমাইয়া লিখেন, প্রচণ্ড গরমে অতিষ্ঠ হয়ে বৃষ্টির আশায় ছিলাম। কিন্তু আজ আবার সেই শান্তির বৃষ্টি চিন্তার কারণ হয়ে গেছে। জৈন্তাপুরের সকাল এবং বিকেলের অবস্থা…সবাই সাবধানে থাকুন, অন্যকে সাবধান করুন। পাহাড়ের আশেপাশে বসবাস করা মানুষের প্রতি সাবধানে থাকার জন্য খবর পৌঁছে দিন। যেকোনো বিষয়ে তথ্য দিয়ে সহায়তা করুন উপজেলা প্রশাসনকে আমরা আছি আপনাদের জন্য।

পানি উন্নয়ন বোর্ড সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন দাশ বলেন, টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সিলেটের নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই বন্যার আশঙ্কা রয়েছে।

সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় বার্তা ২৪-এ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *