আনোয়ারায় দুই প্রার্থীর সমর্থকদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া, আহত ২
ডেস্ক রিপোর্ট: কোনো ধরনের অস্ত্র দেখিয়ে জিম্মি করে নয়; পাঁচ থেকে সাতজনের একটি সংঘবদ্ধ চক্র পূর্বনির্ধারিত ব্যক্তিকে ধাক্কা দিয়ে ঝগড়ার পরিস্থিতি সৃষ্টি করে তাকে ঘিরে ধরে চোখে গুল লাগিয়ে ছিনিয়ে নিতো লাখ লাখ টাকা।
পুরান ঢাকার তাঁতীবাজার এলাকার সক্রিয় এই ডাকাত দলের তিন সদস্যকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের লালবাগ জোনের কোতোয়ালির একটি দল।
২৫ মে চট্টগ্রাম এবং খুলনায় ধারাবাহিক অভিযান চালিয়ে ডাকাত দলের মূল পরিকল্পনাকারী খোকন দাস ওরফে বাইল্যা খোকন, মূল অপারেশনাল সংগঠক রেজাউল করিম এবং ডাকাতির জন্য নির্ধারিত ব্যক্তির গতিবিধি পর্যবেক্ষণকারাই দলের কামাল হোসেনকে গ্রেফতার করে।
গ্রেফতারের প্রায় একমাস আগে ‘মা বুলিয়ান অ্যান্ড সিলভার জুয়েলার্স’-এর কর্মচারী মহিউদ্দিনকে টার্গেট করে এই চক্রটি তাঁতীবাজার এলাকা থেকে ৭০ লাখ টাকা ছিনিয়ে নেয় একই কায়দায়।
এই ঘটনায় দায়ের করা মামলার তদন্তে নেমে ডাকাতদলের এই তিন সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়।
বুধবার (২৯ মে) রাজধানীর মিন্টো রোডের ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ সব কথা বলেন ডিবি লালবাগ বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার মশিউর রহমান।
তিনি বলেন, ঘটনার দিন বিকেলে ইসলামপুরের নব নারায়ণ লেনের প্রবেশ মুখে পৌঁছামাত্র একজন দুর্বৃত্ত টাকা বহনকারী মহিউদ্দীনকে ধাক্কা দিয়ে উল্টো অভিযোগ করে ধাক্কা দিলো কেন!
টাকা বহনকারী মহিউদ্দিন ‘সরি’ বলে ক্ষমা চেয়ে চলে যেতে চাইলে আশেপাশে ওঁত পেতে থাকা আরো সাত থেকে আটজন দুর্বৃত্ত তাকে ধাক্কা দেওয়ার অভিযোগ তুলে প্রচণ্ড কিল, ঘুষি মারতে থাকে। একটা পর্যায়ে তার চোখে আঙুল দিয়ে গুল লাগিয়ে দেয় এবং টাকাভর্তি ব্যাগটি টেনেহেঁচড়ে নিয়ে চলে যায়।
অভিযোগ ও মামলার প্রেক্ষিতে গোয়েন্দা দল তদন্তে নেমে ডাকাত দলের সদস্যদের গ্রেফতার করে এবং তাদের কাছে থেকে ডাকাতির ৯ লাখ টাকা উদ্ধার করে।
চতুর এই ডাকাত দল গ্রেফতার এড়ানোর জন্য কোনো ধরনের স্মার্টফোন ব্যবহার করতো না উল্লেখ করে মশিউর রহমান বলেন, এই ডাকাতির ঘটনায় মূল ‘মাস্টারমাইন্ড’ বাইল্যা খোকন।
এই খোকন পুরান ঢাকায় বসবাস করে। অনেকদিন ধরেই এলাকায় থেকে কোন ব্যবসায়ী কীভাবে টাকা লেনদেন করেন, সে সম্পর্কে ভালো করে জানে। অপারেশনাল কমান্ডার রেজাউল করিম একসময় পুরান ঢাকাতেই ব্যবসা করতো।
খুলনা, বরিশাল, চাঁদপুর, মিরপুর ও ময়মনসিংহ থেকে সমমনা ডাকাতদেরকে ঢাকায় এনে টার্গেট করা ব্যক্তিকে নিরস্ত্র কায়দায় কিল, ঘুষিতে রক্তাক্ত করে চোখে গুল লাগিয়ে ডাকাতি করে।
ডাকাতির কাজে নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ করার জন্য তারা কম দামের বাটন ফোনে নিবন্ধনহীন সিম লাগিয়ে যোগাযোগ রাখে। ঘটনার পরে মোবাইল ফোন এ ফোনের সিম ভেঙে নদীতে ফেলে দিয়ে বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে পালিয়ে থাকেছে।
এক প্রশ্নের জবাবে মশিউর রহমান বলেন, এই চক্রটিতে বেশ কয়েকজন সদস্য জড়িত। তারা সাধারণত শুক্রবার বা শনিবার ডাকাতি করে। এই সময়ে মানুষ কম থাকে। ডাকাত দলটি লোকজন ভাড়া করে নিয়ে আসে। তারা রেকিসহ কয়েকটি ধাপে কাজ করে। প্রত্যেক গ্রুপে অন্তত পাঁচজন করে সদস্য থাকে। ডাকাতির পরে সবাই টাকা ভাগাভাগি করে নিয়ে চলে যায়। ফলে, একজনকে গ্রেফতার করা গেলেও সব টাকা পাওয়া যায়নি। ডাকাত দলের সবাই বহুগামী ও জুয়ারি। ফলে, তারা এই টাকা খরচ করে ফেলেছে।
এই ডাকাতদের বিরুদ্ধে ডাকাতি এবং ছিনতাই অভিযোগে থানায় একাধিক মামলা আছে।
সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় বার্তা ২৪-এ।