আন্তর্জাতিক

জলবায়ু ঝুঁকি মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক সহায়তার আহ্বান পররাষ্ট্রমন্ত্রীর

ডেস্ক রিপোর্ট: জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ঝুঁকি মোকাবিলা ও ক্ষুদ্র দ্বীপদেশগুলোর উন্নয়নে জোর আন্তর্জাতিক সহায়তার আহ্বান জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।

স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (২৮ মে) দুপুরে ক্যারিবীয় দ্বীপরাষ্ট্র এন্টিগা অ্যান্ড বারবুডার রাজধানী সেন্ট জনসে জাতিসংঘ আয়োজিত ‘ক্ষুদ্রদ্বীপ উন্নয়নশীল রাষ্ট্রের চতুর্থ সম্মেলনে’র (4th Small Island Developing States Conference-SIDS4) দ্বিতীয় দিনে বাংলাদেশের প্রতিনিধির বক্তৃতায় তিনি এ আহ্বান জানান। এ সম্মেলন ২৭ মে শুরু হয়েছে এবং শেষ হবে ৩০ মে।

বুধবার (২৯ মে) সংবাদমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ পরিচালক কর্মকর্তা মীর আকরাম উদ্দীন আহম্মদ এ তথ্য জানান।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সেন্ট জনসের ‘আমেরিকান ইউনিভার্সিটি অব এন্টিগা’র প্রধান মিলনায়তনে সিডস প্লেনারিতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. হাছান মাহমুদ স্বল্পোন্নত দেশগুলোর ঐতিহ্যবাহী মুখপাত্র হিসেবে ক্ষুদ্র দ্বীপদেশগুলোর উন্নয়নে আন্তর্জাতিক সহায়তার জন্য আহ্বান জানান।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, দুই মেয়াদে জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর সংগঠন ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরামের (সিভিএফ) সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালনকারী বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তন, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি, সমুদ্রের অম্লতাবৃদ্ধি এবং চরম আবহাওয়ার চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলায় বিশেষ দৃষ্টি নিবদ্ধ করেছে।

এ সময় তিনি বলেন, পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমণ কমাতে উচ্চ কার্বন নিঃসরণকারী উন্নত অর্থনীতির দেশগুলোকে জবাবদিহিমূলক প্রতিশ্রুতির আওতায় আনা একান্ত প্রয়োজন।

সেই লক্ষ্যে আজারবাইজানের বাকুতে আসন্ন বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলন কপ২৯-এ ২০২৫ সাল পরবর্তী সময়ে জলবায়ু অর্থায়নের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন এবং জলবায়ু ঝুঁকির অভিযোজন ক্ষমতা বৃদ্ধির দিকে জাতিসংঘ সদস্য দেশগুলোর মনোযোগী হওয়া জরুরি।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রগুলোর দায়িত্ব সম্পর্কে আন্তর্জাতিক আদালতের (আইসিজে) কাছ থেকে পরামর্শমূলক মতামত চাওয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের নেতৃত্বের কথাও তুলে ধরেন।

আফ্রিকার স্বল্পোন্নত এবং ক্যারিবীয় ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় সিডস দেশগুলোর ক্যাডেটদের জন্য বাংলাদেশ মেরিন একাডেমিতে বৃত্তি প্রদানের কথা জানিয়ে সম্মেলনে ড. হাছান বলেন, সমুদ্রখাতে আঞ্চলিক সহযোগিতা এবং আন্তঃজাতি সক্ষমতা বৃদ্ধিতে কাজ করতে বাংলাদেশ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

সম্মেলন শেষে দ্য এন্টিগা অ্যান্ড বারবুডা এজেন্ডা ফর সিডস (আবাস) প্রতিরোধে সক্ষম উন্নয়নের লক্ষ্যে নবায়নকৃত ঘোষণাপত্রটি (The Antigua and Barbuda Agenda for SIDS (ABAS) – a Renewed Declaration for Resilient Prosperity’ চূড়ান্ত হবে।

নিউইয়র্কে জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি মোহাম্মদ আবদুল মুহিত, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উত্তর আমেরিকা অণুবিভাগের মহাপরিচালক খন্দকার মাসুদুল আলম, পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দপ্তরের জনসংযোগ কর্মকর্তা মীর আকরাম উদ্দীন আহম্মদ দেশের প্রতিনিধি দলের সদস্য হিসেবে সম্মেলনে যোগ দিয়েছেন।

এদিন সিডস সম্মেলনে যোগদানের পাশাপাশি জ্যামাইকা ও ডোমিনিকান রিপাবলিকের দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।

ড. হাছানের সঙ্গে ডোমিনিকান প্রজাতন্ত্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী রবার্টো আলভারেজ (Roberto Álvarez) এবং জ্যামাইকার পররাষ্ট্রমন্ত্রী কামিনা জনসন স্মিথের (Kamina Johnson Smith) বহুপাক্ষিক প্ল্যাটফর্মে সহযোগিতা, মানুষে মানুষে যোগাযোগ, সংস্কৃতি, শিল্প, শিক্ষা, বাণিজ্য এবং পর্যটনে সহযোগিতা বৃদ্ধির বিষয়গুলো আলোচনায় স্থান পায়।

পাশাপাশি এদিন নিউইয়র্কে জাতিসংঘে কানাডার স্থায়ী প্রতিনিধি বব রে (Bob Rae) পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন। বর্তমান প্রেক্ষাপট নিয়ে আলোচনায় বব রে রোহিঙ্গা সংকট নিরসন নিয়ে কথা বলেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী তাকে জানান, নিজ দেশ থেকে উদ্বাস্তু হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া এই রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফিরে যাওয়াই একমাত্র সমাধান।

সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় বার্তা ২৪-এ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *